দত্তাত্রেয় রামচন্দ্র বেন্দ্রে: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
InternetArchiveBot (আলোচনা | অবদান)
1টি উৎস উদ্ধার করা হল ও 0টি অকার্যকর হিসেবে চিহ্নিত করা হল। #IABot (v2.0beta10ehf1)
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
২৬ নং লাইন:
|আর্কাইভের-তারিখ = ২০০৬-০৪-২৭
|অকার্যকর-ইউআরএল = হ্যাঁ
}}</ref> ব্যক্তি ছিলেন দত্তাত্রেয় রামচন্দ্র বেন্দ্রে। তিনি ''অম্বিকাতনয়দত্ত'' ছদ্মনামে লিখতেন। [[উডুপি]] আদামারু তাঁকেতাকে ''কর্ণাটক কুল তিলক'' উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। ভারত সরকার তাঁকেতাকে [[পদ্মশ্রী]] সম্মান প্রদান করেন।
 
== জীবন ==
=== প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা ===
দত্তাত্রেয় রামচন্দ্র বেন্দ্রের জন্ম [[কর্ণাটক|কর্ণাটকের]] [[ধরওয়াড়|ধরওয়াড়ের]] একটি চিৎপবন ব্রাহ্মণ পরিবারে। তাঁরতার পিতামহ ছিলেন একজন ''দশগ্রন্থী'' (দশশাস্ত্রবিদ) ও [[সংস্কৃত সাহিত্য|ধ্রুপদি সংস্কৃত সাহিত্যে]] সুপণ্ডিত। দত্তাত্রেয়ের পিতাও ছিলেন এক সংস্কৃত পণ্ডিত। মাত্র বারো বছর বয়সে দত্তাত্রেয়ের পিতৃবিয়োগ হয়। তাঁরতার মা অম্বিকা একটি ''খানাবলি'' বা ভোজনালয়ে কাজ করে পরিবারের অন্নসংস্থান করতেন। মায়ের নামানুসারেই তিনি তাঁরতার ''অম্বিকাতনয়দত্ত'' ছদ্মনামটি গ্রহণ করেন। এই নামের অর্থ ছিল অম্বিকার পুত্র দত্ত। ধরওয়াড়েই তিনি তাঁরতার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। ১৯১৩ সালে কাকার অর্থসাহায্যে পাস করেন ম্যাট্রিক পরীক্ষাও। এরপর উচ্চশিক্ষার্থে তিনি ভর্তি হন [[পুনে]]র [[ফার্গুসন কলেজ|ফার্গুসন কলেজে]]। ডিগ্রি অর্জনের পর বেন্দ্রে ধরওয়াড়ে ফিরে আসেন এবং সেখানকার ভিক্টোরিয়া হাইস্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯১৯ সালে লক্ষ্মীবাই নাম্নী এক রমণীর সঙ্গে তাঁরতার বিবাহ হয়। ১৯৩৫ সালে তিনি এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন।<ref>[http://www.dharwad.com/bendre/info.html Dharwad.com - Bendre's bio data] retrieved on 5/27/07</ref>
 
=== কর্মজীবন ===
৩৬ নং লাইন:
 
=== পরবর্তী জীবন ===
১৯২২ সালে দত্তাত্রেয় ''গেলেয়ারা গুম্পু'' (বন্ধুগোষ্ঠী) গঠন করেন। সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে আলাপ আলোচনার জন্য এই গোষ্ঠীর সদস্য ছিলেন বিশিষ্ট কন্নড় কবি ও সাহিত্যিকেরা। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য [[আনন্দ কাণ্ড]], [[শাম. বা. জোশী]], [[সিদ্দবনহল্লি কৃষ্ণ শর্মা]], [[এঙ্কে]], [[জি. বি. জোশী]], [[ভি. কে. গোকক]] ও [[আর. এস. মুগালি]]। ১৯২৬ সালে দত্তাত্রেয় ''নাদ-হব্বা'' নামে এক সাংস্কৃতিক আন্দোলন শুরু করেন। স্বদেশ ও সংস্কৃতির এই উৎসব আজও কর্ণাটকে [[নবরাত্রি]] উপলক্ষে পালিত হয়। ১৯৩২ সালে রাজদ্রোহমূলক ''নরবলি'' রচনার জন্য তিনি কারারুদ্ধ হন। পরে মুগাদ গ্রামে তাঁকেতাকে গৃহবন্দী করেও রাখা হয়। তাঁরতার নয় সন্তানের মধ্যে জীবিত ছিলেন কেবলমাত্র তাঁরতার দুই পুত্র পাণ্ডুরঙ্গ ও বামন এবং কন্যা মঙ্গলা। ১৯৪৩ সালে [[শিমোগা]]য় আয়োজিত ২৭তম [[কন্নড় সাহিত্য সম্মেলন|কন্নড় সাহিত্য সম্মেলনের]] পৌরহিত্য করেন। পরে তিনি [[কন্নড় সাহিত্য পরিষদ|কন্নড় সাহিত্য পরিষদের]] ফেলো নির্বাচিত হন। ১৯৭২ সালে [[কর্ণাটক সরকার]] তাঁরতার জীবন সম্পর্কিত একটি তথ্যচিত্র প্রযোজনাও করেন।
 
== রচনা ও বার্তা ==
প্রথম দিকে বেন্দ্রে কথ্যভাষায় সাধারণ ও জাগতিক প্রেমমূলক কবিতা রচনা করতেন। তাঁরতার পরবর্তীকালের রচনাগুলির মধ্যে গভীর সামাজিক ও দার্শনিক বিষয়বস্তুর সন্ধান পাওয়া যায়। কন্নড় সাহিত্যের বিশিষ্ট সমালোচক [[জি. এস. আমুর]] মন্তব্য করেছেন, “অখণ্ড ব্যক্তিসত্ত্বায় বিশ্বাসী হলেও বেন্দ্রে নিজেকে একটি ত্রিমুখী সত্ত্বা হিসেবে মেলে ধরতেন: তাঁর দৈহিক সত্ত্বা দত্তাত্রেয় রামচন্দ্র বেন্দ্রে; তাঁর চিন্তাশীল সত্ত্বা অধ্যাপক বেন্দ্রে ও তাঁর সৃষ্টিশীল সত্ত্বা অম্বিকাতনয়দত্ত। তাঁর ধ্যানধারণাকে রূপদান করতে তিনি যে রূপকল্পগুলি ব্যবহার করতেন তা থেকেই স্পষ্ট যে মানসিকভাবে এই তিন সত্ত্বা ছিল পরস্পরের পরিপূরক। তিনি বলতেন অম্বিকাতনয়দত্ত ও অধ্যাপক বেন্দ্রে নদী ও তার দুই কূল অথবা উদর ও পৃষ্ঠদেশের মতোই পরস্পর সংযুক্ত। একটিকে ছাড়া অপরটির কোনো অস্তিত্ব নেই।”
 
দত্তাত্রেয়কে আধুনিক কন্নড় কবিতার পুরোধাপুরুষ মনে করা হয়। উপকথা, [[বচন সাহিত্য|বচন]] ও ''কীর্তনের'' মাধ্যমে তাঁরতার কবিতা কন্নড় কাব্য ঐতিহ্যের সঙ্গে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। দেশীয় ছন্দের ব্যবহার ছাড়াও তিনি দেশীয় চিত্রকল্প, লোককথা, [[ভারতীয় পুরাণ|ভারতীয় পুরাণের]] উপমা ও সাধারণ লোকের কথ্যভাষায় প্রয়োগ ঘটান তাঁরতার কাব্যে। ''নাদলীলা'' সম্ভবত তাঁরতার সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ কাব্য সংকলন। দেশাত্মবোধ, সংস্কারপন্থী আগ্রহ, ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতি সমালোচনামূলক মনোভাব, ঐতিহ্যগত শক্তির সংহতি, অতিন্দ্রীয়বাদ, কবির ব্যক্তিসত্ত্বার আরোপণ প্রভৃতি নবোদয় কবিতার সকল বৈশিষ্ট্য তাঁরতার কাব্য সংকলনে বিদ্যমান ছিল।
 
আধ্যাত্মিক কবিতার জন্য দত্তাত্রেয় ব্যবহার করেছেন নানা কৌশল; সনেটের জন্য বেছে নিয়েছেন ধ্রুপদি শৈলী; আবার রাখালিয়া ও লৌকিক গীতিকবিতাগুলির জন্য ব্যবহার করেছেন লোকপ্রচলিত উপমাগুলি। প্রতীকবাদ তাঁরতার কাব্যের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তাঁরতার কবিতা ''পাতারগিত্ত'' (প্রজাপতি) প্রলোভনের রং সংক্রান্ত একটি শিশুপাঠ্য ছড়া। ''মুদালমানিয়া'' (প্রভাত) কবিতাটি সর্বত্রব্যাপী শান্তি বা সেই শান্তির প্রতি কবির আখাঙ্ক্ষার প্রতীক হয়ে উঠেছে। ''কুনিয়োনু বারা'' (নৃত্য চিরন্তন) কবিতাটিতে দেখানো হয়েছে কিভাবে নানা বিপরীতমুখী চিন্তার স্রোত একটি মহৎ সংগমে মিলিত হয়েছে। মনে হয় যেন, দত্তাত্রেয়ের সকল কবিতাতেই সুর বসানো যায়। এগুলি অনুপ্রাসে পরিপূর্ণ। কিন্তু এর মধ্যে এমন এক গোপন অর্থ নিহিত আছে যা কেবল বিদগ্ধ কবিমনই উদ্ধার করতে পারে।
 
ব্যক্তি হিসেবে দত্তাত্রেয় ছিলেন বন্ধুত্বপূর্ণ, বিনয়ী ও মিশুকে। তিনি সমানভাবে বিদ্বজ্জন ও গ্রামীণ অশিক্ষিত সাধারণের মধ্যে বিচরণ করেন। তিনি বহুবর্ণী জীবন ভালবাসতেন এবং তারই বর্ণনা দেন।
 
জীবনের শেষভাগে দত্তাত্রেয় সংখ্যাতত্ত্বে আগ্রহী হয়ে পড়েছিলেন। এই আগ্রহ তাঁরতার কাছে নতুন কিছু না হলেও এই সময়ে এটিই তাঁরতার চিন্তাভাবনার কেন্দ্রে উঠে আসে। ১৯৭৬ সালে [[ডোম মোরিস]] কর্ণাটক ভ্রমণে আসেন তখন তাঁকেতাকে সম্পূর্ণরূপে সংখ্যাতত্ত্বে নিমজ্জিত অবস্থায় দেখেন। ''বিশ্বধারণসূত্র'' ও ''আ থিওরি অফ ইম্মর্টালিটি'' গ্রন্থদ্বয়ে তিনি সকল জ্ঞানকে সংখ্যা রূপে অনুভব করার এক উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রচেষ্টায় রত হয়েছিলেন।
 
== সম্মাননা ==