ভারতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ইতিহাস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
২৬ নং লাইন:
খৃঃ পূঃ ৮ম শতাব্দীতে [[বৌধায়ন]] ''বৌধায়ন সুলবা সূত্রে''র সৃষ্টি করেন। এই সূত্রে সাধারণ পিথাগোরীয় সংখ্যাত্রয়ের উদাহরণ পাওয়া যায়, যেমন, (৩, ৪, ৫), (৫, ১২, ১৩), (৮, ১৫, ১৭), (৭, ২৪, ২৫), এবং (১২, ৩৫, ৩৭)।<ref name=joseph229>Joseph, 229</ref> শুধু তাই নয় বর্গক্ষেত্রের বাহু বিষয়ক [[পিথাগোরাসের উপপাদ্য|পিথাগোরাসের উপপাদ্যে]]র একটি বক্তব্যও পাওয়া যায়: "বর্গক্ষেত্রের কর্ণ বরাবর কোনো দড়ি টানলে সেই দড়িকে বাহু ধরে যে বর্গক্ষেত্রের সৃষ্টি হবে সেটির ক্ষেত্রফল পূর্বের বর্গক্ষেত্রের দ্বিগুণ হবে।"<ref name=joseph229/> সুলবা সূত্রে পিথাগোরাসের উপপাদ্যের আয়তক্ষেত্রের বাহু বিষয়ক বক্তব্যও পাওয়া যায়: "আয়তক্ষেত্রের কর্ণ বরাবর কোনো দড়ি টানলে সেই দড়িকে বাহু ধরে যে বর্গক্ষেত্রের সৃষ্টি হবে সেটির ক্ষেত্রফল আয়তক্ষেত্রের উল্লম্ব ও অনুভূমিক বাহু থেকে উদ্ভুত বর্গক্ষেত্রদ্বয়ের ক্ষেত্রফলের সমষ্টির সমান।"<ref name=joseph229/> বৌধায়ন [[২-এর বর্গমূল|দুই-এর বর্গমূলে]]র সূত্রও দিয়েছেন সুলবা সূত্রে।<ref name=cooke200>Cooke, 200</ref> এই সময় [[মেসোপটেমিয়া]]র প্রভাব ছিল বলে মনে করা হয়।<ref name="Boyer 1991 loc=China and India p. 207">{{Harv|Boyer|1991|loc="China and India" p. 207}}</ref>
 
প্রাচীনতম [[ভারতীয় জ্যোতির্বিদ্যা]] সম্পর্কিত পুঁথি খৃঃ পূঃ ১৪০০-১২০০ সময়কালে ''লাগাধ'' বিরচিত ''বেদাঙ্গ জ্যোতিষ''কে মনে করা হয় বিশ্বের প্রাচীনতম জ্যোতির্বিদ্যা সম্পর্কিত গ্রন্থ।<ref name=Cosmic>{{en}}{{citeবই bookউদ্ধৃতি|lastশেষাংশ=Subbarayappa|firstপ্রথমাংশ=B. V.|editorসম্পাদক=Biswas, S. K. |editor2=Mallik, D. C. V. |editor3=C. V. Vishveshwara |titleশিরোনাম=Cosmic Perspectives|urlইউআরএল=https://books.google.com/books?id=PFTGKi8fjvoC&pg=FA25|dateতারিখ=14 September 1989|publisherপ্রকাশক=Cambridge University Press|isbnআইএসবিএন=978-0-521-34354-1|pagesপাতাসমূহ=25–40|chapterঅধ্যায়=Indian astronomy: An historical perspective}}</ref> এতে বিভিন্ন সামাজিক এবং ধর্মীয় কাজের সময় নির্ধারণের জন্য জ্যোতির্বিদ্যা ব্যবহারের বর্ণনা আছে। এতে জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কিত গণনা, পঞ্জিকা প্রণয়ন এবং গবেযণামূলক পর্যবেক্ষণের নিয়মগুলিও বিশদে বলা আছে।<ref name= Subbaarayappa>Subbaarayappa, 25-41</ref> যদিও ''বেদাঙ্গ জ্যোতিষ'' একটি ধর্মীয় গ্রন্থ, এতে [[ভারতীয় জ্যোতির্বিদ্যা]] সম্পর্কিত অনেক বিষয় আছে, যেমন, সময় ও কাল বিষয়ক চর্চা, চান্দ্রমাস, সৌরমাস, এমনকি অধিবর্ষের নিষ্পত্তির জন্য চান্দ্র-অধিমাস বা ''অধিকামাসে''র বর্ণনাও আছে।<ref name=Tripathi08>Tripathi, 264-267</ref> ''ঋতু'' ও ''যুগে''র উল্লেখও পাওয়া যায় এই গ্রন্থে।<ref name=Tripathi08/> ত্রিপাঠীর মতে, "সাতাশটি নক্ষত্রপুঞ্জ, গ্রহণ, সাতটি গ্রহ এবং রাশিচক্রের বারোটি রাশিও সেই যুগে ভারতীয়দের জানা ছিল।"<ref name=Tripathi08/>
 
[[মিশর|মিশরীয়]] ''কাহুনের প্যাপিরাস'' (খৃঃ পূঃ ১৯০০) এবং ভারতে [[বৈদিক যুগ|বৈদিক যুগে]]র বিভিন্ন গ্রন্থের থেকে জানা যায় সেই প্রাচীন যুগেই পশু চিকিৎসার প্রচলন ছিল।<ref>Thrusfield, 2</ref> কেয়ার্নস ও ন্যাশ (২০০৮) বলেছেন খৃঃ পূঃ ৬ষ্ঠ শতাব্দীর ''সুশ্রুত সংহিতা''য় [[কুষ্ঠ]] রোগের উল্লেখ পাওয়া যায়। সুশ্রুত সংহিতা একটি [[আয়ুর্বেদ|আয়ুর্বেদিক]] গ্রন্থ। এই গ্রন্থে ১৮৪টি অধ্যায়ে ১১২০টি রোগের বর্ণনা আছে; এছাড়া ৭০০টি আয়ুর্বেদিক উদ্ভিদ, পুঙ্খানুপুঙ্খ শারীরস্থানের বর্ণনা, ৬৪টি খনিজ পদার্থ থেকে ও ৫৭টি প্রাণীজ পদার্থ থেকে ঔষধ বানানোর পদ্ধতি বিবরণ পাওয়া যায়।<ref name=Dwivedi&Dwivedi07>Dwivedi & Dwivedi (2007)</ref><ref name=k&n08>Kearns & Nash (2008)</ref> তবে, ''The
৩৩ নং লাইন:
খৃঃ পূঃ ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে সুশ্রুত ছানির অস্ত্রোপচারের পদ্ধতি জানতেন।<ref name=finger66>Finger, 66</ref> ''জবামুখী শলাকা'' নামের একটি বিশেষ অস্ত্রের সাহায্যে ছানির অস্ত্রোপচার করা হত। এটি একটি বাঁকা সূঁচ, যা দিয়ে ছানিগ্রস্ত মণিকে আলগা করে দৃষ্টিসীমার বাইরে সরিয়ে দেওয়া হত।<ref name=finger66/> অস্ত্রোপচারের পর চোখকে উষ্ণ মাখনে ভিজিয়ে পটি বেঁধে দেওয়া হত।<ref name=finger66/> যদিও এই পদ্ধতি যথেষ্ট সফল ছিল, তবুও সুশ্রুত শুধুমাত্র একান্ত প্রয়োজনেই এই শল্যচিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন।<ref name=finger66/> ভারত থেকেই চীনে ছানির অস্ত্রোপচারের পদ্ধতি পরিচিতি পায়।<ref>Lade & Svoboda, 85</ref>
 
খৃঃ পূঃ ৫ম শতাব্দীতে, ব্যাকরণবিদ [[পাণিনি]] [[ধ্বনিবিজ্ঞান]], [[ধ্বনিতত্ত্ব]], এবং [[রূপমূলতত্ত্ব|রূপমূলতত্ত্বে]] অনেক গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করেন।<ref name=Ivic>Encyclopædia Britannica (2008), ''Linguistics''.</ref> [[পাণিনি]]র রূপমূলতত্ত্বের ব্যাখ্যা বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত সমবিষয়ক পশ্চিমি তত্ত্বের থেকে অনেক এগিয়ে ছিল।<ref>{{citeবই bookউদ্ধৃতি | last1শেষাংশ১ = Staal | first1প্রথমাংশ১ = Frits | titleশিরোনাম = Universals: studies in Indian logic and linguistics | publisherপ্রকাশক = University of Chicago Press | yearবছর = 1988 | pagesপাতাসমূহ = 47 }}</ref>
 
খৃঃ পূঃ ৫ম শতাব্দীর আগেই ভারতে [[ধাতু]]জাত [[মুদ্রা]]র প্রচলন ছিল।<ref name=Dhavalikar>Dhavalikar, 330-338</ref><ref name=sellwood2008>Sellwood (2008)</ref> খৃঃ পূঃ ৪০০ অব্দ থেকে ১০০ খৃষ্টাব্দ সময়কালের মূলতঃ [[রূপা]] বা [[তামা]]র মুদ্রা তৈরী হত, যাতে নানা রকম পশু ও উদ্ভিদের চিহ্ণ থাকত।<ref name=EBAllan&Stern>Allan & Stern (2008)</ref>
 
[[রাজস্থান|রাজস্থানে]] [[উদয়পুর|উদয়পুরে]]র কাছে জাওয়ার [[দস্তা]] খনি খৃঃ পূঃ ৪০০ সালেও ব্যবহার হত।<ref name=Craddock>Craddock (1983)</ref><ref>Arun Kumar Biswas, The primacy of India in ancient brass and zinc metallurgy, Indian J History of Science, 28(4) (1993) page 309-330 and Brass and zinc metallurgy in the ancient and medieval world: India’s primacy and the technology transfer to the west, Indian J History of Science, 41(2) (2006) 159-174</ref> বিভিন্ন ধরনের হাতলযুক্ত বিভিন্ন রকমের তরবারি পাওয়া গেছে বর্তমান [[উত্তর প্রদেশ|উত্তর প্রদেশে]]র ফতেগড়ে।<ref>F.R. Allchin, 111-112</ref> এই তরবারিগুলি খৃঃ পূঃ ১৭০০ থেকে ১৪০০ সালের মধ্যে তৈরী করা হয়েছে বলে মনে করা হয়, তবে সম্ভবতঃ তরোয়ালের বহুল ব্যবহার শুরু হয় খৃঃ পূঃ প্রথম সহস্রাব্দে।<ref name=Allchin114>Allchin, 114</ref> বর্তমান [[উত্তর প্রদেশ|উত্তর প্রদেশে]]র মলহার, ডাদোপুর, রাজা নালা কা টিলা ও লাহুরাদেওয়া প্রত্নস্থলগুলিতে লোহার ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে খৃঃ পূঃ ১৮০০ ও খৃঃ পূঃ ১২০০ সময়কালের।<ref name=Tewari>Tewari (2003)</ref> রেডিও কার্বন ডেটিং পদ্ধতির সাহায্যে ভারতে পাওয়া লৌহ সামগ্রীর বয়স নির্ধারণ করা যায় খৃঃ পূঃ ১৪০০ সময়কালের।<ref name=Ceccarelli>Ceccarelli, 218</ref> কিছু বিশেষজ্ঞের মতে খৃঃ পূঃ ১৩শ শতাব্দীতেই ভারতে লৌহ বিগলনের পদ্ধতি বহুল পরিচিত ছিল, সুতরাং এটা মনে করা যেতেই পারে লৌহ বিগলন পদ্ধতির উন্মেষ আরও অনেক আগেই হয়েছে।<ref name=Tewari/> [[দক্ষিণ ভারত| দাক্ষিণাত্যে]] (আজকের [[মহীশূর]]) খৃঃ পূঃ ১১শ থেকে ১২শ শতাব্দীতেই লোহার ব্যবহার শুরু হয়।<ref name=UCP/> এত প্রাচীন লোহার ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়ায় এটা বোঝা যাচ্ছে যে দাক্ষিণাত্যে লোহার ব্যবহার দেশের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তের থেকে স্বাধীন ভাবেই হয়েছে। কারণ ঐ সময় দাক্ষিণাত্যের সাথে সিন্ধু সভ্যতার সম্ভবতঃ কোনো যোগাযোগ ছিল না।<ref name=UCP>Drakonoff, 372</ref>
 
==মহা জনপদের পরবর্তীকাল—পূর্ণ মধ্য যুগ==
৫০ নং লাইন:
খৃষ্টীয় ২য় শতাব্দীতেই ভারতে [[ধুনুরি]] জাতীয় যন্ত্রের ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়।<ref name=Baber57>Baber, 57</ref> [[হীরক|হীরা]]র খনি ও রত্ন হিসাবে হীরার ব্যবহার ভারত থেকেই শুরু হয়।<ref name=Wenk1>Wenk, 535-539</ref> প্রাচীন ভারতে গোলকুন্ডায় একটি গুরুত্বপূর্ণ হীরার খনি ছিল।<ref name=Wenk1/> এখানের হীরা সারা বিশ্বে রপ্তানি করা হত।<ref name=Wenk1/> বিভিন্ন সংস্কৃত ভাষার প্রাচীন গ্রন্থে হীরার উল্লেখ পাওয়া গেছে।<ref name=Encarta11>{{en}}MSN Encarta (2007), [http://encarta.msn.com/encyclopedia_761557986/Diamond.html ''Diamond'']. [https://www.webcitation.org/5kwqi0eX3 Archived] 2009-10-31.</ref> ভারতে হীরক ব্যবসার উল্লেখ পাওয়া যায় ''[[অর্থশাস্ত্র (গ্রন্থ)|অর্থশাস্ত্রে]]''।<ref name=lee1>Lee, 685</ref> গুপ্ত সম্রাট [[দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত]] বা বিক্রমাদিত্যের সময়কালে (৩৭৫-৪১৩), স্থাপিত [[দিল্লির লৌহস্তম্ভ|দিল্লির লৌহস্তম্ভে]] আজ প্রায় ২০০০ বছর পরেও কোনো মরচে ধরেনি।<ref>Balasubramaniam, R., 2002</ref> খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর ''রসরত্নসমুচ্চয়'' গ্রন্থে দস্তার দুটি আকরিকের কথা বলা আছে। একটি থেকে দস্তা ধাতু নিষ্কাশন সম্ভব, অন্যটি শুধুমাত্র ঔষধি প্রস্তুতে ব্যবহার করা যায়।<ref name=Craddock2>Craddock, 13</ref>[[File:Ship compartments.jpg|thumb|left|পূমবাহুর সৈকত থেকে ১৯ মাইল দূরে সমুদ্রের মধ্যে পাওয়া [[চোল সাম্রাজ্য|চোল সাম্রাজ্যে]]র সময়কালের (২০০-৮৪৮) জাহাজের ধংসাবশেষের ভিত্তিতে [[ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ|ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণে]]র বানানো কাঠামো। এটি থিরুনেভেলির সংগ্রহালয়ে সংরক্ষিত আছে।]]
 
চরকার উৎপত্তি নিয়ে কিছুটা অস্পষ্টতা আছে, তবে ভারতকে একটি সম্ভাব্য উৎস হিসাবে মনে করা হয়।<ref>Britannica Concise Encyclopedia (2007), ''spinning wheel''.</ref><ref>Encyclopeedia Britnnica (2008). ''spinning''.</ref> খৃষ্টীয় ১৪শ শতাব্দীতে এটি ভারত থেকেই ইউরোপে গিয়েছিল।<ref>MSN Encarta (2008), [http://encarta.msn.com ''Spinning'']. [https://www.webcitation.org/query?id=1256962101378386 Archived] 2009-10-31.</ref> যান্ত্রিক উপায়ে তুলা বীজ থেকে তুলা ছাড়ানোর উপায় ভারতেই উদ্ভাবিত হয়, - কাঠের তৈরি এই যন্ত্রের নাম ছিল ''চরখি''।<ref name="Baber57">Baber, 57</ref> বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই যন্ত্র হস্তচালিত হলেও কোনো কোনো এলাকায় জলশক্তিতেও এই যন্ত্র চালানো হত।<ref name="Baber57"/> [[অজন্তা গুহাসমূহ|অজন্তা গুহাচিত্র]] থেকে প্রমাণিত হয় খৃষ্টীয় ৫ম শতাব্দীতেও ভারতে এই যন্ত্র ব্যবহৃত হত।<ref name=Babergin>Baber, 56</ref> পরবর্তী পর্যায়ে পদচালিত তুলা ছাড়ানোর যন্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়।<ref name=Babergin/> বিভিন্ন প্রাচীন চীনা নথি থেকে জানা যায়, ৬৪৭ সাল থেকে শুরু করে, ভারতে কমপক্ষে দুটি অভিযান হয়েছিল চিনি পরিশোধনের প্রযুক্তি আহরণের জন্য।<ref name=Kieschnick11>Kieschnick, 258</ref> কিন্তু, প্রতিটি অভিযানই চিনি পরিশোধনের বিষয়ে আলাদা আলাদা তথ্য নিয়ে ফেরে।<ref name=Kieschnick11/>
সঙ্গীত বিশারদ পিঙ্গল (খৃঃ পূঃ ৩০০-২০০) [[সংস্কৃত ভাষা]]য় ছন্দশাস্ত্র বিষয়ক গ্রন্থ রচনা করেন। এই গ্রন্থে প্রমাণ পাওয়া যায়, বিভিন্ন মাত্রার সমন্বয়ের গণনা করতে গিয়ে, পিঙ্গল [[প্যাস্কেলের ত্রিভূজ]] ও দ্বিপদ গুণাঙ্ক (Binomial coefficient) আবিষ্কার করেছিলেন। যদিও তিনি দ্বিপদ তত্ত্ব (Binomial theorem) জানতেন না।<ref name=fowler96>Fowler, 11</ref><ref name=singh36>Singh, 623-624</ref> পিঙ্গলের লেখায় [[বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি]]র ব্যাখ্যাও পাওয়া যায়।<ref>Sanchez & Canton, 37</ref> গুণের চিহ্নের ব্যবহার পদ্ধতি ভারতীয়দের সৃষ্টি। ঋণাত্বক সংখ্যা ও বিয়োজ্য সংখ্যা খৃঃ পূঃ ২য় শতাব্দী থেকেই পূর্ব এশিয়ায় ব্যবহৃত হত, আর খৃষ্টীয় ৭ম শতাব্দী থেকে ভারতীয় গাণিতিকেরা ঋণাত্বক সংখ্যা জানতেন,<ref name=Smith>Smith (1958), page 258</ref> এবং ঋণের গণনার ক্ষেত্রে এই সংখ্যার ব্যবহারও বুঝতেন।<ref name=bourbaki49>Bourbaki (1998), page 49</ref> যদিও ভারতীয়রা বিয়োজ্য সংখ্যার ব্যবহার প্রথম শুরু করেননি, তবে তাঁরা ধণাত্বক ও ঋণাত্বক সংখ্যার গুণের ক্ষেত্রে "চিহ্নের ব্যবহারে"র নিয়মাবলী প্রথম প্রতিষ্ঠা করেন। এই ব্যাপারটা পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন লেখায় ১২৯৯ সালের আগে দেখা যায় না।<ref name=Smith2>Smith (1958), page 257-258</ref> ঋণাত্মক সংখ্যা সঙ্গে কাজ করার জন্য প্রায় সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং সঠিক যে নিয়ম প্রণয়ন করা হয়েছিল, তা আরবীয়দের মাধ্যমে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে।<ref name=bourbaki49/>
 
অন্ততঃ খৃঃ পূঃ ৩০০০ অব্দ থেকেই [[মিশরীয় চিত্রলিপি|মিশরীয় চিত্রলিপি]]তে [[দশমিক পদ্ধতি]]র ব্যবহার ছিল,<ref>Georges Ifrah: ''From One to Zero. A Universal History of Numbers'', Penguin Books, 1988, {{ISBN|0-14-009919-0}}, pp. 200-213 (Egyptian Numerals)</ref> পরবর্তী পর্যায়ে আধুনিক সংখ্যা ব্যবস্থা তৈরীর সময় প্রাচীন ভারতে দশমিক পদ্ধতির ব্যবহার করা হয়।<ref name=irfah346>Ifrah, 346</ref> খৃষ্টীয় ৯ম শতাব্দীর মধ্যে, হিন্দু-আরবী সংখ্যা পদ্ধতি ভারত থেকে মধ্যপ্রাচ্য হয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।<ref name="Wigelsworth">{{citeবই bookউদ্ধৃতি|authorলেখক=Jeffrey Wigelsworth|titleশিরোনাম=Science And Technology in Medieval European Life|urlইউআরএল=https://books.google.com/books?id=VPDqnGGHpHYC&pg=PA18|dateতারিখ=1 January 2006|publisherপ্রকাশক=Greenwood Publishing Group|isbnআইএসবিএন=978-0-313-33754-3|pageপাতা=18}}</ref> শুধুমাত্র পৃথক করার চিহ্ন হিসাবে নয়, বরং সংখ্যা হিসাবে [[০ (সংখ্যা)|০]]-এর ধারণার উদ্ভব ভারতে হয়েছিল বলে মনে করা হয়।<ref name=bourbaki46>Bourbaki, 46</ref> খৃষ্টীয় ৯ম শতাব্দী থেকেই ভারতে অন্যান্য সংখ্যার মতই ব্যবহারিক গণিতে, এমনকি বিভাজনেও, শূন্যের প্রচলন ছিল। <ref name=bourbaki46/><ref name=ebcal>Britannica Concise Encyclopedia (2007). ''algebra''</ref> [[ব্রহ্মগুপ্ত]] (৫৯৮–৬৬৮) [[পেল সমীকরণ|পেল সমীকরণে]]র সমাধান করেছিলেন।<ref name=sw101>Stillwell, 72-73</ref> [[দ্বিতীয় ভাস্কর]] ১১৫০ সালে চিরস্থায়ী গতিশীল যন্ত্রের খসড়া বানিয়েছিলেন। তিনি একটি চিরস্থায়ী ঘুর্ণনশীল চাকার বর্ণনা করেছিলেন।<ref>Lynn Townsend White, Jr.</ref>
 
খৃষ্টীয় পঞ্চম শতাব্দীর শেষ ভাগে [[আর্যভট্ট]] [[ত্রিকোণমিতি]]র [[সাইন]] ও ভেরসাইনের ব্যবহার জানতেন। এর সাহায্যে সহজেই যে কোসাইন নির্ণয় করা যায় সেটাও তিনি জানতেন।<ref>O'Connor, J. J. & Robertson, E.F. (1996)</ref><ref>"Geometry, and its branch trigonometry, was the mathematics Indian astronomers used most frequently. In fact, the Indian astronomers in the third or fourth century, using a pre-Ptolemaic Greek table of chords, produced tables of sines and versines, from which it was trivial to derive cosines. This new system of trigonometry, produced in India, was transmitted to the Arabs in the late eighth century and by them, in an expanded form, to the Latin West and the Byzantine East in the twelfth century" - Pingree (2003) ["ভারতীয় জ্যোতির্বিদেরা জ্যামিতি ও তার শাখা ত্রিকোণমিতির নিয়মিত ব্যবহার করতেন। ভারতীয় জ্যোতির্বিদরা খৃষ্টীয় তৃতীয় অথবা চতুর্থ শতাব্দীতেই [[টলেমি]]র পূর্ববর্তী সময়ের বৃত্তের [[জ্যা]]য়ের গ্রীক সারণীর ভিত্তিতে সাইন ও ভেরসাইনের সারণী নির্মাণ করেন। ভারতীয় এই নতুন ত্রিকোণমিতির পদ্ধতি আরবদের কাছে যায় খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর শেষের দিকে, তারপর তারা এর পরিবর্ধিত সংস্করণ ছাড়ে ইউরোপীয় ও বাইজ্যান্টাইন সভ্যতার কাছে দ্বাদশ শতাব্দীর সময়কালে।" - পিংগ্রী (২০০৩)।]</ref> আজকের "রোলের উপপাদ্য" নামের [[কলনবিদ্যা]]র উপপাদ্যটি খৃষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীতেই ভারতীয় গণিতজ্ঞ [[দ্বিতীয় ভাস্কর]] বর্ণনা করেছিলেন।<ref>Broadbent, 307–308</ref>
[[File:The Defeat of Baz Bahadur of Malwa by the Mughal Troops, 1561, Akbarnama.jpg|thumb|সপ্তদশ শতাব্দীতে লেখা আকবরনামা গ্রন্থের চিত্র—[[মুঘল সাম্রাজ্য|মোগল]] সেনার সাথে ১৫৬১ সালের যুদ্ধে মালওয়ার বাজ বাহাদুরের পরাজয়ের চিত্র। মোগলরা ভারতে সেনাবাহিনীর ব্যবহার্জ্য ধাতব অস্ত্র ও বর্মের ব্যাপক উন্নতি সাধন করেছিল।]]
 
রঞ্জক হিসাবে নীলের (''ইন্ডিগোফেরা টিঙ্কটোরিয়া'' বা [[ইংরাজি ভাষা|ইংরাজি]]: ''Indigofera tinctoria'') বহুল ব্যবহার ভারতে প্রচলিত ছিল।<ref name=k&c>Kriger & Connah, 120</ref> [[রেশম পথ]] ধরে রঞ্জক হিসাবে নীল [[প্রাচীন গ্রিস|গ্রীক]] ও [[প্রাচীন রোম|রোমান]]দের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল এক মহার্ঘ্য ভোগ্য বস্তু হিসাবে।<ref name=k&c/> কাশ্মীরে [[পশমিনা]] [[শাল (বস্ত্র)|শাল]] হাতে তৈরী করা হত।<ref>Encyclopædia Britannica (2008), ''cashmere''.</ref> [[কাশ্মীর]] অঞ্চলের পশমের শালের উল্লেখ বিভিন্ন লেখায় খৃঃ পূঃ ৩য় শতাব্দী থেকে খৃষ্টীয় ১১শ শতকের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়।<ref name=ebpasm>Encyclopædia Britannica (2008), ''Kashmir shawl''.</ref> [[গুপ্ত সাম্রাজ্য|গুপ্ত যুগে]] চিনির ব্যবহার শুরু হয়,<ref name=Adas>Shaffer, 311</ref> এবং প্রাচীনতম [[মিছরি]]র ব্যবহারের উল্লেখ ভারতেই পাওয়া যায়।<ref name=Kieschnick1>Kieschnick (2003)</ref> [[পাট]] চাষ ভারতেই হত।<ref name=ebjute>Encyclopædia Britannica (2008), ''jute''.</ref> [[ইরাক|ইরাকে]]র [[মসুল]] শহরে প্রথমবার এই কাপড় ইউরোপীয়রা দেখতে পেয়েছিল বলে নাম হয়েছিল [[মসলিন]], কিন্তু এই কাপড় তৈরী হত বর্তমান [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশে]]র [[ঢাকা]]য়।<ref>{{citeবই bookউদ্ধৃতি |lastশেষাংশ=Karim |firstপ্রথমাংশ=Abdul |yearবছর=2012 |chapterঅধ্যায়=Muslin |chapterঅধ্যায়ের-urlইউআরএল=http://en.banglapedia.org/index.php?title=Muslin |editor1সম্পাদক১-lastশেষাংশ=Islam |editor1সম্পাদক১-firstপ্রথমাংশ=Sirajul |editor2সম্পাদক২-lastশেষাংশ=Jamal |editor2সম্পাদক২-firstপ্রথমাংশ=Ahmed A. |titleশিরোনাম=Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh |editionসংস্করণ=Second |publisherপ্রকাশক=[[Asiatic Society of Bangladesh]]}}</ref><ref name=Muslin>Ahmad, 5–26</ref> খৃষ্টীয় ৯ম শতাব্দীতে, সুলেমান নামক [[ইসলামী অর্থনীতির ইতিহাস|আরব ব্যবসায়ী]] লিখেছেন এই কাপড়ের উৎস হল [[বঙ্গ]] ([[আরবি ভাষা]]য় ''রুহমল'')।<ref name=Muslin/>
 
ইউরোপীয় পন্ডিত ফ্রান্সেস্কো লোরেঞ্জো পুলি একাধিক ভারতীয় মানচিত্র নকল করেছিলেন তাঁর ''লা কার্টোগ্রাফিয়া অ্যাণ্টিকা ডেল ইন্ডিয়া'' নামে মহাগ্রন্থে।<ref name=Sircar2>Sircar 328</ref> এই মানচিত্রগুলির মধ্যে, দুটি নকল করা হয়েছিলএকাদশ শতাব্দীর [[কাশ্মীর|কাশ্মীরী]] পণ্ডিত ক্ষেমেন্দ্র রচিত গ্রন্থ ''লোকপ্রকাশ'' থেকে নেওয়া হয়েছিল।<ref name=Sircar2/> এছাড়া, ''সমগ্র'' গ্রন্থ থেকেও অনেক মানচিত্র নকল করা হয়েছিল পুলির গ্রন্থে।<ref name=Sircar2/>
 
১১শ শতাব্দীর রাজা ভোজের লেখা ''সমরাঙ্গণ সূত্রধারা'' নামক [[সংস্কৃত ভাষা]]র গ্রন্থে একটি অধ্যায়ে যান্ত্রিক মৌমাছি ও পাখি, মানবাকৃতির ও পশু আকৃতির ঝরণা এবং যান্ত্রিক নারী-পুরুষ পুতুল (যে গুলি তৈলপ্রদীপে তেল ভরা থেকে শুরু করে নৃত্য পরিবেশন, বাদ্যযন্ত্র বাদন, এমনকি বিভিন্ন হিন্দু পৌরাণিক দৃশ্যের অভিনয় করতে সক্ষম ছিল) প্রভৃতি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র বানাবার কথা বলা আছে। <ref>{{citeবই bookউদ্ধৃতি|lastশেষাংশ=Varadpande|firstপ্রথমাংশ=Manohar Laxman|yearবছর=1987|titleশিরোনাম=History of Indian Theatre, Volume 1|pageপাতা=68|urlইউআরএল=https://books.google.com/books?id=SyxOHOCVcVkC&pg=PA68}}</ref><ref>{{citeবই bookউদ্ধৃতি|lastশেষাংশ= Wujastyk|firstপ্রথমাংশ=Dominik|yearবছর=2003|titleশিরোনাম=The Roots of Ayurveda: Selections from Sanskrit Medical Writings|pageপাতা=222|urlইউআরএল=https://books.google.com/books?id=TaZCwjtmzZYC&pg=PA222&dq=automata#v=onepage&q=automata&f=false}}</ref><ref>{{citeবই bookউদ্ধৃতি|lastশেষাংশ=Needham|firstপ্রথমাংশ=Joseph|yearবছর=1965|titleশিরোনাম=Science and Civilisation in China: Volume 4, Physics and Physical Technology Part 2, Mechanical Engineering|pageপাতা=164|urlইউআরএল=https://books.google.com/books?id=SeGyrCfYs2AC&pg=PA164&dq=bhoja+automata}}</ref>
 
==মধ্য যুগের শেষভাগ==
[[File:Jantar Mantar, Delhi, 1826.jpg|thumb|left|[[দিল্লী]]র '''যন্তর মন্তর'''—[[জয়পুর|জয়পুরে]]র রাজা দ্বিতীয় জয় সিংহ ১৭২৪ সালে ১৩টি জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক স্থাপত্যের সূচনা করেন।]]
সঙ্গমাগ্রামের মাধব (খৃষ্টীয় ১৩৪০ - ১৪২৫) ও তাঁর কেরালার জ্যোতির্বিদ্যা ও গণিত বিদ্যালয় [[গাণিতিক বিশ্লেষণ|গাণিতিক বিশ্লেষণে]]র প্রতিষ্ঠা ও উন্নতি সাধন করে।<ref>{{citeওয়েব webউদ্ধৃতি
|publisherপ্রকাশক = School of Mathematics and Statistics University of St Andrews, Scotland
|workকর্ম = Biography of Madhava
|author1লেখক১ = J J O'Connor
|author2লেখক২ = E F Robertson
|urlইউআরএল = http://www-gap.dcs.st-and.ac.uk/~history/Biographies/Madhava.html
|titleশিরোনাম = Mādhava of Sangamagrāma
|accessdateসংগ্রহের-তারিখ = 2007-09-08
|আর্কাইভের-ইউআরএল = https://web.archive.org/web/20060514012903/http://www-gap.dcs.st-and.ac.uk/~history/Biographies/Madhava.html
|আর্কাইভের-তারিখ = ২০০৬-০৫-১৪
৮৭ নং লাইন:
৯৯৮ হিজরি সালে (খৃঃ ১৫৮৯-৯০) কাশ্মীরে আলি কাশ্মীরী ইবন লাকমান জোড়হীন জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক গোলকের উদ্ভাবন করেন। পরবর্তী পর্যায়ে, মুঘল শাসনকালে [[লাহোর]] ও কাশ্মীরে আরও কুড়িটি অনুরূপ গোলক তৈরী হয়।<ref name=Emilie/> ১৯৮০-এর দশকে এই গোলকগুলির পুনরাবিষ্কারের আগে, আধুনিক ধাতুবিদেরা, যাবতীয় আধুনিক প্রযুক্তি থাকা সত্বেও, জোড়হীন ধাতব গোলক বানানো অসম্ভব বলে মনে করতেন।<ref name=Emilie/> এই মুঘল ধাতুবিদেরা ভারেওয়া পদ্ধতি<ref>{{en}}{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=BHAREWA art – Cast in Bronze: Ancient Technology of Lost Wax Casting |ইউআরএল=http://www.academia.edu/30052423/BHAREWA_art_Cast_in_Bronze_Ancient_Technology_of_Lost_Wax_Casting |প্রকাশক=Aakanksha Roychowdhury |সংগ্রহের-তারিখ=৮ জানুয়ারি ২০১৯}}</ref> বা ''হৃতমোম ঢালাই'' ([[ইংরাজি ভাষা|ইংরাজি]]:''lost-wax casting'') পদ্ধতিতে পথিকৃত ছিলেন।<ref name=Emilie>Savage-Smith (1985)</ref>[[File:Mir Sayyid Ali - Portrait of a Young Indian Scholar.jpg|thumb|left|১৫৫০ খৃষ্টাব্দে মির সৈয়দ আলি কৃত জনৈক তরুণ ভারতীয় বিদ্যার্থীর [[মুঘল সাম্রাজ্য|মুঘল]] ক্ষুদ্র চিত্র।]]
 
ভারতে মঙ্গোল আক্রমণের মাধ্যমে বারুদ ও আগ্নেয়াস্ত্রের আমদানি হয়েছিল।<ref name="Kn">{{citeবই bookউদ্ধৃতি|authorলেখক=Iqtidar Alam Khan|titleশিরোনাম=Gunpowder And Firearms: Warfare In Medieval India|yearবছর=2004|publisherপ্রকাশক=Oxford University Press|isbnআইএসবিএন=978-0-19-566526-0}}</ref><ref name="kn2"/> [[দিল্লি সালতানাত| দিল্লির সুলতান]] [[আলাউদ্দিন খিলজি]] মঙ্গোলদের পরাজিত করায়, কিছু মঙ্গোল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে উত্তর ভারতে পাকাপাকিভাবে থেকে যায়।<ref name="kn2">{{citeবই bookউদ্ধৃতি|authorলেখক=Iqtidar Alam Khan|titleশিরোনাম=Historical Dictionary of Medieval India|urlইউআরএল=https://books.google.com/books?id=pzZFUcDpDzsC&pg=PA157|dateতারিখ=25 April 2008|publisherপ্রকাশক=Scarecrow Press|isbnআইএসবিএন=978-0-8108-5503-8|pageপাতা=157}}</ref> 'তারিখ-ই ফিরিস্তা''য় (১৬০৬–১৬০৭) লেখা আছে ১২৫৮ খৃষ্টাব্দে মঙ্গোল শাসক [[হালাকু খান|হালাকু খানে]]র দূতকে স্বাগত জানাতে [[দিল্লি]]তে আতসবাজির প্রদর্শনী করা হয়।<ref name="khan 9 10">Khan, 9-10</ref> [[তৈমুর লং|তৈমুরীয়]] শাসক শাহ রূখের (১৪০৫-১৪৪৭) ভারতীয় দূতাবাসের আব্দ অল-রাজ্জাক বলেছেন হাতির পিঠে বসে ন্যাপথা ছুঁড়ে নানা ধরনের আতসবাজির প্রদর্শনী দেখানো হত।<ref name=GF2>Partington, 217</ref> ১৩৬৬ সালে [[বিজয়নগর সাম্রাজ্য|বিজয়নগর সাম্রাজ্যে]] ''তোপ-ও-তুফাক'' নামে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহৃত হত।<ref name="khan 9 10"/> এই সময় থেকে ভারতীয় উপমহাদেশের যুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্রের বহুল ব্যবহার শুরু হয়। ১৪৭৩ সালে বেলগাঁও-এ [[বাহমানি সালতানাত|বাহমানি]] [[সুলতান]] মুহম্মদ শাহ বাহমনির অবরোধের মত সমরকৌশল, যা মধ্যযুগে আগ্নেয়াস্ত্র নির্ভর যুদ্ধের অন্যতম অভিজ্ঞান, প্রায়শঃই দেখা যেতে শুরু করে।<ref name="khan 10">Khan, 10</ref>
 
জেমস রিডিক পার্টিংটন তাঁর ''গ্রীক আগুন ও বারুদের ইতিহাস'' (''A History of Greek Fire and Gunpowder'', [[বাংলা ভাষা]]য় আ হিস্টোরি অফ গ্রীক ফায়ার অ্যান্ড গানপাউডার) গ্রন্থে ১৬শ ও ১৭শ শতাব্দীর [[মুঘল সাম্রাজ্য|মুঘল]] ভারতে আগ্নেয়াস্ত্র নির্ভর যুদ্ধের বর্ণনা করেছেন, এবং লিখেছেন যে, "ইউরোপে ব্যবহার করার আগে ভারতীয় যুদ্ধ রকেটগুলি ভয়ঙ্কর অস্ত্র ছিল। বাঁশের লাঠিতে লোহার ছুঁচালো মাথাযুক্ত রকেটগুলি বাঁধা থাকত। সলতেয় অগ্নিসংযোগ করে লক্ষ্যবস্তুর দিকে তাক করে চালনা করা হত, তবে গতিপথ অনিশ্চিত ছিল ... আকবর ও জাহাঙ্গীরের আমলে বিস্ফোরক মাইন ও পাল্টা-মাইন ব্যবহারের উল্লেখ পাওয়া যায়।"<ref name=partingtonquote>Partington, 226</ref> ভারতে এই রকেটগুলি ''তীর-এ-হাওয়াই'' বা ''অগ্নি বাণ'' নামেও পরিচিত ছিল।<ref>{{en}}{{ওয়েব উদ্ধৃতি |লেখক1=H. M. Iftekhar Jaim |শিরোনাম=Jaim H.M.I., Jaim J. (2014) War Rockets in India. In: Selin H. (eds) Encyclopaedia of the History of Science, Technology, and Medicine in Non-Western Cultures. Springer, Dordrecht|লেখক2=Jasmine Jaim |ইউআরএল=https://link.springer.com/referenceworkentry/10.1007%2F978-94-007-3934-5_10216-1 |প্রকাশক=Springer, Dordrecht |সংগ্রহের-তারিখ=৯ জানুয়ারি ২০১৯ |doiডিওআই=10.1007/978-94-007-3934-5_10216-1 |তারিখ=৪ অক্টোবর ২০১৪}}</ref>
 
১৬শ শতাব্দী থেকেই, ভারতে বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র বানানো শুরু হয়ে গিয়েছিল। তাঞ্জোর, [[ঢাকা]], বিজাপুর ও [[মুর্শিদাবাদ|মুর্শিদাবাদে]], বিশেষ করে, বড় বড় কামান দেখা যেতে শুরু করে।<ref name=GF3>Partington, 225</ref> [[কোঝিকোড়|কালিকট]] (১৫০৪) ও [[দিউ]] (১৫৩৩) থেকে ব্রোঞ্জের কামান পাওয়া গেছে।<ref name="partingtonquote">Partington, 226</ref> ১৭শ শতাব্দীতে [[গুজরাট]] থেকে ইউরোপে শোরা রপ্তানি করা হত আগ্নেয়াস্ত্র নির্ভর যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য।<ref name=IndiaBritannica>Encyclopædia Britannica (2008), ''India.''</ref> [[বাংলা]] ও মালওয়াতে শোরা প্রস্তুত করা হত।<ref name=IndiaBritannica/> ইংরেজ, ফরাসি, ওলন্দাজ ও পর্তুগীজেরা [[ছাপরা]]কে কেন্দ্র করে শোরা পরিশোধন করত।<ref>Encyclopædia Britannica (2008), ''Chāpra.''</ref>
১১৩ নং লাইন:
১৮শ শতাব্দীর শেষে ভারতীয় ডাক ব্যবস্থা অতীব দক্ষ হয়ে ওঠে।<ref name=Peabody1/> যেমন, টমাস ব্রোটনের বক্তব্য অনুযায়ী, [[যোধপুর]] মহারাজা তাঁর রাজধানী থেকে ৩২০ কি.মি. দূরে নাথাদেওরার মন্দিরে প্রত্যেক দিন তাজা ফুলের অর্ঘ্য পাঠাতেন, যা পরের দিন সূর্য্যোদয়ের সাথে সাথে ঠিক প্রথম [[ষড়দর্শন|দর্শনে]]র সময় পৌঁছে যেত।<ref name=Peabody1>Peabody, 71</ref> পরবর্তী পর্যায়ে [[ব্রিটিশ রাজ]] আসার সঙ্গে ডাক ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ হয়।<ref name=Lowe/> ১৮৩৭ সালের ১৭তম পোস্ট অফিস আইন (''The Post Office Act XVII of 1837'') বলে [[ভারতের গভর্নর-জেনারেল]] [[ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি]]র এলাকার যে কোনো স্থানে ডাক মাধ্যমে সংবাদ পাঠাতে পারতেন।<ref name=Lowe/> কিছু আধিকারিকের এই বিনামূল্যে ডাক ব্যবস্থা ব্যবহার করার সুবিধা, পরের দিকে বিতর্কের সৃষ্টি করে।<ref name=Lowe/> ১লা অক্টোবর ১৮৩৭ সালে ভারতীয় পোস্ট অফিস পরিষেবার সূচনা হয়।<ref name=Lowe>Lowe, 134</ref> কৌশলগত এবং বাণিজ্যিক প্রয়োজনে ব্রিটিশেরা ভারতে এক সুবিশাল [[রেল পরিবহন]] ব্যবস্থা গড়ে তোলে।<ref>Seaman, 348</ref>
 
ভারতে ব্রিটিশ শিক্ষাব্যবস্থা মূলতঃ স্থানীয় জন সমাজ থেকে পুর ও প্রশাসনিক চাকরির যোগ্য প্রার্থী তৈরী করার উদ্দেশ্যে চালু হলেও, এর ফলে ভারতীয় ছাত্রদের কাছে বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দরজা খুলে যায়।<ref name=Rajendran>Raja (2006)</ref> [[জগদীশ চন্দ্র বসু| স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু]] (১৮৫৮–১৯৩৭), [[প্রফুল্ল চন্দ্র রায়|আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়]] (১৮৬১-১৯৪৪), [[সত্যেন্দ্রনাথ বসু]] (১৮৯৪–১৯৭৪), [[মেঘনাদ সাহা]] (১৮৯৩–১৯৫৬), [[প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ]] (১৮৯৩–১৯৭২), [[চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন|স্যার চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন]] (১৮৮৮–১৯৭০), [[সুব্রহ্মণ্যন চন্দ্রশেখর]] (১৯১০–১৯৯৫), [[হোমি জাহাঙ্গীর ভাভা]] (১৯০৯–১৯৬৬), [[শ্রীনিবাস রামানুজন]] (১৮৮৭–১৯২০), [[উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী]] (১৮৭৩–১৯৪৬), বিক্রম সারাভাই (১৯১৯–১৯৭১), [[হর গোবিন্দ খোরানা]] (১৯২২–২০১১), হরিশ চন্দ্র (১৯২৩–১৯৮৩), এবং [[আবদুস সালাম (পদার্থবিজ্ঞানী)|আবদুস সালাম]] (১৯২৬-১৯৯৬) হলেন এই সময়ের কিছু উল্লেখযোগ্য কৃতি বিজ্ঞানী।<ref name=Rajendran/>
 
ঔপনিবেশিক যুগে স্থানীয় ও ঔপনিবেশিক বিজ্ঞান গবেষণার গভীর আদান-প্রদান ছিল।<ref name=Arnold211>Arnold, 211</ref> পাশ্চাত্য বিজ্ঞানের প্রভাবকে শুধুমাত্র ঔপনিবেশিক সত্তা হিসাবে দেখা হত না বরং ভারতীয় জাতি গঠনে এর উপযোগিতা,<ref name=Arnold212/> বিশেষ করে কৃষি ও বাণিজ্যে পাশ্চাত্য বিজ্ঞানের অবদান অনস্বীকার্য ছিল।<ref name=Arnold211/> ভারতীয় বিজ্ঞানীরাও সারা ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েন।<ref name=Arnold212>Arnold, 212</ref> ভারতের স্বাধীনতার সময় ঔপনিবেশিক যুগে গড়ে ওঠা ভারতীয় বিজ্ঞান সারা বিশ্বে সমাদৃত হতে শুরু করে।
 
ফরাসি জ্যোতির্বিদ, পিয়ের জ্যানসেন ১৮ই আগস্ট ১৮৬৮ সালের সূর্যগ্রহণ নিরীক্ষা করে হিলিয়াম গ্যাস আবিষ্কার করেন ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ রাজ্যের [[গুন্টুর]] থেকে।<ref name=Arnold212/> ১৮৯৭ সালে [[রোনাল্ড রস|স্যার রোনাল্ড রস]] প্রথমে সেকেন্দ্রাবাদে ও পরে [[কলকাতা]]য় গবেষণা করে আবিষ্কার করেন ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ মশক-বাহিত।<ref>{{en}}{{citeসাময়িকী journalউদ্ধৃতি|lastশেষাংশ=Ross|firstপ্রথমাংশ=R|titleশিরোনাম=On some Peculiar Pigmented Cells Found in Two Mosquitos Fed on Malarial Blood|journalসাময়িকী=British Medical Journal|yearবছর=1897|volumeখণ্ড=2|issueসংখ্যা নং=1929|pagesপাতাসমূহ=1786–8|pmid=20757493| pmc=2408186|doiডিওআই=10.1136/bmj.2.1929.1786}}</ref><ref>{{en}}{{citeওয়েব webউদ্ধৃতি|lastশেষাংশ=Sinden|firstপ্রথমাংশ=Robert E|titleশিরোনাম=Malaria, mosquitoes and the legacy of Ronald Ross|urlইউআরএল=http://www.who.int/bulletin/volumes/85/11/04-020735/en/|publisherপ্রকাশক=World Health Organization|accessdateসংগ্রহের-তারিখ=31 January 2014}}</ref> এই কাজের জন্য তিনি নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন।<ref>{{en}}{{citeওয়েব webউদ্ধৃতি|titleশিরোনাম=Ronald Ross – Facts|urlইউআরএল=https://www.nobelprize.org/nobel_prizes/medicine/laureates/1902/ross-facts.html|publisherপ্রকাশক=Nobel Media AB|accessdateসংগ্রহের-তারিখ=31 January 2014}}</ref>
 
{{about||[[ভারত|স্বাধীন ভারতে]] বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির|ভারতীয় প্রজাতন্ত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি}}
১২৫ নং লাইন:
 
==টিকা==
{{সূত্র তালিকা|3}}
{{Reflist|3}}
 
==তথ্যসূত্র==