নেলসন ম্যান্ডেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
InternetArchiveBot-এর করা 3359497 নং সংস্করণে প্রত্যাবর্তন করা হয়েছে। (টুইং)
ট্যাগ: পূর্বাবস্থায় ফেরত
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
৩০ নং লাইন:
'''নেলসন রোলিহ্লাহ্লা ম্যান্ডেলা''' ({{IPA-xh|xoˈliːɬaɬa manˈdeːla|[[জোজা ভাষা|জোজা]] উচ্চারণ:}}; [[জন্ম]]: [[জুলাই ১৮]], [[১৯১৮]] - [[ডিসেম্বর ৫]], [[২০১৩]])<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.prothomalo.com/international/article/91759/%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%B8%E0%A6%A8_%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE_%E0%A6%86%E0%A6%B0_%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%87|শিরোনাম=নেলসন ম্যান্ডেলা আর নেই|প্রকাশক=মতিউর রহমান|সংগ্রহের-তারিখ=ডিসেম্বর ০৬, ২০১৩}}</ref> ছিলেন [[দক্ষিণ আফ্রিকা|দক্ষিণ আফ্রিকার]] গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম [[রাষ্ট্রপতি]]। তিনি ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন।
 
ম্যান্ডেলা ব্রিটিশ দক্ষিণ আফ্রিকার এমভেজোর এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ফোর্ট হেয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ও উইটওয়াটারস্র্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশুনা করেন এবং জোহানেসবার্গে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। সেখানে তিনি উপনিবেশ-বিরোধী কার্যক্রম ও আফ্রিকান জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন এবং ১৯৪৩ সালে [[আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস|আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসে]] যোগ দেন ও ১৯৪৪ সালে ইয়ুথ লিগ প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি সশস্ত্র সংগঠন উমখন্তো উই সিযওয়ের নেতা হিসাবে বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে তাঁকেতাকে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী সরকার গ্রেপ্তার করে ও অন্তর্ঘাতসহ নানা অপরাধের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। ম্যান্ডেলা ২৭ বছর কারাবাস করেন। এর অধিকাংশ সময়ই তিনি ছিলেন [[রবেন দ্বীপ|রবেন দ্বীপে]]। ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দের ১১ ফেব্রুয়ারি তিনি কারামুক্ত হন। এর পর তিনি তাঁরতার দলের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ সরকারের সঙ্গে [[শান্তি]] আলোচনায় অংশ নেন। এর ফলশ্রুতিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদের অবসান ঘটে এবং সব বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণে ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে [[গণতন্ত্র]] প্রতিষ্ঠিত হয়।
 
[[গণতন্ত্র]] ও সামাজিক ন্যায়ের প্রতীক হিসবে গণ্য ম্যান্ডেলা ২৫০টিরও অধিক [[পুরস্কার]] পেয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল [[ভারত সরকার]] প্রদত্ত ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে [[ভারতরত্ন পুরস্কার]] ও ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে [[নোবেল শান্তি পুরস্কার]]।<ref name="nobel">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://nobelprize.org/nobel_prizes/peace/laureates/1993/mandela-bio.html|শিরোনাম=Nelson Mandela - Biography|কর্ম=Nobelprize.org|প্রকাশক=[[Nobel Prize|The Nobel Foundation]]|বছর=1993|সংগ্রহের-তারিখ=30 April 2009}}</ref> তাছাড়াও তিনি ১৯৮৮ সালে [[শাখারভ পুরস্কার|শাখারভ পুরস্কারের]] অভিষেক পুরস্কারটি যৌথভাবে অর্জন করেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় ম্যান্ডেলা তাঁরতার গোত্রের নিকট '''মাদিবা''' নামে পরিচিত, যার অর্থ হল "জাতির জনক"।
 
== জীবনের প্রাথমিককাল ==
[[চিত্র:Young Mandela.jpg|thumb|left|upright|১৯৩৭ সালে ম্যান্ডেলা।<ref>[[#mandela1996|Mandela 1996]], pp. 16, 17</ref>]]
নেলসন ম্যান্ডেলা থেম্বু রাজবংশের ক্যাডেট শাখায় জন্মগ্রহণ করেন। থেম্বু রাজবংশ দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ প্রদেশের ট্রান্সকেই অঞ্চলের শাসক। <ref name="AllAfrica">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://allafrica.com/stories/200807180124.html|শিরোনাম=South Africa: Celebrating Mandela At 90|তারিখ=17 July 2008|প্রকাশক=AllAfrica.com|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008}}</ref> তাঁরতার জন্ম হয় ট্রান্সকেই এর রাজধানী উমতাতার নিকটবর্তী ম্‌ভেজো গ্রামে। <ref name="AllAfrica"/> তাঁরতার প্রপিতামহ ছিলেন নগুবেংচুকা (মৃত্যু ১৮৩২), যিনি ছিলেন থেম্বু জাতিগোষ্ঠীর ইনকোসি এনখুলু অর্থাৎ রাজা।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.ew.com/ew/article/0,,316920,00.html|শিরোনাম=Book Review - ''Higher than Hope''|শেষাংশ=Kopkind|প্রথমাংশ=Andrew|লেখক-সংযোগ=Andrew Kopkind|তারিখ=16 March 1990 |কর্ম=[[Entertainment Weekly]]|প্রকাশক =[[Time Inc.]]|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008}}</ref> এই রাজার পুত্র ম্যান্ডেলা হলেন নেলসন ম্যান্ডেলার পিতামহ। নেলসনের বংশগত নাম ম্যান্ডেলাই এই পিতামহ থেকেই পাওয়া। তবে নেলসনের পিতামহী ইক্সহিবা গোত্রের হওয়ায় রীতি অনুযায়ী তাঁরতার শাখার কেউ থেম্বু রাজবংশে আরোহণ করার অধিকার রাখেন না <ref name="mafela">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://epress.anu.edu.au/aborig_history/indigenous_biog/mobile_devices/ch08.html|শিরোনাম=The revelation of African culture in Long Walk to Freedom|শেষাংশ=Mafela|প্রথমাংশ=Munzhedzi James|তারিখ=October 2008|কর্ম=Indigenous Biography and Autobiography|প্রকাশক=[[Australian National University]]|সংগ্রহের-তারিখ=18 July 2009|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20130724060728/http://epress.anu.edu.au/aborig_history/indigenous_biog/mobile_devices/ch08.html|আর্কাইভের-তারিখ=২৪ জুলাই ২০১৩|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref>।
ম্যান্ডেলার বাবা গাদলা হেনরি মপাকানইসা ম্‌ভেজো গ্রামের মোড়ল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। <ref>{{বই উদ্ধৃতি | শেষাংশ = Guiloineau | প্রথমাংশ = Jean | শেষাংশ২ = Rowe | প্রথমাংশ২ = Joseph | শিরোনাম = Nelson Mandela: the early life of Rolihlahla Mandiba | প্রকাশক = [[North Atlantic Books]] | বছর = 2002 | পাতা = 13 | ইউআরএল = http://books.google.co.uk/books?id=4iKSlwuya1YC&pg=PA13 | আইএসবিএন =1556434170}}
</ref> তবে ঔপনিবেশিক শাসকদের বিরাগভাজন হওয়ার পরে তারা ম্যান্ডেলার পিতাকে পদচ্যুত করে। তিনি তখন তার পরিবারসহ কুনু গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। তবে তা সত্ত্বেও ম্‌পাকানইসা ইনকোসিদের প্রিভি কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন এবং থেম্বুর শাসনকর্তা হিসাবে জোঙ্গিন্তাবা দালিন্দ্যেবোকে নির্বাচিত করায় ভূমিকা রাখেন। ম্‌পাকানইসার মৃত্যুর পর দালিন্দ্যেবো ম্যান্ডেলাকে পোষ্যপূত্র হিসাবে গ্রহণ করেন। <ref name="GreatSouls">[[#Aikman|Aikman (2003)]], pp 70–71</ref> ম্যান্ডেলার পিতা ম্‌পাকানইসার ছিল চারজন স্ত্রী, ও সর্বমোট ১৩টি সন্তান (৪ পুত্র, ৯ কন্যা)। <ref name="GreatSouls"/> ম্যান্ডেলার মা ছিলেন ম্‌পাকানইসার ৩য় স্ত্রী নোসেকেনি ফ্যানি। ফ্যানি ছিলেন ম্‌পেম্ভু হোসা গোত্রের ন্‌কেদামার কন্যা। মাতামহের বাড়িতেই ম্যান্ডেলার শৈশব কাটে।<ref name=port>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.nextreads.com/display2.aspx?recid=126238&FC=1|শিরোনাম=Mandela: The Authorized Portrait|সংগ্রহের-তারিখ=26 May 2008|লেখক=Mandela, Nelson|বছর=2006|পাতা=13|আইএসবিএন=0-7407-5572-2|প্রকাশক=Andrews McMeel Pub|অবস্থান=Kansas City, Mo.}}{{অকার্যকর সংযোগ|তারিখ=ফেব্রুয়ারি ২০১৯ |bot=InternetArchiveBot |ঠিক করার প্রচেষ্টা=yes }}</ref> তাঁরতার ডাক নাম "রোলিহ্লাহ্লা"র অর্থ হলো "গাছের ডাল ভাঙে যে", অর্থাৎ "দুষ্টু ছেলে"। <ref>[[#mandela1996|Mandela 1996]], p.7</ref><ref name=longwalk/>
 
ম্যান্ডেলা তাঁরতার পরিবারের প্রথম সদস্য যিনি স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। স্কুলে পড়ার সময়ে তাঁরতার শিক্ষিকা ম্‌দিঙ্গানে তাঁরতার ইংরেজি নাম রাখেন "নেলসন"।<ref>[[#mandela1996|Mandela 1996]], p. 9.
"No one in my family had ever attended school [...] On the first day of school my teacher, Miss Mdingane, gave each of us an English name. This was the custom among Africans in those days and was undoubtedly due to the British bias of our education. That day, Miss Mdingane told me that my new name was Nelson. Why this particular name I have no idea."</ref>
 
ম্যান্ডেলার বয়স যখন ৯ বছর, তখন তাঁরতার পিতা [[যক্ষ্মা|যক্ষ্মা রোগে]] মারা যান। শাসক জোঙ্গিন্তাবা তখন তাঁরতার অভিভাবক নিযুক্ত হন।<ref name="GreatSouls"/> ম্যান্ডেলা রাজপ্রাসাদের কাছের একটি মিশনারি স্কুলে পড়াশোনা করেন। থেম্বু রীতি অনুযায়ী ১৬ বছর বয়সে ম্যান্ডেলাকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁরতার গোত্রে বরণ করে নেওয়া হয়। এর পর তিনি ক্লার্কবারি বোর্ডিং ইন্সটিটিউটে পড়াশোনা করেন।<ref name="BBC90th">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://news.bbc.co.uk/2/hi/in_depth/7500615.stm|শিরোনাম=Mandela celebrates 90th birthday|তারিখ=17 July 2008|প্রকাশক=BBC|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008}}</ref> সেখানে ম্যান্ডেলা ৩ বছরের জায়গায় মাত্র ২ বছরেই জুনিয়র সার্টিফিকেট পরীক্ষায় পাস করেন।<ref name="BBC90th"/> ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে ম্যান্ডেলা প্রিভি কাউন্সিলে তাঁরতার পিতার স্থলাভিষিক্ত হন। এরপর তিনি ফোর্ট বোফোর্ট শহরের মিশনারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হেল্ডটাউন স্কুলে ভরতি হন। এখানেই থেম্বু রাজবংশের ছাত্ররা পড়াশোনা করত।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.historicschools.org.za/view.asp?ItemID=1&tname=tblComponent2&oname=Schools&pg=front&subm=Pilot%20Schools|শিরোনাম=Healdtown Comprehensive School|প্রকাশক=Historic Schools Project: South Africa|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20110718065753/http://www.historicschools.org.za/view.asp?ItemID=1&tname=tblComponent2&oname=Schools&pg=front&subm=Pilot%20Schools|আর্কাইভের-তারিখ=১৮ জুলাই ২০১১|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> এই স্কুলে পড়ার সময়েই ১৯ বছর বয়সে ম্যান্ডেলা দৌড় ও [[মুষ্টিযুদ্ধ|মুষ্টিযুদ্ধের]] মতো খেলাধুলায় নিয়মিত অংশ নিতে শুরু করেন।<ref name=port/>
 
স্কুল থেকে পাস করার পর ম্যান্ডেলা [[ফোর্ট হেয়ার বিশ্ববিদ্যালয়|ফোর্ট হেয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে]] ব্যাচেলর অব আর্টস কোর্সে ভরতি হন। এখানেই অলিভার টাম্বোর সাথে তার পরিচয় হয়। টাম্বো আর ম্যান্ডেলা সারাজীবন ধরে ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। ম্যান্ডেলার আরেক বন্ধু ছিলেন ট্রান্সকেইয়ের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী কাইজার (কে ডি) মাটানজিমা।<ref name="mafela"/> এই বন্ধুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদেই পরবর্তীকালে ম্যান্ডেলা বান্টুস্থানের রাজনীতি ও নীতিনির্ধারণে জড়িত হন। তবে এসব নীতিমালার ক্ষেত্রে ম্যান্ডেলা ও মাটানজিমার মতবিরোধ হয়।<ref name=port/>
 
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের শেষে ম্যান্ডেলা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ছাত্র সংসদের ডাকা আন্দোলনে জড়িত হয়ে পড়েন। এর ফলে তাঁকেতাকে ফোর্ট হেয়ার থেকে চলে যেতে বলা হয়। শর্ত দেওয়া হয়, কেবল ছাত্র সংসদে নির্বাচিত সদস্য হতে পারলেই তিনি সেখানে ফেরত আসতে পারবেন।<ref>[[#mandela1996|Mandela 1996]], pp. 18-19.</ref> জীবনের পরবর্তী সময়ে কারাগারে বন্দি থাকার সময়ে ম্যান্ডেলা লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষণ কার্যক্রমের অধীনে আইনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
 
ম্যান্ডেলা ফোর্ট হেয়ার ছাড়ার অল্প পরেই জানতে পারেন, জোঙ্গিন্তাবা তাঁরতার সন্তান জাস্টিস (যুবরাজ ও সিংহাসনের উত্তরাধিকারী)এবং ম্যান্ডেলার বিয়ে ঠিক করার ঘোষণা দিয়েছেন। ম্যান্ডেলা ও জাস্টিস এভাবে বিয়ে করতে রাজি ছিলেননা। তাই তাঁরাতারা দুজনে [[জোহানেসবার্গ|জোহানেসবার্গে]] চলে যান।<ref name="mandela1996pp10,20">[[#mandela1996|Mandela 1996]], pp. 10, 20.</ref> সেখানে যাওয়ার পর ম্যান্ডেলা শুরুতে একটি খনিতে প্রহরী হিসেবে কাজ নেন।<ref name="NMF">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.nelsonmandela.org/index.php/memory/views/biography/|শিরোনাম=Nelson Mandela Biography - Early Years|প্রকাশক=Nelson Mandela Foundation|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20120309024710/http://www.nelsonmandela.org/index.php/memory/views/biography/|আর্কাইভের-তারিখ=৯ মার্চ ২০১২|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> তবে অল্পদিন পরেই খনির মালিক জেনে যান যে, ম্যান্ডেলা বিয়ে এড়াতে জোঙ্গিন্তাবার কাছ থেকে পালিয়ে এসেছেন। এটা জানার পর খনি কর্তৃপক্ষ ম্যান্ডেলাকে ছাঁটাই করেন। পরবর্তীকালে ম্যান্ডেলা জোহানেসবার্গের আইনি প্রতিষ্ঠান উইটকিন, সিডেলস্কি অ্যান্ড এডেলম্যানে কেরানি হিসেবে যোগ দেন। ম্যান্ডেলার বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষী [[ওয়াল্টার সিসুলু]] এই চাকুরি পেতে ম্যান্ডেলাকে সহায়তা করেন।<ref name="NMF"/> এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সময়ে ম্যান্ডেলা ইউনিভার্সিটি অব সাউথ আফ্রিকার দূরশিক্ষণ কার্যক্রমের অধীনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এর পরে ম্যান্ডেলা ইউনিভার্সিটি অব উইটওয়াটার্সরান্ডে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা শুরু করেন। এখানে তাঁরতার সঙ্গে জো স্লোভো, হ্যারি শোয়ার্জ এবং রুথ ফার্স্টের পরিচয় হয়। পরবর্তীতে এই বন্ধুরা [[বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন|বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনে]] সক্রিয় কর্মী হিসেবে অংশ নেন। এসময় ম্যান্ডেলা [[জোহানেসবার্গ|জোহানেসবার্গের]] উত্তরের দিকের শহর আলেক্সান্দ্রিয়াতে বাস করতেন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.nmcf.co.za/organize.html|শিরোনাম=Nelson Mandela Children's Fund - Organise|প্রকাশক=Nelson Mandela Children's Fund|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008}}{{অকার্যকর সংযোগ|তারিখ=ফেব্রুয়ারি ২০১৯ |bot=InternetArchiveBot |ঠিক করার প্রচেষ্টা=yes }}</ref>
 
== রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ==
 
দক্ষিণ আফ্রিকার ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের নির্বাচনে আফ্রিকানদের দল ন্যাশনাল পার্টি জয়লাভ করে। এই দলটি বর্ণবাদে বিশ্বাসী ছিল এবং বিভিন্ন জাতিকে আলাদা করে রাখার পক্ষপাতী ছিল।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.sahistory.org.za/pages/governence-projects/SA-1948-1976/1948-election.htm|শিরোনাম=The 1948 election and the National Party Victory|প্রকাশক=South African History Online|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008}}</ref> ন্যাশনাল পার্টির ক্ষমতায় আসার প্রেক্ষাপটে ম্যান্ডেলা সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের অসহযোগ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দের জনগণের সম্মেলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। এই সম্মেলনে মুক্তি সনদ প্রণয়ন করা হয়, যা ছিল দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের মূল ভিত্তি।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.anc.org.za/ancdocs/history/struggles/defiance.html|শিরোনাম=The Defiance Campaign|প্রকাশক=African National Congress|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20081207030314/http://www.anc.org.za/ancdocs/history/struggles/defiance.html|আর্কাইভের-তারিখ=৭ ডিসেম্বর ২০০৮|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.anc.org.za/ancdocs/history/campaigns/cop/index.html|শিরোনাম=Congress of the People, 1955|প্রকাশক=African National Congress|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20081006123445/http://www.anc.org.za/ancdocs/history/campaigns/cop/index.html|আর্কাইভের-তারিখ=৬ অক্টোবর ২০০৮|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> এই সময় ম্যান্ডেলা ও তাঁরতার বন্ধু আইনজীবী অলিভার টাম্বো মিলে ম্যান্ডেলা অ্যান্ড টাম্বো নামের আইনি প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করতেন। এই প্রতিষ্ঠানটি উকিল নিয়োগ করার মতো টাকা নেই, এমন দরিদ্র কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকানদের স্বল্প মূল্যে আইনগত সাহায্য প্রদান করত।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Callinicos|প্রথমাংশ=Luli|শিরোনাম=Oliver Tambo: Beyond the Engeli Mountains|প্রকাশক=New Africa Books|বছর=2004|পাতাসমূহ=173|আইএসবিএন=0864866666}}</ref>
 
ম্যান্ডেলার রাজনৈতিক জীবনের প্রথমভাগে তিনি [[মহাত্মা গান্ধি|মহাত্মা গান্ধির]] দর্শন দ্বারা প্রভাবিত হন। দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী কর্মীরা আন্দোলনের প্রথম দিকে গান্ধির অহিংস আন্দোলনের নীতিকে গ্রহণ করে বর্ণবাদের বিরোধিতা করেছিল।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|লেখক=Mandela, Nelson|শিরোনাম=The Sacred Warrior|কর্ম=[[Time 100: The Most Important People of the Century]]|তারিখ=3 January 2000|ইউআরএল=http://www.time.com/time/time100/poc/magazine/the_sacred_warrior13a.html|সংগ্রহের-তারিখ=26 May 2008}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=The Making of a Political Reformer: Gandhi in South Africa, 1893–1914|লেখক= Bhana, Surendra; Vahed, Goolam|বছর=2005|পাতা=149}}</ref> ম্যান্ডেলাও প্রথম থেকেই অহিংস আন্দোলনের পক্ষপাতী ছিলেন। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী শ্বেতাঙ্গ সরকার ১৯৫৬ খ্রস্টাব্দের ৫ ডিসেম্বর তারিখে ম্যান্ডেলাসহ ১৫০ জন বর্ণবাদবিরোধী কর্মীকে দেশদ্রোহিতার অপরাধে গ্রেপ্তার করে। এই মামলাটি সুদীর্ঘ ৫ বছর ধরে (১৯৫৬-১৯৬১) চলে, কিন্তু মামলার শেষে সব আসামি নির্দোষ প্রমাণিত হন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.anc.org.za/ancdocs/history/mandela/1960s/treason.html|শিরোনাম=Nelson Mandela's Testimony at the Treason Trial 1956-60|প্রকাশক=African National Congress|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20091004052928/http://www.anc.org.za/ancdocs/history/mandela/1960s/treason.html|আর্কাইভের-তারিখ=৪ অক্টোবর ২০০৯|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref>
৬৫ নং লাইন:
ম্যান্ডেলার সহকর্মী উলফি কাদেশ ম্যান্ডেলার নেতৃত্বে শুরু হওয়া এই সশস্ত্র আন্দোলনের ব্যাপারে বলেন, "When we knew that we [sic] going to start on 16 December 1961, to blast the symbolic places of apartheid, like pass offices, native magistrates courts, and things like that ... post offices and ... the government offices. But we were to do it in such a way that nobody would be hurt, nobody would get killed."<ref name="pbsfrontline">{{ওয়েব উদ্ধৃতি | ইউআরএল=http://www.pbs.org/wgbh/pages/frontline/shows/mandela/revolution/kodesh.html | শিরোনাম=Tell me about the bomb at the brickworks - Frontline The Long Walk of Nelson Mandela | প্রকাশক=PBS}}</ref> উলফির ব্যাপারে ম্যান্ডেলা বলেন, "His knowledge of warfare and his first hand battle experience were extremely helpful to me."<ref name="longwalk"/>
 
ম্যান্ডেলা নিজে তাঁরতার এই সশস্ত্র আন্দোলনকে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে নিতান্তই শেষ চেষ্টা বলে অভিহিত করেন। দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা নিপীড়ন ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে অহিংস আন্দোলন সফল হবেনা বলে তিনি উপলব্ধি করেন এবং এ জন্যই সশস্ত্র আন্দোলনের পথ বেছে নেন।<ref name="longwalk">{{বই উদ্ধৃতি|প্রথমাংশ=Nelson|শেষাংশ=Mandela|শিরোনাম=[[Long Walk to Freedom (book)|Long Walk to Freedom]]|বছর=1994|প্রকাশক=[[Little, Brown and Company]]}}</ref><ref name="rivonia">{{ওয়েব উদ্ধৃতি | লেখক=Mandela, Nelson | শিরোনাম="I am Prepared to Die" — Nelson Mandela's statement from the dock at the opening of the defence case in the Rivonia Trial | প্রকাশক=African National Congress | তারিখ=20 April 1964 | ইউআরএল=http://www.anc.org.za/ancdocs/history/mandela/1960s/rivonia.html | সংগ্রহের-তারিখ=26 May 2008 | আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/19971017203308/http://www.anc.org.za/ancdocs/history/mandela/1960s/rivonia.html | আর্কাইভের-তারিখ=১৭ অক্টোবর ১৯৯৭ | অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref>
 
পরবর্তীকালে বিশ শতকের আটের দশকে এমকে বর্ণবাদী সরকারের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ শুরু করে। এতে অনেক বেসামরিক লোক হতাহত হন।<ref name="TerrorismReader"/> ম্যান্ডেলা পরে স্বীকার করেন, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালাতে গিয়ে এএনসি অনেক সময় মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। বর্ণবাদের অবসানের পরে দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন (সত্য ও আপোস কমিশন)-এর রিপোর্ট থেকে এএনসি-র অনেক নেতা এই বিষয়ের তথ্য অপসারণ করতে চেয়েছিল--ম্যান্ডেলা এর তীব্র সমালোচনা করেন।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Mandela admits ANC violated rights, too|কর্ম=[[Financial Times]]|তারিখ=2 November 1998}}</ref>
৭৩ নং লাইন:
=== গ্রেপ্তার ও রিভোনিয়ার মামলা ===
 
প্রায় ১৭ মাস ধরে ফেরারি থাকার পর ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দের ৫ অগাস্ট ম্যান্ডেলাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকেতাকে জোহানেসবার্গের দুর্গে আটক রাখা হয়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.thehistorychannel.co.uk/site/this_day_in_history/this_day_August_5.php|শিরোনাম=5 August - This day in history|প্রকাশক=[[The History Channel]]|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://www.webcitation.org/65BamY3vQ?url=http://www.history.co.uk/this-day-in-history/August-05.html|আর্কাইভের-তারিখ=৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ম্যান্ডেলার গতিবিধি ও ছদ্মবেশ সম্পর্কে দক্ষিণ আফ্রিকার নিরাপত্তা পুলিশকে জানিয়ে দেয়, ফলে ম্যান্ডেলা ধরা পড়েন।<ref name=blum>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.thirdworldtraveler.com/Blum/CIAMandela_WBlum.html|প্রকাশক=Third World Traveller|শিরোনাম=How the CIA sent Nelson Mandela to prison for 28 years|প্রথমাংশ=William|শেষাংশ=Blum|সংগ্রহের-তারিখ=26 May 2008}}</ref><ref name=salon>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.salon.com/news/news961114.html|প্রকাশক=[[Salon.com]]|প্রথমাংশ=Jeff|শেষাংশ=Stein|শিরোনাম=Our Man in South Africa|তারিখ=14 November 1996|সংগ্রহের-তারিখ=26 May 2008}}</ref><ref>{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ =Weiner|প্রথমাংশ =Tim|বছর =2007|শিরোনাম=Legacy of Ashes|প্রকাশক=[[Penguin Group]]|পাতা=362|আইএসবিএন=978-1-846-14046-4}}</ref> তিন দিন পর তাঁকেতাকে ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে শ্রমিক ধর্মঘটে নেতৃত্ব দেওয়া এবং বেআইনিভাবে দেশের বাইরে যাওয়ার অভিযোগে তাঁকেতাকে অভিযুক্ত করা হয়। ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দের ২৫ অক্টোবর ম্যান্ডেলাকে এই দুই অভিযোগে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এর দু-বছর পর ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের ১১ জুন ম্যান্ডেলার বিরুদ্ধে এএনসি-র সশস্ত্র সংগ্রামে নেতৃত্বদানের অভিযোগ আনা হয় ও শাস্তি দেওয়া হয়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.guardian.co.uk/world/2001/feb/11/nelsonmandela.southafrica2|শিরোনাম=The Rivonia Trial|শেষাংশ=Katwala |প্রথমাংশ=Sunder|তারিখ=11 February 2001|কর্ম=The Guardian|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008 | অবস্থান=London}}</ref>
 
ম্যান্ডেলা কারাগারে বন্দি থাকার সময়ে পুলিশ এএনসি-র প্রথম সারির নেতাদের ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দের ১১ জুলাই জোহানেসবার্গের কাছের রিভোনিয়ার লিলেসলিফ ফার্ম থেকে গ্রেপ্তার করে। 'রিভোনিয়ার মামলা' নামে খ্যাত এই মামলায় ম্যান্ডেলাকেও অভিযুক্ত করা হয়। সরকারের প্রধান আইনজীবী ডক্টর পারসি ইউটার ম্যান্ডেলাসহ এএনসি-র নেতাদের অন্তর্ঘাতের অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। এছাড়াও তাঁদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়।<ref name="SAHistoryOnline">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.sahistory.org.za/pages/chronology/thisday/1963-07-11ii.htm|শিরোনাম=ANC Lilliesleaf Farm arrests|তারিখ=11 July 1963|প্রকাশক=South African History Online|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20051220142650/http://www.sahistory.org.za/pages/chronology/thisday/1963-07-11ii.htm|আর্কাইভের-তারিখ=২০০৫-১২-২০|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> ম্যান্ডেলা অন্তর্ঘাতের অভিযোগ স্বীকার করে নেন। কিন্তু বিদেশি রাষ্ট্রের দালাল হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার জন্য আনা দেশদ্রোহিতার অভিযোগটি ম্যান্ডেলা অস্বীকার করেন।<ref name="SAHistoryOnline"/>
 
প্রিটোরিয়ার সুপ্রিম কোর্টে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ম্যান্ডেলা ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের ২০ এপ্রিল তারিখে তাঁরতার জবানবন্দি দেন। ম্যান্ডেলা ব্যাখ্যা করেন, কেনো এএনসি সশস্ত্র আন্দোলন বেছে নিয়েছে।<ref name="GuardianMadiba">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.guardian.co.uk/world/2007/apr/23/nelsonmandela|শিরোনাম=An ideal for which I am prepared to die|শেষাংশ=Mandela|প্রথমাংশ=Nelson|তারিখ=20 April 1964|কর্ম=The Guardian|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008 | অবস্থান=London}}</ref> ম্যান্ডেলা বলেন যে, বহু বছর ধরে এএনসি অহিংস আন্দোলন চালিয়ে এসেছিল। কিন্তু শার্পভিলের গণহত্যার পর তাঁরাতারা অহিংস আন্দোলনের পথ ত্যাগ করতে বাধ্য হন।<ref name="TimeMag">{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.time.com/time/magazine/article/0,9171,869441-1,00.html|শিরোনাম=The Sharpeville Massacre|তারিখ=4 April 1960|কর্ম=[[Time (magazine)|TIME]]|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008}}</ref> এই গণহত্যা, কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকারকে অবজ্ঞা করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রজাতন্ত্র ঘোষণা, জরুরি অবস্থার ঘোষণা এবং এএনসিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পরে ম্যান্ডেলা ও তাঁরতার সহযোদ্ধারা অন্তর্ঘাতমূলক সশস্ত্র সংগ্রামকেই বেছে নেন। তাঁদের মতে সশস্ত্র আন্দোলন ছাড়া অন্য কোনো কিছুই হত বিনাশর্তে আত্মসমর্পণের নামান্তর।<ref name="TimeMag"/> ম্যান্ডেলা আদালতে আরো বলেন, ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দের ১৬ ডিসেম্বর তারিখে তাঁরাতারা উমখোন্তো উই সিযওয়ে অর্থাৎ এমকে-এর ম্যানিফেস্টো লেখেন। এই সংগঠনের মূল লক্ষ্য হিসেবে তাঁরাতারা বেছে নেন সশস্ত্র সংগ্রাম। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, অন্তর্ঘাতের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকায় বিদেশি বিনিয়োগকে তাঁরাতারা নিরুৎসাহিত করবেন, আর এর মাধ্যমে বর্ণবাদী ন্যাশনাল পার্টির সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করবেন।<ref name=mk>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.anc.org.za/ancdocs/history/manifesto-mk.html|শিরোনাম=Manifesto of Umkhonto we Sizwe|প্রকাশক=African National Congress|তারিখ=16 December 1961|সংগ্রহের-তারিখ=26 May 2008|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20061217090228/http://www.anc.org.za/ancdocs/history/manifesto-mk.html|আর্কাইভের-তারিখ=১৭ ডিসেম্বর ২০০৬|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> জবানবন্দির শেষে ম্যান্ডেলা বলেন, "During my lifetime I have dedicated myself to the struggle of the African people. I have fought against white domination, and I have fought against black domination. I have cherished the ideal of a democratic and free society in which all persons live together in harmony and with equal opportunities. It is an ideal which I hope to live for and to achieve. But if needs be, it is an ideal for which I am prepared to die."<ref name="rivonia"/>
 
ম্যান্ডেলার পক্ষে ব্র্যাম ফিশার, ভার্নন বেরাঞ্জ, হ্যারি শোয়ার্জ, জোয়েল জফ, আর্থার চাসকালসন এবং জর্জ বিজোস ওকালতি করেন।<ref name="RivoniaPapers">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.aluka.org/action/showCompilationPage?doi=10.5555/AL.SFF.COMPILATION.COLLECTION-MAJOR.RIVON&cookieSet=1|শিরোনাম=Rivonia Trial Papers|প্রকাশক=Aluka|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008}}</ref> মামলার শেষভাগে হ্যারল্ড হ্যানসন আইনি সহায়তার জন্য যোগ দেন। <ref name="ANCRivonia">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.anc.org.za/ancdocs/history/trials/toward_robben_island.html|শিরোনাম=Toward Robben Island: The Rivonia Trial|প্রকাশক=African National Congress|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20060113175344/http://www.anc.org.za/ancdocs/history/trials/toward_robben_island.html|আর্কাইভের-তারিখ=১৩ জানুয়ারি ২০০৬|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> কিন্তু মামলায় রাস্টি বার্নস্টেইন ছাড়া অন্য সবাইকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তবে ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের ১২ জুন দেওয়া রায়ে ফাঁসির বদলে তাঁদের সবাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। <ref name="ANCRivonia"/>
৮৫ নং লাইন:
[[চিত্র:RobbenIslandHof.jpg|thumb|right|রবেন দ্বীপের কারাগারের প্রাঙ্গন।]]
[[চিত্র:Nelson Mandela's prison cell, Robben Island, South Africa.jpg|thumb|right|রবেন দ্বীপে ম্যান্ডেলার কারাকক্ষ। এখানেই বন্দী ছিলেন দীর্ঘদিন।]]
ম্যান্ডেলার কারাবাস শুরু হয় [[রবেন দ্বীপ|রবেন দ্বীপের]] কারাগারে। এখানে তিনি তাঁরতার ২৭ বছরের কারাবাসের প্রথম ১৮ বছর কাটান।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://news.bbc.co.uk/1/hi/world/africa/7671712.stm|শিরোনাম=Mandela's jail overrun by rabbits |তারিখ=15 October 2008 |প্রকাশক=BBC|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008}}</ref> জেলে থাকার সময়ে বিশ্বজুড়ে তাঁরতার খ্যাতি বাড়তে থাকে। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৃষ্ণাঙ্গ নেতা হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেন।<ref name=nobel/> সশ্রম কারাদণ্ডের অংশ হিসেবে রবেন দ্বীপের কারাগারে ম্যান্ডেলা ও তাঁরতার সহবন্দিরা একটি চুনাপাথরের খনিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হন।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.independent.co.uk/news/world/africa/a-monument-to-mandela-the-robben-island-years-401137.html|শিরোনাম=A monument to Mandela: the Robben Island years|তারিখ=2 September 2007 |কর্ম=[[The Independent]]| প্রকাশক = Independent Print Limited|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008 | অবস্থান=London}}</ref> কারাগারের অবস্থা ছিল বেশ শোচনীয়। কারাগারেও বর্ণভেদ প্রথা চালু ছিলো। কৃষ্ণাঙ্গ বন্দিদের সবচেয়ে কম খাবার দেয়া হত।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.michigandaily.com/content/political-prisoner-recalls-time-robben-island|শিরোনাম=Political prisoner recalls time on Robben Island|তারিখ=17 October 2002 |কর্ম=[[The Michigan Daily]]|সংগ্রহের-তারিখ=9 March 2010}}</ref> সাধারণ অপরাধীদের থেকে রাজনৈতিক বন্দিদের আলাদা রাখা হত। রাজনৈতিক বন্দিরা সাধারণ অপরাধীদের চেয়েও কম সুযোগসুবিধা পেত।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://query.nytimes.com/gst/fullpage.html?res=9506E6DB103DF931A15755C0A962958260|শিরোনাম=Robben Island Journal; South Africa Ponders Fate of Apartheid's Bastille |শেষাংশ=Holmes|প্রথমাংশ=Steven A.|তারিখ=22 June 1994|কর্ম=NY Times|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008}}</ref> ম্যান্ডেলা তাঁরতার জীবনীতে লিখেছেন, তাঁকেতাকে ডি-গ্রুপের বন্দি হিসেবে গণ্য করা হত, অর্থাৎ সবচেয়ে কম সুবিধাপ্রাপ্ত বন্দিদের তালিকায় তাঁকেতাকে রাখা হয়েছিল। তাঁকেতাকে প্রতি ৬ মাসে একটিমাত্র চিঠি দেওয়া হত এবং একজনমাত্র দর্শনার্থীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হত।<ref name="Memoirs">{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Kathrada|প্রথমাংশ=Ahmed|coauthors=Mandela, Nelson|শিরোনাম=Memoirs |প্রকাশক=Zebra|বছর=2004|পাতাসমূহ=246|আইএসবিএন=1868729184}}</ref> ম্যান্ডেলাকে লেখা চিঠি কারাগারের সেন্সর কর্মীরা অনেকদিন ধরে আটকে রাখত। চিঠি ম্যান্ডেলার হাতে দেওয়ার আগে তার অনেক জায়গাই কালি দিয়ে অপাঠযোগ্য করে দেওয়া হত।<ref name=longwalk/>
 
কারাগারে থাকার সময়ে ম্যান্ডেলা লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষণ কর্মসূচির আওতায় পড়াশোনা শুরু করেন এবং আইনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।<ref name="ObserverGM">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://observer.gm/africa/gambia/article/2008/7/25/the-big-read-nelson-mandela-a-living-legend-1|শিরোনাম=The Big Read: Nelson Mandela: a living legend|তারিখ=25 July 2008|কর্ম=Daily Observer|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://www.webcitation.org/65BapbYmJ?url=http://observer.gm/africa/gambia/article/2008/7/25/the-big-read-nelson-mandela-a-living-legend-1|আর্কাইভের-তারিখ=৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> পরবর্তীকালে ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে তাঁকেতাকে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি প্রিন্সেস অ্যানের কাছে সেই নির্বাচনে হেরে যান।<ref name="ObserverGM"/>
 
দক্ষিণ আফ্রিকার [[গোয়েন্দা]] বিভাগের গুপ্তচর গর্ডন উইন্টার ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে আত্মজীবনী লেখেন, যার শিরোনাম ছিল ''Inside BOSS''।<ref name="Inside BOSS">{{বই উদ্ধৃতি|লেখক=Winter, Gordon|শিরোনাম=Inside BOSS|প্রকাশক=[[Penguin Books]] |বছর=1981}}</ref> এই আত্মজীবনীতে উইন্টার দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের একটি গোপন ষড়যন্ত্রের কথা ফাঁস করে দেন। এই ষড়যন্ত্র অনুসারে ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে ম্যান্ডেলাকে কারাগার থেকে মুক্ত করার উদ্দেশ্যে কারাগারে হামলা চালাবার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। উইন্টারের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকার গুপ্তচরেরা এই ষড়যন্ত্রে অংশ নেয় ও মদত দেয়। উদ্দেশ্য ছিল, কারাগার থেকে ম্যান্ডেলাকে পালাতে দেওয়া, যাতে তাঁকেতাকে ধাওয়া করে পুনরায় গ্রেপ্তারের নামে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলা যায়। এই ষড়যন্ত্রের খবর ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা জেনে ফেলায় তা নস্যাৎ হয়ে যায়।<ref name="InsideBOSS"/>
 
১৯৮২ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে ম্যান্ডেলাকে রবেন দ্বীপের কারাগার থেকে পোলস্‌মুর কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এসময় ম্যান্ডেলার সঙ্গে আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের উচ্চপদস্থ নেতা ওয়াল্টার সিসুলু, অ্যান্ড্রু ম্লাগেনি, আহমেদ কাথরাদা এবং রেমন্ড ম্‌লাবাকেও সেখানে নেওয়া হয়।<ref name="Memoirs"/> ধারণা করা হয়, রবেন দ্বীপে কারারুদ্ধ নতুন প্রজন্মের কৃষ্ণাঙ্গ রাজনৈতিক বন্দিদের ওপর ম্যান্ডেলা ও অন্যান্য নেতার প্রভাব কমানোর জন্যই এটা করা হয়। তরুণ কর্মীদের ওপর ম্যান্ডেলা ও তাঁরতার সহযোদ্ধাদের এই প্রভাবকে ব্যঙ্গ করে 'ম্যান্ডেলা বিশ্ববিদ্যালয়' বলা হত।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://nobelprize.org/nobel_prizes/peace/articles/mandela/index.html|শিরোনাম=Nelson Mandela and the Rainbow of Culture|শেষাংশ=Hallengren|প্রথমাংশ=Anders|তারিখ=11 September 2001|কর্ম=Nobelprize.org|প্রকাশক=The Nobel Foundation|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20080822063757/http://nobelprize.org/nobel_prizes/peace/articles/mandela/index.html|আর্কাইভের-তারিখ=২২ আগস্ট ২০০৮|অকার্যকর-ইউআরএল=না}}</ref> তবে ন্যাশনাল পার্টির তদানীন্তন মন্ত্রী কোবি কোয়েটসির মতে ম্যান্ডেলাকে স্থানান্তর করার মূল লক্ষ্য ছিল ম্যান্ডেলার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের গোপন বৈঠক ও আলোচনার ব্যবস্থা করা।<ref name=sparks/>
 
১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি বোথা [[পি ডব্লিউ বোথা]] ম্যান্ডেলাকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব দেন। শর্তটি ছিল, ম্যান্ডেলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সশস্ত্র সংগ্রাম ত্যাগ করতে হবে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://select.nytimes.com/gst/abstract.html?res=F30E12F8385F0C728CDDAB0894DD484D81|শিরোনাম=South Africa hints at conditional release for jailed black leaders|শেষাংশ=Cowell|প্রথমাংশ=Alan|তারিখ=1 February 1985|কর্ম=NY Times|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008}}{{অকার্যকর সংযোগ|তারিখ=ফেব্রুয়ারি ২০১৯ |bot=InternetArchiveBot |ঠিক করার প্রচেষ্টা=yes }}</ref> কোয়েটসিসহ অন্যান্য মন্ত্রী অবশ্য বোথার এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। তারা মত প্রকাশ করেন যে, ম্যান্ডেলা ব্যক্তিগত কারামুক্তির লোভে পড়ে কখনোই নিজের সংগঠনকে সশস্ত্র সংগ্রামের পথ থেকে সরিয়ে আনবেননা।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.anc.org.za/ancdocs/history/mandela/64-90/jabulani.html|শিরোনাম=Mandela's response to being offered freedom|প্রকাশক=ANC|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20080622004124/http://www.anc.org.za/ancdocs/history/mandela/64-90/jabulani.html|আর্কাইভের-তারিখ=২২ জুন ২০০৮|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> ম্যান্ডেলা আসলেই এই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন। তিনি তাঁরতার মেয়ে জিন্দজির মাধ্যমে একটি বিবৃতি দেন, যাতে তিনি বলেন,
 
{{cquote|"What freedom am I being offered while the organisation of the people remains banned? Only free men can negotiate. A prisoner cannot enter into contracts." (আমাকে মুক্ত করার জন্য দেওয়া এ কেমনতরো প্রস্তাব, যেখানে জনগণের সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করে রাখা হচ্ছে? কেবল মুক্ত মানুষই আলোচনায় বসতে পারে। বন্দিরা কখনো চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারেনা।)<ref name=sparks>{{বই উদ্ধৃতি | শিরোনাম=Tomorrow is Another Country | প্রথমাংশ=Allister | শেষাংশ=Sparks | লেখক-সংযোগ=Allister Sparks | বছর=1994 | প্রকাশক=Struik}}</ref>}}
৯৯ নং লাইন:
ম্যান্ডেলা ও ন্যাশনাল পার্টি সরকারের মেধ্যকার প্রথম আলোচনাটি অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে। কোবি কোয়েটসি ম্যান্ডেলার সঙ্গে [[কেপ টাউন|কেপ টাউনের]] ভোক্স হাসপাতালে দেখা করেন। ম্যান্ডেলা তখন প্রস্টেট গ্রন্থির শল্য চিকিৎসা শেষে আরোগ্য লাভ করছিলেন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.mandela-children.ca/index.php?option=com_content&task=view&id=109|শিরোনাম=Key Dates in South African History|প্রকাশক=Nelson Mandela Children's Fund|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20081224194250/http://www.mandela-children.ca/index.php?option=com_content&task=view&id=109|আর্কাইভের-তারিখ=২৪ ডিসেম্বর ২০০৮|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> পরের চার বছর ধরে ম্যান্ডেলার সঙ্গে সরকার একাধিকবার আলোচনায় বসে। কিন্তু এসব আলোচনায় বিশেষ কিছু অগ্রগতি হয়নি।<ref name=sparks/>
 
১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে ম্যান্ডেলাকে ভিক্টর ভার্সটার কারাগারে সরিয়ে নেওয়া হয়। মুক্তির আগে পর্যন্ত ম্যান্ডেলা এখানেই বন্দি ছিলেন। আস্তে আস্তে তাঁরতার ওপর কড়াকড়ি কমানো হয় এবং দর্শনার্থীদের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়। ম্যান্ডেলার ছাত্রজীবনের বন্ধু হ্যারি শোয়ার্জ এসময় তাঁরতার সঙ্গে দেখা করেন।
 
ম্যান্ডেলার কারাবন্দিত্বের সময়ে তাঁরতার মুক্তির জন্য স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের ওপর চাপ বাড়তে থাকে। ম্যান্ডেলার মুক্তির জন্য এই আন্দোলনের বহুল ব্যবহৃত শ্লোগানটি ছিল, ''Free Nelson Mandela!'' (''ম্যান্ডেলার মুক্তি চাই'')<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.anc.org.za/ancdocs/history/campaigns/prisoner.html|শিরোনাম=Free Nelson Mandela|তারিখ=July 1988|প্রকাশক=ANC|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20090711204340/http://www.anc.org.za/ancdocs/history/campaigns/prisoner.html|আর্কাইভের-তারিখ=১১ জুলাই ২০০৯|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি বোথা হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তাঁরতার স্থলাভিষিক্ত হন ফ্রেডেরিক উইলেম ডি ক্লার্ক।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.independent.co.uk/news/world/africa/pw-botha-unrepentant-defender-of-apartheid-dies-aged-90-422425.html|শিরোনাম=PW Botha, unrepentant defender of apartheid, dies aged 90|তারিখ=1 November 2006 |কর্ম=The Independent| প্রকাশক = Independent Print Limited|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008 | অবস্থান=London}}</ref> রাজনৈতিক এই পটপরিবর্তনের পরেই ডি ক্লার্ক ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে ম্যান্ডেলাকে মুক্তি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Malam|প্রথমাংশ=John|শিরোনাম=The Release of Nelson Mandela: 11 February 1990|প্রকাশক=Cherrytree Books|বছর=2002|আইএসবিএন=1842341030}}</ref>
 
ম্যান্ডেলার কারাবন্দিত্বের সময়ে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির দূতেরা বেশ কয়েকবার তাঁরতার সঙ্গে রবেন দ্বীপ ও পোলস্‌মুর কারাগারে দেখা করেন। এই সাক্ষাতগুলো সম্পর্কে ম্যান্ডেলা বলেন, "to me personally, and those who shared the experience of being political prisoners, the Red Cross was a beacon of humanity within the dark inhumane world of political imprisonment." (''ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য এবং আমার মতো অন্য রাজনৈতিক বন্দিদের জন্য রেড ক্রস ছিল কারাগারের অমানুষিক নিষ্ঠুর অন্ধকার জগতে আলোর দিশা।'')<ref>http://icrc.org/web/eng/siteeng0.nsf/html/south-africa-feature-020709 South Africa: commemorating 150 years since the battle of Solferino</ref><ref>http://icrc.org/web/eng/siteeng0.nsf/htmlall/5pkj9a Nelson Mandela: Red Cross a "beacon of humanity" for political prisoners</ref>
 
=== মুক্তি ===
১১১ নং লাইন:
{{cquote|"our resort to the armed struggle in 1960 with the formation of the military wing of the ANC (Umkhonto we Sizwe) was a purely defensive action against the violence of apartheid. The factors which necessitated the armed struggle still exist today. We have no option but to continue. We express the hope that a climate conducive to a negotiated settlement would be created soon, so that there may no longer be the need for the armed struggle." (১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে আমরা সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করতে বাধ্য হই। বর্ণবাদের হিংস্রতার হাত থেকে আত্মরক্ষার খাতিরেই আমরা আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সশস্ত্র অঙ্গসংগঠন উমখান্তো উই সিযওয়ে গঠন করেছিলাম। সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করার পেছনের কারণগুলো এখনো রয়ে গিয়েছে। তাই এই সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া ছাড়া আমাদের হাতে আর কোনো পথ নেই। আমরা আশা করি, শান্তি আলোচনার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ অচিরেই সৃষ্টি হবে এবং আমাদের আর সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার দরকার হবেনা।)}}
 
ম্যান্ডেলা আরো বলেন, তাঁরতার মূল লক্ষ্য হল সংখ্যাগুরু কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য শান্তি নিয়ে আসা, আর স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে কৃষ্ণাঙ্গদের ভোটাধিকার সুনিশ্চিত করা।<ref name="ANCSpeech"/>
 
=== শান্তি আলোচনা ===
১২৯ নং লাইন:
== ব্যক্তিগত জীবন ==
 
ম্যান্ডেলা তিনবার বিয়ে করেন। তাঁরতার ৬টি সন্তান, ২০ জন নাতি-নাতনি এবং অনেক প্রপৌত্র রয়েছে। থেম্বুর উপজাতীয় নেতা মান্দলা ম্যান্ডেলা হলেন নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি | ইউআরএল=http://www.uq.net.au/~zzhsoszy/states/southafrica/thembu.html | শিরোনাম=Genealogical Gleanings | সংগ্রহের-তারিখ=26 May 2008 | লেখক= Soszynski, Henry | প্রকাশক=[[University of Queensland]]}}</ref>
 
=== প্রথম বিয়ে ===
 
ম্যান্ডেলার প্রথম স্ত্রী ছিলেন ইভিলিন ন্‌তোকো মাসে। ম্যান্ডেলার মতোই তাঁরওতারও বাড়ি ছিল ট্রান্সকেই অঞ্চলে। জোহানেসবার্গে তাঁদের দুজনের পরিচয় হয়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.nelsonmandela.org/index.php/memory/views/chronology/|শিরোনাম=Nelson Mandela - Timeline|প্রকাশক=Nelson Mandela Foundation|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20071012044247/http://www.nelsonmandela.org/index.php/memory/views/chronology/|আর্কাইভের-তারিখ=১২ অক্টোবর ২০০৭|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> ১৩ বছর সংসার করার পর ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। ম্যান্ডেলার অনুপস্থিতি এবং সংসার ফেলে রাজনৈতিক আন্দোলনে ম্যান্ডেলার বেশি সময় দেওয়াই ছিলো এই বিয়ে ভাঙার কারণ। তার ওপর ইভিলিন ছিলেন [[খ্রিস্টধর্ম|খ্রিস্টধর্মের]] জেহোভা'স উইটনেস মতাদর্শের অনুসারী, যাতে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ছিল।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://news.bbc.co.uk/1/hi/world/africa/1454208.stm|শিরোনাম=Mandela's life and times|তারিখ=16 July 2008 |প্রকাশক=BBC|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008}}</ref> Evelyn Mase died in 2004.<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.iol.co.za/index.php?from=rss_General&set_id=1&click_id=139&art_id=qw1084030021347B211|শিরোনাম=Madiba bids final farewell to his first wife |তারিখ=8 May 2004 |কর্ম=''[[Independent Online (South Africa)|Independent Online]]''|প্রকাশক=Independent News & Media|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008}}</ref> ইভিলিন ও ম্যান্ডেলার দুই পুত্র সন্তান (মাদিবা থেম্বেকিল (থেম্বি) (১৯৪৬-১৯৬৯) এবং মাকাগাথ ম্যান্ডেলা (১৯৫০-২০০৫)) এবং দুই কন্যা সন্তান (দুজনের নামই মাকাযিওয়ে ম্যান্ডেলা, জন্ম ১৯৪৭ ও ১৯৫৩ সালে)। প্রথম কন্যা সন্তানটি ৯ মাস বয়সে মারা যায়। দ্বিতীয় কন্যার নামটি ম্যান্ডেলা প্রথম কন্যার নামানুসারেই রাখেন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.biography.com/blackhistory/nelson-mandela.jsp|শিরোনাম=Nelson Mandela Biography - Black History|প্রকাশক=Biography.com|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008}}</ref> ম্যান্ডেলার এই চারজন সন্তানই ওয়াটারফোর্ড কামহ্লাভা এলাকার ইউনাইটেড ওয়ার্ল্ড কলেজে পড়াশোনা করে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.uwc.org/about_us/international_movement/presidents_and_patrons|শিরোনাম=UWC - Presidents and Patrons|প্রকাশক=[[United World Colleges]]|সংগ্রহের-তারিখ=28 October 2008|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20080518175724/http://www.uwc.org/about_us/international_movement/presidents_and_patrons|আর্কাইভের-তারিখ=১৮ মে ২০০৮|অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ}}</ref> ম্যান্ডেলার জ্যেষ্ঠ পুত্র থেম্বি ২৫ বছর বয়সে ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। এসময় ম্যান্ডেলা কারাগারে বন্দি ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার ম্যান্ডেলাকে তাঁরতার পুত্রের অন্তেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে দেয়নি।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Smith|প্রথমাংশ=Charlene |coauthors=Tutu, Desmond |শিরোনাম=Mandela: In Celebration of a Great Life|প্রকাশক=Struik|বছর=2004|পাতাসমূহ=41|আইএসবিএন=1868728285}}</ref> মাকাতাথ ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে ৫৪ বছর বয়সে এইডসে মারা যান। <ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি | শেষাংশ = Timberg | প্রথমাংশ = Craig | শিরোনাম = Mandela Says AIDS Led to Death of Son | সংবাদপত্র = [[The Washington Post]] | প্রকাশক = [[The Washington Post Company]] | তারিখ = 7 January 2005 | ইউআরএল = http://www.washingtonpost.com/wp-dyn/articles/A52781-2005Jan6.html | সংগ্রহের-তারিখ =16 June 2010}}</ref>
 
== পুরস্কার ও সম্মাননা ==