নীরদচন্দ্র চৌধুরী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
১৬ নং লাইন:
| পুরস্কার =
}}
'''নীরদচন্দ্র চৌধুরী''' ([[জন্ম]]: [[২৩ নভেম্বর]], [[১৮৯৭]] - [[মৃত্যু]]: [[১ আগস্ট]], [[১৯৯৯]]) একজন খ্যাতনামা দীর্ঘজীবী বাঙালি মননশীল লেখক ও বিশিষ্ট চিন্তাবিদ। ''[[স্কলার এক্সট্রাঅর্ডিনারী]]'' শীর্ষক [[ম্যাক্স মুলার|ম্যাক্স মুলারের]] জীবনী লিখে ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে নীরদচন্দ্র চৌধুরী ভারত সরকার প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাহিত্য সম্মাননা হিসেবে [[সাহিত্য অকাদেমী পুরস্কার|সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার]] লাভ করেন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=সাহিত্য অকাদেমির ওয়েবসাইট |ইউআরএল=http://www.sahitya-akademi.gov.in/old_version/awa10304.htm#english |সংগ্রহের-তারিখ=৬ ফেব্রুয়ারি ২০১১ |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20090331233952/http://www.sahitya-akademi.gov.in/old_version/awa10304.htm#english#english |আর্কাইভের-তারিখ=৩১ মার্চ ২০০৯ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref> তিনি তাঁরতার ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গি ও তীর্যক প্রকাশভঙ্গীর জন্য বিশেষভাবে আলোচিত ছিলেন।
 
== কর্মজীবন ==
উপেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী ও সুশীলা সুন্দরী চৌধুরানীর ৮ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় নীরদ চৌধুরী তৎকালীন [[বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি|ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলা]] (বর্তমান [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]]) [[কিশোরগঞ্জ জেলা|কিশোরগঞ্জ জেলার]] [[কটিয়াদী|কটিয়াদীতে]] ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ এবং [[কলকাতা|কলকাতায়]] পড়াশোনা করেছেন। এফএ পরীক্ষা পাশ করে তিনি কলকাতার [[রিপন কলেজ|রিপন কলেজে]] (বর্তমান [[সুরেন্দ্রনাথ কলেজ]]) অন্যতম বাঙালি লেখক [[বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়|বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের]] সাথে একত্রে ভর্তি হন। এরপর নীরদ কলকাতার অন্যতম খ্যাতিমান [[স্কটিশ চার্চ কলেজ|স্কটিশ চার্চ কলেজে]] ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হন। ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে [[কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়|কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের]] অধীন স্কটিস চার্চ কলেজের ছাত্র হিসেবে তিনি [[ইতিহাস|ইতিহাসে]] সম্মানসহ [[স্নাতক]] ডিগ্রি অর্জন করেন এবং মেধা তালিকায় নিজের স্থান করে নেন। স্কটিশ চার্চ কলেজের সেমিনারে ভারতবর্ষের অতিপরিচিত ব্যক্তিত্ব ও [[ইতিহাসবেত্তা]] প্রফেসর [[কালিদাস নাগ|কালিদাস নাগের]] সাথে অংশগ্রহণ করেন। স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ডিগ্রিতে ভর্তি হলেও ১৯২০-এর অনুষ্ঠিত এম. এ. পরীক্ষায় অংশ না নেয়ায় [[স্নাতকোত্তর]] ডিগ্রি অর্জন করতে পারেন নি। এখানেই তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ইতি। ইতোমধ্যে ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দে ''Objective Methods in History'' শিরোনামে একটি তাত্ত্বিক প্রবন্ধ রচনা করেন|
 
নীরদ চৌধুরীর কর্মজীবনের সূত্রপাত হয় ব্রিটিশ-ভারতীয় সেনাবাহিনীর হিসাবরক্ষণ অধিদপ্তরে একজন [[কেরাণী]] হিসেবে। চাকুরির পাশাপাশি একই সময়ে তিনি বিভিন্ন ধরণের প্রবন্ধ রচনা করতে থাকেন। জনপ্রিয় সাময়িকীগুলোতে নিবন্ধ পাঠানোর মাধ্যমে লেখার জগতে অংশগ্রহণ করতে শুরু করেন। তার প্রথম নিবন্ধটি ছিল [[অষ্টাদশ শতক|অষ্টাদশ শতকের]] বিখ্যাত বাঙালি কবি [[ভারত চন্দ্র|ভারত চন্দ্রের]] উপর। এই নিবন্ধটি ঐ সময়ে কলকাতা থেকে প্রকাশিত বিখ্যাত ইংরেজি সাময়িকী "মডার্ন রিভিউ"-তে স্থান পায়। ইতোমধ্যে ১৯২৪ সালে তাঁরতার মাতা সুশীলা সুন্দররানী চৌধুরানী পরলোকগমন করেন।
 
নীরদ চৌধুরী হিসাবরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে অল্প কিছুদিন পরই চাকুরি ত্যাগ করেন এবং সাংবাদিক ও সম্পাদক হিসেবে নতুন কর্মজীবন শুরু করেন। ঐ সময়ে কলকাতা কলেজ স্কয়ারের কাছাকাছি মির্জাপুর স্ট্রিটে অন্যতম লেখক - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও [[দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার|দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের]] সাথে একত্রে বোর্ডার হিসেবে ছিলেন। তিনি তখনকার সময়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় ইংরেজি ও [[বাংলা সাময়িকী]] হিসেবে [[মডার্ন রিভিউ]], [[প্রবাসী (পত্রিকা)|প্রবাসী]] এবং [[শনিবারের চিঠি|শনিবারের চিঠিতে]] সম্পাদনা কর্মে সম্পৃক্ত ছিলেন। এছাড়াও, তিনি দুইটি ক্ষণস্থায়ী অথচ উচ্চস্তরের সাময়িকী - '''সমসাময়িক''' এবং '''নতুন পত্রিকা''' প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে [[দ্য মডার্ন রিভিউ]] পত্রিকায় [[রমানন্দ চ্যাটার্জি|রমানন্দ চ্যাটার্জির]] অধীনে সহকারী সম্পাদকের চাকুরি গ্রহণ করেন। ১৯২৭-এ বাংলা সাময়িকী [[শনিবারের চিঠি]] সম্পাদক পদের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ বছরই রবীন্দ্রনাথের সাথে তাঁরতার সৌজন্য সাক্ষাৎ ঘটে।
 
নীরদ চৌধুরী ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে লেখিকা [[অমীয়া ধর|অমিয়া ধরের]] সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। তাঁদের সংসারে তিনটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। তার মধ্যম পুত্র কীর্তি নারায়ণ চৌধুরী খ্যাতনামা ইতিহাসবিদ। জ্যেষ্ঠ পুত্র ধ্রুব নারায়ণ পিতার অনেক অপ্রকাশিত লেখা সম্পাদনা করে প্রকাশ করেছেন। পৃথ্বী তাঁদের কনিষ্ঠ সন্তান।<ref>দৈনিক সংবাদ, মুদ্রিত সংস্করণ, ৩ আগস্ট, ১৯৯৯</ref>
৩৩ নং লাইন:
নীরদ চৌধুরী ভারত ত্যাগ করে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে পাড়ি জমান ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে। এসময় Scholar Extraordinary বইটি লেখার কাজে হাত দেন। বইটি ''Scholar Extraordinary. The Life of Professor the Right Honourable Friedrich Max Muller, P.C.'' প্রচ্ছদনামে ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়। ইতোমধ্যে ভারতীয় জীবনযাত্রার এক অতি সুন্দর প্রতিচ্ছবি সম্বলিত গ্রন্থ To Live or Not to Live প্রকাশিত হয় ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে। ১৯৭৫, ১৯৭৬ এবং ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে যথাক্রমে প্রকাশ করেন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বই: ''Clive of India. A Political and Psychological Essay'', ''Culture in the Vanity Bag. Clothing and Adornment in Passing and Abiding India'' এবং ''Hinduism. A Religion to Live By''।
 
নীরদ চৌধুরীর মহান কীতি ''Thy Hand! Great Anarch! India: 1921—১৯৫২'' নামীয় গ্রন্থটি। এই গ্রন্থটি ১৯৮৭ তে প্রকাশিত হয়। তখন তাঁরতার বয়স নব্বুই। এ বয়সে তাঁরতার দৈহিক এবং মানসিক কর্মক্ষমতা অটুট ছিল। পাণ্ডিত্য ও মণীষার স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকেতাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রী প্রদান করে। ১৯৯২-এ ইংল্যান্ডের রাণী তাঁকেতাকে [[অর্ডার অব ব্রিটিশ এম্পায়ার|কমান্ডার অব দি অর্ডার অব ব্রিটিশ এম্পায়ার]] (সিবিই) উপাধি অর্পণ করেন।
 
১৯৯৪: দুঃখের বৎসর, অমিয়া চৌধুরানীর দেহত্যাগ।
৭২ নং লাইন:
== রচিত পুস্তকাদি ==
{{মূল|নীরদচন্দ্র চৌধুরীর গ্রন্থাবলি}}
তিনি [[ইংরেজি]] ও [[বাংলা]] উভয় ভাষায়ই লিখেছেন। ইংরেজিতে তাঁরতার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১১; বাংলায় ৫। এছাড়া বিভিন্ন প্রবন্ধ-নিবন্ধ সংকলন হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। উপরোল্লিখিত গ্রন্থগুলো ছাড়াও তাঁরতার কিছু অপ্রকাশিত, বিশেষ করে অগ্রন্থিত রচনা রয়ে গেছে। এগুলো ১৯৩০-৫০ কালপর্বে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও অদ্যাবধি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়নি। তাঁরতার গ্রন্থগুলোর প্রথম সংস্করণ বেশিরভাগ লন্ডন ও ভারত থেকে প্রকাশিত। কেবল ফয়জুল লতিফ চৌধুরী সংকলিত [[নীরদচন্দ্র চৌধুরীর বাংলা প্রবন্ধ]] গ্রন্থটি [[ঢাকা]] থেকে প্রকাশিত।
 
== দেহাবসান ==
নীরদ সি. চৌধুরী মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত একজন সৃষ্টিশীল এবং স্বাধীনচেতা [[লেখক]] হিসেবেই পরিগণিত ছিলেন। ৯৯ বছর বয়সে তাঁরতার শেষ বই প্রকাশিত হয়। ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে তাঁরতার স্ত্রী অমীয়া চৌধুরী [[অক্সফোর্ড|অক্সফোর্ডে]] মারা যান। [[১৯৯৯]] খ্রিষ্টাব্দে [[ইংল্যান্ড|ইংল্যান্ডের]] অক্সফোর্ডেই নিজের ১০২তম [[জন্মদিন|জন্মদিনের]] দু'মাস পূর্বে [[পরলোকগমন]] করেন ক্ষণজন্মা সাহিত্যিক ও চিন্তাবিদ নীরদ চন্দ্র চৌধুরী।
 
== আরও দেখুন ==