আর. কে. নারায়ণ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
৩১ নং লাইন:
নারায়ণের বাবা যখন মহারাজা’স কলেজ হাইস্কুলে বদলি হয়ে যান, তখন নারায়ণ তার পরিবারের সঙ্গে [[মহীশূর|মহীশূরে]] চলে আসেন। এই বিদ্যালের গ্রন্থাগারটি ছিল অত্যন্ত সমৃদ্ধ। তার বাবারও বইয়ের একটি বিশাল সংগ্রহ ছিল। নারায়ণের বই পড়ায় বিশেষ আগ্রহ থাকায় এতে তার সুবিধাই হয়। এই সময় তিনি লেখালিখিও শুরু করেন। উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করার পর নারায়ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় অণুত্তীর্ণ হন। এই সময় এক বছর তিনি বাড়িতে থেকে পড়াশোনা ও লেখালিখি করতে থাকেন। ১৯২৬ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি [[মহারাজা কলেজ অফ মাইসোর|মহারাজা কলেজ অফ মাইসোরে]] যোগদান করেন। সাধারণত তিন বছরে স্নাতক পাঠক্রমের পড়াশোনা শেষ হলেও, নারায়ণের এই পাঠক্রম শেষ করতে চার বছর লেগেছিল। তার এক বন্ধু তাকে বলেছিলেন, স্নাতকোত্তর পাঠক্রমে পড়াশোনা করলে সাহিত্যের প্রতি তার আগ্রহ কমে যাবে। তাই তিনি পড়াশোনা ছেড়ে কিছু সময়ের জন্য বিদ্যালয় শিক্ষকের চাকরি গ্রহণ করেন। কিন্তু সেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাকে শারীরশিক্ষার দায়িত্বে নিয়োগ করতে চাইলে তিনি চাকরি ছেড়ে দেন।<ref name="A flood of fond memories"/> এই অভিজ্ঞতা থেকে নারায়ণ উপলব্ধি করেন যে, তার একমাত্র কর্মজীবন লেখালিখির ক্ষেত্রেই হওয়া সম্ভব। তিনি বাড়িতে থেকে উপন্যাস রচনা করবেন বলে মনস্থির করেন।<ref name="Reluctant centenarian">{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.hindu.com/mag/2006/10/08/stories/2006100800050100.htm|শিরোনাম=Reluctant centenarian |তারিখ=8 October 2006|সংবাদপত্র=[[The Hindu]]|সংগ্রহের-তারিখ=23 August 2009}}</ref><ref>{{Harvnb|Walsh|1982|pp=13–16.}}</ref> তার প্রথম প্রকাশিত রচনাটি ছিল ''ডেভেলপমেন্ট অফ মেরিটাইম লজ অফ সেভেনটিনথ সেঞ্চুরি ইংল্যান্ড'' নামে একটি বইয়ের সমালোচনা।<ref Name=Calitreview>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Datta|প্রথমাংশ=Nandan|তারিখ=26 March 2007|শিরোনাম=The Life of R.K. Narayan|সাময়িকী=California Literary Review|ইউআরএল=http://calitreview.com/21|সূত্র=harv}}</ref> এরপর তিনি ইংরেজি সংবাদপত্র ও সাময়িক পত্রপত্রিকায় মাঝে মাঝে স্থানীয় বিষয় অবলম্বনে গল্প লিখতে শুরু করেন। লেখালিখি করে তিনি বিশেষ উপার্জন করতেন না (প্রথম বছরে তার আয় ছিল নয় টাকা বারো আনা মাত্র)। কিন্তু তার পরিবার ও বন্ধুবান্ধবেরা তার এই প্রথাবহির্ভূত কর্মজীবন নির্বাচনের ব্যাপারটিকে শ্রদ্ধা ও সমর্থন করতেন।<ref>{{Harvnb|Walsh|1982|p=18.}}</ref> ১৯৩০ সালে নারায়ণ তার প্রথম উপন্যাস ''[[স্বামী অ্যান্ড ফ্রেন্ডস্‌]]'' রচনা করেন।<ref Name="Calitreview" /> তার মামা এই প্রয়াসটিকে পরিহাস করেছিলেন।<ref name="History of Indian lit">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Mehrotra|প্রথমাংশ=Arvind Krishna|শিরোনাম=A history of Indian literature in English|প্রকাশক=Columbia University Press|তারিখ=15 January 2003|পাতা=196|আইএসবিএন=0-231-12810-X|সূত্র=harv}}</ref> প্রথম দিকে প্রকাশকরাও এটি ছাপতে চাননি।<ref name="Peopling of Malgudi" /> এই বইতেই নারায়ণ [[মালগুডি]] নামে একটি শহরের কল্পনা করেছিলেন। এই শহরটি ছিল দেশের সামাজিক পরিস্থিতির একটি সুন্দর উপস্থাপনা। এখানে ঔপনিবেশিক শাসনের আরোপিত সীমাবদ্ধতাগুলি উপেক্ষিত হয়েছিল এবং শহরটি গড়ে উঠেছিল ব্রিটিশ ও স্বাধীনতা-উত্তর ভারতের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=George, R. M. |তারিখ=July 2003|শিরোনাম=Of Fictional Cities and "Diasporic" Aesthetics |সাময়িকী=Antipode|প্রকাশক=Blackwell Publishing|খণ্ড=35|সংখ্যা নং=3|পাতাসমূহ=559–579|issn=0066-4812 |সংগ্রহের-তারিখ=2 August 2009|সূত্র=harv |ডিওআই=10.1111/1467-8330.00339}}</ref>
===সন্ধিক্ষণ===
১৯৩৩ সালে [[কোয়েম্বাটোর|কোয়েম্বাটোরে]] বোনের বাড়িতে ছুটি কাটাতে গিয়ে নারায়ণের সঙ্গে রাজাম নামে স্থানীয় একটি ১৫ বছরের মেয়ের আলাপ হয়। তিনি মেয়েটির প্রেমে পড়ে যান। জ্যোতিষ ও আর্থিক বাধা সত্তেও তিনি মেয়েটির বাবার থেকে অনুমতি গ্রহণে সমর্থ হন এবং মেয়েটিকে বিয়ে করেন।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Narasimhan|প্রথমাংশ=C. V.|তারিখ=26 May 2001|শিরোনাম=Remembering R. K. Narayan|সাময়িকী=[[Frontline (magazine)|Frontline]]|প্রকাশক=[[The Hindu Group]]|অবস্থান=[[Chennai]]|খণ্ড=18|সংখ্যা নং=11 |issn=0970-1710 |ইউআরএল=http://www.hinduonnet.com/fline/fl1811/18111330.htm|সূত্র=harv}}</ref> বিয়ের পর নারায়ণ ''দ্য জাস্টিস'' নামে একটি মাদ্রাজ-ভিত্তিক সংবাদপত্রে সাংবাদিকতা শুরু করেন। এই সংবাদপত্রটির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল অব্রাহ্মণদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করা। নারায়ণের মতো একজন [[আইয়ার|ব্রাহ্মণ আইয়ার]] তাঁদেরতাদের হয়ে কথা বলছেন দেখে প্রকাশকরা আশ্চর্য হয়ে যান। এই সংবাদপত্রে কাজ করার সময় নারায়ণ বিভিন্ন ধরনের মানুষ ও বিষয়ের সংস্পর্শে আসেন।<ref>{{Harvnb|Walsh|1982|p=20.}}</ref> এর আগে নারায়ণ [[অক্সফোর্ড|অক্সফোর্ডে]] তার এক বন্ধুর কাছে ''[[স্বামী অ্যান্ড ফ্রেন্ডস্‌]]'' গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি পাঠিয়েছিলেন। এই সময় সেই বন্ধুটি সেই পাণ্ডুলিপি [[গ্রাহাম গ্রিন|গ্রাহাম গ্রিনকে]] দেখান। গ্রিন এই বইটি তার প্রকাশকের কাছে পাঠিয়ে দেন। শেষ পর্যন্ত ১৯৩৫ সালে বইটি প্রকাশিত হয়।<ref Name="Telegraph-obituary" /> এছাড়া ইংরেজি-ভাষী পাঠকমণ্ডলীর কাছে নিজেকে সুপরিচিত করার জন্য গ্রিন নারায়ণকে তার নামটি ছোটো করার পরামর্শ দেন।<ref name="Economist obituary">{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.highbeam.com/doc/1G1-75020386.html|শিরোনাম=R.K. Narayan.(Obituary)|তারিখ=26 May 2001|প্রকাশক=''[[The Economist]]''|সংগ্রহের-তারিখ=10 July 2009|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20121105215109/http://www.highbeam.com/doc/1G1-75020386.html|আর্কাইভের-তারিখ=৫ নভেম্বর ২০১২|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> ''স্বামী অ্যান্ড ফ্রেন্ডস্‌'' ছিল একটি আংশিক আত্মজীবনীমূলক রচনা। নিজের ছেলেবেলায় দেখা অনেক ঘটনার ভিত্তিতে নারায়ণ এই বইখানি লিখেছিলেন।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=O'Neil|প্রথমাংশ=Patrick M.|শিরোনাম=''Great World Writers''|প্রকাশক=Marshall Cavendish|তারিখ=January 2004|পাতা=1051|আইএসবিএন=0-7614-7469-2|সংগ্রহের-তারিখ=28 July 2009|সূত্র=harv}}</ref> সমালোচকরা বইটির প্রশংসা করলেও বইটি তেমন বিক্রি হয়নি। নারায়ণের পরবর্তী উপন্যাস ''[[দ্য ব্যাচেলর অফ আর্টস্‌]]'' (১৯৩৫) ছিল অংশত তার কলেজ জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে নেওয়া।<ref name="In memory of the Malgudy Man">{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.tribuneindia.com/2006/20061008/spectrum/book6.htm|শিরোনাম=In memory of the Malgudi Man|শেষাংশ=Wattas|প্রথমাংশ=Rajnish|তারিখ=8 October 2006|সংবাদপত্র=[[The Tribune (Chandigarh)|The Tribune]]|সংগ্রহের-তারিখ=27 July 2009}}</ref> এই উপন্যাসে দেখা যায় এক বিদ্রোহী কিশোর কিভাবে একটি সুপ্রতিষ্ঠিত প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিতে পরিণত হচ্ছে।<ref name="Cultural imperialism and the Indo-English novel">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Afzal-Khan|প্রথমাংশ=Fawzia|শিরোনাম=Cultural imperialism and the Indo-English novel|প্রকাশক=Pennsylvania State University Press|তারিখ=November 1993|পাতা=29|আইএসবিএন=0-271-00912-8|সংগ্রহের-তারিখ=27 July 2009|সূত্র=harv}}</ref> এই উপন্যাসটির জন্যেও গ্রিন প্রকাশক সংগ্রহ করেছিলেন। বইটি একাধিক প্রকাশক প্রকাশ করেন। নারায়ণের তৃতীয় উপন্যাস ''[[দ্য ডার্ক রুম (আর. কে. নারায়ণ)|দ্য ডার্ক রুম]]'' (১৯৩৮) ছিল একটি গৃহবিবাদ সংক্রান্ত রচনা।<ref>{{Harvnb|Prasad|2003|p=49.}}</ref> এই উপন্যাসে পুরুষকে দমনশীল ও নারীকে বিবাহের শিকার রূপে দেখানো হয়েছে। অপর একটি প্রকাশক এই উপন্যাসটি প্রকাশ করেন। এটিও সমালোচকদের দ্বারা প্রশংসিত হয়। ১৯৩৭ সালে নারায়ণের বাবা মারা যান। সেই সময় তার আর্থিক সংকট থাকায় তিনি [[মহীশূর রাজ্য|মহীশূরের]] সরকারের থেকে একটি ভাতা নিতে বাধ্য হন।<ref>{{Harvnb|Walsh|1982|pp=18–23.}}</ref>
 
প্রথম তিনটি বইতে নারায়ণ দেখিয়েছিলেন নির্দিষ্ট সামাজিক ব্যবস্থায় উত্থিত সমস্যাগুলিকে। প্রথম বইতে তিনি ছাত্রজীবনের সমস্যা, শ্রেণিকক্ষে বেত্রাঘাত ও তার ফলে উত্থিত লজ্জার বিষয়টি তুলে ধরেন। [[হিন্দু বিবাহ|হিন্দু বিবাহে]] কোষ্ঠীবিচার ও তার ফলে স্বামী ও স্ত্রীর জীবনে মানসিক ভার দ্বিতীয় বইটির মূল উপজীব্য ছিল। তৃতীয় বইতে নারায়ণ দেখিয়েছিলেন স্বামীর ব্যবহার ও দৃষ্টিভঙ্গি একজন স্ত্রীর পক্ষে মানিয়ে নেওয়ার সমস্যার বিষয়টিকে।<ref>{{Harvnb|Prasad|2003|pp=50, 85.}}</ref>
৪৮ নং লাইন:
নারায়ণের পরবর্তী উপন্যাসটি ছিল ''[[দ্য ম্যান-ইটার অফ মালগুডি]]''। এটি প্রকাশিত হয় ১৯৬১ সালে। এই গ্রন্থের বর্ণনার ভঙ্গিটি ছিল হাস্যরসের একটি সুনিয়ন্ত্রিত ধ্রুপদি শৈল্পিক ভঙ্গিমা।<ref name="A Man Called Vasu" /> এই গ্রন্থটি প্রকাশের পরই নারায়ণ আবার পর্যটনে বেরিয়ে পড়েন এবং চলে যান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র<ref name="Reluctant centenarian" /> ও অস্ট্রেলিয়ায়। [[অ্যাডিলেইড]], [[সিডনি]] ও [[মেলবোর্ন]] শহরে তিন সপ্তাহ কাটিয়ে তিনি ভারতীয় সাহিত্যের উপর বক্তৃতা দেন। এই ভ্রমণে তাকে অর্থসাহায্য করে অস্ট্রেলিয়ান রাইটার্স’ গ্রুপের একটি ফেলোশিপ।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Sales-Pontes|প্রথমাংশ=A Hilda |শিরোনাম=R.K. Narayan|প্রকাশক=Atlantic Highlands|বছর=1983|আইএসবিএন=978-0-391-02962-0|oclc=10625411|সংগ্রহের-তারিখ=31 August 2009|সূত্র=harv}}</ref> এই সময় সাহিত্য ও আর্থিক – উভয় ক্ষেত্রেই নারায়ণ যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছিলেন। মহীশূরে একটি বিরাট বাড়িতে তিনি বাস করতেন। তার পড়ার ঘরে অন্তত আটটি জানলা ছিল। তার মেয়ে বিয়ের পর কোয়েম্বাটোর চলে গিয়েছিলেন। মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে তিনি একটি নতুন [[মার্সিডিজ-বেঞ্জ]] গাড়ি চালিয়ে যেতেন। এই গাড়ি সেই সময় ভারতে যথেষ্ট বিলাসবহুল ছিল। ভারত ও বহির্বিশ্বে সাফল্য অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে নারায়ণ ''[[দ্য হিন্দু]]'' ও ''[[দি আটলান্টিক]]'' প্রভৃতি পত্রপত্রিকায় কলাম লিখতে শুরু করেন।<ref>{{Harvnb|Rao|2004|pp=22–23.}}</ref>
 
১৯৬৪ সালে নারায়ণ তার প্রথম পুরাণ-ভিত্তিক গ্রন্থটি প্রকাশ করেন। এই গ্রন্থটি ছিল ''[[গডস, ডেমনস অ্যান্ড আদার্স]]''। এই গ্রন্থে তিনি হিন্দু মহাকাব্য থেকে নানা ছোটো গল্প অনুবাদ করেন। তার অন্যান্য অনেক বইয়ের মতো এই বইটির অলংকরণের কাজও করেছিলেন তার ছোটো ভাই [[আর. কে. লক্ষ্মণ]]। এই গ্রন্থের গল্পগুলি একটি নির্বাচিত তালিকার আকারে দেওয়া হয়েছে। এই গল্পগুলি নির্বাচন করা হয়েছে শক্তিশালী নায়কদের দেখে, যাতে পাঠকদের এগুলি সম্পর্কে পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকুক বা না থাকুক, এর প্রভাব তাঁদেরতাদের উপর দীর্ঘস্থায়ী হয়।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://select.nytimes.com/gst/abstract.html?res=FB0816FD355F147A93CAA9178AD95F408685F9 |শিরোনাম=It's All in the Telling; Gods, Demons and Others|তারিখ=8 November 1964|সংবাদপত্র=[[The New York Times]]|সংগ্রহের-তারিখ=2 September 2009}}</ref> এই গ্রন্থটি প্রকাশের পর নারায়ণ আরও একবার বিদেশ ভ্রমণে যান। আগের একটি প্রবন্ধে তিনি লিখেছিলেন যে, আমেরিকানরা তার কাছ থেকে আধ্যাত্মিক বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন। এই ভ্রমণের সময় সুইডিশ-আমেরিকান অভিনেত্রী [[গ্রেটা গার্বো]] তার থেকে একই বিষয়ে জানতে চান। যদিও নারায়ণ বলেছিলেন যে, তিনি এই বিষয়ে কিছুই জানেন না।<ref name="Telegraph-obituary" />
 
এরপর ১৯৬৭ সালে নারায়ণের পরবর্তী উপন্যাস ''[[দ্য ভেন্ডার অফ সুইটস্‌]]'' প্রকাশিত হয়। এটির অণুপ্রেরণা ছিল তার আমেরিকা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এতে তিনি ভারতীয় ও আমেরিকান মূলধারার বৈশিষ্ট্যগুলির চরম চরিত্রায়ন ঘটিয়েছেন। সেই সঙ্গে এই দুই ধারার অনেক সাংস্কৃতিক পার্থক্যের প্রতিও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এই গ্রন্থটিতে তার হাস্যরস ও বর্ণনার নিজস্ব ভঙ্গিটি অক্ষুন্ন থাকলেও, সমালোচকদের মতে এই গ্রন্থে গভীরতা তেমন নেই।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://select.nytimes.com/gst/abstract.html?res=FB0C12FD345C14738DDDAD0994DD405B878AF1D3|শিরোনাম=Jagan's Surrender|তারিখ=14 May 1967|সংবাদপত্র=[[The New York Times]]|সংগ্রহের-তারিখ=2 September 2009 | প্রথমাংশ=ROBIN WHITER.K. | শেষাংশ=Narayan}}</ref> এই বছর নারায়ণ ইংল্যান্ড যান। সেখানে তিনি [[ইউনিভার্সিটি অফ লিডস|ইউনিভার্সিটি অফ লিডসের]] প্রথম সাম্মানিক ডক্টরেট লাভ করেন।<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Badal|প্রথমাংশ=R. K.|শিরোনাম=R. K. Narayan: a study|প্রকাশক=Prakash Book Depot|বছর=1976|পাতা=3|oclc=4858177|সূত্র=harv}}</ref> এর পরের কয়েক বছর তিনি কিছু লেখেননি। তার পরবর্তী বইটি ছিল ''[[আ হর্স অ্যান্ড টু গোটস্‌]]'' নামে একটি ছোটোগল্প সংকলন। এটি প্রকাশিত হয় ১৯৭০ সালে।<ref>{{Harvnb|Walsh|1982|pp=97–99, 172.}}</ref> ১৯৩৮ সালে তিনি তার মৃত্যুপথযাত্রী মামাকে কথা দিয়েছিলেন যে [[কম্ব রামায়ণম]] গ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদ করবেন। সেই কথা মনে রেখে তিনি ১৯৭৩ সালে ''[[দ্য রামায়ণ (আর. কে. নারায়ণ)|দ্য রামায়ণ]]'' গ্রন্থটি প্রকাশ করেন। রচনার পাঁচ বছর পর প্রকাশিত হয়েছিল এটি।<ref>{{Harvnb|Sundaram|1988|p=126.}}</ref> ''দ্য রামায়ণ'' প্রকাশের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই নারায়ণ সংস্কৃত মহাকাব্য [[মহাভারত]] অনুবাদের কাজে হাত দেন। এই গ্রন্থ নিয়ে গবেষণা ও রচনার মধ্যেই তিনি আরও একটি বই প্রকাশ করেন। এটি হল ''[[দ্য পেন্টার অফ সাইনস্‌]]'' (১৯৭৭)। এই বইটি একটি অনু-উপন্যাসের চেয়ে কিছুটা বড়ো। এই বইতে নারায়ণ এমন সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন, যা তার আগের বইগুলিতে পাওয়া যায় না। এই পরিবর্তন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, যৌনতা এই গ্রন্থের অন্যতম আলোচ্য বিষয়। যদিও নায়কের চরিত্রচিত্রনে তিনি তার পূর্ববর্তী রচনাগুলির ধারাই বজায় রেখেছিলেন। ''[[দ্য মহাভারত (আর. কে. নারায়ণ)|দ্য মহাভারত]]'' প্রকাশিত হয় ১৯৭৮ সালে।<ref>{{Harvnb|Walsh|1982|pp=43, 153–154.}}</ref>
৫৬ নং লাইন:
১৯৮৩ সালে নারায়ণের পরবর্তী উপন্যাস ''[[আ টাইগার ফর মালগুডি]]'' প্রকাশিত হয়। এই উপন্যাসের উপজীব্য ছিল একটি বাঘ ও মানুষের সঙ্গে তার সম্পর্ক।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.guardian.co.uk/media/2006/oct/09/tvandradio.radio|শিরোনাম=Pick of the day|তারিখ=9 October 2006|সংবাদপত্র=[[The Guardian]]|সংগ্রহের-তারিখ=8 September 2009 | অবস্থান=London | প্রথমাংশ=Phil | শেষাংশ=Daoust}}</ref> ১৯৮৬ সালে তার পরবর্তী উপন্যাস ''[[টকেটিভ ম্যান]]'' প্রকাশিত হয়। এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ছিলেন মালগুডির এক উচ্চাকাঙ্ক্ষী সাংবাদিক।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://seattletimes.nwsource.com/html/books/2008610146_internationalside11.html|শিরোনাম=More worlds in words|তারিখ=11 January 2009|সংবাদপত্র=[[The Seattle Times]]|সংগ্রহের-তারিখ=8 September 2009}}</ref> এই সময়ে তিনি আরও দুটি ছোটোগল্প সংকলন প্রকাশ করেন। একটি ছিল ''মালগুডি ডেজ'' (১৯৮২)। এই গ্রন্থটি ছিল আগের বইয়ের একটি সংশোধিত সংস্করণ। এতে আরও কয়েকটি গল্প যুক্ত হয়েছিল। অপর বইটি ছিল ''[[আন্ডার দ্য ব্যানিয়ান ট্রি অ্যান্ড আদার স্টোরিজ]]''। এটি ছিল একটি নতুন ছোটোগল্প সংকলন।<ref>{{Harvnb|Rao|2004|pp=50, 120.}}</ref> ১৯৮৭ সালে তিনি ''[[আ রাইটার’স নাইটমেয়ার]]'' নামে আরেকটি প্রবন্ধ সংকলন রচনার কাজ সম্পূর্ণ করেন। এই গ্রন্থের প্রবন্ধগুলির বিষয়বস্তু ছিল বিচিত্র ধরনের। এতে বর্ণব্যবস্থা, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী, প্রেম ও বাঁদরের মতো বিষয়গুলি আলোচিত হয়েছে। ১৯৫৮ সালের পর থেকে সংবাদপত্র ও সাময়িকপত্রে প্রকাশিত তার প্রবন্ধগুলি এই গ্রন্থে সংকলিত হয়।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://pqasb.pqarchiver.com/newsday/access/103392863.html?dids=103392863:103392863&FMT=ABS&FMTS=ABS:FT&type=current&date=Jul+23%2C+1989&author=By+John+Gabree&pub=Newsday+(Combined+editions)&desc=PAPERBACKS+Artists+of+the+Essay&pqatl=google|শিরোনাম=PAPERBACKS Artists of the Essay|শেষাংশ=Gabree|প্রথমাংশ=John|তারিখ=23 July 1989|সংবাদপত্র=[[Newsday]]|সংগ্রহের-তারিখ=28 August 2009}}</ref><ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Thieme|প্রথমাংশ=John|শিরোনাম=R. K. Narayan|প্রকাশক=Manchester University Press|বছর=2007|পাতা=215|আইএসবিএন=978-0-7190-5927-8|oclc=153556493|সংগ্রহের-তারিখ=28 August 2009|সূত্র=harv}}</ref>
 
মহীশূরে একা থাকার সময় নারায়ণ কৃষিকাজে উৎসাহী হয়ে ওঠেন। তিনি এক একর কৃষিজমি কেনেন এবং কৃষিখামার তৈরির কাজে হাত দেন।<ref name="Rao 2004 24">{{Harvnb|Rao|2004|p=24.}}</ref> প্রতিদিন বিকেলবেলা তিনি বাজার অবধি হেঁটে যেতে ভালোবাসতেন। বাজার করা তার উদ্দেশ্য ছিল না। তার উদ্দেশ্য ছিল মানুষের সঙ্গে কথা বলা। হাঁটতে হাঁটতে মাঝে মাঝেই তিনি থমকে দাঁড়িয়ে পড়তেন। দোকানদার ও অন্যান্যদের অভিবাদন জানিয়ে তাঁদেরতাদের সঙ্গে কথা বলতেন। সম্ভবত নিজের পরবর্তী বইয়ের মালমশলা সংগ্রহের জন্যই তিনি এমনটা করতেন।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.outlookindia.com/article.aspx?211789|শিরোনাম=Blue Hawaii Yoghurt|শেষাংশ=[[Khushwant Singh]]|তারিখ=28 May 2001|প্রকাশক=''[[Outlook (magazine)|Outlook]]''|সংগ্রহের-তারিখ=8 September 2009|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20101026134942/http://outlookindia.com/article.aspx?211789|আর্কাইভের-তারিখ=২৬ অক্টোবর ২০১০|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref>
 
১৯৮০ সালে সাহিত্যে তার অবদানের জন্য নারায়ণ [[ভারতীয় সংসদ|ভারতীয় সংসদের]] উচ্চ কক্ষ [[রাজ্যসভা|রাজ্যসভায়]] মনোনীত হন।<ref name="Storyteller Narayan Gone" /> তার ছয় বছরের সাংসদ জীবনে তিনি একটি বিষয় নিয়েই সোচ্চার হয়েছিলেন – বিদ্যালয়ে শিশুদের সমস্যা। বিশেষ করে, পাঠ্যবইয়ের বোঝা ও শিশুর সৃজনীশক্তির উপর শিক্ষাব্যবস্থার কুপ্রভাব নিয়ে তিনি কথা বলতে থাকেন। উল্লেখ্য, তার ''স্বামী অ্যান্ড ফ্রেন্ডস'' উপন্যাসেও তিনি একই বিষয় নিয়ে কথা বলেছিলেন। তার এই উদ্যোগের ফলে [[যশ পাল|অধ্যাপক যশ পালের]] নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠিত হয়। এই কমিটি বিদ্যালয় শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার সুপারিশ জানায়।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://timesofindia.indiatimes.com/articleshow/1120557.cms|শিরোনাম=Leave Those Kids Alone: Committee recommends school curriculum reform|তারিখ=24 May 2005|সংবাদপত্র=[[The Times of India]]|সংগ্রহের-তারিখ=8 September 2009}}</ref>