বঙ্গাব্দ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
[অপরীক্ষিত সংশোধন] | [অপরীক্ষিত সংশোধন] |
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
বানান ঠিক করা হয়েছে ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল অ্যাপ সম্পাদনা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ সম্পাদনা |
|||
১২ নং লাইন:
দ্বিতীয় মত অনুসারে, ইসলামী শাসনামলে [[হিজরী পঞ্জিকা]] অনুসারেই সকল কাজকর্ম পরিচালিত হত। মূল হিজরী পঞ্জিকা চান্দ্র মাসের উপর নির্ভরশীল। চান্দ্র বৎসর সৌর বৎসরের চেয়ে ১১/১২ দিন কম হয়। কারণ সৌর বৎসর ৩৬৫ দিন, আর চান্দ্র বৎসর ৩৫৪ দিন। একারণে চান্দ্র বৎসরে ঋতুগুলি ঠিক থাকে না। আর বঙ্গদেশে চাষাবাদ ও এজাতীয় অনেক কাজ ঋতুনির্ভর। এজন্য [[মোগল সম্রাট]] [[আকবর|আকবরের]] সময়ে প্রচলিত হিজরী চান্দ্র পঞ্জিকাকে সৌর পঞ্জিকায় রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সম্রাট আকবর [[ইরান]] থেকে আগত বিশিষ্ট [[জ্যোতির্বিজ্ঞানী]] [[ফতুল্লাহ শিরাজী|আমির ফতুল্লাহ শিরাজীকে]]<ref name="বঙ্গাব্দ">{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=বৈশাখ : গ্রাম বাংলার সাংস্কৃতিক আশ্রয়, বাংলা নিউজ ২৪ ডট কম |ইউআরএল=http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=5a51fbf3bb159dc5ce4ed59bcbca8950&nttl=103829 |সংগ্রহের-তারিখ=১৬ এপ্রিল ২০১২ |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20140812053910/http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=5a51fbf3bb159dc5ce4ed59bcbca8950&nttl=103829 |আর্কাইভের-তারিখ=১২ আগস্ট ২০১৪ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref> হিজরী চান্দ্র বর্ষপঞ্জীকে সৌর বর্ষপঞ্জীতে রূপান্তরিত করার দায়িত্ব প্রদান করেন। ফতুল্লাহ শিরাজীর সুপারিশে [[ইরান|পারস্যে]] প্রচলিত [[ইরানি বর্ষপঞ্জী|ফার্সি বর্ষপঞ্জীর]] অনুকরণে<ref name="ইরানি বর্ষপঞ্জী">[http://blog.bdnews24.com/srishtiokristi/82705 বাংলা বর্ষপঞ্জি (Bangla Calender)]</ref> ৯৯২ [[হিজরী বর্ষপঞ্জি|হিজরী]] মোতাবেক ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট আকবর হিজরী সৌর বর্ষপঞ্জীর প্রচলন করেন। তবে তিনি ঊনত্রিশ বছর পূর্বে তার সিংহাসন আরোহনের বছর থেকে এ পঞ্জিকা প্রচলনের নির্দেশ দেন। এজন্য ৯৬৩ হিজরী সাল থেকে বঙ্গাব্দ গণনা শুরু হয়। ৯৬৩ হিজরী সালের [[মুহররম]] মাস ছিল বাংলা [[বৈশাখ]] মাস, এজন্য বৈশাখ মাসকেই বঙ্গাব্দ বা বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস এবং [[পহেলা বৈশাখ|১লা বৈশাখ]]কে নববর্ষ ধরা হয়।<ref name="বৈশাখ">[http://www.quraneralo.com/history-of-bangla-newyear/]</ref>
শামসুজ্জামান খান<ref name="meghna">{{বই উদ্ধৃতি|
=== ইসলামী প্রভাব ===
শামসুজ্জামান খান বলেন, “একে বাংলা সন বা সাল বলা হয়। এই সন ও সাল হল যথাক্রমে আরবী ও ফারসী শব্দ। এটা নির্দেশ করছে এগুলো মুসলিম রাজা বা সুলতান কর্তৃক বাংলায় পরিচিত করানো হয়”।<ref name="meghna" /> অন্যদিকে নিতীশ সেনগুপ্ত বলেন, এর ঐতিহ্যগত নামটি হল বঙ্গাব্দ।<ref name="Sengupta2011" /><ref>Syed Ashraf Ali, [http://en.banglapedia.org/index.php?title=Bangabda Bangabda], National Encyclopedia of Bangladesh</ref> [[আকবর|আকবরের]] সময় এই বর্ষপঞ্জিকে বলা হত ''তারিখ-ই-ইলাহি''। বর্ষপঞ্জির তারিখ-ই-ইলাহি ভারশনে, প্রতিটি দিন এবং মাসের আলাদা আলাদা নাম ছিল, আর এখন যে মাসের নামগুলো দেখা যাচ্ছে তারিখ-ই-ইলাহিতে এরকম মাসের নামের বদলে অন্য মাসের নাম ছিল। বাংলাপিডিয়া অনুসারে, আকবরের পৌত্র [[শাহ জাহান]] রবিবার দিয়ে শুরু হওয়া সাত দিনের সপ্তাহের প্রচলনের জন্য এই তারিখ-ই-ইলাহি বর্ষপঞ্জির সংস্কার করেন। আর সেই সাথে কোন এক অজানা সময়ে সেই সময় বর্তমান থাকা [[শকাব্দ|শকাব্দে]] (ভারতীয় জাতীয় বর্ষপঞ্জি) থাকা মাসের নামের সাথে মিলিয়ে তারিখ-ই-ইলাহির মাসের নামকরণ করা হয়। আজ বাংলায় যে বর্ষপঞ্জিটি ব্যবহার করা হয়, সেই বর্ষপঞ্জিটিই তার ভিত্তি স্থাপন করে।<ref name="Sengupta2011" /><ref name="ChakrabartiChakrabarti2013">{{
মুঘল আমলে, ইসলামিক হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুসারে বাঙ্গালিদের থেকে খাজনা আদায় করা হত। সেই বর্ষপঞ্জিটি ছিল একটি চান্দ্র্য বর্ষপঞ্জি, আর তাই সৌর কৃষিচক্রের সাথে সেই বর্ষপঞ্জিটির কোন সমন্বয় ছিল না কোন কোন উৎস্য অনুযায়ী, খাজনা দানের সময় যে উৎসব এর আয়োজন হত সেই রীতি মুঘল সম্রাট আকবরেরই তৈরি, আর তখন থেকেই বাংলা সালকে বঙ্গাব্দ বলা হত। আকবর তার রাজজোতিষী [[ফতুল্লাহ শিরাজী|ফতুল্লাহ শিরাজীকে]] চান্দ্র্য ইসলামিক বর্ষপঞ্জি এবং সৌর হিন্দু বর্ষপঞ্জিকে সমন্বিত করে একটি বর্ষপঞ্জি তৈরি করতে বলেন। আকবরের দেয়া আজ্ঞা পালন করে ফতুল্লাহ শিরাজী যে বর্ষপঞ্জি তৈরি করে দেন তা ''ফশলি শান'' (কৃষি বর্ষপঞ্জি) নামে পরিচিত ছিল।<ref name="Chakrabarti114">{{বই উদ্ধৃতি|
আবার এটাও অস্পষ্ট যে বাংলা বর্ষপঞ্জি হুসেন শাহ না আকবর কর্তৃক গৃহীত হয়।<ref name="Sengupta2011" /> বাংলা বর্ষপঞ্জির রীতি আকবরের পূর্বে হুসেন শাহ চালু করে থাকতে পারেন। নিতীশ সেনগুপ্ত বলেন, বাংলা বর্ষপঞ্জি হুসেন শাহই শুরু করুন আর আকবরই, এটা বাংলার ঐতিহ্যগত বর্ষপঞ্জির ভিত্তিতে বসন্তের ফসল সংগ্রহের পর খাজনা আদায় করার কাজ সহজ করে দিয়েছিল। কারণ ইসলামী হিজরি বর্ষপঞ্জি খাজনা আদায়ের দিন ধার্য করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু প্রশাসনিক জটিলতার সৃষ্টি করে।<ref name="Sengupta2011" />
২৪ নং লাইন:
{{further|হিন্দু বর্ষপঞ্জী}}কোন কোন ঐতিহাসিক বলেন বাংলা বর্ষপঞ্জি এসেছে ৭ম শতকের হিন্দু রাজা [[শশাঙ্ক|শশাঙ্কের]] কাছ থেকে।<ref name="meghna" /><ref name="Sengupta2011" /><ref name="Chakrabarti114" /> আকবরের সময়ের অনেক শতক আগে নির্মিত দুটি শিব মন্দিরে ''বঙ্গাব্দ'' শব্দটির উল্লেখ পাওয়া যায়। আর এটাই নির্দেশ করে, আকবরের সময়ের আরও অনেক আগেও বাংলা বর্ষপঞ্জির অস্তিত্ব ছিল।<ref name="Sengupta2011" />
বৈদিক আচার অনুষ্ঠানের জন্য কোন সময়ে কি কাজ হবে এধরণের ধারণা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বৈদিক যুগের জ্যোতিঃশাস্ত্রে পারদর্শীগণ তখন মহাকাশের বিভিন্ন জ্যোতিষ্কের চলাফেরা দেখে সময় সম্পর্কিত হিসাব নিকাশ ও এই সব আচার অনুষ্ঠানের দিন নির্ধারণ করার কাজ করতেন।<ref name="monierwilliamsnijyotisa">{{বই উদ্ধৃতি|
হিন্দু বিক্রমী বর্ষপঞ্জির নামকরণ করা হয় বিক্রমাদিত্যের নাম অনুসারে, এটা শুরু হয় খ্রিষ্টপূর্ব ৫৭ অব্দ থেকে।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|
হিন্দু পণ্ডিতগণ সূর্য, চন্দ্র এবং অন্যান্য গ্রহসমূহের ক্রমাবর্তনকে পর্যবেক্ষণ এবং হিসাব করে সময়ের হিসাব রাখার চেষ্টা করতেন। সূর্য সম্পর্কিত এই হিসাব নিকাশ সংস্কৃত ভাষার বিভিন্ন জ্যোতিঃশাস্ত্র বিষয়ক গ্রন্থে উঠে এসেছে, যেমন ৫ম শতকে [[আর্যভট্ট]] কর্তৃক রচিত আর্যভট্টীয়, ৬ষ্ঠ শতকে লটদেব কর্তৃক রচিত রোমক এবং [[বরাহমিহির]] কর্তৃক রচিত পঞ্চসিদ্ধান্তিকা, ৭ম শতকে [[ব্রহ্মগুপ্ত]] কর্তৃক রচিত খাণ্ডখাণ্ড্যক ইত্যাদি।<ref name="Burgess1989vii">{{বই উদ্ধৃতি|
ভারতীয় রাজ্যগুলো যেমন পশ্চিমবঙ্গ্, ত্রিপুরা এবং আসামের বাঙ্গালীদের ব্যবহৃত বাংলা বর্ষপঞ্জি সূর্য সিদ্ধান্ত নামক সংস্কৃত গ্রন্থের উপর ভিত্তি করে বানানো বলে অনেকে বলে থাকেন। এখানে মাসগুলোর ঐতিহাসিক সংস্কৃত নাম রক্ষা করা হয়, সেই সাথে এর প্রথম মাসের নামও বৈশাখ।<ref name="Chakrabarti114" /> এই বর্ষপঞ্জি হিন্দু বর্ষপঞ্জি ব্যবস্থার সাথে শক্তভাবে বন্ধনে আবদ্ধ এবং বিভিন্ন বাঙ্গালী হিন্দু উৎসব এটা দেখে ঠিক করা হয়।<ref name="Chakrabarti114" />
১৪৫ নং লাইন:
== দিন ==
বাংলা সন অন্যান্য সনের মতনই ৭ দিনকে গ্রহণ করেছে এবং এ দিনের নামগুলো অন্যান্য সনের মতনই [[তারামণ্ডল|তারামণ্ডলের]] উপর ভিত্তি করেই করা হয়েছে। ঐতিহ্যগত ভাবে সূর্যোদয় থেকে বাংলা দিন গণনার রীতি থাকলেও ১৪০২ সালের ১ বৈশাখ থেকে বাংলা একাডেমী এই নিয়ম বাতিল করে আন্তর্জাতিক রীতির সাথে সামঞ্জস্য রাখতে রাত ১২.০০টায় দিন গণনা শুরুর নিয়ম চালু করে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|
{| class="wikitable" style="width:10%;"
|