ইসলাম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

[পরীক্ষিত সংশোধন][পরীক্ষিত সংশোধন]
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot-এর করা 3211673 নং সংস্করণে প্রত্যাবর্তন করা হয়েছে। (টুইং)
ট্যাগ: পূর্বাবস্থায় ফেরত
মুটামুটি নিরপেক্ষই হয়েছে। কমপক্ষে আগের সংস্করণের চেয়ে ভালো
ট্যাগ: পূর্বাবস্থায় ফেরত
২ নং লাইন:
{{তথ্যছক-ইসলাম}}
 
'''ইসলাম''' ({{lang-ar|الإسلام}}) একটি [[একেশ্বরবাদ|একেশ্বরবাদী]] এবং [[আব্রাহামিক ধর্ম]]; যা [[আল্লাহ|আল্লাহর]]<ref>[https://quraan.com http://quraan.com]</ref><references group="quraan.com" /> বানী ([[কোরআন]]) এবং [[নবী]] [[মুহাম্মাদ]]-এর প্রদত্ত শিক্ষা পদ্ধতি, জীবনাদর্শ ([[সুন্নাহ]] এবং [[হাদিস]] নামে লিপিবদ্ধ) দ্বারা পরিচালিত। ইসলামের অনুসারীরা মুহাম্মদ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে [[শেষ নবী]] বলে মনে করেন।
 
'''ইসলাম''' ([[আরবি]]: الإسلام‎) শব্দটি এসেছে [[আরবি]] س-ل-م শব্দটি হতে; যার দু'টি অর্থঃ ১. শান্তি ২. আত্মসমর্পণ করা। সংক্ষেপে, ''ইসলাম'' হলো শান্তি (প্রতিষ্ঠা)'র উদ্দেশ্যে এক ও অদ্বিতীয় ঈশ্বর ([[আল্লাহ]])-এর কাছে আত্মসমর্পণ করা।
 
অনেকের ধারণা যে, [[মুহাম্মদ]] হলেন এই ধর্মের প্রবর্তক। তবে [[মুসলমান|মুসলমানদের]] মতে, তিনি এই ধর্মের প্রবর্তক নন, বরং [[আল্লাহ্|আল্লাহর]] পক্ষ থেকে প্রেরিত সর্বশেষ ও চূড়ান্ত [[রাসূল]] (পয়গম্বর)। খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতকে তিনি এই ধর্ম পুনঃপ্রচার করেন। পবিত্র [[কোরআন|কুরআন]] ইসলাম ধর্মের মূল ধর্মগ্রন্থ। এই ধর্মে বিশ্বাসীদের [[মুসলমান]] বা মুসলিম বলা হয়হয়। (তবেমুসলিমরা আল-কোরআনেরযেকোনো বিধান মতেজাতি, কেবলবর্ণের মাত্রমানুষকে এইইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীধর্মান্তরিত হলেইহতে তাকেউৎসাহিত "মুসলিম"করে। বলামুসলমানরা যাবে[[বিশ্বাস]] না। দুনিয়ার যে কোন ধর্মকরেন, বর্ণ,কুরআন গোত্রের মানুষই হোক, যারা এই ধর্মে নিজেকে শতভাগ সমর্পন করতে পারবেন, কেবল তাদেরকেই বলা হবে "মুসলিম"। সূত্রঃ সূরা বাকারাহ; আয়াত ২০৮)। কোরআনগ্রন্থটি [[আল্লাহ|আল্লাহর]] বাণী এবং এটি তার দ্বারা ফেরেসতাস্বর্গীয় জীব্রাইলদূত জিব্রাইল-এর মাধ্যমে [[মুহাম্মদ]]-এর নিকট প্রেরিত বলে মুসলমানরা [[বিশ্বাস]] করেন।প্রেরিত। তাদের [[বিশ্বাস]] অনুসারে [[মুহাম্মদ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)]] শেষস্রষ্টার নবী।সর্বশেষ [[হাদিস|হাদিসে]]বার্তাবাহক। প্রাপ্তমুসলমানরা তাঁরবিশ্বাস নির্দেশিতকরে কাজযে ইসলাম শিক্ষারহচ্ছে ভিত্তিতেএকটি কুরআনকেপরিপূর্ণ ব্যাখ্যা করাসার্বজনীন হয়।ধর্ম তবে,এবং কোনোকুরআন হাদিসেরহচ্ছে মর্মার্থসর্বোত্তম কুরআনেরজীবন বিরুদ্ধে গেলে, তা বাতিল বলে গণ্য হয়।বিধান।
 
মুসলমানরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে মৃত্যুর পরে পুনরুত্থানের উপর।উপর বিশ্বাস করে। এই দিনটিকে হাশরের দিন বলা হয়। এই দিন প্রত্যেক মানুষের কাজেরকৃতকর্মের বিচার করা হবে এবং এর ভিত্তিতে বেহেশত বা দোযখে পাঠানো হবে। তারা আরও বিশ্বাস করে ভাগ্যের ভাল-মন্দ সবকিছু আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত।
মুসলমানরা বিশ্বাস করে যে ইসলাম হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ ও সার্বজনীন ধর্ম, যা এর আগে অনেক নবী ও রাসুল-এর প্রতি নাযিল হয়েছিল। তারা আরও বিশ্বাস করে যে, কুরআন হচ্ছে আল্লাহ্‌র পক্ষ হতে প্রেরিত সর্বশেষ জীবন বিধান।
 
[[ইহুদি ধর্ম|ইহুদি]] ও [[খৃস্ট ধর্ম|খৃস্ট ধর্মের]] ন্যায় ইসলাম ধর্মও [[ইব্রাহামীয় ধর্মসমূহ|ইব্রাহিমীয়]]।<ref>{{বই উদ্ধৃতি | লেখক=Vartan Gregorian | শিরোনাম=Islam: A Mosaic, Not a Monolith | প্রকাশক=Brookings Institution Press | অবস্থান=Washington D.C. | বছর=2003 | আইডি={{আইএসবিএন|0-8157-3283-X}}|pages=p. ix}}</ref> বর্তমান বিশ্বে মুসলমানের সংখ্যা আনুমানিক ১.৮ বিলিয়ন এবং তারা পৃথিবীর [[প্রধান ধর্মাবলম্বী গোষ্ঠীসমূহ।। এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মাবলম্বী গোষ্ঠী]]। <ref>{{বই উদ্ধৃতি |লেখক= Teece, Geoff |শিরোনাম=Religion in Focus: Islam |প্রকাশক=Smart Apple Media| বছর=2005| পাতাসমূহ=p. 10}}</ref> মুহাম্মদ ও তার উত্তরসূরীদের প্রচার ও যুদ্ধ জয়ের ফলশ্রুতিতে ইসলাম দ্রুত বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Nelson|প্রথমাংশ=Lynn Harry|ইউআরএল=http://www.ku.edu/kansas/medieval/108/lectures/islam.html|শিরোনাম=Islam and the Prophet Muhammad|সংগ্রহের-তারিখ=2006-06-17|প্রকাশক=Kansas University}} - "One must remember that we are talking about the Muslim expansion, not Arab conquests. The expansion of Islam was as much, or perhaps much more, a matter of religious conversion than it was of military conquest."</ref> বর্তমানে সমগ্র বিশ্ব জুড়ে, বিশেষ করে [[মধ্যপ্রাচ্য]], [[উত্তর আফ্রিকা]], [[দক্ষিণ এশিয়া]], [[পূর্ব আফ্রিকা]], [[পশ্চিম আফ্রিকা]], [[মধ্য এশিয়া]], [[দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া]], [[পূর্ব ইউরোপ|পূর্ব ইউরোপে]] মুসলমানরা বাস করেন। আরবে এ ধর্মের গোড়াপত্তন হলেও অধিকাংশ মুসলমান [[মধ্য এশিয়া|অন্যাংশের]]। আরব দেশের মুসলমানরা মোট মুসলমান জনসংখ্যার শতকরা মাত্র ২০ বিশ ভাগ।<ref>{{বই উদ্ধৃতি |লেখক= John L Esposito|শিরোনাম=What Everyone Needs to Know About Islam |প্রকাশক=Oxford University Press US| বছর=2002| পাতাসমূহ=p. 2| আইডি={{আইএসবিএন|0-19-515713-3}}}}</ref> [[যুক্তরাজ্য|যুক্তরাজ্যসহ]] বেশ কিছু [[বলকান অঞ্চল]] দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম ইসলাম।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি| শিরোনাম=Religion In Britain| ইউআরএল= http://www.statistics.gov.uk/cci/nugget.asp?id=293| লেখক=Office for National Statistics| তারিখ=2003-02-13| সংগ্রহের-তারিখ=2006-08-27}}</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি| শিরোনাম=Muslims in Europe: Country guide| ইউআরএল= http://news.bbc.co.uk/1/hi/world/europe/4385768.stm| লেখক=BBC| তারিখ=2005-12-23| সংগ্রহের-তারিখ=2006-09-28}}</ref>
মুসলমানরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে মৃত্যুর পরে পুনরুত্থানের উপর। এই দিনটিকে হাশরের দিন বলা হয়। এই দিন প্রত্যেক মানুষের কাজের বিচার করা হবে এবং এর ভিত্তিতে বেহেশত বা দোযখে পাঠানো হবে।
 
মুসলমানরা বিশ্বাস করে ভাগ্যের ভাল-মন্দ সবকিছু আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত।
 
[[ইহুদি ধর্ম|ইহুদি]] ও [[খৃস্ট ধর্ম|খৃস্ট ধর্মের]] ন্যায় ইসলাম ধর্মও [[ইব্রাহামীয় ধর্মসমূহ|ইব্রাহিমীয়]]।<ref>{{বই উদ্ধৃতি | লেখক=Vartan Gregorian | শিরোনাম=Islam: A Mosaic, Not a Monolith | প্রকাশক=Brookings Institution Press | অবস্থান=Washington D.C. | বছর=2003 | আইডি={{আইএসবিএন|0-8157-3283-X}}|pages=p. ix}}</ref> বর্তমান বিশ্বে মুসলমানের সংখ্যা আনুমানিক ১.৮ বিলিয়ন এবং তারা পৃথিবীর [[প্রধান ধর্মাবলম্বী গোষ্ঠীসমূহ।। এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মাবলম্বী গোষ্ঠী]]। <ref>{{বই উদ্ধৃতি |লেখক= Teece, Geoff |শিরোনাম=Religion in Focus: Islam |প্রকাশক=Smart Apple Media| বছর=2005| পাতাসমূহ=p. 10}}</ref> মুহাম্মদ ও তার উত্তরসূরীদের প্রচার ও যুদ্ধ জয়ের ফলশ্রুতিতে ইসলাম দ্রুত বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Nelson|প্রথমাংশ=Lynn Harry|ইউআরএল=http://www.ku.edu/kansas/medieval/108/lectures/islam.html|শিরোনাম=Islam and the Prophet Muhammad|সংগ্রহের-তারিখ=2006-06-17|প্রকাশক=Kansas University}} - "One must remember that we are talking about the Muslim expansion, not Arab conquests. The expansion of Islam was as much, or perhaps much more, a matter of religious conversion than it was of military conquest."</ref> বর্তমানে সমগ্র বিশ্ব জুড়ে, বিশেষ করে [[মধ্যপ্রাচ্য]], [[উত্তর আফ্রিকা]], [[দক্ষিণ এশিয়া]], [[পূর্ব আফ্রিকা]], [[পশ্চিম আফ্রিকা]], [[মধ্য এশিয়া]], [[দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া]], [[পূর্ব ইউরোপ|পূর্ব ইউরোপে]] মুসলমানরা বাস করেন। আরবে এ ধর্মের গোড়াপত্তন হলেও অধিকাংশ মুসলমান [[মধ্য এশিয়া|অন্যাংশের]]। আরব দেশের মুসলমানরা মোট মুসলমান জনসংখ্যার শতকরা মাত্র ২০ বিশ ভাগ।<ref>{{বই উদ্ধৃতি |লেখক= John L Esposito|শিরোনাম=What Everyone Needs to Know About Islam |প্রকাশক=Oxford University Press US| বছর=2002| পাতাসমূহ=p. 2| আইডি={{আইএসবিএন|0-19-515713-3}}}}</ref> [[যুক্তরাজ্য|যুক্তরাজ্যসহ]] বেশ কিছু [[বলকান অঞ্চল]] দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম ইসলাম।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি| শিরোনাম=Religion In Britain| ইউআরএল= http://www.statistics.gov.uk/cci/nugget.asp?id=293| লেখক=Office for National Statistics| তারিখ=2003-02-13| সংগ্রহের-তারিখ=2006-08-27}}</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি| শিরোনাম=Muslims in Europe: Country guide| ইউআরএল= http://news.bbc.co.uk/1/hi/world/europe/4385768.stm| লেখক=BBC| তারিখ=2005-12-23| সংগ্রহের-তারিখ=2006-09-28}}</ref>
 
== ধর্ম বিশ্বাস ==
[[চিত্র:Muslims praying in a Masque in Bangladesh.jpg|thumb|বাংলাদেশের একটি মসজিদে মুসলমান পুরুষদের নামাযের দৃশ্য।]]
মুসলমানদের ধর্ম বিশ্বাসের মূল ভিত্তি [[আল্লাহ্|আল্লাহর]] [[তাওহীদ|একত্ববাদ]]। মুসলিমরা [[বিশ্বাস]] করেন আল্লাহ্ মানবজাতির জন্য তাঁর বাণী ফেরেস্তা [[জীব্রাইল]]-এর মাধ্যমে [[রাসূল]] [[মুহাম্মদ]]-এর নিকট অবতীর্ণ করেন। কুরআনে বর্ণিত "[[খতমে নবুয়্যত]]" এর ভিত্তিতে মুসলিমরা তাঁকে শেষ বাণীবাহক (রাসূল) বলে বিশ্বাস করেন।
 
তারা আরও বিশ্বাস করেন, তাদের পবিত্র গ্রন্থ কুরআন নিখুঁত, অবিকৃত ও মানব এবং জ্বিন জাতির উদ্দেশ্যে অবতীর্ণ আল্লাহর সর্বশেষ বাণী, যা [[পুনরুত্থান দিবস]] বা কেয়ামত পর্যন্ত বহাল ও কার্যকর থাকবে। তবে কিছু সম্প্রদায়, যেমনঃ [[আহ্মদি]] বা কাদিয়ানী নামক একটি সম্প্রদায় মনে করে [[মুহাম্মদ]] শেষ নবী নন; বরং যুগের চাহিদা মোতাবেক নবুওয়াতের ধারা অব্যহত থাকবে।<ref>http://www.quraneralo.com/qadiyani-exposed/ কাদিয়ানী মতবাদ এবং খতমে নবুওয়াত</ref> এবং [[শিয়া ইসলাম|শিয়াদের]] একটি বিরাট অংশবিশেষ [[ইসমাইলীয়|ইসমাঈলীয়দের]] মধ্যে প্রচলিত বিশ্বাস যে, [[ইমাম ইসমাঈল]] আখেরী নবী ছিলেন। <ref>http://www.djanata.com/index.php?ref=MjBfMDFfMjFfMTRfMV80XzFfNTQyNzA=</ref>
 
ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে, [[আদম]] হতে শুরু করে [[আল্লাহ্]] প্রেরিত সকল পুরুষ ইসলামের বাণীই প্রচার করে গেছেন। কুরআনের সূরা ফাতিরে বলা হয়েছে,
{{cquote|"নিঃসন্দেহে আমি তোমাকে (মুহাম্মদ) পাঠিয়েছি সত্যের সাথে সুসংবাদদাতা এবং সতর্ককারীরূপে। আর এমন কোনো সম্প্রদায় নেই, যাঁদের মধ্যে একজন সতর্ককারী পাঠানো হয়নি।"৩৫:২৪<ref name = "ফাহদ">{{বই উদ্ধৃতি |শিরোনাম=পবিত্র কোরআনুল করীম (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর)|প্রকাশক=খাদেমুল-হারমাইন বাদশাহ ফাহদ, কোরআন মুদ্রণ প্রকল্প| বছর=১৪১৩| পাতাসমূহ=১৪৮০ পাতা}}</ref>}}
 
২৮ ⟶ ২৪ নং লাইন:
{{cquote|"তুমি (মুহাম্মদ) বল, হে কিতাবীগণ, এসো সেই কথায় যা তোমাদের এবং আমাদের মধ্যে এক; যেন আমরা আল্লাহ ব্যতীত কারও ইবাদত না করি। কোনো কিছুকেই তাঁর শরিক না করি। এবং আমাদের কেউ কাউকে আল্লাহ ব্যতীত উপাস্য হিসেবে গ্রহণ না করি। যদি তাঁরা মূখ ফিরিয়ে নেয় তবে বল, তোমরা স্বাক্ষী থাক; অবশ্যই আমরা মুসলিম।"৩:৬৪<ref name="ফাহদ"/>}}
এই ধর্ম দুটির গ্রন্থসমূহের বিভিন্ন ঘটনা ও বিষয়ের উল্লেখ কুরআনেও রয়েছে, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রয়েছে পার্থক্য। ইসলামি বিশ্বাসানুসারে এই দুই ধর্মের অনুসারীগণপন্ডিতগণ তাদের নিকট প্রদত্ত আল্লাহ্-এর বাণীর অর্থগত ও নানাবিধ বিকৃতসাধন করেছেন। ইহুদিগণ [[তৌরাত|তৌরাতকে]] ([[তোরাহ]]) ও খৃস্টানগণ [[নতুন বাইবেল|ইনজিলকেইনজিল]]কে [[নতুন বাইবেল]] বলে থাকে। কুরআনের বিশ্বা অনুসারে ”যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম বেছে নিবে সে কষ্মিনকালেও সফলকাম হতে পারবেনা এবং সে চরম ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” - (সূরা আল ইমরান, আয়াত :৮৫)
 
=== আল্লাহ্ ===
[[চিত্র:Istanbul, Hagia Sophia, Allah.jpg|left|thumb|180x180px|মেডেল প্রদর্শন করছে "[[আল্লাহ্|আল্লাহ্‌]]"।[[তুরস্ক]] ,[[ইস্তাম্বুল|ইস্তাম্বুলের&nbsp;]],[[হাজিয়া সোফিয়া]] তে ।]]
{{মূল নিবন্ধ|আল্লাহ}}
মুসলমানগণ [[মহাবিশ্ব|বিশ্বজগতের]] [[সৃষ্টিকর্তাকে]] 'আল্লাহ' বলে সম্বোধন করেন। ইসলামের মূল বিশ্বাস হলো আল্লাহর একত্ববাদ বা [[তৌহিদ]]। ইসলামআল্লাহর পরমএকত্বের একেশ্বরবাদী ও কোনোভাবেই আপেক্ষিক বা বহুত্ববাদী নয়। আল্লাহরসাক্ষ্য একত্বদেওয়া ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের মধ্যে প্রথম, যাকে বলা হয় [[শাহাদাহ]]। এটি পাঠের মাধ্যমে একজন স্বীকার করেন যে, (এক) আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোনো উপাস্য নাই এবং (দুই) মুহাম্মদ [(সাঃ)] তাঁর প্রেরিত বাণীবাহক বা [[রাসূল]]
[[সূরা ইখলাস|সুরা এখলাছে]] আল্লাহর বর্ণনা দেয়া হয়েছে এভাবে,
[قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ. اللهُ الصَّمَدُ. لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ. لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ. وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ] {الاخلاص:১-৪}
{{cquote|"বলুন, তিনি আল্লাহ, এক, আল্লাহ অমুখাপেক্ষী, তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাঁকে জন্ম দেয়নি এবং তাঁর সমতুল্য কেউ নেই।"১১২:১-৪<ref name="ফাহদ"/>}}
 
আল্লাহ্ শব্দটি [[আল]] এবং [[ইলাহ]] যোগে গঠিত। আল অর্থ সুনির্দিষ্ট এবং ইলাহ অর্থ উপাস্য, যার অর্থ সুনির্দিষ্ট উপাস্য। খৃস্টানগণ খৃস্ট ধর্মকে একেশ্বরবাদী বলে দাবী করলেও মুসলিমগণ খৃস্টানদের [[ত্রিত্ববাদ]] (trinity) বা এক ঈশ্বরের মধ্যে পিতা, পুত্র ও পবিত্র আত্মার মিলন, এই বিশ্বাসকে বহু-ঈশ্বরবাদী ধারণা বলে অস্বীকার করেন। কারণ ১+১+১=৩ হয় কিন্তু ১+১+১=১ হয় না । ইসলামি ধারণায় আল্লাহ সম্পূর্ণ অতুলনীয় ও [[পৌত্তলিকতা|পৌত্তলিকতার]] অসমতুল্য, যার কোনোপ্রকার আবয়বিক বর্ণনা অসম্ভব। মুসলিমরা তাদের সৃষ্টিকর্তাকে বর্ণনা করেন তাঁর বিভিন্ন গুণবাচক নাম ও গুণাবলীর মাধ্যমে।
কিতাবুল ঈমানে আল্লাহর বর্ণনা এভাবে আছে :
{{উক্তি|আল্লাহ এক, অদ্বিতীয়, অতুলনীয়। তার কোন অংশ বা অংশিদার বা শরিক নেই। তিনি কারো উপন নির্ভরশীল নন, বরং সকলেই তার উপর নির্ভরশীল। তার কোন কিছুর অভাব নেই। তিনিই সকলের অভাব পূরণকারী। তিনি কারো পিতা নন, পুত্র নন, তাঁর সমতুল্য কেউ নেই। একমাত্র তিনি সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা,রক্ষাকর্তা ও পালনকর্তা। কোন জ্ঞান বা চক্ষু আল্লাহ তাআলাকে আয়ত্ব করতে পারেনা।
”আল্লাহ এক,অদ্বিতীয়,অতুলনীয়। তার কোন অংশ বা অংশিদার বা শরিক নেই।
তিনি চিরকাল আছেন এবং থাকবেন। তিনি অনাদি ও অনন্ত। অাল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নাই। শুধু তিনিই ইবাদত (উপাসনা) পাওয়ার যোগ্য। তিনি সর্বশক্তিমান। আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াতে ঘটমান সব কিছু দেখতে ও শুনতে পান। তাঁর কোনো কিছুর প্রয়োজন নেই, তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে।}}
তিনি কারো মুখাপেক্ষি নন, বরং সকলেই তার মুখাপেক্ষি ।
তার কোন কিছুর অভাব নেই । তিনিই সকলের অভাব পূরণকারী।
তিনি কারো পিতা নন, পুত্র নন, তাঁর সমতুল্য কেউ নেই ।
একমাত্র তিনি সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা,রক্ষাকর্তা ও পালনকর্তা ।
কোন জ্ঞান বা চক্ষু আল্লাহ তাআলাকে আয়ত্ব করতে পারেনা ।
তিনি চিরকাল আছেন এবং থাকবেন। তিনি অনাদি ও অনন্ত ।
অাল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নাই । তিনি একমাত্র ইবাদত পাওয়ার যোগ্য । “
তিনি সর্বশক্তিমান।আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াতে ঘটমান সব কিছু দেখতে ও শুনতে পান।তাঁর কোনো কিছুর প্র্যোজন নেই, তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে।
 
মূলমুসলিমরা কথাবিশ্বাস করে, আল্লাহর বর্ণনা মানুষের কল্পনা, বিজ্ঞান বা, দর্শন দ্বারা আনুভব করাজানা সম্ভব না।
 
=== ফেরেশতা ===
 
{{মূল নিবন্ধ|ফেরেশতা}}
ফিরিশতা বা ফেরেশতা [[ফারসি|ফারসী]] শব্দ। ফেরেশতা [[আরবী]] প্রতিশব্দ হলো 'মালাইকা'। ফেরেশতায় বিশ্বাস ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসের একটি মূল নীতি। এরা অন্য সকল সৃষ্টির মতই আল্লাহর আরেক সৃষ্টি। তাঁরা মুলত আল্লাহর দূত। তারা সর্বদা ও সর্বত্র আল্লাহর বিভিন্ন আদেশ পালনে রত এবং আল্লাহর অবাধ্য হবার কোনো ক্ষমতা তাদের নেই। ফেরেশতারা নূর তথা [[আলো|আলোর]] তৈরি। রূহানিক জীব বলে তারা খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করেন না। তারা সুগন্ধের অভিলাষী এবং পবিত্র স্থানে অবস্থান করেন। তারা আল্লাহর আদেশ অনুসারে যেকোনো স্থানে গমনাগমন ও আকৃতি পরিবর্তনের ক্ষমতা রাখেন।
 
ফেরেশতাদের সংখ্যা অগণিত। ইসলামে তাদের কোনো শ্রেণীবিন্যাস করা না হলেও চারজন গুরুদায়িত্ব অর্পিত প্রধান ফেরেশতার নাম উল্লেখযোগ্য:
* জিব্রাইল – ইনি আল্লাহর দূত ও সর্বশ্রেষ্ঠ ফেরেশতা। এই ফেরেশতার নাম তিনবার কুরআন শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে (সূরা ২:৯৭; ৯৮, ৬৬:৪)। সূরা ১৬:১০২ আয়াতে জিব্রাইল ফেরেশতাকে পাকপবিত্র রূহ বা রুহুল ক্বুদুস বলা হয়েছে। আল্লাহর আদেশ-নিষেধ এবং সংবাদ আদান-প্রদান যেসব ফেরেশতার দায়িত্ব, জিব্রাইল তাদের প্রধান। জিব্রাইল-ই আল্লাহর বাণী নিয়ে নবীদের কাছে গমনাগমন করেন। এই ফেরেশতাকে ইসলামের নবী [[মুহাম্মদ]] তার নিজস্ব আকৃতিতে মোট দুইবার দেখেছেন। পবিত্র কোরআনে সূরা আন নাজমে বলা হয়েছে,
{{cquote|"সে ঊর্ধ্বাকাশের উপরিভাগে। তারপর সে কাছে এলো। অতঃপর সে আরো কাছে এলো। তাঁদের মাঝে ব্যবধান থাকল দুই ধনুকের বা তাঁর চাইতেও কম। অতঃপর সে তাঁর বান্দার কাছে ওহী পৌঁছে দিল, যা তাঁর পৌঁছানোর ছিল। সে যা দেখেছে, অন্তর তা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেনি। তোমরা কী সে বিষয়ে বিতর্কে লিপ্ত হতে চাও, যা সে নিজের চোখে দেখেছে। সে তাঁকে আরও একবার দেখেছিল। সিদরাতুল মুন্তাহার কাছে।” ৫৩:৭-১৪<ref name="ফাহদ" />}}
প্রাসঙ্গিক হাদিসসমূহ: মুসলিম শরীফ ৩২৯, ৩৩০, ৩৩২, ৩৩৩, ৩৩৪ এবং ৩৩৬<ref name=" সোলায়মান">{{ বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=সহীহ বোখারী শরীফ [১ম হইতে ১০ম খন্ড এক ভলিয়মে সমাপ্ত] অনুবাদ: শায়খুল হাদিস মাওলানা মোহাম্মদ আজীজুল হক|প্রকাশক=আলহাজ্ব মোঃ সোলায়মান চৌধুরী, একুশে বই মেলা| বছর=২০০৬ | পাতাসমূহ=১১২০ পাতা}}</ref>
৭৭ ⟶ ৬৭ নং লাইন:
{{মূল নিবন্ধ|কোরআন}}
[[চিত্র:FirstSurahKoran.jpg|thumb|200px|হাত্তাত আজিজ এফেন্দির হস্তলিখিত - কুরআনের প্রথম সুরা।]]
কুরআন মুসলিমদের মূল ধর্মগ্রন্থ। তাদের বিশ্বাস পবিত্র এই কুরআন স্রষ্টার অবিকৃত, হুবহু বক্তব্য। বিশ্বাস করা হয়, আল্লাহ নিজেই কুরআনের সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন। এর আগে স্রষ্টা প্রত্যেক জাতিকে বিভিন্ন গ্রন্থ পাঠিয়েছেন, কিন্তু সেগুলোকে বিকৃত করা হয়। কুরআনকে আরও বলা হয় "আল-কুরআন" । বাংলায় "কুরআন"-এর জায়গায় বানানভেদে "কোরআন" বা "কোরান"ও লিখতে দেখা যায়।
 
ইসলাম ধর্মমতে, জীব্রাইল ফেরেশতার মাধ্যমে নবী [[মুহাম্মদ]]-এর নিকট ৬১০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬ই জুলাই, ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যু অবধি বিভিন্ন সময়ে আল্লাহ তাঁর বাণী অবতীর্ণ করেন। এই বাণী তাঁর (মুহাম্মদের) অন্তঃস্থ ছিলো, সংরক্ষণের জন্য তাঁর অনুসারীদের দ্বারা পাথর, পাতা ও চামড়ার ওপর লিখেও রাখা হয়।
 
অধিকাংশ মুসলিম পবিত্র কুরআনের যেকোনো পাণ্ডুলিপিকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করেন, স্পর্শ করার পূর্বে [[ওজু]] করে নেন। কুরআন জীর্ণ ও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়লে আবর্জনা হিসেবে ফেলে দেয়া হয় না, বরং কবর দেয়ার মত করে মাটির নিচে রেখে দেয়া হয় বা পরিষ্কার স্রোতের পানিতে ডুবিয়ে দেয়া হয়।
 
প্রত্যেক মুসলিমই কুরআনের কিছু অংশ এর মূল [[ভাষা]] আরবিতে মুখস্থ করে থাকেন, কমপক্ষে যেটুকু আয়াত [[নামাজ]] আদায়ের জন্য পড়া হয়। সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্থকারীদের [[হাফিজ]] (সংরক্ষণকারী) বলা হয়। মুসলিমরা আরবি কুরআনকেই কেবলমাত্র নিখুঁত বলে বিশ্বাস করেন। সকল [[অনুবাদ]] মানুষের কাজ বিধায় এতে ভুল-ত্রুটি থাকার [[সম্ভাবনা]] থেকে যায় এবং বিষয়বস্তুর মূল প্রেরণা ও সণেটিক উপস্থাপনা অনুবাদকর্মে অনুপস্থিত থাকতে পারে বিধায় অনুবাদসমূহকে কখনোই আরবি কুরআনের সমতুল্য ও সমান নিখুঁত গণ্য করা হয় না, বরং এগুলোকে সর্বোচ্চ ‘অর্থানুবাদ’ হিসেবে অভিহিত করা হয়।
 
কুরআনকে কোনো অবস্থাতেই বিকৃত করা সম্ভব নয় । আল্লাহ নিজেই এই কুরআনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন । প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ ছাত্র সমগ্র পৃথিবীতে এই কুরআন মুখস্থ করেন এবং এর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা করেন ।
 
=== নবী ও রসূলগণ ===
মুসলিমরাবলা বিশ্বাস করেহয়, হযরত আদম(আঃ) থেকে শুরু করে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) পর্যন্ত আল্লাহ পৃথিবীতে প্রায় ১,২৪,০০০ (আনুমানিক) নবী ও রাসূল পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। {{cn}} আর তাদের মধ্যে হযরত আদম (আঃ) সর্ব প্রথম মানুষ ও আল্লাহর সর্ব প্রথম নবী এবং সর্ব শেষ ও সর্ব শ্রেষ্ঠ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ (সঃ)।মুহাম্মদ।
 
মুসলিমগণ বিশ্বাস করে ঈসাযীশু(আঃঈসা) আল্লাহর পুত্র নন বরং তিনি আল্লাহর রাসূল ।রাসূল। তাঁর উপর ইঞ্জিল কিতাব নাজিল হয়েছে। তিনি কেয়ামতের আগে আবার পৃথিবীতে আবার আসবেন এবং [[মুহাম্মাদ|হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)]] এরের অনুসারী হিসেবে মৃত্যু বরণ করবেন ।
 
=== ইসলামের নবী মুহাম্মদ ===
===মহানবি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ===
{{মূল নিবন্ধ|মুহাম্মদ(সাঃ)}}
{{Wide image|Madina Haram at evening.jpg|1400px|<center>বর্তমান সৌদি আরবের , [[হেজাজ]] অঞ্চলের , [[মদিনা]]য় অবস্থিত [[মসজিদে নববী]] (নবীজীর মসজিদ) এঁর প্যানারমিক দৃশ্য ।দৃশ্য। ইসলামে দ্বিতীয় সর্বচ্চোসর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ মসজিদ । মসজিদ।</center>}}
[[মুহাম্মদ (সাঃ)]] ছিলেন তৎকালীন আরবের বহুল মর্যাদাপূর্ণ [[কুরাইশ বংশ|কুরাইশ বংশের]] একজন। নবুওয়াত প্রাপ্তির পূর্বে তাঁর বিশেষ গুণের কারণে তিনি আরবে "আল-আমীন" বা "বিশ্বস্ত" উপাধিতে ভূষিত হন। স্রষ্টার নিকট হতে নবুওয়াত প্রাপ্তির পর তিনি মানুষকে [[ইসলাম ধর্ম]] এর দিকে দাওয়াত দেন ।দেন। তাঁকে ইসলামের শ্রেষ্ঠ বাণী-বাহক (নবী) হিসেবে শ্রদ্ধা ও সম্মান করা হয়। মুসলমানরাবিশ্বাস তাঁকেকরা একটি নতুন ধর্মের প্রবর্তক হিসেবে দেখেন না। তাঁদের কাছে [[মুহাম্মদ]] (সাঃ) বরং [[আল্লাহ]] প্রেরিত নবী-পরম্পরার শেষ নবী; যিনি [[আদম]]হয়, [[ইব্রাহিম]] ও অন্যান্য নবীদের প্রচারিত একেশ্বরবাদী ধর্মেরই ধারাবাহিকতা রক্ষা করেন। তার পূর্বের একেশ্বরবাদী ধর্ম বিভিন্ন সময় পরিবর্তিত ও বিকৃত হয়ে গিয়েছিল। তাই [[মুহাম্মদ]] (সাঃ) ইসলামকে শেষ প্রেরিত ধর্ম হিসেবে আল্লাহর পক্ষ থেকে উপস্থাপন করেন।
 
ইসলাম ধর্মমতে, তিনি চল্লিশ বছর বয়স হতে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ২৩ বছরবছরের যাবৎবিভিন্ন [[ফেরেশতা]]সময়ে জিব্রাইলজিব্রাইলের (আ:) মারফতমাধ্যমে ঐশী বাণী লাভ করেন। এই বাণীসমূহের একত্ররূপ হলো পবিত্র কুরআন, যা তিনি মুখস্থ করেন ও তাঁর অনুসারীদের (সাহাবী) দিয়ে লিপিবদ্ধ করান। কারণ, তিনি নিজে লিখতে ও পড়তে জানতেন না।
 
কুরআনে বলা হয়েছে,
{{cquote|"তুমি তো এর আগে কোনো কিতাব পড় নি এবং স্বহস্তে কোনো কিতাব লেখনি যে অবিশ্বাসীরা সন্দেহ পোষণ করবে।”২৯:৪৮ <ref name="ফাহদ" />}}
 
মুহাম্মদ (সাঃ) ছিলেন একজন উৎকৃষ্ট চরিত্রের মানুষ। সকল মুসলমান বিশ্বাস করেন মুহাম্মদ (সাঃ) এই বাণী নির্ভুলভাবে প্রচার করেছেন। এবং তাতে কোনো কিছু যোগ করেননি।
 
{{cquote|"সে যদি আমার নামে কোনো কথা রচনা করতো, তবে আমি তাঁর ডান হাত ধরে ফেলতাম, অতঃপর কেটে দিতাম তাঁর গ্রীবা। তোমাদের কেউ তাকে রক্ষা করতে পারতে না।" ৬৯:৪৪-৪৭ <ref name="ফাহদ" />}}
 
মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে, মুহাম্মদ (সাঃ) ও সর্বোপরি সকল নবী ঐশী বাণী প্রচারে কখনো ভুল করেন নি। তবে মানবিক এবং পার্থিব কিছু কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি মানুষ হিসেবে নিজের পক্ষ থেকে মত দিয়েছেন বলে (আহালুস সুন্নাহ ওয়াল জামাত বা সুন্নীরা) বিশ্বাস করে থাকে। কিন্তু [[শিয়া|শিয়ারা]] মনে করে থাকে, সকল নবী ও তাদের ইমামগণ সর্বাবস্থায় নির্ভুল ছিলেন; যা ধর্মগ্রন্থ কুরআন এবং বিশুদ্ধ হাদিসের বিপরীত। কারণ [[মুহাম্মদ]] (সাঃ) এর সকল প্রকার মানবিক ও পার্থিব সিদ্ধান্তগুলো স্বয়ং আল্লাহ্ শুধরে দিতেন। উদাহরণ হিসেবে নিম্নলিখিত আয়াতটি আলোচনা করা হয়:<ref>[http://www.usc.edu/dept/MSA/fundamentals/pillars/prophets/sinlessnessofprophets.html The Sinlessness of the Prophets in Light of the Qur'an], by R. Azzam, ''USC-MSA Compendium of Muslim Texts'', March 27, 2000, retrieved March 27, 2006</ref>:
 
{{cquote|"হে নবী, আল্লাহ আপনার জন্যে যা হালাল করেছেন, আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে খুশী করার জন্য তা নিজের উপর হারাম করছেন কেন? আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়াময়।" ৬৬:১ <ref name="ফাহদ" />}}
 
এভাবে কুরআনের আরও কয়েক জায়গায় মুহাম্মদের (সাঃ) কাজ শুধরে দেয়া হয়েছে। এই আয়াতগুলো আল্লাহর বাণী নির্ভুল এবং অপরিবর্তিতভাবে প্রচার করার ব্যাপারে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়, কারণ নির্ভুলভাবে প্রচারের ইচ্ছা না থাকলে নিজের অসম্মান হয় এমন কিছুই তিনি প্রচার করতেন না। মুসলিমরা বিশ্বাস করেন, মানুষ হিসেবে সিদ্ধান্ত দিতে হলে মুহাম্মদ (সাঃ) কখনো কখনো ভুল করতেন। কিন্তু ঐশ্বিক বাণী প্রচারের ক্ষেত্রে তিনি কখনো ভুল করেননি। তাঁর জীবনকালে তিনি সম্পূর্ণ আলৌকিকভাবে মেরাজ লাভ করেন।
 
মুসলিমদেরকে শেষ বাণীবাহক মুহাম্মদের নাম উচ্চারণ করার সাথে সাথে "সাল্লাল্লা-হু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম" বলতে হয়। এর অর্থ: 'আল্লাহ তাঁর উপর রহমত এবং শান্তি বর্ষণ করুন।' একে বলা হয় দরুদ শরীফ। এছাড়াও আরও অনেক দরুদ হাদীসে বর্ণীত আছে। তাঁর মধ্যে এটাই সর্বপেক্ষা ছোট। কোনো এক বৈঠকে তাঁর নাম নিলে দরুদ একবার বলা অবশ্যকর্তব্য (ওয়াজিব)।
১১৫ ⟶ ৯৬ নং লাইন:
==== হাদিস ====
{{মূল নিবন্ধ|হাদিস}}
'হাদীস' (اﻠﺤﺪﻴث) আরবি [[শব্দ]]। এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে- কথা, বাণী, কথা-বার্তা, আলোচনা, কথিকা, সংবাদ, খবর, কাহিনী ইত্যাদি। <ref>আধুনিক আরবি বাংলা অভিধান, ড.ফজলুর রহমান, রিয়াদ প্রকাশনী ২০০৫</ref> ইসলামী পরিভাষায় [[মুহাম্মদ|মুহাম্মদের]] (সাঃ) কথা, কাজ, অনুমোদন এবং তাঁর দৈহিক ও চারিত্রিক যাবতীয় বৈশিষ্ট্যকে হাদীস বলে। মুহাম্মদের জীবদ্দশায় তাঁর সাহাবীরা তাঁর হাদীসসমূহ মুখস্থ করে সংরক্ষণ করতেন। প্রথমতপ্রথমদিকে হাদীস লেখার অনুমতি ছিলো না,না। যাতেতখনকার হাদীসঅনুন্নত এবংমুদ্রণব্যবস্থার কোরআনকারণে পরস্পরকেউ মিলেলিখিত নাহাদিসকে যায়।ভুলক্রমে পরবর্তীতেকুরআনের মুহাম্মদআয়াত (সাঃ)মনে নিজেইকরতে পারে এই আশংকা ছিল। পরবর্তীতে ইসলামের নবী তাঁর কোনো কোনো সাহাবী বা সহচরকে হাদীস লেখার অনুমতি প্রদান করেন।<ref>Khatib Bagdadi, ''Taq-eedul 'Ilm.'' Beirut: Ihya-us-sunnah An-nabawiah.</ref> মুহাম্মদের (সাঃ)তার মৃত্যুর পর তার সাহাবীরা নিয়মিত তাঁর হাদিসগুলো চর্চা করতেন ও তাদের ছাত্রদের কাছে বর্ণনা করতেন। মহাম্মদের সাহাবীদের ছাত্র তথা তাবেঈরা ওমর ইবন আব্দুল আযীযের আমলে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হাদীস লিখিত আকারে সংরক্ষণ করেন।<ref>প্রাগুক্ত।</ref>
 
মুহাম্মদের (সাঃ) কথা-কাজসমূহের বিবরণ এভাবে লোকপরম্পরায় সংগ্রহ ও সংকলন করে সংরক্ষণ করা হলে তাঁর বক্তব্যসমূহ পরবর্তী প্রজন্মের কাছে উন্মুক্ত হয়। বিভিন্ন বিখ্যাত পণ্ডিতেরা এই কাজে ব্রতী ছিলেন।মুসলিম তাঁদেরপণ্ডিতদের সংকলিত সেসব হাদিস-সংকলন গ্রন্থেরগ্রন্থগুলোর মধ্যে ছয়টি গ্রন্থ প্রসিদ্ধ হয়েছে। এগুলোএগুলোকে 'ছয়টি হাদিস গ্রন্থ' (কুতুবুস সিত্তাহ) আখ্যা দেয়া হয়। তবে এটা ভাবা ভুল হবে যে, এই ছয়খানা গ্রন্থের বাইরে আর কোনো বিশুদ্ধ হাদিস নেই। এর বাইরেও বহু বিশুদ্ধ হাদিসের সংকলন রয়েছে। হাদিসের বিশুদ্ধতা যাচাইয়ের বিভিন্ন মাপকাঠি রয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো হাদীসের ''সনদ'' বা "হাদিসহাদিসের প্রাপ্তিরবর্ণনাকারীদের সুত্র"নির্ভরযোগ্য যাচাই।
 
=== কিয়ামত ===
অধিকন্তু পড়ুন: [[ইসলামী পরকালবিদ্যা]]
 
কিয়ামতে বা শেষ বিচারের দিনে বিশ্বাস ইসলামের মূল বিশ্বাসগুলির একটি|একটি। ইসলাম ধর্মে কেয়ামত বা কিয়ামত হলো সেই দিন যে দিন এই বিশ্বের সৃষ্টা( আল্লাহ) সকল মানুষ ও জ্বীন দের পুনরুত্থান করা হবে বিচারের জন্য|জন্য। সকলে তার কৃতকর্মের হিসাব দেওয়ার জন্যে এবং তার কৃতকর্মের ফলাফল শেষে পুরস্কার বা শাস্তির পরিমাণ নির্ধারণ শেষে জান্নাত/বেহেশত কিংবা জাহান্নাম/দোযখ এ পাঠানো হবে|হবে। ইসলামের নবী মুহাম্মদকিয়ামতের (সাঃ)পুর্বের কিয়ামতেরঘটনাবলি সম্পর্কে কিছু আগাম নিদর্শন প্রকাশবলে করেগেছেন। গেছেন যেমন ১। পুরুষদের তুলনায় নারীদের সংখ্যা বেড়ে যাবে; ২। ইমাম মাহাদির আবির্ভাব ঘটবে; ৩। দুনিয়ায় পাপ কাজ বেড়ে যাবে; ৪। অযোগ্য লোকের হাতে ক্ষমতা চলে যাবে; ৫। ব্যভিচার বেড়ে যাবে; ৬।পাপ কাজ করতে মানুষ দুইবার ভাববে না; ৭। কয়েকজন লোক নিজেকে নবীসেগুলোর দাবিমধ্যে করবেনকয়েকটি প্রভৃতি।হল
#নারীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া
#[[ইউফ্রেটিস]] থেকে স্বর্ণের পাহাড় আবিষ্কৃত হওয়া
#ইমাম মাহদীর আগমন, নবী ঈসার অবতরণ
#দাজ্জাল ও ইয়াজুজ মাজুজের আবির্ভাব
#পশ্চিমদিকে সূর্যোদয়
 
== ইসলামের মূল স্তম্ভসমূহ ==
১২৯ ⟶ ১১৫ নং লাইন:
* [[কলেমা|কালেমা]] (বিশ্বাস)
* [[নামাজ]] (প্রার্থনা)
* [[রোজা|সিয়াম]] (নির্ধারিত কিছু কাজ থেকে বিরত থাকাউপবাস)
* [[যাকাত]] (দান)
*[[হজ্জ্ব]] (মক্কা ভ্রমণ)
 
==ইসলামিক উৎসবসমূহ==
ইসলামের উৎসবগুলোর কয়েকটি হল:
*ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম।এ ধর্মে নানাপ্রকার উৎসব পালন হয়ে থাকে।যেমন:
**[[ঈদুল ফিতর]]
**[[ঈদুল আযহা]]
*[[মাওলিদ]]
**[[ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সাঃ)]] বা ১০ মুহাররম বা [[আশুরা]] দিবস বা কারবালা দিবস(শিয়া অনুসারীদের জন্য)
*[[আশুরা]]
**[[শবে বরাত]] বা লাইলাতুল বরাত
**[[শবে মেরাজবরাত]] বা লাইলাতুল মিরাজবরাত
**[[শবে কদরমেরাজ]] বা লাইলাতুল কদরমিরাজ
**[[শবে বরাতকদর]] বা লাইলাতুল বরাতকদর
 
==আরও দেখুন==