স্পেন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Pratik89Roy (আলোচনা | অবদান) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা |
||
১২০ নং লাইন:
স্পেনের প্রস্তরনির্মিত দুর্গপ্রাসাদ, বরফাবৃত পর্বতমালা, বিশালাকার সৌধ এবং আধুনিক ও পরিশীলিত শহরগুলির গল্প মুখে মুখে ফেরে। দেশটি তাই পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় গন্তব্যস্থল। স্পেন ভৌগলিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ একটি দেশ। স্পেনের গ্রামাঞ্চল আকর্ষণীয় সব দুর্গবেষ্টিত প্রাসাদ, প্রাচীন জল সরবরাহের নালা এবং প্রাচীন ধ্বংসাবশেষে পরিপূর্ণ, কিন্তু এর শহরগুলি সন্দেহাতীতভাবে আধুনিক। আন্দালুসিয়া অঞ্চলের রাজধানী [[সেবিইয়া]] তার সঙ্গীতের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যবাহী জীবনযাপনের জন্য বিখ্যাত। কাতালুনিয়ার রাজধানী [[বার্সেলোনা]] তার ধর্মনিরপেক্ষ স্থাপত্য এবং নৌপরিবহন শিল্পের জন্য সুবিদিত। আর জাতীয় রাজধানী মাদ্রিদের আঁকাবাঁকা সরু রাস্তা, জাদুঘর, গ্রন্থালয় এবং দিন-রাত ২৪ ঘন্টা ধরে সক্রিয় জীবনধারার কথাও সবার জানা। মাদ্রিদ স্পেনের বৃহত্তম শহর এবং বহু শতাব্দী ধরে দেশটির আর্থিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।
স্পেন পর্তুগাল বাদে ইউরোপের অন্য সমস্ত দেশ থেকে [[পিরিনীয় পর্বতমালা]]র মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন, ফলে দেশটির ইতিহাসও ঐসব দেশের তুলনায় অনেক ভিন্ন। প্রাচীনকালে ফিনিসীয়, কার্থেজীয় ও সবশেষে রোমানরা অঞ্চলটি দখল করেছিল। ৫ম শতকে উত্তর ইউরোপ থেকে আগত ভিজিগথ জাতির লোকেরা দেশটিকে শাসন করা শুরু করে। কিন্তু তাদের রাজনৈতিক সাংগঠনিক দুর্বলতার সুযোগে ৮ম শতকে উত্তর আফ্রিকা থেকে আগত আরবভাষী
অর্থনৈতিক উন্নয়নের দৃষ্টিকোণ থেকে স্পেনে অনেক দেরিতে আধুনিকতার আগমন ঘটে। ১৯৬০-এর দশকের আগ পর্যন্ত স্পেনের সমস্ত শিল্পকারখানাগুলি উত্তরের কাতালুনিয়া ও বাস্ক অঞ্চলগুলিতে সীমাবদ্ধ ছিল। তখন থেকে স্পেনের অর্থনীতি দ্রুত প্রবৃদ্ধি লাভ করেছে। বিশেষ করে হালকা শিল্পগুলি (যেমন প্রক্রিয়াজাত খাদ্যদ্রব্য) স্পেনকে অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করে; এছাড়া সেবা খাত, বিশেষ করে পর্যটন খাতও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রেখেছে। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক স্পেনে বেড়াতে আসেন এবং এখানকার রৌদ্রোজ্জ্বল জলবায়ু, সমুদ্রসৈকত এবং ঐতিহাসিক শহরগুলিতে ভ্রমণ করেন।
স্পেনের আছে গভীর সাংস্কৃতিক ও শিল্পকলাগত ঐতিহ্য। ঐতিহাসিকভাবে স্পেনের মূল সাংস্কৃতিক অবদান দুইটি ক্ষেত্রে অধিক পরিলক্ষিত হয়: চিত্রকর্ম ও সাহিত্য। সাম্প্রতিককালে ঐ দুই ক্ষেত্রে নিজের উপস্থিতি বজায় রেখে স্পেন চলচ্চিত্র নির্মাণ, স্থাপত্য এবং সঙ্গীতে অনেক বড় মাপের শিল্পী ও শিল্পকলা বিশ্বকে উপহার দিয়েছে। [[কোররিদা]] বা ষাঁড়ের লড়াই এবং [[ফিয়েস্তা]] বা উৎসব স্পেনের সংস্কৃতির অন্যতম দুই অনুষঙ্গ। বহু বিচিত্র সংস্কৃতির মিলনে স্পেনের সংস্কৃতি গঠিত হয়েছে। [[কাস্তিলীয়]], [[কাতালুনীয়]], [[লুসিতানীয়]], [[গালিথীয়]], [[বাস্ক]], [[রোমান]], বিশেষ করে [[আরব]] [[মুসলিম]], [[ইহুদী]] এবং [[জিপসি]]সহ আরও অনেক জাতি ও উপজাতিরা তাদের রন্ধনশৈলী ও রীতিনীতির জন্য বিখ্যাত এবং তারা বিশ্বের শিল্পকলার ঐতিহ্যে প্রচুর অবদান রেখেছে। রোমান শাসনের সময় রোমানদের ভাষা, সড়কব্যবস্থা ও সৌধগুলি স্পেনে গভীর প্রভাব ফেলে এবং অনেক রোমান সম্রাটও স্পেনীয় বংশোদ্ভূত ছিলেন যাদের মধ্যে ত্রাজান, হাদ্রিয়ান এবং মার্কুস আউরেলিউসের নাম উল্লেখযোগ্য। উত্তর আফ্রিকা থেকে আগত মুসলমান
এছাড়া জিপসি জাতির লোকেরা [[কান্তে হোন্দো]] নামের একধরনের ফ্লামেংকো ঘরানার গা-ছমছম-করা সঙ্গীতের উদ্ভাবন করে এমনকি রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর স্পেনকে আক্রমণকারী [[ভ্যান্ডাল]], [[হুন]] এবং [[ভিজিগথ]] জাতির লোকদেরকেও স্পেনের সাহিত্যে ও সৌধে স্মরণ করা হয়। স্পেনের প্রদেশগুলি আজও নিজেদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেছে। [[বাস্ক প্রদেশ]] ও [[কাতালুনিয়া]]র লোকেরা নিজেদেরকে স্পেনীয়-র পরিবর্তে বাস্কগোত্রীয় ও কাতালুনীয় ভাবতেই বেশি পছন্দ করে। মাদ্রিদ নামে দেশের রাজধানী হলেও অর্থনীতি, ব্যবসাবাণিজ্য, শিল্পকলা ও ক্রীড়াক্ষেত্রে কাতালুনিয়ার রাজধানী [[বার্সেলোনা]] এর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। স্পেনে স্পেনীয় ভাষা ছাড়াও প্রদেশভেদে আরও ৪টি ভাষাকে সহসরকারী ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে; এগুলি হল [[কাতালান]], [[গালিসীয়]], [[বাস্ক]] এবং [[অক্সিতঁ]] ভাষাসমূহ।
|