বেইজিং: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
InternetArchiveBot (আলোচনা | অবদান)
1টি উৎস উদ্ধার করা হল ও 0টি অকার্যকর হিসেবে চিহ্নিত করা হল। #IABot (v2.0beta14)
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
চত্ত্বর -->চত্বর
১৩৩ নং লাইন:
২০০১ সালে মনোনয়ন লাভের পর বেইজিং ২০০৮ সালে [[২৯তম গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক প্রতিযোগিতা]]র আয়োজন করে। এ উপলক্ষে শহরের উত্তরে একটি অলিম্পিক এলাকা নির্মাণ করা হয়, যেখানে প্রতিযোগিতার সিংহভাগ ক্রীড়াগুলি অনুষ্ঠিত হয়। নগরটিকে [[২০২২ সালের শীতকালীন অলিম্পিক প্রতিযোগিতা]]র আয়োজক শহর হিসেবেও নির্বাচন করা হয়। ফলে এটি ক্রীড়ার ইতিহাসে গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন উভয় সংস্করণের অলিম্পিক প্রতিযোগিতা আয়োজনকারী প্রথম শহরে পরিণত হয়। <ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.huffingtonpost.com/entry/2022-winter-olympics_55bb4805e4b06363d5a1aa34|শিরোনাম=IOC: Beijing To Host 2022 Winter Olympics|এজেন্সি=Associated Press|তারিখ=31 July 2015|কর্ম=The Huffington Post|সংগ্রহের-তারিখ=11 August 2015}}</ref>
 
মূল বেইজিং শহরটির কেন্দ্রে পুরাতন বেইজিঙের দুইটি অংশ বিদ্যমান এবং এদেরকে ঘিরে মূলত ১৯৪৯ সালের পরে নির্মিত নতুন বেইজিং শহরের আবাসিক, শিল্প ও প্রাতিষ্ঠানিক এলাকাগুলি অবস্থিত। পুরাতন শহরের উত্তর অংশে ১৩শ শতকে নির্মিত একটি বর্গাকৃতি অন্তঃস্থ শহর এবং দক্ষিণ অংশে ১৪শ শতকে নির্মিত একটি আয়তাকৃতি বহিঃস্থ শহর রয়েছে। অন্তঃস্থ শহরের একেবারে কেন্দ্রেই কুকুং নিষিদ্ধ শহর অবস্থিত। নিষিদ্ধ শহরটি চীনের মিং ও ছিং রাজবংশের সম্রাট ও তাদের পরিবারের জন্য নির্ধারিত একটি প্রাচীরঘেরা প্রাসাদ এলাকা সাধারণ নাগরিকদের এর ভেতরে ঢোকা নিষেধ ছিল। ১৯২৫ সালে প্রাসাদটিকে একটি জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয় এবং পুরো এলাকাটিকে ১৯৪৯ সালের জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। নিষিদ্ধ শহরে ঢোকার বিশাল প্রবেশদ্বারটিকে [[থিয়েনআনমেন]] (অর্থাৎ "স্বর্গীয় শান্তির প্রবেশদ্বার") বলা হয়। এই প্রবেশদ্বারের সংলগ্ন বিশাল উন্মুক্ত চত্ত্বরটিরচত্বরটির নাম [[থিয়েনআনমেন চত্ত্বরচত্বর]] বলা হয়। এখানে কুচকাওয়াজ ও শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। থিয়েনআনমেন চত্ত্বরেচত্বরে মাও সেতুং-এর সমাধি, [[চীনের জাতীয় জাদুঘর]] O চীনের জাতীয় আইনসভার মিলনায়তন অবস্থিত। নিষিদ্ধ শহর ও থিয়েনআনমেন চত্ত্বরচত্বর থেকে কিছুটা পূর্বে রয়েছে [[ওয়াংফুচিং রাজপথ]], যেখানে বেইজিং শহরের সবচেয়ে পরিচিত কেনাকাটার এলাকাটি অবস্থিত। অন্যান্য প্রধান আকর্ষণীয় স্থানের মধ্যে আছে [[গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ]], যেখানে সম্রাটেরা ছুটি কাটাতে আসতেন; এখানে [[খুনমিং হ্রদ|খুনমিং হ্রদের]] পাশে ছোট ছোট বাড়ি ও বাগান রয়েছে। স্বর্গের মন্দির নামের নগর উদ্যানে দেখতে পাওয়া যাবে বর্ণিল ও বৃত্তাকার "ভাল ফসলের জন্য প্রার্থনা কক্ষ"। ২০০৮ সালে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক প্রতিযোগিতার জন্য নির্মিত বেইজিং অলিম্পিক বাগান বা সংরক্ষিত এলাকাটিতে রয়েছে দীর্ঘ হাঁটার পথ এবং বেইজিং জাতীয় ক্রীড়াক্ষেত্র বা স্টেডিয়াম। ক্রীড়াক্ষেত্রটির স্থাপত্যে ইস্পাতের জালিকার উপস্থিতির কারণে এটিকে "পাখির বাসা" ডাকনাম দেওয়া হয়েছে। [[৭৯৮ শিল্পকলা এলাকা]]টিতে অনেক অত্যাধুনিক চিত্রপ্রদর্শনীশালা অবস্থিত। এছাড়া শহরের ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যে নির্মিত ভবনগুলি (যাদের স্থানীয় নাম "সিহেইউয়েন") এবং এই ভবনগুলির ভেতর দিয়ে চলে যাওয়া সরু সরু প্রাচীন রাস্তা ও অলিগলি (যাদের স্থানীয় নাম "হেইউয়েন") পর্যটকদের কাছে হাঁটার জন্য খুবই জনপ্রিয় এবং বেইজিং শহরের যত্রতত্র এদের দেখা মেলে (বিশেষত পশ্চাৎ হ্রদ এলাকাটিতে); এগুলির পাশ ধরে সারিসারি ছোট ছোট দোকান ও কফিঘর দাঁড়িয়ে আছে। বেইজিং শহরের কাছেই [[চীনের মহাপ্রাচীর|চীনের মহাপ্রাচীরের]] একটি অংশ বিদ্যমান যেখানে অনেক পর্যটক ঘুরে বেড়িয়ে আসেন। বেইজিং শহরে ও তার আশেপাশে সাতটি [[ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান]] রয়েছে। এগুলি হল নিষিদ্ধ শহর, স্বর্গের মন্দির, গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ, [[মিং সমাধিসমূহ]], [[চৌকৌদিয়েন]], চীনের মহাপ্রাচীর ও [[চীনের মহাখাল|চীনের মহাখালের]] অংশবিশেষ; এগুলি সবই পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়।<ref>(Chinese) [http://beijingww.qianlong.com/1470/2014/08/18/Zt290@228841.htm 走进北京七大世界文化遗产--千龙网] 18 August 2014</ref>
 
বেইজিং এর অনেক নগর-উদ্যানের জন্য সুপরিচিত। গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদটি এর সুন্দর নকশা করা বাগান , মন্দির ও সেতুর জন্য পরিচিত। [[তিয়েনতান উদ্যান]]টিতে স্বর্গের মন্দির অবস্থিত যেখানে চীনের সম্রাটরা প্রার্থনা করতেন। ১৭শ শতকে [[পেইহাই উদ্যান]]টি নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে এখানে একটি বড় হ্রদ আছে যেখানে গ্রীষ্মকালে নৌকা ভ্রমণ করা যায় আর শীতকালে এটি বরফে জমাট বেঁধে গেলে এর উপরে অনেক মানুষ স্কেট করে।
১৪১ নং লাইন:
বেইজিং নগরীটি [[চীনা সাম্যবাদী দল|চীনা সাম্যবাদী দলের]] স্থানীয় বেইজিং কমিটির সচিব এবং বেইজিঙের নির্বাচিত নগরপাল - এই দুই পক্ষের যৌথ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। ২০১৮ সালে শহরের নগরপাল ছিলেন [[ছেন চিনিন]] এবং সাম্যবাদী দলের স্থানীয় সচিব ছিলেন [[সাই ছি]]।
 
বেইজিং শহরের এলাকাটিতে তিন হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে মানুষ বাস করে আসছে। চীনের চার মহান প্রাচীন রাজধানীগুলির সর্বশেষটি হল এই বেইজিং শহর। আদিতে বেইজিং শহরটি [[হান রাজবংশ|হান]] ও [[থাং রাজবংশ|থাং]] রাজবংশের অধীনে অবস্থিত চৈনিক সাম্রাজ্যের সময়ে শহরের বর্তমান অবস্থান থেকে কিছু উত্তরে চীনের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও বাণিজ্যঘাঁটি ছিল। ১১৫৩ সালে [[চিন রাজবংশ|চিন রাজবংশের]] প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট চুরছেন শহরটিকে তাঁর প্রধান রাজধানী হিসেবে নির্বাচন করলে শহরটির ভাগ্যোন্নতি ঘটে। এরপর ১২৬৭ সালে পুরাতন শহরের কিছুটা উত্তর-পূর্বে [[ইউয়ান রাজবংশ|ইউয়ান]] বা মঙ্গোল রাজবংশের রাজপুত্র [[কুবলাই খান]]-ও একই সিদ্ধান্ত নেন এবং বেইজিং শহরটির নাম বদলে "তাতু" (অর্থাৎ "বৃহৎ নগরী") রাখেন। এর পরে [[মিং রাজবংশ]] (১৩৬৮-১৭৪৪) ক্ষমতায় আসার পর প্রথম পাঁচ দশক দক্ষিণে অবস্থিত [[নানচিং]] শহরকে ("নানচিং" অর্থ "দক্ষিণের রাজধানী") রাজধানী বানানো হয় এবং পুরাতন মঙ্গোল রাজধানীটির নাম বদলে "পেইফিং" রাখা হয় ("পেইফিং" অর্থ "উত্তরীয় শান্তি")। কিন্তু মিং রাজবংশের ৩য় সম্রাট ১৪২১ সালে আবার শহরটিকে তাঁর রাজধানী বানান এবং এর নাম দেন "পেইচিং" অর্থাৎ "উত্তরের রাজধানী"। তখন থেকেই কয়েকটি সংক্ষিপ্ত পর্ব গণনায় না ধরলে প্রায় ৭ শত বছর ধরে বেইজিং শহরটি চীনের রাজধানী হিসেবে ভূমিকা পালন করছে।<ref>{{বিশ্বকোষ উদ্ধৃতি|শিরোনাম = Peking (Beijing)|বিশ্বকোষ=Encyclopædia Britannica|সংস্করণ = [[Encyclopædia Britannica#Edition summary|15th edition]], ''[[Macropædia]]''|খণ্ড = 25|পাতা = 468}}</ref> এরপর [[ছিং রাজবংশ|ছিং রাজবংশের]] সুদীর্ঘ শাসনামলেও (১৬৪৪-১৯১১/১২) শহরটির রাজধানী মর্যাদা বজায় থাকে। ১৮৬০ ও ১৯০০ সালে বিদেশী শক্তির আক্রমণের সময় শহরটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ২০শ শতকের শুরুর দিকের দশকগুলিতে চীনে ঘনঘন সংঘটিত রাজনৈতিক পরিবর্তন সত্ত্বেও বেইজিং চীনের সবচেয়ে সমৃদ্ধিশালী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে টিকে থাকে। ১৯২৮ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত একটি পর্বে চীনের জাতীয়তাবাদী সরকার নানচিংকে তাদের রাজধানী বানায়। ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় চীনের রাজধানী [[ছুংছিং]] শহরে সাময়িকভাবে সরিয়ে নেওয়া হয়। এই সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য বেইজিঙের নাম বদলে আবারও "পেইফিং" রাখা হয়েছিল। ১৯৪৯ সালে [[সাম্যবাদী]]দের বিজয়ের পরে বেইজিংকে আবারও পুরাতন নাম ও রাজধানীর পূর্ণ মর্যাদা ফেরত দেওয়া হয়। নতুন এই রাজনৈতিক মর্যাদা শহরটিকে পুনরুজ্জীবন দান করে। শহরটি খুব স্বল্প সময়ে জনসংখ্যা ও আয়তনে বহুগুণে বৃদ্ধিলাভ করে এবং শিল্পকারখানা ও অন্যান্য কর্মকাণ্ডেও ব্যাপক প্রবৃদ্ধি ঘটে। ১৯৮৯ সালে চীনা ছাত্ররা থিয়েনআনমেন চত্ত্বরেচত্বরে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আয়োজন করেন। সরকারী বাহিনী এই সমাবেশে ট্যাংক নিয়ে আসে এবং প্রতিবাদ ছত্রভঙ্গ করার জন্য অনেক মানুষকে হত্যা করে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সেসময় চীনা সরকারের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে।
 
== জলবায়ু ==