পূর্ব পাকিস্তান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
St.teresa (আলোচনা | অবদান)
উইকিসংযোগ
নিলয় সরকার (আলোচনা | অবদান)
বানান
ট্যাগ: দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
১২৮ নং লাইন:
=== ভাষা আন্দোলন ===
{{মূল নিবন্ধ|বাংলা ভাষা আন্দোলন}}
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমি অনুসন্ধান করে দেখা যায় ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকেই শুরু হয় পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণমূলক আচরণ। কেবল অর্থনৈতিক শোষণ নয়, বাঙ্গালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ওপরও নিপীড়ন শুরু হয় এবং এর প্রথম দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয় যখন পাকিস্তানের জনক [[মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ]] ঢাকায় এসে ঘোষণা দেন "উর্দু এবং কেবলমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা"। সাথে সাথে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙ্গালীরা এই ঘোষণার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্যে এই আন্দোলন তীব্রতম রূপ ধারণ করে। এদিন পুলিশের গুলিতে প্রাণমারা দেনযান সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার সহ আরো অনেকে। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীকে শেষ পর্যন্ত ১৯৫৬ সালে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দিতে হয়। আজ পৃথিবীব্যাপী ২১শে ফেব্রুয়ারি [[আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস]] হিসেবে পালিত হয়।
 
=== সামরিক বৈষম্য ===
 
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীতে [[বাঙালি জাতি|বাঙালিরা]] অবহেলিত ছিল। পাকিস্তানি সশস্ত্রবাহিনীর কর্মকর্তাদের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ ছিলেন বাঙালি এবং এঁদের মধ্যে অধিকাংশই প্রযুক্তিগত বা ব্যবস্থাপনার পদে ছিলেন। খুব অল্প সংখ্যক বাঙালি অফিসার আদেশদানকারী পদ লাভের সুযোগ পেতেন। পশ্চিম পাকিস্তানিরা বিশ্বাস করত বাঙালিরা পশতুন বা পাঞ্জাবিদের মত "সাহসী" নয়। পাকিস্তানের বাজেটের একটি বিশাল অংশ সামরিক খাতে বরাদ্দ থাকলেও পূর্ব পাকিস্তান এর সুফল সামান্যই পেত। ১৯৬৫ সালে কাশ্মীর নিয়ে [[ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৬৫|ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ]] পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি আরো বাড়িয়ে দেয়।
 
=== রাজনৈতিক অসমতা ===
১৫৩ নং লাইন:
== বাংলাদেশের অভ্যুদয় ==
 
১৯৭০ সালের ১১ নভেম্বর এক প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে পূর্ব পাকিস্তানের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ৫ লক্ষ লোকের মৃত্যু ঘটে। এ সময় বাঙালিদের প্রতি পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের অসহযোগিতা ও ঔদাসীন্য প্রকট হয়ে ওঠে। ১৯৭০ সালের সংসদীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করলেও সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা করতে থাকে<ref>Baxter, pp. 78—79</ref>। মুজিবের সাথে গোলটেবিল বৈঠক সফল না হওয়ার পর পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জেনারেল ইয়াহিয়া খান ২৫ মার্চ গভীর রাতে মুজিবকে গ্রেপ্তার করেন এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অপারেশন সার্চলাইটের অংশ হিসাবে বাঙালিদের উপর নির্বিচারে আক্রমণ শুরু করে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এই নারকীয় হামলাযজ্ঞে রাতারাতি বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। সেনাবাহিনী ও তার স্থানীয় দালালদের অন্যতম লক্ষ্য ছিল বুদ্ধিজীবী ও সংখ্যালঘু হিন্দু জনগোষ্ঠী। গণহত্যা থেকে নিস্তার পেতে প্রায় ১ কোটি অসহায় মানুষ দেশ ছেড়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতে আশ্রয় নেয়<ref>LaPorte, pp. 103</ref>। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মোট জীবনহানির সংখ্যার হিসাব কয়েক লক্ষ হতে শুরু করে ৩০ লক্ষ পর্যন্ত অনুমান করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা [[ভারত|ভারতে]] আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাঁরা ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আমবাগানে অস্থায়ী সরকার গঠন করেন। এর প্রধানমন্ত্রী হন তাজউদ্দিন আহমদ। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা প্রায় ৯ মাস পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর বিরূদ্ধে লড়াই করে। [[মুক্তিবাহিনী]] ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ভারতের সহায়তায় ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে পরাভূত করে।করে।ভারতীয় মিত্রবাহিনী প্রধান জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর পাকিস্তান বাহিনীর প্রধান জেনারেল নিয়াজী ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করেন। প্রায় ৯০,০০০ পাকিস্তানি সৈন্য যুদ্ধবন্দি হিসেবে আটক হয়; যাদেরকে ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়। ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তান পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং স্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী রাষ্ট্র বাংলাদেশ গঠন করে।
 
== তথ্যসূত্র ==