গদখালী ইউনিয়ন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
গদখালী
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
সংশোধন
১ নং লাইন:
'''গদখালী ইউনিয়ন''' বাংলাদেশের [[যশোর জেলা]]র [[ঝিকরগাছা উপজেলা]]র অন্তর্ভুক্ত একটি ইউনিয়ন।
গদখালী—রেহমান আনিস
স্রষ্টা প্রদত্ত সর্বাপেক্ষা মূল্যবান উপহার ফুল। যা কিনা পৃথিবীর সৌন্দর্য্য বর্ধন করে। কেড়ে নেয় দৃষ্টি। প্রশান্ত করে মন। এককালে শাপলা আর পদ্ম ছিল মিশরীয়দের রাজশক্তির প্রতীক। আর সনাতন ধর্মে দেবতাকে পূজার অর্ঘ দিতে ফুল সব সময়ই অপরিহার্য। ১৬-১৭ শতাব্দী জুড়ে নেদারল্যান্ডসে প্রথম কাটফ্লাওয়ার চাষ প্রতিষ্ঠা পায়। এর পর ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ।
 
এই ইউনিয়ন বানিজ্যিকভাবে ফুল চাষের জন্য বিখ্যাত।
এক সময়ের ‘গডকালি মন্দির’ কালের পথ পরিক্রমায় আজ ‘গদখালী’। বাংলাদেশের ফুলের রাজধানী। যশোর সদর থেকে ২০.৫০ কিলোমিটার দূরে। ঐতিহাসিক যশোর রোডের দু’পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে অতিথিদের অভিবাদন জানায় শতবর্ষী বৃক্ষকুল। বর্তমানে ঝিকরগাছা ও শার্শা উপজেলার ৯০টি গ্রামে (ছয়টি ইউনিয়ন)প্রায় ৪০০০ বিঘা জমিতে ফুল চাষ হয়। দিগন্ত বিস্তৃত ফুল ক্ষেতের মাঝ দিয়ে একেবেঁকে চলে গেছে পিচ ঢালা কালো পথ। চারিদিকে শুধু ফুল আর ফুল। বাহারি রঙের ফুলের সুবাস পাগল করে দেয় মন। চলে মৌমাছির গুঞ্জন। যেন সুখের গানে বান ডেকেছে। রয়েছে নানান রঙের নানান প্রজাতির প্রজাপতির সমারোহ।গদখালির মাঝদিয়ে রেলপথ চলে গেছে তারকাটা পেরিয়ে সোজা ভারতে। রেল লাইনের দুপাশেই অগণিত ফুল ক্ষেত। ট্রেন গদখালির কাছাকাছি এলেই যাত্রীরা হুমড়ে পড়েন জানালার দিকে।
 
১৯৮২ সালে প্রথম বাণিজ্যিক চাষ শুরু। বর্তমানে দেশের মোট ফুলের ৭০% উৎপাদিত হয় গদখালীতে। যা থেকে বছরে আয় হচ্ছে প্রায় ৫শ কোটি টাকা।সীমিতটাকা। সীমিত পরিসরে রপ্তানিও হয়ে থাকে।ডিসেম্বরথাকে। ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে উৎপাদন বেশি। আর ফেব্রুয়ারিতে বিক্রয় বেশি। এখানে ছয় হাজার চাষী এবং প্রায় ৫০ হাজার লোকসরাসরিলোক সরাসরি ফুল চাষের সাথে জড়িত। যাদের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ নারী।<ref>https://bangla.bdnews24.com/business/article1457885.bdnews</ref><ref>https://www.banglanews24.com/climate-nature/news/bd/700685.details</ref>
এখানে মৌসুমী ফসলের স্থলে বছর জুড়ে চলে ফুল চাষ। অন্যান্য ফসলের চেয়ে চার-পাঁচ গুন বেশি উপার্জন হয় ফুল চাষ থেকে। স্বর্গীয় এই ঐশ্বর্য কি অর্থমূল্যে বিচার করা সম্ভব? নিশ্চয়ই নয়।
 
==তথ্যসূত্র==
ঘরের আঙিনা থেকে শুরু করে ফসলের মাঠ, বিদ্যালয় প্রাঙ্গন, প্রতিটা স্থানেই ফুল আর ফুল। রয়েছে রজনীগন্ধ্যা, গোলাপ, জারবেরা, গ্ল্যাডিওলাস, অর্কিড,পাতাবাহার, চাঁদা, জিপসি, রথস্টিক, লিলিয়াম, গ্যালাডোলা, চন্দ্র মল্লিকা। রয়েছে লং স্টিক রোজ, কার্নিশন সহ নানা প্রজাতির ফুল। যারা রঙিন শয্যা বিছিয়ে আহবান করে সৌন্দর্য পীপাসুদের। সুঘ্রান ছড়িয়ে দেয় বাংলার বাতাসে। প্রজাপতিরা ডানায় করে সৌরভ আর সুন্দরের বার্তা বয়ে নিয়ে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। রয়েছে নজরকাড়া সব পলিহাউস। যেখানে দামী দামী ফুল অতিযত্নে চাষাবাদ করা হয়। আলো ও বৃষ্টির চরম প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য। একেকটা পলিহাউস কয়েক একর জুড়েও হয়ে থাকে। শেডে ঢুকলেই আনন্দে হৃদয় মেতে ওঠে। মুছে যায় মনের মলিনতা। দৃষ্টির সীমানায় ভেসে ওঠে নতুন এক রাজ্য। নতুন স্বপ্ন।
 
{{সূত্র তালিকা}}
১৯৮২ সালে প্রথম বাণিজ্যিক চাষ শুরু। বর্তমানে দেশের মোট ফুলের ৭০% উৎপাদিত হয় গদখালীতে। যা থেকে বছরে আয় হচ্ছে প্রায় ৫শ কোটি টাকা।সীমিত পরিসরে রপ্তানিও হয়ে থাকে।ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে উৎপাদন বেশি। আর ফেব্রুয়ারিতে বিক্রয় বেশি। এখানে ছয় হাজার চাষী এবং প্রায় ৫০ হাজার লোকসরাসরি ফুল চাষের সাথে জড়িত। যাদের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ নারী।
 
বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ। ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাঙালীরা এখন স্বাধীন মনে স্বপ্ন বুনতে জানে। আন্তর্জাতিক মানের অনুষ্ঠানও সফলভাবে সম্পন্ন করতে জানে। অতিথিকে শুভেচ্ছা এদেশে ফুল ছাড়া বেমানান। মৃত ব্যক্তির দেহাবশেষে ফুল প্রদান নিত্য ঘটনা। প্রেম প্রস্তাব, সেটি কি আর ফুল ছাড়া সম্ভব!আর বিভিন্ন অনুষ্ঠান উদযাপন ফুল ছাড়া অকল্পনীয়! ফলে বহুগুনে বেড়েছে ফুলের ব্যবহার ও চাহিদা। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সাথে সাথে শুরু হয়েছে ফুল সংস্কৃতির বিপ্লব।
 
বর্তমানে বিশ্বের ৬৮% ফুল সরবরাহ করে হল্যান্ড। ফুল রপ্তানি থেকে দেশটির মোট রপ্তানি আয়ের পাঁচ ভাগের এক ভাগ আসে। সমষ্টিক সুনজর থাকলে গদখালীও হতে পারে প্রাচ্যের হল্যান্ড। বিশ্ববাজারে ফুল রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে বাংলাদেশ। এজন্য প্রয়োজন বৃহৎ পরিসরে কোল্ডস্টোরেজ, ফুল গবেষণাকেন্দ্র, চাষীদের জন্য প্রশিক্ষণকেন্দ্র ও স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা। যা রপ্তানি আয়ে যোগ করতে পারে নতুন মাত্রা। আর দেশি-বিদেশী পর্যটকদের জন্য গদখালী হতে পারে আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু।