অঞ্চল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
অ সম্প্রসারণ |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
৪০ নং লাইন:
==রাজনৈতিক অঞ্চল==
মানুষ মাত্রই কোন না কোন রূপ রাজনৈতিক এলাকা বা অঞ্চলে বাস করে।রাজনৈতিক পরিচিতি বা অস্তিত্ব রয়েছে ভূপৃষ্ঠের এমন অংশবিশেষকে রাজনৈতিক অঞ্চল বলে।<br>রাজনৈতিক অঞ্চলের বৈশিষ্টসমূহঃ <b>১.অবস্থান, ২.অভিগম্যতা, ৩.আয়তন, ৪.আকৃতি, ৫.সীমানা</b>
'''রাজনৈতিক অঞ্চল''' (Political regions) : রাজনৈতিক ভূগোলের ক্ষেত্রে অঞ্চলগুলো রাজনৈতিক এককের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে, যেমন- সার্বভৌম রাষ্ট্র, রাষ্ট্রের ক্ষুদ্র এককসমূহ, যেমন- প্রশাসনিক অঞ্চল, প্রদেশসমূহ, অঙ্গরাজ্যসমূহ, জেলা, উপজেলা, শহর, পৌরসভা ইত্যাদি এবং নির্দিষ্ট অঞ্চল নিয়ে গঠিত বহুজাতিক গ্রুপ যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, দক্ষিণ এশিয় জাতিসমূহের সংঘ, ন্যাটো, অনির্ধারিত অঞ্চল, যেমন- তৃতীয় বিশ্ব, পশ্চিম ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ইত্যাদি।
৬৬ ⟶ ৬১ নং লাইন:
অঞ্চলকে প্রধান তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়, যথা- প্রথাগত (formal), কার্মিক (functional) ও উপলব্ধিগত বা উপভাষা (perceptual/vernacular)।
== '''প্রথাগত বা নিয়মানুগ বা আনুষ্ঠানিক অঞ্চল''' ==
'''প্রথাগত বা নিয়মানুগ বা আনুষ্ঠানিক অঞ্চল''' (formal region) : ভৌগোলিক দিক থেকে প্রথাগত বা নিয়মানুগ অঞ্চল হচ্ছে এমন একটি ভৌগোলিক এলাকা যার প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত নির্দিষ্ট সীমানা রয়েছে। যেমন, শহর, জেলা, অঙ্গরাজ্য ও দেশের জন্য সীমানা দ্বারা প্রথাগত অঞ্চল গঠিত হয়। এ অঞ্চলগুলোকে প্রায়শ সাধারণ জ্ঞান হিসেবে গণ্য করা হয় এবং এগুলোর সীমানা স্থানীয় বা জাতীয় সরকার দ্বারা নির্ধারিত হয়। একটি অঞ্চলের রূপ দানের জন্য বিভিন্ন মানদণ্ড ব্যবহার করা হয়। প্রাতিষ্ঠানিক অস্তিত্বের কতিপয় মানদণ্ড, যেমন- রাজনৈতিক অধিভুক্তি, জাতীয়তা, সংস্কৃতি, সাধারণ ভাষা, ধর্ম, ভৌগোলিক অবয়ব ইত্যাদি অঞ্চল সৃজনে ব্যবহার করা যেতে পারে। ▼
==== Formal region ====
▲
প্রথাগত বা নিয়মানুগ অঞ্চলের সংজ্ঞায় এমন এলাকার কথা বলা হয়েছে যা সরকারীভাবে নির্ধারিত। একটি প্রথাগত অঞ্চলে একটি শহর, জেলা, রাজ্য বা যেকোনো ধরনের ভৌগোলিক এলাকা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। এ ধরনের অঞ্চল পরিষ্কারভাবে সীমানা দ্বারা নির্ধারিত এবং জনসাধারণের বোধগম্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
১. সর্বজনীন ভাষা,
৮২ ⟶ ৮০ নং লাইন:
৫. সংস্কৃতি ও
৬. ভৌগোলিক অবয়ব (জলবায়ু, উদ্ভিজ্জ, উচ্চতা,
এক বা একাধিক সনাক্তকরণযোগ্য অবয়ব ব্যবহার করে একটি অঞ্চলকে অন্য অঞ্চল থেকে পৃথক করা যায় এবং প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয় ব্যবহার করে সৃষ্ট অঞ্চলগুলোর সীমানা তৈরি করা যায়। কোনো ভৌগোলিক অঞ্চল নির্ধারণের সময় যখন প্রাসঙ্গিক বৈশিষ্ট্য হিসেবে জনগণের আয় বা ভাষা উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তখন অঞ্চলটির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যও গুরুত্বপূর্ণ চলক হিসেবে বিবেচনা করতে হয়। নদনদী, পর্বতমালা, উপত্যকা এবং হ্রদগুলোর মতো প্রাকৃতিক সীমানা প্রায়শ কোনো ভৌগোলিক অঞ্চলের সীমানা নির্দেশ করে থাকে।
৯২ ⟶ ৯০ নং লাইন:
মানদণ্ড নির্বাচনের ওপর একটি প্রথাগত বা আনুষ্ঠানিক অঞ্চল নির্ধারণ সহজ বা কঠিন হতে পারে। যখন একটি ভৌগোলিক অঞ্চল ভূভাগের স্থির অবয়বের বদলে অধিক পরিবর্তনশীল মানবীয় উপাদানের (যেমন- ভাষা) ওপর নির্ভর করে, সেখানে অঞ্চল নির্ধারণ কঠিন হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একটি অঞ্চলের প্রতিবেশীদের মধ্যে ৫০% ইংরেজিতে কথা বলে, এ জনসংখ্যা সারা বছরই একই ধরনের না-ও থাকতে পারে, বরং সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হয়ে কম-বেশি হতে পারে। তবু, নীতিগতভাবে, প্রতিটি প্রথাগত অঞ্চল কতিপয় গণনাযোগ্য চলকের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়।
=== '''প্রথাগত বা নিয়মানুগ অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য'''
====== Characteristics of Formal Region ======
১. সমরূপতা (Uniformity) : কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রথাগত অঞ্চলের সর্বত্র একই ধরনের বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। যেমন- কোনো অঞ্চলে জলবায়ু বা ভ‚প্রকৃতি সমরূপভাবে বজায় থাকে।▼
▲
২. অবিচ্ছিন্নতা (Continuous land mass) : প্রথাগত অঞ্চল প্রাকৃতিক বা মানব সৃষ্ট বৃহৎ কোনো প্রতিবন্ধক দ্বারা ব্যবিচ্ছন্ন হয় না। অর্থাৎ, এটি একটি একক এলাকা যাতে ভ‚প্রাকৃতিক সমতা বজায় থাকে। ▼
▲
৩. সদৃশ্যতা (Homogeneous) : সমসত্ত¡ আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে গড়ে ওঠে বলে, একে সদৃশ্য বৈশিষ্ট্যের অঞ্চল বলা হয়। ▼
▲
▲৪. প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য (Physical Characteristics) : যেকোনো প্রথাগত অঞ্চলকে প্রাথমিকভাবে প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে চিহ্নিত করা হয়। যেমন- সুন্দরবন, ভ‚মধ্যসাগরীয় অঞ্চল।
'''৫. অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্য''' (Economic Characteristics) : সাম্প্রতিককালে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ভিত্তিতে প্রথাগত অঞ্চল নির্ণয় করার প্রবণতা লক্ষ্যণীয়। অর্থনৈতিক প্রথাগত অঞ্চল চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে আয় স্তর, বেকারত্বের হার, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ইত্যাদি পরামিতিগুলো ব্যবহৃত হয়।
'''৬. সামাজিক বৈশিষ্ট্য''' (Social Characteristics) : স্বাভাবিকভাবে বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গড়ে উঠা অঞ্চলগুলোকে প্রথাগত অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যেমন- একটি উপজাতীয় এলাকা।
'''৭. রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য''' (Political Characteristics) : রাজনৈতিক কারণে বিশেষ কোনো অঞ্চল মূল
<br />
'''কার্মিক বা প্রায়োগিক বা ক্রিয়ামূলক অঞ্চল''' (Functional regions) : কার্মিক অঞ্চল হচ্ছে এমন একটি অঞ্চল যা অন্যান্য এলাকা থেকে নির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুসারে ভিন্নতর। অন্য কথায়, এটি এমন একটি এলাকা যা প্রাকৃতিক, সাংস্কৃতিক দিক থেকে সমসত্ববিশিষ্ট, যেমন- ক্রান্তীয় অঞ্চল, মেরু অঞ্চল, মেরু অঞ্চল ইত্যাদি। এখানে জলবায়ুকে মানদণ্ড ধরে দুটি এলাকা পৃথকভাবে শনাক্ত করা যায়। কার্মিক অঞ্চল প্রায়শ নুড বা গ্রন্থি নামে পরিচিত একটি কেন্দ্রীয় বিন্দুর চারদিকে গড়ে ওঠে। উদাহরণ হিসেবে একটি সপিং সেন্টার চারদিকে প্রতিবেশিদের দ্বারা ঘেরাও থাকে, অথবা উপশহরগুলো একটি শহরকে চারদিক থেকে ঘেরাও করে থাকে। কার্মিক অঞ্চলের ধারণা মানুষের মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরশীলতার যে সংযোগ ও প্রবাহ সৃষ্টি হয়, সেগুলো পরীক্ষানিরীক্ষার পথ প্রদর্শন করে থাকে। ▼
== '''কার্মিক বা প্রায়োগিক বা ক্রিয়ামূলক অঞ্চল''' ==
==== Functional regions ====
▲
ফোবার্গ, মর্ফি এবং দ্য ব্লিজের মতে, ‘একটি নির্দিষ্ট সেট কর্মকাণ্ডের দ্বারা অথবা, এগুলোর মধ্যে উদ্ভুত মিশস্ক্রিয়া দ্বারা কার্মিক অঞ্চল নির্দিষ্ট করে দেখানো যায়।' সুতরাং, নিম্নোক্তগুলোকে কার্মিক অঞ্চল বিবেচনা করা যায় :
১২১ ⟶ ১২৫ নং লাইন:
কার্মিক অঞ্চলের সীমানা এলাকাটির অবকাঠামো এবং সেবার উন্নয়নের ওপর ভিত্তি করে সময় সময়ে পরিবর্তিত হয়। ভূগোলে পৃথিবীকে বিভিন্ন অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়। এসব অঞ্চলের রয়েছে কৃত্রিম সীমানা, যা সীমানার বাইরের অপেক্ষা ভিতরের অধিক প্রাধান্যবিশিষ্ট গুণাবলিকে পৃথক করার জন্য ব্যবহার করা হয়। তিন ধরনের অঞ্চল রয়েছে, যথা- প্রথাগত বা নিয়মানুগ, কার্মিক বা প্রায়োগিক এবং ভ্যানাকিউলার বা উপলব্ধিগত। প্রথাগত অঞ্চলগুলোর অফিসিয়াল সীমানা রয়েছে, যেমন- দেশের, রাজ্যের, শহরের সীমানা। উপলব্ধিগত অঞ্চল বলতে বোঝায় কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের সাংস্কৃতিক উপস্থাপন এবং যা মানুষের মতামতের ওপর প্রতিষ্ঠিত।
=== '''কার্মিক অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য''' ===
====== Characteristics of Functional Region ======
'''১. আন্তঃনির্ভরশীলতা''' (Inter-dependence) : কার্মিক অঞ্চলসমূহের পরস্পরের আন্তঃনির্ভরশীলতা একান্ত প্রয়োজন। অর্থাৎ, কার্মিক অঞ্চল আন্তঃনির্ভরশীল কর্মকাণ্ডের সমন্বয়ে গঠিত হয়। আবার বিভিন্ন কার্মিক অঞ্চলের মধ্যে আন্তঃনির্ভরশীলতা দেখা যায়।
'''২. কার্মিক সুসঙ্গতি''' (Functional Coherence) : কার্মিক অঞ্চলে যেসব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়, তাদের মধ্যে এক ধরনের সামঞ্জস্য বজায় থাকে। অর্থাৎ কোনো কর্মকাণ্ড অপর কর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষতিকর নয়, বরং সহায়ক। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এসব কর্মকাণ্ড একে অপরের পরিপূরক।
'''৩. ক্রমোচ্চতা সম্পর্ক''' (Hierarchial relationship) : পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে কার্মিক অঞ্চলগুলো সাম্প্রতিক হয় বলে এদের মধ্যে একটি শ্রেণিক্রম (hierarchy) লক্ষ্য করা যায়। অর্থাৎ ক্রম এর আকারের ভিত্তিতে ক্রিয়ামূলক অঞ্চলগুলো ছোট থেকে বড় একটি পর্যায় ক্রমিকধারা সৃষ্টি করে।
'''৪. আন্তঃসম্পর্ক''' (Inter-relation) : আন্তঃসম্পর্কযুক্ত (মিথষ্ক্রিয়া) কর্মকাণ্ডের সমন্বয়ে একটি কার্মিক অঞ্চল গড়ে ওঠে। অর্র্থাৎ কার্মিক অঞ্চলের সীমানা মূলত পরস্পর সম্পর্কযুক্ত কর্মকাণ্ডের এলাকা নিয়ে গঠিত হয়। আবার বিভিন্ন কার্মিক অঞ্চলের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক দেখা যায়। অন্যদিকে দেখা যায়, একটি অঞ্চলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটলে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে গ্রন্থি সৃষ্টি হয় এবং ক্রমান্বয়ে সম্প্রসারিত হয়।
'''৫. অসমরূপতা''' (Heterogeneous) : কার্মিক অঞ্চলের মধ্যে সমস্ত স্থানের অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্যে বৈচিত্র্য দেখা যায়। অর্থাৎ এ অঞ্চলে অসংখ্য ভিন্ন প্রকৃতির কর্মকাণ্ড বিভিন্ন স্থানে পরিচালিত হয়। এটা যেমন কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তেমনি অধিবাসীদের আয়ের সমতা, জীবনযাত্রার মান ইত্যাদির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
'''৬. গ্রন্থিবহুল''' (Nodal) : ক্রিয়ামূলক অঞ্চলের মধ্যে বিভিন্ন বিন্দু বা গ্রন্থি গড়ে ওঠতে পারে।
'''উপলব্ধিগত/উপভাষা অঞ্চল''' (Perceptual/vernacular regions) : উপলব্ধিগত অঞ্চলকে কখনো কখনো উপভাষা অঞ্চলও বলা হয়। যদিও অনেক ভ‚গোলবিদ এ শব্দগুলোকে পরস্পরের পরিবর্তে ব্যবহার করেন না, বরং ভিন্ন ভিন্ন ধারণা নির্দেশের জন্য এগুলোকে ব্যবহার করে থাকেন। যেখানে একটি উপভাষা অঞ্চল কোনো এলাকার লোকজনের মধ্যে বিভিন্ন পদ্ধতিতে যোগাযোগের ওপর নির্ভর করে, সেখানে উপলব্ধিগত অঞ্চল প্রায়শ একটি নির্দিষ্ট এলাকার লোকদের নিশ্চিত বিশ্বাস/অনুভ‚তি/মনোভাবের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে।
|