নাট্যকলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Ash wki (আলোচনা | অবদান)
Ash wki মঞ্চনাটক কে নাট্যকলা শিরোনামে স্থানান্তর করেছেন: ভুল পরিভাষা
Ash wki (আলোচনা | অবদান)
সংশোধন
৭ নং লাইন:
|-
|
[[নাচ]]{{·}} [[গান]]{{·}} গীতিনাট্য{{·}} মঞ্চনাটকনাট্যকলা{{·}} সার্কাস <br />
|-
!style="padding-top:0.5em;"| <div style="background:antiquewhite;">গৌণ রূপসমূহ</div>
২৩ নং লাইন:
|{{navbar|পারফর্মিং আর্ট|plain=1}}
|}<noinclude>
'''মঞ্চনাটকনাট্যকলা''' ({{lang-en|Theatre বা Theater}}) দর্শকের সম্মুখে স্থাপিত মঞ্চে বা পটে অভিনীত নাটক। এটি শিল্পমাধ্যমের (পারফর্মিং আর্ট) একটি শাখা। দর্শক বা শ্রোতার জন্য যেকোনো পরিবেশনাকে (পারফর্মেন্সকে) মঞ্চনাটকনাট্যকলা হিসেবে বিবেচনা করা গেলেও পারফর্মিং আর্ট হিসেবে মঞ্চনাটকনাট্যকলা বিশেষভাবে জোর দেয় সরাসরি অংশগ্রহণকারীদের দ্বারা সৃষ্ট একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ নাটকের ওপর।<ref>Encyclopedia Britannica, Volume 28 page 521</ref> একটি পরিবেশনাকে নাট্যধর্মী বা নাটকীয় বলা যেতে পারে যদি তা একটি বাস্তবানুগ মায়া বা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে।<ref>Encyclopedia Britannica, Volume 28 page 561</ref> এই দুইটি বিস্তারিত সংজ্ঞা অনুযায়ী বলা যায় যে মঞ্চনাটকেরনাট্যকলার অস্তিত্ব ছিল মানবসভ্যতার প্রত্যূষকালেও, কারণ [[গল্প]] বলার একটি স্বাভাবিক প্রকৃতিগত প্রবণতা প্রতিটি মানুষে বিদ্যমান। সূচনাকাল থেকেই মঞ্চনাটকনাট্যকলা অনেকরকম রূপ বা প্রকার ধারণ করেছে; প্রয়োগ করেছে অনেক রকম কথা, দেহভঙ্গি, [[গান]], [[নৃত্য|নাচ]], দৃশ্য বা ঘটনা। দৃশ্যগ্রাহ্য কলাসহ (চিত্রাঙ্কণ, ভাষ্কর্য ইত্যাদি) অন্যান্য পারফর্মিং আর্টগুলোকে মঞ্চনাটকনাট্যকলা একত্রিত করেছে একটিমাত্র সমন্বিত শিল্পের প্রকারে।
 
== মঞ্চনাটকেরনাট্যকলার ইতিহাস ==
 
[[চিত্র:Epidaurus Theater.jpg|thumb|320px|প্রাচীন গ্রিসের একটি ছোট শহর এপিডরেসের '''হেলেনিক''' থিয়েটারের একটি বিস্তৃত দৃশ্য]]
''মঞ্চনাটক'' শব্দটির মানে হলো ''দর্শনের জন্য যে স্থান''। <ref>[http://encyclopedia.jrank.org/TAV_THE/THEATRE_BEarpov_a_place_for_see.html Theatre]. 1911 Encyclopedia Britannica, Volume V26, p. 729.</ref> ২৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে [[মিশর|মিশরে]] একটি ধর্মীয় নাটক অনুষ্ঠিত হয়। নাটকটির কাহিনী নেয়া হয়েছিল বিখ্যাত মিশরীয় মিথলজি "'''মিথ অভ ওসিরিস অ্যান্ড আইসিস'''" থেকে। আর এটাই ছিলো নাট্য-সম্পর্কিত প্রথম কোনো ঘটনা যার তথ্য নথিপত্রে পাওয়া যায়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Stanton|প্রথমাংশ=Sarah |coauthors=Banham, Martin |শিরোনাম=Cambridge paperback guide to theatre |প্রকাশক=Cambridge University Press|অবস্থান=Cambridge, England|বছর=1996|পাতা=241|অধ্যায়=Middle East and North Africa|আইএসবিএন=0-521-44654-6}}</ref> সেসময় প্রতি বছর প্রতিটি জনপদে বিভিন্ন উৎসবে পরিবেশিত হতো গড ওসিরিসের এই গল্প, ফলস্বরূপ মঞ্চনাটকনাট্যকলা আর [[ধর্ম|ধর্মের]] মাঝে দীর্ঘ এক সম্পর্কের সূচনা হয়।
 
প্রাচীন [[গ্রিস|গ্রিকরা]] মঞ্চনাটককেনাট্যকলাকে একটি নির্দিষ্ট আনুষ্ঠানিক রূপ দিতে শুরু করে। তারা ট্র্যাজেডি, কমেডিসহ মঞ্চনাটকের অন্যান্য রূপগুলোর, যেমন স্যাটায়ার এর, সুস্পষ্ট ও যথাযথ সংজ্ঞা গঠন করে। গ্রিকদের কাছ থেকেই প্রথম নাটকের সমালোচনার ধারণা পাওয়া যায়।এমনকি পেশা হিসেবে অভিনয়কে বেছে নেয়ার ধারণাও গ্রিকদের থেকেই পাওয়া গিয়েছে।। তারা মঞ্চনাটক নির্মাণের কৌশলেরও উন্নতি সাধন করে। <ref>Ward, A. C. (2007). ''Specimens of English Dramatic Criticism.'' Read Books. p. 1.</ref> আধুনিক দুনিয়ায় সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এগুলোকেই অভিযোজিত করা হয়েছে, ব্যাখ্যা করা হয়েছে হাজারো রকমের পন্থায়। উদাহরণস্বরূপ ''অ্যান্টিগোনে'' নাটকটির কথা বলা যেতে পারে, ১৯৪৪ সালে ফরাসি নাট্যকার ''জাঁ আনউই'' একে ব্যবহার করেছিলেন [[নাৎসি পার্টি|নাজি বাহিনীর]] [[ফ্রান্স]] দখল নিয়ে বক্তব্য প্রকাশের জন্য, আবার ১৯৪৮ সালে এই নাটকটিই ব্যবহার করেছিলেন জার্মান নাট্যকার [[বের্টোল্ট ব্রেশ্‌ট|ব্রেশ্‌ট]], যেখানে তিনি সাদৃশ্য দেখিয়েছিলেন মিশরের প্রাচীন নগরী থিবির শাসক ক্রেওনের সাথে [[আডলফ হিটলার|হিটলারের]] আর থিবির সাথে সাদৃশ্য দেখিয়েছিলেন পরাজিত [[জার্মানি|জার্মানির]]। <ref>{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=McDonald|প্রথমাংশ=Marianne|শিরোনাম=The living art of Greek tragedy|প্রকাশক=Indiana University Press|অবস্থান=Bloomington, IN|বছর=2003|পাতাসমূহ=80–81|আইএসবিএন=0253215978}}</ref> গ্রিক মঞ্চনাটকে ব্যবহৃত মুখোশ ব্যাপকভাবে পরিগৃহীত হয় প্রথম ও দ্বিতীয় শতকের রোমে। শোভাবর্ধক হিসেবে এই মুখোশের ব্যবহার শুরু হয় [[রোম|রোমানদের]] বাসভবনে ও সরকারি স্থানগুলিতে ।<ref name="WaltonMcDonald2007">{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=McCart|প্রথমাংশ=Gregory|সম্পাদক=McDonald, Marianne|শিরোনাম=The Cambridge companion to Greek and Roman theatre|বছর=2007|প্রকাশক=Cambridge University Press|অবস্থান=Cambridge, England|আইএসবিএন=0-521-83456-2|পাতাসমূহ=265–266|অধ্যায়=Masks in Greek and Roman Theatre|লেখক-ছদ্মনাম=|trans_title=|বিন্যাস=|প্রকৃত-বছর=|oclc=|ডিওআই=|বিবকোড=|আইডি=|trans_chapter=|অধ্যায়ের-ইউআরএল=|উক্তি=|laysummary=|laydate=}}</ref>
 
রোমান সাম্রাজ্যের অধীনে মধ্যযুগীয় ইংল্যান্ডে পশ্চিমা মঞ্চনাটকনাট্যকলা বিকাশ লাভ করে। এরপর [[স্পেন|স্পেনে]], [[ইতালি|ইতালিতে]], [[ফ্রান্স|ফ্রান্সে]] এবং [[রাশিয়া|রাশিয়ায়]] পর্যায়ক্রমিকভাবে অনেকরকম রূপ ধারণ করে মঞ্চনাটকনাট্যকলা সমৃদ্ধি লাভ করে ষোল, সতের এবং আঠার শতকে। এই শতকগুলিতে মঞ্চনাটকেরনাট্যকলার বিকাশ প্রক্রিয়ার একটি সাধারণ প্রবণতা ছিল [[রেনেসাঁস|রেনেসাঁ]] এবং গ্রিকদের কাব্যধর্মী নাটক থেকে সরে গিয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি বাস্তবধর্মী শৈলী, বিশেষ করে শিল্প-বিল্পবকে অনুসরণ করা।<ref>Kuritz, Paul (1988). ''The making of theatre history.'' PAUL KURITZ. p. 305. {{আইএসবিএন|978-0-13-547861-5}}.</ref> [[আমেরিকা|আমেরিকার]] (দ্য নিউ ওয়ার্ল্ড বা পনের শতকের পশ্চিম গোলার্ধ) উপনিবেশায়নের সাথে সাথে একটি উত্তর আমেরিকান মঞ্চনাটকও প্রকাশিত হয়।
 
পূর্বদেশীয় (প্রাচ্য) মঞ্চনাটকেরনাট্যকলার ইতিহাস ও আদি উৎসের সন্ধান পেতে চাইলে ফিরে তাকাতে হবে ১০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের প্রাচীন ভারতীয় [[সংস্কৃত ভাষা|সংস্কৃত]] মঞ্চনাটকে।নাট্যকলায়।<ref>Dhingra, Baldoon (1944). ''A national theatre for India.'' Padma Publications ltd. p. 6.</ref> [[গণচীন|চীনা]] মঞ্চনাটকওনাট্যকলাও একই সময় থেকে বিদ্যমান।<ref>[http://www.britannica.com/EBchecked/topic/1497494/Chinese-performing-arts Chinese performing arts]. [[Encyclopædia Britannica]].</ref> [[জাপান|জাপানি]] মঞ্চনাটকনাট্যকলা '''কাবুকি''', '''নোহ''' এবং '''কিয়োহজেন''' রয়েছে সতেরশ খ্রিষ্টাব্দ থেকে।<ref>Deal, William E. (2007). ''Handbook to life in medieval and early modern Japan.'' Oxford University Press US. p. 276. {{আইএসবিএন|978-0-19-533126-4}}.</ref> [[গণচীন|চীন]], কোরিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব [[এশিয়া]] জুড়ে সম্প্রসারিত হয়েছে পূর্বদেশীয় অন্যান্য মঞ্চনাটক।নাট্যকলা।
 
[[ইসলাম|ইসলামের]] মধ্যযুগে (সপ্তম খ্রিষ্টাব্দের মধ্যভাগ থেকে তের খ্রিষ্টাব্দের মধ্যভাগ) সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ছিলো '''পাপেট''' মঞ্চনাটকনাট্যকলা (এর মধ্যে ছিলো হ্যান্ড পাপেট, শ্যাডো প্লে বা শ্যাডো পাপেট্রি এবং ম্যারিওনেট প্রোডাকশন থেকে পাপেট পরিবেশনা ) এবং '''তাজিয়া''' নামে এক ধরণের আবেগঘন নাটক (প্যাশন প্লে)। তাজিয়ার অভিনেতারা ইসলামের ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ের ঘটনাবলীকে যেন পুনরুজ্জীবিত করে তুলতেন তাদের অভিনয়ের মাধ্যমে। বিশেষতঃ, ইসলামের [[শিয়া ইসলাম|শিয়া]] সম্প্রদায়ের নাটক বা পরিবেশনাসমূহ আবর্তিত হয়েছে খলিফা (নেতা বা রাষ্ট্রপ্রধান) [[আলী ইবন আবী তালিব|আলী'র]] পুত্র হাসান ইবনে আলী এবং হুসাইন ইবনে আলীকে ঘিরে।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Moreh|প্রথমাংশ=Shmuel|অবদান=Live Theater in Medieval Islam|শিরোনাম=Studies in Islamic History and Civilization|সম্পাদক-শেষাংশ=David Ayalon|সম্পাদক-প্রথমাংশ=Moshe Sharon|প্রকাশক=Brill Publishers|বছর=1986|আইএসবিএন=965264014X|পাতাসমূহ=565–601|পুনশ্চ=<!--None-->}}</ref>
 
== মঞ্চনাটকের ধরন ==
৫৪ নং লাইন:
 
== নাটক সম্পর্কিত দর্শনশাস্ত্র ==
একটি নাটক সৃষ্টির অনেকরকম তত্ত্ব, নাট্যসম্বন্ধীয় দৃষ্টিকোণ এবং শৈল্পিক প্রক্রিয়া রয়েছে। এর মধ্যে কোনো কোনোটার সাথে সংযোগ আছে রাজনৈতিক অথবা আধ্যাত্মিক চিন্তাধারার, আবার কোনো কোনো তত্ত্ব বা প্রক্রিয়ার ভিত্তি সম্পূর্ণরূপে শিল্পসম্বন্ধীয়। আবার কিছু প্রক্রিয়া কেন্দ্রীভূত হয় একটি গল্পকে ঘিরে এবং কিছু তত্ত্ব বা দৃষ্টিকোণ মঞ্চনাটককেনাট্যকলাকে তুলে ধরে সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে। [[এরিস্টটল|এরিস্টটলের]] নাট্যতত্ত্ব বিষয়ক সমালোচনামূলক নিবন্ধ "'''পোয়েটিকস'''" থেকে মঞ্চনাটকের জন্য ছয়টি অপরিহার্য উপাদান চিহ্নিত করা যায়। এগুলো হলোঃ প্লট (পরিকল্পনা বা রূপরেখা), চরিত্র, আইডিয়া (ভাব বা কল্পনা), ভাষা এবং দৃশ্য বা ঘটনা।<ref>Hatcher, Jeffrey (2000). ''The art & craft of playwriting.'' Writer's Digest Books. p. 21. {{আইএসবিএন|978-1-884910-46-3}}.</ref> নাটক সম্পর্কে স্পেনীয় নাট্যকার ''Lope de Vega'' লিখেছেন যে, মঞ্চনাটকের জন্য একজন ব্যক্তির প্রয়োজন "three boards, two actors, and one passion"।<ref>Gloman, Chuck B.; Napoli, Rob (2007). ''Scenic design and lighting techniques: a basic guide for theatre.'' Focal Press. p. 17. {{আইএসবিএন|978-0-240-80806-2}}.</ref> এছাড়াও মঞ্চনাটক তত্ত্ববিদ্যায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন রুশ অভিনেতা ও মঞ্চনাটক পরিচালক ''কনস্ট্যান্টিন স্তানিস্লাভস্কি'', ফরাসী কবি, অভিনেতা, নাট্যকার ও মঞ্চনাটক পরিচালক ''অ্যান্টনি আরটড'', জার্মান নাট্যকার, কবি ও মঞ্চনাটক পরিচালক [[বের্টোল্ট ব্রেশ্‌ট]], আমেরিকান চলচ্চিত্র নির্মাতা, অভিনেতা, চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক ও মঞ্চনাটক পরিচালক [[অরসন ওয়েলস]], ইংরেজ ও ফরাসী চলচ্চিত্র পরিচালক, মঞ্চনাটক পরিচালক ''পিটার ব্রুক'' এবং [[পোল্যান্ড|পোলিশ]] মঞ্চনাটক পরিচালক ও পরীক্ষামূলক মঞ্চনাটকের প্রবর্তক ''জর্জিও গ্রোটভস্কি''।
 
কনস্ট্যান্টিন স্তানিস্লাভস্কিকে বিবেচনা করা হয় মঞ্চনাটক কলানাট্যকলা-কৌশলের জনক হিসেবে, যেহেতু তিনিই প্রথম এ বিষয়ে লিখেছিলেন। আধুনিক পশ্চিমা মঞ্চনাটকের অধিকাংশ তত্ত্বই বিভিন্ন রূপে উদ্ভূত হয়েছে স্তানিস্লাভস্কির "পদ্ধতি" থেকে।<ref>Roose-Evans, James (1984). ''Experimental theatre from Stanislavsky to Peter Brook.'' Routledge. p. 6. {{আইএসবিএন|978-0-7100-9954-9}}.</ref> তবে স্তানিস্লাভস্কির অনেক ছাত্রই তাঁর "পদ্ধতি” প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এবং সৃষ্টি করেছিলেন তাঁদের নিজস্ব রীতি। এই প্রাথমিক নতুন রীতি বা পদ্ধতিই ভবিষ্যৎ তাত্ত্বিকদের পথ আলোকিত করতে সাহায্য করেছে, শেষ পর্যন্ত নেতৃত্ব দিয়েছে, এগিয়ে নিয়ে গেছে বহু বিস্তীর্ণ ও বিচিত্র পদ্ধতির দিকে। অভিনয় পদ্ধতির বহু বিস্তৃত সীমানা জুড়ে থাকা সেই সব রীতি ও পদ্ধতিই আজকের এই সময়ে পঠিত হয় এবং ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় ''মাইযনার'', ''স্তানিস্লাভস্কি'', ''স্ট্রাসবার্গ'' এবং ''হ্যাগেন'' অভিনয় পদ্ধতির কথা।
 
== মঞ্চনাটক ব্যবস্থাপনা ও সংগঠিতকরণ ==
অনেক আধুনিক মঞ্চনাটকনাট্যকলা আন্দোলন রয়েছে যা মঞ্চনাটক সৃষ্টি ও উপস্থাপন করছে বহু বিচিত্র উপায়ে।
 
[[চিত্র:Nova-Jerusalém-Fórum-Pilatos.jpg|thumb|right|200px|নিউ জেরুজালেম ত্থিয়েটারের রোমান ফোরাম থিয়েটার, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মুক্তাঙ্গন থিয়েটার]]
নাটক সম্পর্কিত যে সমস্ত উদ্যোগ রয়েছে তা এর উদ্দেশ্য, কৌশলের সূক্ষ্মতা ও নিপুণতার দিক দিয়ে বিভিন্ন প্রকারের হয় এবং এ প্রকারের সংখ্যাও প্রচুর। এতে জড়িত ব্যক্তিরাও পেশাদার হতে শখের মঞ্চনাটককর্মীনাট্যকর্মী হয়ে স্বতঃস্ফূর্ত শিক্ষানবিশ পর্যন্ত নানান ধরনের হয়ে থাকেন। অন্যদিকে, মঞ্চনাটক কোনো অর্থের বিনিময় ছাড়াও পরিবেশিত হতে পারে, আবার এর বাজেট কোটি কোটি টাকাও হতে পারে। এই বহুমূখিতা মঞ্চনাটকেরনাট্যকলার শাখা-উপশাখার প্রাচুর্যকেই সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করে। এই শাখা-উপশাখার মধ্যে রয়েছেঃ
 
* ব্রডওয়ে থিয়েটার এবং ওয়েস্ট এন্ড থিয়েটার ([[লন্ডন|লন্ডনের]] ওয়েস্ট এন্ডে পরিবেশিত,পৃথিবীর ইংরেজিভাষী অঞ্চলসমূহে সর্বোচ্চ স্তরের বা মর্যাদার থিয়েটারকে প্রতিনিধিত্ব করে বলে বিবেচিত। )
* কম্যুনিটি থিয়েটার (কোনো একটি গোষ্ঠীর দ্বারা সৃষ্ট বা তাদের জন্য সৃষ্ট যে থিয়েটার )
* ডিনার থিয়েটার (রেস্তোঁরায় খাওয়া ও সেই সাথে মঞ্চনাটকে নাটকমঞ্চনাটক বা সঙ্গিতধর্মী নাট্য প্রদর্শনকে সমন্বিত করেছে।)
* ফ্রিঞ্জ থিয়েটার (এই থিয়েটার মূলধারার অন্তর্ভুক্ত নয়, বরং এটা অল্টারনেটিভ বা বৈকল্পিক থিয়েটার।)
* অফ-ব্রডওয়ে (Off-Broadway) (ব্রডওয়ে থিয়েটারের রূপরেখার বাইরে এর অবস্থান, মূলত আমেরিকার [[নিউইয়র্ক|নিউইয়র্কে]] পরিবেশিত।) এবং অফ ওয়েস্ট এন্ড (Off West End)
৭৪ নং লাইন:
 
=== রেপাটরি গোষ্ঠি ===
যদিও বেশিরভাগ আধুনিক মঞ্চনাটকনাট্যকলা দল একটি করে নাটক অনুশীলন ও পরিবেশন করে এবং শেষে ঐ নাটকটিকে তুলে নিয়ে অপর একটি নতুন প্রদর্শনীর জন্য অনুশীলন করে, সেখানে রেপাটরি গোষ্ঠি একই সাথে একাধিক প্রদর্শনীর অনুশীলন করে থাকে। এই রেপাটরি কোম্পানিগুলো অনুরোধ সাপেক্ষে বিভিন্ন প্রদর্শনীর পরিবেশন করতে পারে এবং সেই নাটকগুলো তুলে নেয়ার আগে বছরব্যাপী প্রদর্শনী করে থাকে। অনেক নৃত্যদলই রেপাটরি পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়। লন্ডনের ''রয়েল ন্যাশনাল থিয়েটার'' এই রেপাটরি পদ্ধতিতেই প্রদর্শনী করে থাকে।
 
=== প্রযোজনা করা বনাম উপস্থাপন করা ===
[[চিত্র:CarreAmstelAmsterdam.jpg|thumb|250px|আমস্টার্ডামের একটি থিয়েটার, নেদারল্যান্ড]]
একটি নাটক মঞ্চস্থ করার জন্য একটি মঞ্চনাটক দল ও মঞ্চনাটকের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান এ দুই এরই প্রয়োজন হয়। যদি কোনো মঞ্চনাটকনাট্যকলা দল কোনো একটি থিয়েটার ভেন্যুর (মঞ্চনাটক প্রদর্শনের জন্য নির্দিষ্ট স্থান, সংক্ষেপে নাট্যশালা) জন্য নিয়োজিত একমাত্র দল হয় এবং তারা যদি বিভিন্ন থিয়েটার ভেন্যুতে নাটক পরিবেশন না করে ঐ একই ভেন্যুতে নাটক মঞ্চস্থ করে, তাহলে সেই থিয়েটার বা মঞ্চনাটকনাট্যকলা দলকে বলা হয় রেজিডেন্ট থিয়েটার অথবা প্রযোজনাকারী থিয়েটার, কারণ এক্ষেত্রে ঐ থিয়েটার ভেন্যুটি তার নিজস্ব নাটক বা পরিবেশনাকেই প্রযোজনা করছে। নৃত্যদল সহ অন্যান্য মঞ্চনাটকনাট্যকলা দলগুলোর নিজস্ব থিয়েটার ভেন্যু থাকে না। এই সমস্ত নাট্যদল তাদের নাটক পরিবেশন করে থাকে ভাড়া করা নাট্যশালায় (রেন্টাল থিয়েটার) অথবা সেইসব নাট্যশালায় যেগুলো শুধুমাত্র দর্শকের সামনে নাটক উপস্থাপনের কাজটিই করে (প্রেজেন্টিং থিয়েটার)। এই ধরনের নাট্যশালার কোনো পূর্ণকালীন রেজিডেন্ট থিয়েটার কোম্পানি বা নাট্যদল থাকেনা। বরং কখনো কখনো তাদের এক বা একাধিক খণ্ডকালীন রেজিডেন্ট কোম্পানির সাথে অন্যান্য স্বতন্ত্র অংশীদার কোম্পানি থাকে, যারা নাট্যশালায় স্থান খালি পাওয়া সাপেক্ষে তা ব্যবহার করে। স্বতন্ত্র নাট্যদলগুলো রেন্টাল থিয়েটার খুঁজে বের করে নাটক মঞ্চস্থ করার জন্য, অপরপক্ষে প্রেজেন্টিং থিয়েটার স্বতন্ত্র নাট্যদলগুলোকেই খুঁজে বের করে এবং তাদের নাটক মঞ্চস্থ করতে সাহায্য করে।
 
অনেক নাট্যদলই সুনির্দিষ্ট অভিনয়ের স্থানে নাটক প্রদর্শনকে অস্বীকার করে (সাধারণত) নাটক প্রদর্শন করা হয়না এমন সব স্থানে তাদের পরিবেশনা উপস্থাপন করে আসছে। এই পরিবেশনাগুলো হতে পারে ভেতরে বা বাইরে, তবে সনাতন নয়, প্রথাবিরোধী সব জায়গায় এবং এর মধ্যে পড়ছে পথনাটক ও নির্দিষ্ট স্থানের সাথে সম্পর্কযুক্ত নাটক।
৮৫ নং লাইন:
 
=== ইউনিয়ন ===
অনেক থিয়েটার ইউনিয়নই রয়েছে যেমন, '''ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইন্সটিটিউট''', '''অ্যাক্টরস ইক্যুয়িটি এসোসিয়েশন''' (অভিনয়শিল্পী ও মঞ্চ ব্যবস্থাপকদের জন্য), '''স্টেজ ডিরেক্টর অ্যান্ড কোরিওগ্রাফারস সোসাইটি''' (SDC), '''ইন্টারন্যাশনাল এলায়েন্স অভ থিয়েট্রিকাল এমপ্লয়ীজ''' (IATSE, ডিজাইনার ও যন্ত্রকারিগরদের জন্য)। অনেক মঞ্চনাটকনাট্যকলা দল চায় যে তাদের কর্মীবৃন্দ এই সব সংগঠনের সদস্য হবে।
"বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন" বাংলাদেশে গ্রুপ থিয়েটার আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য বাংলাদেশী নাট্যকর্মীদের সমন্বয় মঞ্চ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।