পরিভাষা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Aishik Rehman (আলোচনা | অবদান)
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
১৭ নং লাইন:
♥ [[মুহম্মদ আবদুল হাই]] : যতটা সম্ভব বাংলা ভাষার ধর্ম, তার শ্রুতিমাধুর্য এবং ব্যবহারিক প্রয়োজনের দিক লক্ষ্য রেখে সংস্কৃত ও আরবি ভাষার শব্দ মূলের মধ্যে একটি ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।
 
♥ [[মুহম্মদ শহীদুল্লাহ| ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর]] অভিমত: বাংলা গদ্যের সাহিত্যিক ব্যবহারের প্রারম্ভ থেকেই পরিভাষার জন্য সংস্কৃতের সাহায্য লওয়া হচ্ছে। আমি মনে করি যে বাংলা ভাষার এই ঐতিহ্যের দিকে লক্ষ্য করে আমরা একদম সংস্কৃত বর্জন করতে পারি না। সেইরূপ রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য করে আরবির ফারসিও আমরা অগ্রাহ্য করতে পারি না।
 
==বাংলা পরিভাষা নির্মাণের ইতিহাস==
 
১৭৭২ সালের ১৫ই আগস্ট প্রতি জেলায় দেওয়ানি বিচারের জন্য মফস্বলে দেওয়ানি আদালত স্থাপিত হয়। ১৭৭৫ সালে স্থাপিত হয় কলকাতায় সুপ্রীম কোর্ট। ১৭৯৭ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট আইন প্রণয়ন করেন। ওই আইনের রেগুলেশন খাতে সরকার ইচ্ছামত পরিবর্তন না করতে পারে সে ব্যাপারে নির্দেশ থাকে। প্রতিটি রেগুলেশন মুদ্রিত এবং দেশি ভাষায় অনূদিত হবারও নির্দেশ থাকে। এই আবশ্যিক অনুবাদের মাধ্যমে এদেশে আইনের অনুবাদ শুরু হয়। ফলে ১৭৭৬ সাল থেকে ১৭৯৭-৯৮ সাল পর্যন্ত জেন্টু কোড, অর্ডিন্যান্স অভমনু, এ ডাইজেস্ট অব হিন্দুল (১৭৭৬-১৭৯৮) প্রণয়নে সংস্কৃত থেকে ইংরেজি পরিভাষা নির্মাণের গোড়াপত্তন হয়। বাংলায় পরিভাষা নির্মাণের গোড়াপত্তন হয় ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে। ১৭৮৪ সালে জনাথান ডানকানের ‘হইবার কারণ ধারার নিয়ম বাংলা ভাষায়’র বাংলা হরফে প্রকাশ হবার মধ্য দিয়েই বাংলা পরিভাষার সূচনা হয়। এ ধারা অব্যাহত থাকে ১৮৯৩ সাল পর্যন্ত। ১৮৯৪ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের উদ্যোগে যা ব্যাপক পরিণতরূপ পায়। বিগত দুইশ বছরে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের পাশাপাশি পরিভাষা নির্মাণে অবদান রেখেছেন ফেলিকস কেরি, জনমেক, উইলসন, পীয়ারসন বৃটন প্রমুখ মনীষী থেকে শুরু করে অক্ষয় কুমার দত্ত, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বঙ্কিম চন্দ্র, বিপিনবিহারী দাস, রাজেন্দ্রলাল মিত্র, রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী, যোগেশচন্দ্র, ড. রঘুবীর, বি এন শীল, সুনীতিকুমার, রাজশেখর বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুধীন্দ্রনাথ প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।
৪৭ নং লাইন:
৩। নির্মাণ: বাংলা ব্যাকরণ ও শব্দগঠনের রীতি অনুসারে সম্পূর্ণ নতুন শব্দ নির্মাণ।
 
৪। নবায়ন: অব্যবহৃত শব্দের সম্পূর্ণ বা আংশিক অর্থ পরিবর্তন / আংশিক বানান পরিবর্তন / পরিবর্তন না করে।
 
৫। কৃতঋণ: অন্য ভাষা থেকে শব্দ ধার করে।
৫৫ নং লাইন:
* মূল ভাষায় প্রতিশব্দ না থাকলে পরিভাষা প্রয়োগ করা যায়। যেমন: পুলিশ চোরকে ধরতে এসেছে। পুলিশের প্রতিশব্দ নেই।
 
* মূল ভাষায় টেকসই প্রতিশব্দ না থাকলে পরিভাষা প্রয়োগ করা হয়। যথা: ছেলেমেয়েরা টেলিভিশন দেখছে। টেলিভিশন শব্দের প্রতিশব্দ দূরদর্শন। তবে এ শব্দটি টেকসই নয়।
 
* মূল ভাষায় প্রতিশব্দটি অপ্রচলিত হলে পরিভাষা প্রয়োগ করা হয়। যথা: টেবিলে কলমটা রাখো। টেবিলের প্রতিশব্দ চৌপায়া, তবে এটি প্রচলিত নয়।
 
* মূল ভাষার প্রতিশব্দটি সর্বসাধারণের বোধগম্য না হলে পরিভাষা ব্যবহার করা হয়। যেমন: গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ডিগ্রির প্রতিশব্দ মাননির্ণয়ক বিশেষ বলে অভিহিত করা হয়। তাই ডিগ্রি লেখাই শ্রেয়।
 
* পৌনঃপুনিক ব্যবহারের কারণে প্রতিশব্দ থাকলেও পরিভাষা প্রয়োগ করা যায়। যথা: অ্যাকাউনট্যান্ট পদে লোক নিয়োগ করা হবে। Accountant-এর প্রতিশব্দ হিসাবরক্ষক। কিন্তু অ্যাকাউনট্যান্ট বারবার ব্যবহৃত হয়।
* সহজে গ্রহণযোগ্য পরিভাষা প্রয়োগ করা যায়। যেমন: টেলিফোন নষ্ট হয়ে গেছে। টেলিফোনের প্রতিশব্দ ‘দূরালাপনী’ কিন্তু টেলিফোন সহজে গ্রহণযোগ্য।
 
* অফিস-আদালতে ব্যবহার করা শব্দ পারিভাষিক হওয়াই উত্তম। যেমন: বিল জমা দেওয়া হোক। এখানে বিলের পরিবর্তে অন্য কোনো শব্দ প্রয়োগ করা ঠিক নয়।
 
* অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে মূল ভাষার প্রতিশব্দ সৃষ্টি করে শব্দের সর্বজনীনতা নষ্ট করা উচিত নয়। সে ক্ষেত্রে পরিভাষা প্রয়োগ করা ভালো। যেমন: স্কুল খোলা নেই। স্কুলের পরিবর্তে বিদ্যালয় প্রয়োগ করলে সর্বজনীনতা নষ্ট হয়।
* প্রসাধনীসামগ্রী, ক্রীড়াসামগ্রী, যন্ত্রপাতি, নিত্যপণ্য ও বহুল প্রচলিত বিশেষ্যপদের পরিভাষা সৃষ্টি নিষ্প্রয়োজন।