বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
svg flag and coa |
|||
৪১ নং লাইন:
== ইতিহাস ==
=== পূর্ব ইতিহাস ===
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলায় প্রথম বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করে সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে। এই কুঠিগুলির চরিত্র তখন পুরোপুরিই ছিল অর্থনৈতিক। [[১৬২০]] খ্রিস্টাব্দে পটনায় কোম্পানি তাদের একটি কুঠি স্থাপন করে; [[১৬২৪]]-[[১৬৩৬|৩৬]] সময়কালে উড়িষ্যার উত্তরে পিপ্পলির পুরনো [[পর্তুগাল|পর্তুগিজ]] কুঠির ধ্বংসাবশেষের উপর সম্রাটের অনুগ্রহে কোম্পানির আধিপত্য স্থাপিত হয়; [[১৬৪০]]-[[১৬৪২|৪২]] সময়কালে উড়িষ্যার [[বালেশ্বর]] ও [[হুগলি নদী]]র তীরে কলকাতার অদূরে এক স্থানে ইংরেজ সার্জন গ্যাব্রিয়েল বঘটন একটি বসতি স্থাপনা করেন। কলকাতার নিকটস্থ এই স্থানটিতে তখন একটি পর্তুগাল বসতিও ছিল। কিন্তু কোম্পানির এজেন্টরা প্রথম যুগে যে প্রতিকূলতার সম্মুখীন হন, তাতে ব্যবসা চালানো একসময় প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। [[১৬৭৭]]-[[১৬৭৮|৭৮]] সালে
=== প্রশাসনিক সংস্কার ও চিরস্থায়ী বন্দ্যোবস্ত ===
[[ওয়ারেন হেস্টিংস|ওয়ারেন হেস্টিংসের]] (ব্রিটিশ গভর্নর ১৭৭২-৮৫) আমলে বাংলায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্য সুসংহত হয়। তাঁদের কাছে শুধুমাত্র একটি বাণিজ্য অঞ্চল থেকে একটি সামরিক সহায়তাপ্রাপ্ত অসামরিক সরকারের অধীনে বাংলা পরিণত হয় একটি সামগ্রিকভাবে সেনাবিজিত অঞ্চলে। সিভিল সার্ভিস সদস্য জন শোর ও
[[লর্ড লেক]] ও [[আর্থার ওয়েলেসলি]] মারাঠাদের বিরুদ্ধে অভিযান করে [[উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত]] প্রদেশ দখল করে নেন। [[১৮৩১]] সালের পর সেখানেও চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত সমান ব্যর্থ হয়। ব্যর্থ হয় [[১৮৪৯]] সালের বিজিত [[পাঞ্জাব অঞ্চল|পাঞ্জাব]] ও [[১৮৫৬]] সালে অধিগৃহীত [[অযোধ্যা]] রাজ্যেও। এই অঞ্চলগুলি সাধারণভাবে বাংলা প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত হলেও, প্রশাসনিকভাবে পৃথক ছিল। সরকারিভাবে পাঞ্জাব, [[এলাহাবাদ]] ও [[আগ্রা]] ছিল কলকাতায় বাংলার গভর্নরের অধীনস্থ এক লেফট্যানেন্ট-গভর্নরের শাসনাধীনে। কিন্তু
=== বঙ্গভঙ্গ ১৯০৫ ===
৫৩ নং লাইন:
[[লর্ড কার্জন|লর্ড কার্জনের]] নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুসারে বাংলার সুবৃহৎ প্রদেশটি দ্বিখণ্ডিত করা হয় [[১৯০৫]] সালের অক্টোবর মাসে। [[চট্টগ্রাম বিভাগ]], [[ঢাকা বিভাগ]] ও [[রাজশাহী বিভাগ]] সহ [[মালদহ জেলা]], পার্বত্য ত্রিপুরা, [[সিলেট]] ও [[কুমিল্লা]] বঙ্গপ্রদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয় নবগঠিত [[পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশ|পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশে]]। [[ছোটনাগপুর]] অঞ্চলের পাঁচটি হিন্দিভাষী রাজ্য চং ভাকর, কোরিয়া, সিরগুজা, উদয়পুর ও যশপুর বঙ্গপ্রদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে মধ্যপ্রদেশে যুক্ত করা হয়। আবার সম্বলপুর ও পাঁচ ওড়িয়া রাজ্য বামরা, রাইরাখোল, সোনপুর, পাটনা ও কালাহান্ডি মধ্যপ্রদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে বঙ্গপ্রদেশের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। বঙ্গপ্রদেশের অন্তর্ভুক্ত হয় ৩৩টি জেলা। এগুলি হল – [[বর্ধমান জেলা|বর্ধমান]], [[বীরভূম জেলা|বীরভূম]], [[বাঁকুড়া জেলা|বাঁকুড়া]], [[অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা]], [[হুগলি জেলা|হুগলি]], [[হাওড়া জেলা|হাওড়া]], [[অবিভক্ত ২৪ পরগনা জেলা]], [[কলকাতা]], [[নদিয়া জেলা|নদিয়া]], [[মুর্শিদাবাদ জেলা|মুর্শিদাবাদ]], অবিভক্ত [[যশোর জেলা]], অবিভক্ত [[খুলনা জেলা]]; বিহারের পটনা, [[গয়া]], [[সাহাবাদ]], [[সরন]], [[চম্পারণ]], [[মজঃফরপুর]], [[দারভাঙ্গা]], [[মুঙ্গের]], [[ভাগলপুর]], [[পুর্ণিয়া]], [[সাঁওতাল পরগনা]], পান, [[হাজারিবাগ]], [[রাঁচি]], [[পালামৌ]], [[মানভূম]], [[সিংভূম]]; উড়িষ্যার [[কটক]], [[বালেশ্বর]], অঙ্গুল, সম্বলপুর ও কন্ধমল জেলাসমূহ। এছাড়া দেশীয় রাজ্য [[সিক্কিম]] এবং উড়িষ্যা ও [[ছোটনাগপুর|ছোটনাগপুরের]] সহরাজ্যগুলিও বঙ্গপ্রদেশের অন্তর্ভুক্ত হয়।
এই বিভাজনের সিদ্ধান্তটি ছিল অত্যন্ত বিতর্কিত। কারণ এর ফলে হিন্দুরা বঙ্গপ্রদেশে ও মুসলমানেরা পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণ-আন্দোলন শুরু হয়। কেউ কেউ এটিকে ‘[[ডিভাইড অ্যান্ড রুল]]’ বা বিভাজন ও শাসননীতির ঘৃণ্য প্রয়োগ মনে করেন। আবার কলকাতা-কেন্দ্রিক বাঙালি সম্প্রদায়, যাঁরা বাংলাকে দুটি সরকারে বিভক্ত করার বিরোধী ছিলেন এবং অখণ্ড বাংলার শক্তি, সমৃদ্ধি ও ঐক্যে বিশ্বাস করতেন
এই সর্বশেষ বিভাজনের ফলে নাম ব্যতীত বাংলা প্রেসিডেন্সির আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। [[১৯১৯]] সালে [[মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কার]] সাধিত হলে ভারতে যে প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা চালু হয়, তার ফলে এই নামটিও অবলুপ্ত হয়।
|