জন ক্লার্ক মার্শম্যান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
St.teresa (আলোচনা | অবদান)
সংশোধন
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
১ নং লাইন:
'''জন ক্লার্ক মার্শম্যান''' (১৮আগস্ট ১৭৯৪-৮জুলাই ১৮৭৭ খ্রিঃ) ছিলেন একজন ইংরেজ সাংবাদিক ও ঐতিহাসিক। শ্রীরামপুর ত্রয়ীর অন্যতম [[জোশুয়া মার্শম্যান]] তাঁরতার বাবা।
<div></div>
 
==প্রথম জীবন==
জন ছিলেন জোশুয়া ও [[হ্যানা মার্শম্যান|হ্যানা মার্শম্যানের]] প্রথম সন্তান। তিনি ১৭৯৪ খ্রিঃ আগস্ট মাসে [[ব্রিস্টল]] শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁরতার বাবা ধর্মপ্রচারক হিসেবে ভারতে রওনা হওয়ার আগে ঐ অঞ্চলে একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন।
[[Image:John.C.Marshman.jpg|Thumb|right|200px|জন ক্লার্ক মার্শম্যান]]
 
==ভারতে আগমন==
পাঁচ বছর বয়সে জন তাঁরতার মা, বাবা ও [[উইলিয়াম ওয়ার্ড|উইলিয়াম ওয়ার্ডের]] সাথে ''ক্রাইটেরিয়ন'' নামক মার্কিন জাহাজে চড়ে [[বঙ্গ|বঙ্গে]] রওনা হন। ১৩ই অক্টোবর ১৭৯৯, রবিবার সকালে তাঁরাতারা [[শ্রীরামপুর, হুগলি|শ্রীরামপুরে]] পৌঁছান।
 
১৮০০ খ্রিঃ জনের মা ও বাবা শ্রীরামপুরে দু'টো [[আবাসিক বিদ্যালয়|বোর্ডিং স্কুল]] স্থাপন করেন। স্কুল দু'টো অত্যন্ত জনপ্রিয় হয় এবং জন তাঁরতার মা-বাবার কাছেই শিক্ষালাভ করেন। ক্রমশ প্রসারশীল মিশনারি জীবনের সাথে তিনি একাত্ম হয়ে বড় হন; সবার সাথে এক টেবিলে খাওয়াদাওয়া আর মিশনের অন্যান্য বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলো ছিল তাঁরতার রোজনামচার অঙ্গ। স্বাভাবিকভাবেই তিনি খুব ভালো করে [[বাংলা ভাষা|বাংলা]] শিখে যান।
 
==কর্মজীবন==
১৮১৮ খ্রিঃ জন ক্লার্ক মার্শম্যান তাঁরতার বাবার সাথে যৌথভাবে '''''দিগ্‌দর্শন''''' নাম দিয়ে প্রথম বাংলা মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। পত্রিকাটির উপজীব্য বিষয় ছিল যুবসমাজের প্রতি শিক্ষামূলক উপদেশ। এর খুব অল্প সময় পরেই তাঁরাতারা '''''সমাচার দর্পন''''' নামে একটি সাপ্তাহিক সংবাদ-পত্রিকা প্রকাশনা শুরু করেন, যা ১৮১৮ খ্রিষ্টাব্দের প্রথমার্ধে '''গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য্য''' সম্পাদিত '''''বেঙ্গল গ্যাজেটি''''' এর সাথে যুগ্মভাবে [[বাংলা ভাষা|বাংলার]] সর্বাপেক্ষা পুরোনো সংবাদপত্রের গৌরব দাবি করে। এর পর শ্রীরামপুর মিশন ১৮২১ খ্রিঃ '''''ফ্রেণ্ড অফ ইণ্ডিয়া''''' (ভারতের বন্ধু) নামে একটি ইংরেজি পত্রিকাও প্রকাশ করতে থাকে যেটি এত জনপ্রিয় হয় যে ঊনবিংশ শতাব্দীর অধিকাংশ সময় জুড়ে ইউরোপীয়দের মনে 'শ্রীরামপুর' আর 'ফ্রেণ্ড অফ ইণ্ডিয়া' কথা দু'টো সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মিশনের ছাপাখানার কাজকর্ম এত সফল এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ হয়ে ওঠে যে হুগলি নদীর তীরে [[শ্রীরামপুর গির্জা|মিশনের গির্জার]] ঠিক উত্তরে ছাপাখানার জন্য আলাদা বাড়ি বানাতে হয়েছিল।
 
১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে '''''ফ্রেণ্ড অফ ইণ্ডিয়া''''' আরও একটি সংবাদপত্র '''''দ্য ইংলিশম্যান''''' এর সাথে সংযুক্ত হয়ে '''''[[দ্য স্টেট্‌স্‌ম্যান]]''''' পত্রিকার জন্ম দেয়, যা আজ পর্যন্ত ভারতের অন্যতম মুখ্য ইংরেজি সংবাদপত্র।
২২ নং লাইন:
১৮২১ খ্রিঃ জন ক্লার্ক মার্শম্যান [[শ্রীরামপুর কলেজ|শ্রীরামপুর কলেজে]] অধ্যাপনার কাজে নিযুক্ত হন।
 
১৮৩৭ খ্রিঃ 'শ্রীরামপুর ত্রয়ীর' শেষ সদস্য জোশুয়া মার্শম্যান মারা যান। তাঁরতার মৃত্যুর পর তাঁরতার ছেলে এবং জন ম্যাকের পক্ষে কলেজ ও মিশনের সমস্ত কাজকর্ম চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। তাঁদের সমস্ত উপার্জন ও কাগজ কল প্রভৃতি থেকে জন মার্শম্যানের ব্যক্তিগত উপার্জনের অর্থও মিশনের কাজে ব্যবহার করা হয়। জন স্থির করেন যে ''ফ্রেণ্ড অফ ইণ্ডিয়া'' প্রকাশনার দায়িত্ব কলেজ কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া উচিত। হিসেব অনুযায়ী এই সমস্ত কাজে তাঁরতার মোট ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৩০,০০০ পাউণ্ডের বেশি।
 
কলেজ চালানোর খরচ ক্রমশ বেড়ে যাওয়ায় ম্যাক ও মার্শম্যান [[ব্যাপ্টিস্ট মিশনারি সোসাইটি|ব্যাপ্টিস্ট মিশনারি সোসাইটিকে]] কলেজের দায়িত নিতে অনুরোধ করেন। সোসাইটি পুরোপুরি সেই অনুরোধ স্বীকার না করলেও একজন ''ধর্মীয় অধ্যাপকের'' খরচ বহন করতে সম্মত হয়।
 
পরবর্তীকালে জন মার্শম্যান অনিচ্ছাসত্ত্বেও ভারতের সরকারি বাংলা অনুবাদকের পদে নিযুক্ত হন, এবং এর পর প্রায় দৈনিকভাবে দেশী সংবাদপত্রগুলোতে তাঁকেতাকে "সরকারের ভাড়াটিয়া" ইত্যাদি বলে গালি দেওয়া হতে থাকে। তাঁরতার বার্ষিক ১০০০ পাউণ্ড বেতন কলেজে দিয়ে দেওয়া হত।
 
==ইংল্যান্ডে প্রত্যাবর্তন==
১৮৫৫ খ্রিঃ জন মার্শম্যান স্থির করেন ভারত ছেড়ে গেলেই তাঁরতার মঙ্গল। তিনি এবং ম্যাক আবার ব্যাপ্টিস্ট মিশনারি সোসাইটিকে কলেজের দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করেন। তাঁদের অনুরোধ এইবার স্বীকৃত হয়। মার্শম্যান সরকারি বাংলা অনুবাদকের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ইংল্যান্ডের কেনসিংটন প্যালেস গার্ডেন্সে ফিরে আসেন।
 
জন ক্লার্ক মার্শম্যান ভারতের ইতিহাসের একজন ছাত্র ছিলেন এবং তাঁরতার রচিত বাংলার ইতিহাস অনেক দিন পর্যন্ত ঐ বিষয়ে লেখা একমাত্র বই ছিল। ভারতের ইতিহাসের নানা বিবরণী লেখার কাজেও তিনি জড়িত ছিলেন। তাঁরতার পড়াশোনার পরিধি ছিল অনেক দূর বিস্তৃত এবং তিনি [[প্রাচ্যবাদ]] সম্পর্কে একজন বিশিষ্ট জ্ঞানী ছিলেন। তাঁরতার বাবার মতো তিনিও [[চীনা ভাষা]] জানতেন এবং প্রধান প্রধান [[সংস্কৃত ভাষা|সংস্কৃত]] কাব্যগুলিও তাঁরতার জানা ছিল। [[ফার্সি ভাষা|ফার্সিতেও]] তাঁরতার আগ্রহ ছিল।
 
ইংল্যান্ডে ফেরার পর অবশ্য তিনি [[ভারত সংসদ|ভারত সংসদে]] বসার প্রস্তাব খারিজ করে দেন। শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁরতার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৮৬৮ খ্রিঃ তাঁকেতাকে [[স্টার অফ ইণ্ডিয়া]] পদক দ্বারা সম্মানিত করা হয়। জীবিকা নির্বাহের জন্য তিনি [[ইস্ট ইণ্ডিয়ান রেলওয়ে|ইস্ট ইণ্ডিয়ান রেলওয়ের]] কমিটি অফ অডিটের চেয়ারম্যানের পদ গ্রহণ করেন। তিনি তিন বার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্যপদ পাওয়ার জন্য ব্যর্থ চেষ্টা করেন; [[ইপ্‌স্‌উইচ]] থেকে ১৮৫৭ খ্রিঃ এবং [[হারউইচ]] থেকে ১৮৫৯ ও ১৮৬১ খ্রিঃ।
 
বলা হয় জন ক্লার্ক মার্শম্যান মৃত্যুর সময় ভারতের অবস্থা সম্পর্কে পরপর চার জন ভাইসরয়ের ব্যক্তিগত কোনো সহকারীর সমান জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। ৮ই জুলাই ১৮৭৭ খ্রিঃ উত্তর [[কেনসিংটন|কেনসিংটনের]] র‍্যাডক্লিফ স্কোয়ারে তাঁরতার মৃত্যু হয়।
 
==রচনা==