নৃসিংহ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
14টি উৎস উদ্ধার করা হল ও 0টি অকার্যকর হিসেবে চিহ্নিত করা হল। #IABot (v2.0beta10ehf1) |
|||
২১ নং লাইন:
}}
'''নৃসিংহ''' ([[সংস্কৃত]]: नरसिंह, বানানান্তরে '''নরসিংহ''') [[বিষ্ণু|বিষ্ণুর]] [[দশাবতার|চতুর্থ]] [[অবতার]]। [[পুরাণ]], [[উপনিষদ]] ও অন্যান্য প্রাচীন [[হিন্দুধর্ম|হিন্দু]] ধর্মগ্রন্থে
নৃসিংহ অর্ধ-মনুষ্য অর্ধ-[[এশীয় সিংহ|সিংহ]] আকারবিশিষ্ট।
== শাস্ত্রোল্লেখ ==
একাধিক পুরাণ গ্রন্থে নৃসিংহের উল্লেখ পাওয়া যায়। পুরাণে নৃসিংহ-সংক্রান্ত মূল উপাখ্যানটির সতেরোটি পাঠান্তর বর্তমান।<ref>Steven J. Rosen, ''Narasimha Avatar, The Half-Man/Half-Lion Incarnation'', p1</ref> কয়েকটি কাহিনি অন্যান্য কাহিনিগুলির চেয়ে একটু বিস্তারিত। নৃসিংহ অবতারের বর্ণনা রয়েছে ''[[ভাগবত পুরাণ]]'' (সপ্তম স্কন্দ), ''[[অগ্নিপুরাণ]]'' (৪।২-৩), ''[[ব্রহ্মাণ্ডপুরাণ]]'' (২।৫।৩-২৯), ''[[বায়ুপুরাণ]]'' (৬৭।৬১-৬৬), ''[[হরিবংশ]]'' (৪১ এবং ৩।৪১-৪৭), ''[[ব্রহ্মাপুরাণ]]'' (২১৩।৪৪-৭৯), ''[[বিষ্ণুধর্মোত্তর পুরাণ]]'' (১।৫৪), ''[[কূর্মপুরাণ]]'' (১।১৫।১৮-৭২), ''[[মৎস্যপুরাণ]]'' (১৬১-১৬৩), ''[[পদ্মাপুরাণ]]'' (উত্তরখণ্ড, ৫।৪২), ''[[শিবপুরাণ]]'' (২।৪।৪৩ ও ৩।১০-১২), ''[[লিঙ্গপুরাণ]]'' (১।৯৫-৯৬), ''[[স্কন্দপুরাণ]]'' ৭ (২।১৮।৬০-১৩০) ও ''[[বিষ্ণুপুরাণ]]'' (১।১৬-২০) গ্রন্থে। ''[[মহাভারত]]''-এও (৩।২৭২।৫৬-৬০) নৃসিংহ অবতারের একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা রয়েছে। এছাড়া একটি প্রাচীন বৈষ্ণব [[গোপাল তাপনী উপনিষদ|তাপনী উপনিষদ]] (''নরসিংহ তাপনী উপনিষদ'')
=== বৈদিক উল্লেখ ===
[[ঋগ্বেদ|ঋগ্বেদে]] একটি শ্লোকাংশে একটি রূপকল্পের উল্লেখ পাওয়া যায়। এই রূপকল্পটি নৃসিংহরূপী বিষ্ণুর রূপকল্প বলে অনুমিত হয়ে থাকে। উক্ত শ্লোকে বলা হয়েছে "বন্য জন্তুর ন্যায়, ভয়ংকর, বিধ্বংসী ও পর্বতচারী" রূপে বিষ্ণুর গুণ কেবল
=== নৃসিংহ ও প্রহ্লাদ ===
৩৬ নং লাইন:
''[[ভাগবত পুরাণ]]''-এ বর্ণিত নৃসিংহের কাহিনিটি নিম্নরূপ:
নৃসিংহের পূর্ববর্তী অবতার [[বরাহ]] [[হিরণ্যাক্ষ]] নামে এক রাক্ষসকে বধ করেন। হিরণ্যাক্ষের ভাই [[হিরণ্যকশিপু]] এই কারণে প্রবল বিষ্ণুবিদ্বেষী হয়ে ওঠেন। দাদার হত্যার প্রতিশোধ মানসে তিনি বিষ্ণুকে হত্যা করার পথ খুঁজতে থাকেন। তিনি মনে করেন, সৃষ্টিকর্তা [[ব্রহ্মা]] এই জাতীয় প্রবল ক্ষমতা প্রদানে সক্ষম। তিনি বহু বছর ব্রহ্মার কঠোর তপস্যা করেন। ব্রহ্মাও হিরণ্যকশিপুর তপস্যায় সন্তুষ্ট হন।<ref>[http://srimadbhagavatam.com/7/4/1/en1 Bhag-P 7.4.1] {{ওয়েব আর্কাইভ|ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20070926234834/http://srimadbhagavatam.com/7/4/1/en1 |তারিখ=২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৭ }} "Lord Brahma was very much satisfied by Hiranyakasipu's austerities, which were difficult to perform"</ref> তিনি হিরণ্যকশিপুর সম্মুখে উপস্থিত হয়ে
<blockquote>
৪৮ নং লাইন:
[[চিত্র:Narasimha statue at National Museum, New Delhi.jpg|right|210px|thumb|নৃসিংহ মূর্তি]]
হিরণ্যকশিপু যখন মন্দার পর্বতে তপস্যা করছিলেন, তখন [[ইন্দ্র]] ও অন্যান্য দেবগণ
ক্রমে প্রহ্লাদের বিষ্ণুভক্তিতে হিরণ্যকশিপু এতটাই ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত হন যে তিনি নিজ পুত্রকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন।<ref>[http://srimadbhagavatam.com/7/8/3-4/en1 Bhag-P 7.8.3-4] {{ওয়েব আর্কাইভ|ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20070926235015/http://srimadbhagavatam.com/7/8/3-4/en1 |তারিখ=২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৭ }} "Thus he finally decided to kill his son Prahlada. Hiranyakasipu was by nature very cruel</ref> কিন্তু যতবারই তিনি বালক প্রহ্লাদকে বধ করতে যান, ততবারই বিষ্ণুর মায়াবলে প্রহ্লাদের প্রাণ রক্ষা পায়। হিরণ্যকশিপু প্রহ্লাদকে বলেন
<blockquote> "ওরে হতভাগা প্রহ্লাদ, তুই সব সময়ই আমার থেকেও মহৎ এক পরম সত্তার কথা বলিস। এমন এক সত্তা যা সর্বত্র অধিষ্ঠিত, যা সকলকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং যা সর্বত্রব্যাপী। কিন্তু সে কোথায়? সে যদি সর্বত্র থাকে তবে আমার সম্মুখের এই স্তম্ভটিতে কেন নেই?"<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Bhag-P 7.8.12 |ইউআরএল=http://srimadbhagavatam.com/7/8/12/en1 |সংগ্রহের-তারিখ=১০ এপ্রিল ২০১০ |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20130926130524/http://srimadbhagavatam.com/7/8/12/en1 |আর্কাইভের-তারিখ=২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref></blockquote>
[[চিত্র:Narasimha Cambodia.jpg|left|thumb|নৃসিংহ হিরণ্যকশিপুকে নখরাঘাত করছেন, [[ব্যানটেই স্রেই]], [[কম্বোডিয়া]]]]
প্রহ্লাদ উত্তর দিলেন, ''তিনি [এই স্তম্ভে] ছিলেন, আছে ও থাকবেন।'' উপাখ্যানের অন্য একটি পাঠান্তর অনুযায়ী, প্রহ্লাদ বলেছিলেন, ''তিনি এই স্তম্ভে আছেন, এমনকি ক্ষুদ্রতম যষ্টিটিতেও আছেন।'' হিরণ্যকশিপু ক্রোধ সংবরণ করতে না পেরে গদার আঘাতে স্তম্ভটি ভেঙে ফেলেন। তখনই সেই ভগ্ন স্তম্ভ থেকে প্রহ্লাদের সাহায্যার্থে নৃসিংহের মূর্তিতে আবির্ভূত হন বিষ্ণু। ব্রহ্মার বর যাতে বিফল না হয়, অথচ হিরণ্যকশিপুকেও হত্যা করা যায়, সেই কারণেই বিষ্ণু নরসিংহের বেশ ধারণ করেন: হিরণ্যকশিপু দেবতা, মানব বা পশুর মধ্য নন, তাই নৃসিংহ পরিপূর্ণ দেবতা, মানব বা পশু নন; হিরণ্যকশিপুকে দিবসে বা রাত্রিতে বধ করা যাবে না, তাই নৃসিংহ দিন ও রাত্রির সন্ধিস্থল গোধূলি সময়ে
''[[কূর্মপুরাণ]]''-এর বর্ণনা অনুসারে, এরপর [[পুরুষ (হিন্দুধর্ম)|পুরুষ]] ও দৈত্যদের মধ্যে এক প্রবল সংগ্রাম শুরু হয়। এই যুদ্ধে তিনি পাশুপত নামে এক মহাস্ত্রকে প্রতিহত করেন। পরে প্রহ্লাদের ভাই অনুহ্রদের নেতৃত্বাধীন দৈত্যবাহিনীকে নৃসিংহ অবতারের দেহ হতে নির্গত এক মহাসিংহ যমালয়ে প্রেরণ করেন।<ref name="Soifer">p.85: K.P.1.15.70</ref> ''[[মৎস্যপুরাণ]]'' (১৭৯) গ্রন্থেও নৃসিংহ অবতারের বর্ণনার পর এই ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে।<ref name = "Soifer"/>
''[[ভাগবত পুরাণ]]''-এ আরও বলা হয়েছে: হিরণ্যকশিপুকে বধ করার পর সকল দেবতাই নৃসিংহদেবের ক্রোধ নিবারণে ব্যর্থ হন। বিফল হন স্বয়ং [[শিব|শিবও]]। সকল দেবগণ তখন
[[চিত্র:Sarabha Narasinmha Kangra.jpg|thumb|210px|নৃসিংহের সঙ্গে [[শরভ]] (ডানে)]]
৬৫ নং লাইন:
''[[শিবপুরাণ]]'' গ্রন্থে নৃসিংহ উপাখ্যানের একটি [[শৈব]] পাঠান্তর বর্ণিত হয়েছে, যা প্রথাগত কাহিনিটির থেকে একটু ভিন্ন: নৃসিংহকে শান্ত করতে শিব প্রথমে [[বীরভদ্র|বীরভদ্রকে]] প্রেরণ করেন। কিন্তু বীরভদ্র ব্যর্থ হলে শিব স্বয়ং মনুষ্য-সিংহ-পক্ষী রূপী [[শরভ|শরভের]] রূপ ধারণ করেন। এই কাহিনির শেষভাগে বলা হয়েছে, শরভ কর্তৃক বদ্ধ হয়ে বিষ্ণু শিবের ভক্তে পরিণত হন। ''[[লিঙ্গপুরাণ]]'' গ্রন্থেও শরভের কাহিনি রয়েছে।<ref name="Soifer 1991 91–92">{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Soifer|প্রথমাংশ=Deborah A.|শিরোনাম=The myths of Narasiṁha and Vāmana: two avatars in cosmological perspective|প্রকাশক=SUNY Press|তারিখ=1991|পাতা=90-91|আইএসবিএন=9780791407998|ইউআরএল=http://books.google.com/books?id=OoFDK_sDGHwC&pg=PA4}}</ref> যদিও [[বিজয়েন্দ্র তীর্থ]] প্রমুখ বৈষ্ণব [[দ্বৈত|দ্বৈতবাদী]] পণ্ডিতগণ [[পুরাণ|সাত্ত্বিক পুরাণ]] ও [[শ্রুতি]] শাস্ত্রের ভিত্তিতে নৃসিংহের উপাখ্যানটির প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিতে বিতর্কের অবকাশ রেখেছেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Sharma|প্রথমাংশ= B. N. Krishnamurti|শিরোনাম=A history of the Dvaita school of Vedānta and its literature: from the earliest beginnings to our own times|প্রকাশক=Motilal Banarsidass Publ.|তারিখ=2000|পাতাসমূহ=412|ইউআরএল=http://books.google.com/books?id=FVtpFMPMulcC&pg=PA412&}}</ref>
এই উপাখ্যান অনুসারে এবং ভক্তদের বিশ্বাস অনুযায়ী, নৃসিংহদেব
== আরও দেখুন ==
|