নিকারাগুয়া: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
InternetArchiveBot (আলোচনা | অবদান)
3টি উৎস উদ্ধার করা হল ও 0টি অকার্যকর হিসেবে চিহ্নিত করা হল। #IABot (v2.0beta10ehf1)
৬৬ নং লাইন:
 
== ভৌগলিক বৈশিষ্ট্য ==
নিকারাগুয়া মধ্য আমেরিকা যোজকে অবস্থিত সবচেয়ে বড় দেশ। উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত এই দেশটির অবস্থান ১১ ডিগ্রি উত্তর থেকে ১৪ ডিগ্রি উত্তর অক্ষরেখা ও ৭৯ ডিগ্রি পশ্চিম থেকে ৮৮ ডিগ্রি পশ্চিম দ্রাঘিমারেখার মধ্যে। অর্থাৎ দেশটি ক্রান্তীয় অঞ্চলের মধ্যে পড়ে। দেশটির আয়তন ১,২৯,৪৯৪ বর্গ কিলোমিটার বা ৫০,১৯৩ বর্গমাইল। অর্থাৎ আয়তনের বিচারে নিকারাগুয়া পৃথিবীর ৯৭তম দেশ। এর উত্তরে [[হন্ডুরাস]], পশ্চিমে [[প্রশান্ত মহাসাগর]], দক্ষিণে [[কোস্তা রিকা]] ও পূর্বে [[ক্যারিবীয় সাগর]]। ভূতাত্ত্বিকভাবে দেশটির অবস্থান দু'টি মহাসাগরীয় [[প্লেট ভূগঠনপ্রণালী|টেকটনিক প্লেটের]] সংযোগস্থলের খুব কাছে - [[ক্যারিবীয় প্লেট]] ও [[কোকোস প্লেট]]।<ref name="ucsd">[{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=মধ্য আমেরিকার আগ্নেয় মেখলা |ইউআরএল=http://sio.ucsd.edu/volcano/expedition/cocos.html মধ্য|সংগ্রহের-তারিখ=২ আমেরিকারজুলাই আগ্নেয়২০১৪ মেখলা]|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20050106144649/http://sio.ucsd.edu/volcano/expedition/cocos.html |আর্কাইভের-তারিখ=৬ জানুয়ারি ২০০৫ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref> ফলে ভূতাত্ত্বিকভাবে অঞ্চলটি যথেষ্ট অস্থির। তাই এই অঞ্চলে প্রচূর আগ্নেয়গিরি দেখতে পাওয়া যায়। প্রশান্ত মহাসাগরের তীরের সাথে সমান্তরালে যে আগ্নেয়গিরি শৃঙ্খলটি দক্ষিণপূর্বে [[কোস্তা রিকা]] থেকে উত্তর-পশ্চিমে [[হন্ডুরাস]] হয়ে আরও উত্তরে বিস্তৃত, তার একেবারে কেন্দ্রস্থলে অবস্থানের ফলে নিকারাগুয়ায় আগ্নেয়গিরির সংখ্যা মধ্য আমেরিকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি। আরও উল্লেখযোগ্য, এইসব আগ্নেয়গিরির মধ্যে অনেকগুলিই সুপ্ত বা জীবন্ত। প্রাকৃতিকভাবে দেশটিকে তিনটি অঞ্চলে ভাগ করা যায় - পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগরীয় নিম্নভূমি, মধ্যভাগের আর্দ্র ও ঠাণ্ডা উচ্চভূমি ও পূর্বদিকের ক্যারিবীয় নিম্নভূমি।<br />
[[চিত্র:Nicaragua relief location map.jpg|thumb|নিকারাগুয়ার প্রাকৃতিক মানচিত্র|left]]
 
১১৬ নং লাইন:
নিকারাগুয়ার মানুষ সাধারণভাবে ধর্মভীরু। প্রতি রবিবার নিয়ম করে গির্জার প্রার্থনায় যোগ দেওয়ার অভ্যাসে তাদের ঘাটতি থাকলেও, জনজীবনে ও এমনকী রাজনীতিতেও ক্যাথলিক বিশপদের বিশেষ প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। বিশেষ করে ১৯৭০ ও ৮০'র দশকে সোমোথা সরকারের বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে আন্দোলনে এঁদের প্রভাব ব্যাপকভাবে মানুষকে সংগঠিত করে। পরবর্তীকালে সান্দানিস্তা আন্দোলনের জনভিত্তি তৈরির ক্ষেত্রেও ক্যাথলিক গির্জার যথেষ্ট ভূমিকা ছিল। বিশেষ করে শহরাঞ্চলের গরিব মানুষকে এই আন্দোলনের পিছনে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে এরা অত্যন্ত সদর্থক ভূমিকা পালন করে।<br />
ধর্মাচরণের দিক থেকে দেখলে নিকারাগুয়ায় পালিত সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্যাথলিক জনগোষ্ঠীর কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। লাতিন আমেরিকার অন্য অনেক দেশের মতো এদেশে চালু ধর্মাচরণ বাস্তবে খ্রিষ্ট ধর্মের সাথে স্থানীয় আদিবাসী মানুষের প্রাচীন ধর্মাচরণের একটি মিশ্রণ নয়। এদেশে ষোড়শ শতকেই স্থানীয় অধিবাসীদের খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তকরণ একরকম সম্পূর্ণ হওয়া ও বাকিদের অনেককেই দেশ থেকে নির্বাসনের ফলে স্থানীয় মানুষের প্রাচীন ধর্মগুলির প্রভাব এদেশের মানুষের উপর পরবর্তীকালে আর তেমন পরিলক্ষিত হয় না। কিন্তু এদেশে খ্রিষ্টীয় সন্তদের জনপ্রিয়তা অত্যন্ত বেশি। সাধারণ মানুষের ধর্মাচরণ মূলত এঁদের ঘিরেই আবর্তিত হয়। সন্তদের ছবি, কুয়াদ্রোস, এদেশে প্রায় ঘরে ঘরে দেখতে পাওয়া যায়। সমাজের বিভিন্ন অংশ এঁদের মধ্যে বিশেষ কাউকে তাদের প্যাট্রন সেন্ট বলেও মনে করে থাকে। ফলে এইসব সন্তদের নামে উৎসর্গীকৃত দিবসগুলি এদেশে অত্যন্ত আড়ম্বর ও উৎসাহের সাথে পালিত হয়। যেমন রাজধানী মানাগুয়ায় সন্ত দমিনিক'এর সম্মানে আগস্ট মাসে দুইদিন ব্যাপী অত্যন্ত আড়ম্বরপূর্ণ মিছিলের আয়োজন করা হয়। দেশের নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষ বিশেষ করে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে থাকে।<ref name = DOCID/><br />
তবে বর্তমানে নিকারাগুয়ায় সরকারিভাবে ধর্মনিরপেক্ষ নীতি অনুসরণের ফলে, ও অন্যদেশ থেকে অভিবাসীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে অন্যান্য ধর্মেরও প্রচলন ঘটেছে এবং তাদের প্রভাবও বৃদ্ধি পেয়েছে। এদের মধ্যে বৌদ্ধদের কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।<ref>[http://archivo.elnuevodiario.com.ni/2004/octubre/24-octubre-2004/mundo_oculto/mundo_oculto-20041020-01.html{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম="El Budismo en Nicaragua", Con Todo El Podar de la Informcion, El Nuevo Diario,Domingo 24 de Octubre de 2004. সংগৃহীত ০৮ আগস্ট, ২০১৪।] |ইউআরএল=http://archivo.elnuevodiario.com.ni/2004/octubre/24-octubre-2004/mundo_oculto/mundo_oculto-20041020-01.html |সংগ্রহের-তারিখ=৮ আগস্ট ২০১৪ |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20110513110733/http://archivo.elnuevodiario.com.ni/2004/octubre/24-octubre-2004/mundo_oculto/mundo_oculto-20041020-01.html |আর্কাইভের-তারিখ=১৩ মে ২০১১ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref>
 
===অন্যত্র অভিবাসন===
দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দেশের মধ্যে কাজের অভাবের কারণে নিকারাগুয়ার বহু মানুষ বিভিন্ন সময়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। ১৯৯০'এর দশকে দেশজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার কারণেও এই প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পায়। সাধারণভাবে কাজের খোঁজে দেশ ছাড়া এইসব মানুষ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী দেশ [[কোস্তা রিকা]] ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হন। কোস্তা রিকার আদমশুমারি দপ্তরের ২০০১ সালের হিসেব অনুযায়ী সেদেশে বর্তমানে ২,৩৬,০০০ নিকারাগুয়ান বাস করে। অন্যদিকে ১৯৯০ সালের মার্কিন সেনসাস রিপোর্টই জানাচ্ছে, সেদেশে তখন ১,৬৮,০০০ নিকারাগুয়ান বাস করে।<ref name="Orozco">[http://www.thedialogue.org/PublicationFiles/The%20Nicaragua%20case_M%20Orozco2%20REV.pdf{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Manuel Orozco, "The Nicaraguan diaspora: trends and opportunities for diaspora engagement in skills transfers and development". March 28, 2008. সংগৃহীত ১৪ আগস্ট, ২০১৪।] |ইউআরএল=http://www.thedialogue.org/PublicationFiles/The%20Nicaragua%20case_M%20Orozco2%20REV.pdf |সংগ্রহের-তারিখ=১৪ আগস্ট ২০১৪ |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20110511104117/http://www.thedialogue.org/PublicationFiles/The%20Nicaragua%20case_M%20Orozco2%20REV.pdf |আর্কাইভের-তারিখ=১১ মে ২০১১ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref> এই হিসেবের মধ্যে অবশ্যই বেআইনি অনুপ্রবেশের সংখ্যা ধরা হয়নি। অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যায় হলেও এক উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ পার্শ্ববর্তী দেশ [[হন্ডুরাস| হন্ডুরাসেও]] অভিবাসী হন। এছাড়া অতি সাম্প্রতিক কালে [[এল সালভাদর| এল সালভাদরে]] মূদ্রা হিসেবে ডলারের প্রচলন শুরু হবার পর থেকে সেখানেও অভিবাসনের একটি প্রক্রিয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে। ২০০০ সালের পর থেকে শুরু হওয়া এল সালভাদরমুখী এই অভিবাসনের চরিত্র অবশ্য কিছুটা পরিযায়ী শ্রমিকের মতো। বছরের নির্দিষ্ট সময়ে কাজের খোঁজে এরা এই দেশে যায় ও সেই কাজ শেষে আবার নিজের দেশে ফিরে আসে।<br />
২০০৮ সালে পরিচালিত নিকারাগুয়ার পারিবারিক সমীক্ষা থেকে উঠে আসা তথ্যে দেখা যাচ্ছে, সেদেশে প্রায় ১১ লক্ষ ৫৮ হাজার পরিবার বাস করে। এদের ৭৫ শতাংশের ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে পরিবারের কেউ না কেউ বিদেশে বাস করে। অর্থাৎ, সেই হিসেবে বিদেশে অভিবাসী নিকারাগুয়ানের মোট সংখ্যা প্রায় ৯ লক্ষ। এঁরা মূলত কেউ পরিচারিকা, কেউ বা খুচরো বিক্রেতা, মেশিনচালক বা কৃষি শ্রমিক। আবার এঁদের বড় একটি অংশ ছাত্র-ছাত্রী। এছাড়াও বিভিন্ন পেশার পেশাদার মানুষ, যেমন আইনজীবী, শিক্ষক, ইঞ্জিনিয়াররাও স্বল্প সংখ্যায় হলেও অভিবাসীদের মধ্যে আছেন।<ref name = Orozco/><br />
এছাড়াও পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, বিশেষ করে ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, স্পেন, নরওয়ে ও সুইডেনেও বর্তমানে ছোট আকৃতিতে হলেও একটি নিকারাগুয়ান অভিবাসী সমাজ গড়ে উঠেছে। এশিয়ায় জাপানেও নিকারাগুয়া থেকে বেশ কিছু মানুষ কাজের খোঁজে আশ্রয় নিয়েছেন।