মিশরের প্রথম রাজবংশ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
→‎অর্থনীতি: সম্প্রসারণ
→‎অর্থনীতি: সম্প্রসারণ
৪৯ নং লাইন:
 
==অর্থনীতি==
*প্রথম রাজবংশকালীন মিশরে জমি ছিল ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে ফারাও'এর সম্পত্তি; চাষী, গবাদি পশু, উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, খামার, প্রভৃতির সাথে এইসময় জমিও উৎপাদনের এক প্রয়োজনীয় উপাদান হিসেবেই গণ্য হত। উৎপাদনের এইসব উপাদান পরিচালিত হত হয় কোনও নির্দিষ্ট প্রশাসনিক কেন্দ্র (কোনও দুর্গ, হুত) বা শহর (নিউত) থেকে। এইসব প্রশাসনিক কেন্দ্রগুলি হয় সরাসরি রাজকীয় প্রশাসনের উপরে নির্ভরশীল ছিল, নতুবা ছিল কোনও মন্দির বা রাজকীয় সমাধি কর্তৃপক্ষের অধীন। এছাড়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাজকীয় প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মচারীরাও তাদের পারিশ্রমিক হিসেবে জমি ভোগ করতে পারত।
 
*প্রথমদিকে ব্যক্তিগত সম্পত্তির কোনও অস্তিত্ব ছিল না; কিন্তু বিভিন্ন প্রশাসনিক পদ বংশানুক্রমিক হওয়ায়, ও বিশেষ করে মৃতের সমাধি উপলক্ষে পাওয়া ভূসম্পত্তিকে কেন্দ্র করে ধীরে ধীরে কিছু বড় বড় পরিবার কোনও কোনও গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছিল। সম্পত্তি হস্তান্তরের বিষয়টি সাধারণভাবে কেন্দ্রীয় প্রশাসনের দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হলেও, বসত বাড়ি প্রভৃতি যা সরাসরি সরকারি সম্পত্তি নয়, সেগুলির হস্তান্তর ব্যক্তিগত পর্যায়েও শুরু হয়েছিল।
 
*মোটামুটি ৩০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ মিশরে কৃষি অর্থনীতির পত্তন হয়। ফসলের নির্দিষ্ট অংশের ভাগের ভিত্তিতে কৃষিকার্য পরিচালিত হত। এই ভাগের পরিমাণ কৃষির সাথে যুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলির নিজেদের মধ্যে বন্দোবস্ত অনুযায়ী ঠিক হত। কৃষিতে উৎপন্ন উদ্বৃত্ত ফসলের উপর নির্ভর করে বিনিময় প্রথা গড়ে উঠেছিল। পশুপালন, মাছ ধরা ও হস্তশিল্পেরও যথেষ্ট বিকাশ ঘটেছিল। বিশেষত শেষোক্ত ক্ষেত্রে কর্মচারীদের বেতন হিসেবে ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত উৎপন্ন দ্রব্যের পুনর্বন্টনের ব্যবস্থা চালু ছিল।
 
*যদিও এই যুগে মিশরে আজকের অর্থে কোনও অর্থব্যবস্থা চালু হয়নি, বিভিন্ন দ্রব্যের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে তামা, রুপো ও সোনাকে কিছুদিনের মধ্যেই স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে গণ্য করা শুরু হয়ে যায়।
 
*উর্বর [[নীলনদ]] উপত্যকায় উৎপন্ন ফসলের প্রাচুর্য, বৈচিত্র এবং তার পুনর্বন্টন খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দের প্রথমদিকে এমন একধরনের স্থিতিশীল অর্থনীতির বিকাশ ঘটায় যে, তীব্র অভাব ও অনাহারের পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেকটাই কমে আসে।
 
*সমস্ত ধরনের বৈদেশিক বাণিজ্যই রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হত। বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল (যেমন সোনা, রুপো, তামা, কাঠ, নানা ধরনের মূল্যবান পাথর) সংগ্রহের জন্য এইসময়ে [[সিনাই]], আরবের পার্বত্য অঞ্চল, [[নুবিয়া]] প্রভৃতি অঞ্চলে সাময়িক অভিযান পরিচালনা করা হত; আরও পূর্বের দূরবর্তী অঞ্চলগুলির সাথেও এই উদ্দেশ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল। খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দের প্রথমদিকে, বিশেষত প্রথম রাজবংশের প্রথম দিকের সমাধিগুলিতে সিরীয়-প্যালেস্তিনীয় অঞ্চলের সেরামিক বা চীনামাটির পাত্র বা ব্রোঞ্জের সরঞ্জামের যে প্রাচুর্য পরিলক্ষিত হয়, তা নিঃসন্দেহে প্রমাণ করে এই সময়ে এইসব দূরবর্তী দেশের সাথে দৃঢ় বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল। হয়তো মিশরের সোনা এইসব বাণিজ্যিক বিনিময়ের ক্ষেত্রে এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিল।
 
==তথ্যসূত্র==