সাঁওতালি ভাষা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৩৫৭ নং লাইন:
তিনি বাংলা ভাষায় সাঁওতালি ভাষার প্রবল প্রভাবটি তুলে ধরেন।
তিনি উভয় ভাষার একে অপরের উপর যে প্রভাব ফেলেছে তা নিয়ে বিস্তারিত অধ্যয়নের উপর ভিত্তি করে তিনি এই সিদ্ধান্তে আসেন।
এছাড়াও প্রসিদ্ধ ভাষাবিদ [[ক্ষুদিরাম দাস]] তাঁর ''সাঁওতালি বাংলা সমশব্দ অভিধান'' এবং ''[http://professorkhudiramdas.com/files/ebooks/Bangla-santali-vasa-samporko-by-khudiram-das.pdf বাংলা সাঁওতালী ভাষা-সম্পর্ক]'' বইগুলিতে বাংলা ভাষার উপর সাঁওতালি ভাষার প্রবাভের বিষয় লিখেছেন। ঐতিহাসিক অসিত কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন "ক্ষুদিরাম বাবু ইদানিং  সাঁওতালী ভাষা নিয়ে খুব বিব্রত হয়ে পড়েছিলেন । বাংলা ভাষার মূলে যে বিষাদ কিরাতের ভাষা দিব্য আসর জমিয়ে বসে আছে, তা তাঁর পূর্বে আমরা ততটা বুঝতে পারিনি। কারণ আর্যাবতংসেরা কোল্লভীল্লদের নিকট –আত্মীয় তা স্বীকার করতে সঙ্কোচ হয়, মনু-পরাশরের উত্তরীয়ের খুঁট ধরে কোনো প্রকারে আর্যমির গৌরব রক্ষা করতে চাই, কিন্তু ভাষাতত্ত্ব নামক দাস-দস্যু- ব্রাত্যসম্প্রদায় পথ আগলে দাঁড়িয়ে আছে। বাংলা ভাষা ধাত্রী কে , বা কে কে। বৈদিক, সংস্কৃত, পালি-প্রাকৃত-অপভ্রংশ- “ কস্মৈ দেবার হবিষা বিধেম” । বাংলা শব্দ ভাণ্ডার যে নৈকষ্যকুলীন ভঙ্গবংশজে আসর জমিয়ে বসে আছে তা নয়। অধিকাংশ শব্দের যজ্ঞোপবীত নেই, কোনো সংস্কারই নেই, কী বৈদিক, আর কী পৌরাণিক। এক্টু-আধটু তান্ত্রিক বৌদ্ধদের সাধন-ভজন সংক্রান্ত শব্দ থাকতে পারে- যা সহজিয়া বৌদ্ধ, বৈষ্ণব সহজিয়া, নাথপন্থ, আউল-বাউলের সাধনভজনের মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষার মধ্যে আত্মগোপন করে দিব্য বসবাস করছে, কে তাদের বংশ পরিচয় জিজ্ঞাসা করে। তা হলে ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে। ডঃ ক্ষুদিরাম দাস মহাশয় ভাষা-খনিত্র দিয়ে সেই ব্রাত্যবৃষলের নষ্ট-কোষ্ঠী উদ্ধার করছেন।" প্রফেসর ক্ষুদিরাম দাস শুধু এক রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ নন, ভাষাবিদ্যার ভুবনে তাঁর মৌলিকতা আমাদের চমৎকৃত করে। বিশেষ করে ‘সাঁওতাল বাংলা সমশব্দ অভিধান’ (১৯৯৮) টি- ভাষাচার্য সুনীতিকুমারকে মনে করিয়ে দেয়। ভারতীয় ভাষাগোষ্ঠীতে (১) ইন্দো আর্য, (২) অস্ট্রিক বা কোল-মুণ্ডা শ্রেণী (৩) দ্রাবিড় এবং (৪) বিদেশি। এই ভাষাগোষ্ঠীগুলির মাতৃভাষা বা কথাভাষা আঞ্চলিকতায় একটি বিশিষ্ট স্থান আছে। শুধু তাই নয় ‘গ্রাম্য শব্দগুলিই ভাষাবিজ্ঞানের মূল ভিত্তি’। অথচ খুবই পরিতাপের বিষয়- কোনো কোনো ভাষাতাত্ত্বিকের লেখাতে ভাষাবিজ্ঞানের নিয়মের বাইরে গিয়ে মন গড়া অবৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্তে জোর করে সাঁওতালি শব্দগুলিকে, সংস্কৃত ভাষার ব্যুৎপত্তি হিসাবে খাড়া করার চেষ্টা চলছে। ভাষাবিদ ক্ষুদিরাম দাস, তাঁর গবেষণা মূলক প্রসঙ্গ যুক্তি সহকারে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাই সাঁওতালি ভাষার লিপি আছে কি নেই, কিংবা সাঁওতালি ভাষা লিপি নিয়ে যতই বিতর্ক চলতে থাকুক। প্রচলিত সাঁওতালি শব্দ নিয়ে তিনি এই অভিধানকে সামনে এনেছেন। বিশ্বের দু-তিনটি আদিবাসী ছাড়া, কোনও আদিবাসী জনজাতির লিপি নেই। আর যাদের লিপি আছে, তারা কিছুই লিপিবদ্ধ করেনি। সবই রয়ে গেছে মৌখিক ঐতিহ্যে। সাঁওতাল ভাষার সাহিত্য আছে। মৌখিক ঐতিহ্যে লোককথা গান ছাড়া প্রবাদ ধাঁধার মধ্যে তাদের সব কথা আছে। সাঁওতাল সমাজের আশা- আকাঙ্ক্ষার কথা, অভিজ্ঞতার কথা, সংগ্রামের কথা আছে। কিন্তু তা লিখিত নেই। সাঁওতাল উন্নত মৌখিক ঐতিহ্য থেকে সমগ্র দেশ-বিশ্ব সমৃদ্ধ হয়েছে। সাঁওতালেরা প্রাণের আনন্দে গান গেয়েছে। সামাজিক জীবনচর্যায় ইচ্ছা পূরণের তাগিদে অফুরন্ত রূপকথা- পশুকথা- নীতিকথা সৃষ্টি করেছে। খেয়ালি প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করে বাঁচার রসদ সংগ্রহ করেছে। শোষিত সামন্তপ্রভুদের বিরুদ্ধে তীব্র সংগ্রাম করে গান গেয়েছে। তার থেকে লোককথা সৃষ্টি করেছে। আর সবই রয়েছে মৌখিক ঐতিহ্যের পরস্পরায়।
 
২০১৩ সালে ভারতের [[বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ভারত)|বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন]] বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় ব্যবহারের জন্য [[জাতীয় যোগ্যতা পরিক্ষা]]য় সাঁওতালি ভাষাকে চালু করেন।<ref>[http://www.ugcnetonline.in/Subject_Code_95.pdf Syllabus for UGC NET Santali, Dec 2013]</ref>