রেবন্ত: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
50-Man (আলোচনা | অবদান)
50-Man (আলোচনা | অবদান)
সংশোধন
৪ নং লাইন:
| caption = অশ্বের ঐশ্বরিক প্রভু
| name = রেবন্ত
| affiliation = গুহকাগুহ্যক
| god_of = অশ্বের দেবতা
| abode = হিমালয়
১৩ নং লাইন:
| mount = ঘোড়া
}}
'''রেবন্ত''' বা '''রাইভত''' (সংস্কৃত: रेवन्त, আক্ষরিক অর্থ "উজ্জ্বল") হলেন একজন [[হিন্দুধর্ম|হিন্দু]] দেবতা। [[ঋগ্বেদ]] অনুযায়ী, রেবন্ত হলেন প্রধান সৌর দেবতা [[সূর্য (দেবতা)|সূর্য]] এবং তার স্ত্রী [[সরণ্যু]]র কনিষ্ঠ সন্তান। রেবন্ত হলেন [[যোক্ষাযক্ষ]]দের মতোপ্রভৃতি – অর্ধ-ঐশ্বরিকউপদেবতা এবং দানবীয় শ্রেণীর সত্ত্বা, [[গুহকাগুহ্যক]]দের (गुह्यक) শাসকশাসক। এবংহিন্দু বিশ্বাস মতে, এটি মনে করা হয় গুহকাগণযে গুহ্যকগণ [[হিমালয় পর্বতমালা|হিমালয়েহিমালয়ের]] বনবাসীবনাঞ্চলের হিসেবে বসবাস করেন।বনবাসী।<ref>[http://www.sanskrit-lexicon.uni-koeln.de/cgi-bin/serveimg.pl?file=/scans/MWScan/MWScanjpg/mw0888-revatottara.jpg Monier-Williams Dictionary: Revanta]</ref><ref>[http://www.sanskrit-lexicon.uni-koeln.de/cgi-bin/monier/serveimg.pl?file=/scans/MWScan/MWScanjpg/mw0360-guruvyatha.jpg Monier-Williams Dictionary:Guhyaka]</ref> রেবন্তের ছবিসমূহপ্রতিকৃতি এবং ভাস্কর্যগুলিভাস্কর্যে প্রায়ইপ্রায়শই তাকেতাঁকে একটিধনুর্বানধারী ধনুক ও তীরের সঙ্গেঅশ্বারোহী ঘোড়ার উপর চড়া অবস্থায় শিকারিএক শিকারী পুরুষের হিসেবেরূপে দেখানোদেখা হয়।যায়।
==উৎস==
রেবন্ত হলেন [[অশ্বিনীকুমার]]দের ভ্রাতা, যারা হলেন আরোগ্য, দৃষ্টি এবং [[সূর্যদয়সূর্যোদয়]] ও [[সূর্যাস্ত]]ের যমজ দেবতা।
==কিংবদন্তি==
রেবন্তের জন্মের উপাখ্যান [[বিষ্ণুপুরাণ|বিষ্ণু পুরাণ]] এবং [[মার্কণ্ডেয় পুরাণ]]ের মতো ধর্মগ্রন্থে বর্ণনা করা হয়েছে। একদা, ভগবান সূর্যের আবেগ প্রাপ্ত না করতে পেরে, স্বর্গীয় স্থপতি [[বিশ্বকর্মা]]র কন্যা এবং সূর্য দেবতার স্ত্রী, সঞ্জাসংজ্ঞা বনে গমন করে অশ্বার রূপ ধারণ করে তপস্যায় ধ্যানমগ্ন হন। সঞ্জাসংজ্ঞা তার পরিবর্তে তার প্রতিচ্ছায়া [[ছায়া]]কে উপস্থিত রাখেন, যিনি সঞ্জারসংজ্ঞার ছব্দবেশে সূর্যদেবের স্ত্রী হিসেবে কিছু সময়ের জন্য বসবাস করেন। যখন সূর্যদেব বুঝতে পারেন যে ছায়া তার স্ত্রী সঞ্জাসংজ্ঞা নয়, তখন তিনি সঞ্জারসংজ্ঞার খোঁজে বের হয়ে পড়েন এবং শেষ পর্যন্ত উত্তর কুরু-তেকুরুতে তাকে খুঁজে পান। সেখানে সূর্যদেব সঞ্জারসংজ্ঞার কাছে অশ্বের শব্দবেশছদ্মবেশ ধরে অগ্রসর হন। তাদের মিলনের ফলে যমজ [[অশ্বিনীকুমার]] এবং রেবন্তের জন্ম হয়।<ref>{{harvnb|Singh|1997|pp=2605–6}}</ref> [[কূর্মপুরাণ]] এবং [[মৎস্যপুরাণ]]ে, রেবন্তের মাতার নাম হলো [[রাত্রি (হিন্দুধর্ম)|রাত্রি]], যিনি হলেন সূর্যদেবের আরেক স্ত্রী। মার্কণ্ডেয় পুরাণের অন্য একটি অধ্যায়ে, তিনি হলেন ছায়ার পুত্র এবং তার ভ্রাতারা হলেন [[শনি (দেবতা)|শনিদেব]], [[তপতী]] এবং [[ভদ্র]]।<ref>{{Citation |title=The Myths and Gods of India: The Classic Work on Hindu Polytheism |first=Alain |last=Danielou | authorlink=Alain Danielou |pages=96 |publisher=Inner Traditions / Bear & Company |isbn=0-89281-354-7 |year=1991 | url =https://books.google.com/books?id=1HMXN9h6WX0C}}.</ref><ref>{{Citation|last=A Talaqdar of Oudh|first=|title=The Matsya Puranam: Part I|series=The Sacred books of the Hindus|volume=18|year=2008|publisher=Cosmo Publications|isbn=81-307-0532-X|page=32|chapter=XI}}</ref>
 
মার্কণ্ডেয় পুরাণে আরও লেখা আছে যে সূর্যদেব দ্বারা তাকে গুহকাদেরগুহ্যকদের শাসক এবং "শত্রু ও লুঠেরাদেরলুটেরাদের থেকে, প্রকান্ড অগ্নিকাণ্ড থেকে বন-জঙ্গল এবং অন্যান্য নির্জন ভূমির আতঙ্ক অভান্তরকে" রক্ষার
দায়িত্বে অর্পণ করা হয়। কখনো কখনো, রেবন্তকে পরিত্রাণের জন্য লুঠেরাদেরলুটেরাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা অবস্থায় বর্ণনা করা হয়।<ref>{{Citation |title=Religious Beliefs and Practices of North India During the Early Mediaeval Period |author=Vibhuti Bhushan Mishra |year=1973 |publisher=BRILL |isbn=90-04-03610-5 |page=37}}.</ref>
 
[[দেবীভাগবত পুরাণ]] থেকে আরেকটি উপাখ্যানে রেবন্তের একটি ক্ষণস্থায়ী উল্লেখ পাওয়া যায়। একদা যখন রেবন্ত সাতটি মস্তকবিশিষ্ট ঘোড়া [[উচ্চৈঃশ্রবা]]র উপর চড়ে বৈকুন্ঠে যাত্রা করেন, বিষ্ণুদেবের স্ত্রী [[লক্ষ্মী]]দেবী ঘোড়াটিকে দেখে বিভ্রান্তিতবিভ্রান্ত হয়ে যান এবং রেবন্তের দ্বারা জিজ্ঞেসিত প্রশ্নকে উপেক্ষা করেন। এই কারণে, লক্ষ্মীদেবী তার স্বামীর দ্বারা অভিশপ্ত হয়ে অশ্বায় পরিণত হন।<ref>{{Citation |title=Women, androgynes, and other mythical beasts |first=Wendy |last=Doniger O'Flaherty |page=218 |publisher=University of Chicago Press |isbn=0-226-61850-1 |year=1980}}.</ref>
 
==মূর্তিতত্ত্ব==
মার্কণ্ডেয় পুরাণে রেবন্তকে "একটি তলোয়ার ও ধনুকের সাথে, একটি কবচে সজ্জিত, গোড়ার পিঠে চড়ে এবং তীর ও একটি তূণীর বহন করা" অবস্থায় বর্ণনা করা হয়।<ref name="Singh 2606">{{harvnb|Singh|1997|p=2606}}</ref> কালিকা পুরাণে একটি সাদা ঘোড়ার ওপর চড়ে তাকে তার ডান হাতে একটি তলোয়ার এবং তার বাম হাতে একটি চাবুক বহন করা অবস্থায় ব্যাখ্যা করা হয়। এই কারণে, তিনি ''হয়া-বাহণ'' (তিনি যিনি একটি ঘোড়ার ওপর চড়েন) নামেও অভিহিত হন। [[বরাহমিহির]]ে তিনি শিকারের জন্য সেবকদের সাথে বের হন বলে বর্ণনা করা হয়।<ref name="Singh 2606"/>
 
ভাস্কর্যগুলিতে, রেবন্তকে প্রায়ই গুহকাদেরগুহ্যকদের সাথে শিকার করার দৃশ্যে চিত্রিত করা হয়, যাদের শাসক হলেন তিনি। গ্রন্থে বিবৃত তীর-ধনুকের মতো অস্ত্র ছাড়াও, তিনি মাঝে মাঝে হাতে একটি মদ্যের পাত্রও বহন করেন। সূর্যদেব (তাকে খালি পায়ে বর্ণনা করা হয়) ছাড়া অন্যান্য দেবতাদের থেকে ভিন্ন, রেবন্তকে প্রায়শ পায়ের গোছ পর্যন্ত পৌঁছানো [[বড়জুতা]]র পরিধনকৃত অবস্থায় তুলে ধরা হয়।<ref>{{harvnb|Singh|1997|pp=2611, 2613}}</ref><ref>{{Citation |title=Art of Osian Temples: Socio-Economic and Religious Life in India, 8th-12th Centuries A.D. |first=Asha |last=Kalia |year=1982 |publisher=Abhinav Publications |isbn=0-391-02558-9 |pages=119–120}}.</ref> রেবন্তকে একটি ঘোড়ার ওপর চড়া এবং একটি শিকারি কুকুর দ্বারা দলবদ্ধ অবস্থায়ও বিবৃত করা হয়। রেবন্তের সেবকদের বল্লম ও তলোয়ারের মতো বিভিন্ন শিকার অস্ত্রের সাথে ব্যাখ্যা করা হয়। তাদের মধ্যে কিছুদের [[শঙ্খ (ক্ষুদ্রাকার ঝিঁনুক)|ক্ষুদ্রাকার শঙ্খ]] বা চকচক করা [[ড্রাম|ঢোল]] বা তাদের প্রভুর মাথার উপর একটি ছাতা ধরা অবস্থায় প্রদর্শন করা হয়, যেখানে ছাতাটি হলো রাজপদের একটি চিহ্ন।<ref name = "Zoroastrianism">''A History of Zoroastrianism'' by Mary Boyce, Frantz Grenet, Roger Beck pp.485-6</ref> এছাড়াও, তাদের মধ্যে কিছুদের উল্লেখ করা হয় উড়ন্ত এবং মদ্য বা জলের ঘড়া হাতে ধরা মুহূর্তে। কখনও কখনও, একজন সেবক একটি মৃত বরাহ বহন করবে বা কুকুরটি একটি বরাহকে ধাওয়া করবে।<ref>{{harvnb|Singh|1997|pp=2606–14}}</ref>
 
==পূজা==
রেবন্তকে যোদ্ধা ও অশ্বদের রক্ষক দেবতা, অরণ্যের বিপদের সময় রক্ষক এবং শিকারের অনুগ্রহকারী ভগবান হিসেবে পূজা করা হতো।<ref name = "Zoroastrianism"/> রেবন্তের পূজা ঘনিষ্ঠভাবে সূর্যদেবের পূজারী, [[সৌর]]-এর সাথে সংযুক্ত। প্রায়শ, [[বিষ্ণুধর্মোত্তর পুরাণ]] ও [[কালিকা পুরাণ]]ের মতো গ্রন্থে সূর্যদেব বা [[সূর্যের দেবতা|সূর্যপূজার]] অনুষ্ঠানের সাথে রেবন্তের পূজার পরামর্শ দেওয়া হয়।<ref name="Singh 2606"/> যোদ্ধাদের দ্বারা হিন্দু মাস [[আশ্বিন]]ে, সূর্যদেবের পূজার পর [[সভা-কল্প-দ্রুম]] রেবন্তের পূজার রেকর্ড গড়ে তুলে।<ref name="Singh 2607">{{harvnb|Singh|1997|pp=2607}}</ref> চতুর্থ [[পঞ্চপাণ্ডব|পাণ্ডব]], [[নকুল (মহাভারত)|নকুল]] ঘোড়াদের ওপর ''অশ্বশাস্ত্রমঅশ্বশাস্ত্রম্'' লিখেছেন বলে মনে করা হয়। প্রেতাত্মাদের থেকে ঘোড়াদের রক্ষা করার জন্য তিনি রেবন্তের পূজার পরামর্শ দেন।<ref name="Singh 2607"/>
 
মধ্যযুগীয় সময়ের প্রথম দিকে রেবন্তের পূজা অনেক জনপ্রিয় ছিল, বিশেষভাবে [[রাজস্থান]]ে। তাকে অধিকাংশই [[বৈষ্ণবধর্ম]] এবং সূর্য মন্দিরে লক্ষ্য করা যায়।<ref>{{harvnb|Singh|1997|p=2609}}</ref> রেবন্তের একটি মন্দিরের সম্পর্কে তুলে ধরা একটি লিপিবদ্ধ পাথরশিলালিপি রয়েছে, যা বিকর্ণপুরে (বর্তমানে [[কোটগাফ]], [[মধ্যপ্রদেশ]]) [[রত্নাপুরের কালাচুরিকলচুরি|কালাচুরিরকলচুরির]] রাজা দ্বিতীয় [[রত্নাদেবরত্নদেব]] দ্বারা নির্মিত এবং এই মন্দিরের প্রধান দেবতা হলেন রেবন্ত।<ref>{{harvnb|Singh|1997|pp=2615–16}}</ref>
 
==পাদটীকা==