মসিউর রহমান (রাজনীতিবিদ): সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযোদ্ধা
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Alm.maruf (আলোচনা | অবদান)
এইটি ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ মসিউর রহমানের পেজ
(কোনও পার্থক্য নেই)

১২:৩৭, ২২ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

আধুনিক ঝিনাইদহের স্থপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: মসিউর রহমান : তিনি ঝিনাইদহ জেলা তথা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের একজন বিচক্ষণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব , শিক্ষা অনুরাগী, কূটনীতিবীদ ও সমাজসেবক হিসেবে বিশিষ্টতা অর্জন করেছেন। একাত্তরের রণাঙ্গনের বীর সৈনিক মসিউর রহমান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় সংসদের ৪বার নির্বাচিত মাননীয় সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বি. এন. পি) জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি ঝিনাইদহ জেলার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে, ভৌত অবকাঠামো নির্মাণে, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মান উন্নয়নসহ সুস্থ রাজনীতির গতি ধারা বিনির্মাণে নিরলস সাধনায় আত্মনিমগ্ন আছেন।

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

মসিউর রহমান ইংরেজী ২৫ শে জুন ১৯৫৩ , বাংলা ১১ আষাঢ় ১৯৫৯ , রোজ বুধবার ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলা ০৮ নং চাঁদপুর ইউনিয়নের কন্যাদহ গ্রামে এক সংস্কৃতিময়, সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে  জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মো: মনিরউদ্দিন বিশ্বাস এবং মাতার নাম সুলতানা নেসা। মসিউর রহমানের বাল্য শিক্ষা শুরু হয়েছিল ইসলামী ও সাংস্কৃতিক পারিবারকি পরিম-লে মায়ের কাছে। প্রাতিষ্টানিক ভাবে তিনি নিজ গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিদ্যাচর্চা শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে ঝিনাইদহ নিউ একাডেমী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এবং স্বনামধন্য সরকারী কেশবচন্দ্র ( কে. সি. ) মহাবিদ্যালয়ে থেকে লেখাপড়া শেষ করেন।

রাজনৈতিক জীবন

ছাত্র অবস্থায় তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতি সাথে যুক্ত হন । পরবর্তী কালে জাতীয় রাজনীতির শুরুতে বাংলাদেশী জাতীয়বাদী চেতনার জনক বাংলাদেশের স্বধীনতার ঘোষক, জাতীয় ক্রান্তিকালের প্রধান সেনা নায়ক ও পরবর্তী সময়ে সফল রাষ্ট্র নায়ক মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের ১৯ দফার সাথে একাত্মতায় ঘোষণা করেন। এবং বি. এন, পির রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন আপোষহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ ও জাতী গঠনে এখনো পর্যন্ত সক্রিয় আছেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বি. এন. পি) একজন  দক্ষ সংগঠক ও দেশপ্রেমিক নেতা হিসেবে ঝিনাইদহ জেলা বি. এন পি. সভাপতি মনোনীত হন ।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সাহসী সৈনিক মো: মসিউর রহমান ১৯৭০ সালে জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত অবস্থায় গ্রেফতার হয়ে কয়েক মাস কারা বরণ করেন। ১৯৭১ সালে ৮ নং সেক্টরে হরিণাকুন্ডু থানা কমান্ডার হিসেবে তিনি মুক্তিযুদ্ধে শুরু করেন। তিনি ঝিনাইদহ, হরিণাকুন্ডু, শৈলকুপা, কুষ্টিয়া ও আলমডাঙ্গা থানার বিভিন্ন স্থানে সংগঠিত গেরিলা যুদ্ধে অংশ নিয়ে সাহসের সাথে যুদ্ধে করেন। দেশ স্বাধীন হবার পর জেলা মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র জমা নেবার  জন্যে ঝিনাইদহ আনসার ক্যাপে মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যবদ্ধ করেন সরকারী ভাবে মিলিশিয়া বাহিনী গঠন করেন। তিনি উক্ত ক্যাপের কমান্ডার নিযুক্ত হন। স্বাধীনতা পরবর্তী ঝিনাইদহে মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যবদ্ধ করে তিনি জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ গঠন করেন এবং উক্ত সংসদের দায়িত্ব পালন করেন। জেলা মুক্তিযোদ্ধা, কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য ও দাবি-দাওয়া আদায়ে আন্দোলন করার কারণে মো: মুসিউর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রথম গ্রেফতার ও কারাভোগ করনে। জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের দায়িত্ব পালন কালে মো: মসিউর রহমান অসংখ্য অবোহেলিত মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক ভাবে প্রতিষ্টিত করেন।       

মো: মসিউর রহমান  স্বাধীনতার পূর্ব কাল থেকে অদ্যাবধি অর্থাৎ সুদীর্ঘ চার দশক ধরে বাংলাদেশের গণ-মানুষের রাজনীতির সাথে জড়িত আছেন। তিনি নিজ ইউনিয়ের জনগণের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে ১৯৭৭-৮২ সাল পর্যন্ত প্রথমবার ০৮ নং চাঁদপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৮২-৮৭ সাল পর্যন্ত উক্ত ইউনিয়নে দ্বিতীয় বারের মত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৮৭ সালে স্বৈরাচারী এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার কারণে ক্ষমতাসীন শাসক গোষ্ঠী তাকে কারাবন্ধী করেন। এ সময় দীর্ঘ ৭ মাস কারারুদ্ধ ছিলেন। ১৯৮৭ সালের কারাগারে থেকে ইউ পি নির্বাচনে অংশ নেন এবং তৃতীয় বারের মত বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান পূর্ণঃ নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দলের প্রতিষ্ঠাতা ও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জাতীয় সংসদ -৮২, ঝিনাইদহ -২ আসনে বি. এন. পির দলীয় প্রার্থী হিসেবে তাকে মনোনয়ন দেন। ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদ-৮২, ঝিনাইদহ -২ আসন থেকে মোট চার জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ঝিনাদহের ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

সংসদ সদস্য থাকাবস্থায় বিরোধী দলীয় হুইপ সহ সংসদীয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় কমিটি , কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সহ জাতীয় সংসদের বিভিন্ন স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

সামাজিক উন্নয়ন কর্মকান্ড

তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বাংলাদেশ রেডক্রিসেট সোসাইটির জাতীয় পরিচালনা কমিটির নির্বাচিত সদস্য হিসাবে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন।

জনাব মসিউর  রহমান সংসদীয় কমিটির এবং রেডক্রিসেট সোসাইটির নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসাবে আমেরিকা , গ্রেট ব্রিটেন, ফ্রান্স , কানাডা, অস্টেলিয়া , দক্ষিণ আফ্রিকা , সুইজারল্যাড, নাবিবিয়া , ফিলিপাইসন, ভারত, সিঙ্গাপুর, থ্যাইল্যাড , সৌদিআরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিরিয়া, তুরুষ্ক, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, চীন, উত্তর কোরিয়া, হংকং সহ পৃথিবীর অসংখ্য দেশে সভা সেমিনারে অংশ গ্রহণ করে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

সাম্প্রদায়িক সপৃতি স্থাপনে বিশ্বাসী গণতান্ত্রিক মতাদর্শে  ও জাতীয়তাবাদী চেতনায় উজ্জীবিত মো: মসিউর রহমান রাজনীতি পূর্ণগঠনের পাশাপাশি ঝিনাইদহ ক্রীয়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ক্রীয়াঙ্গনকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শীর্ষের অবস্থানে নিয়ে যান। ঝিনাইদহের সকল দোকান ব্যবসায়ীকে ঐক্যবদ্ধ করে ঝিনাইদহ দেকান মালিক সমিতির সভাপতি হিসেবে সুখে ও দুঃখে ব্যবসায়ীদের পাশে থাকেন। ঝিনাইদহ বাস মালিকদের ঐক্যবদ্ধ করে বাস মালিক সমিতির সভাপতি হিসেবে সমিতিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেন। তিনি বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির ,বাংলাদেশ রেডক্রিসেট সোসাইটির , চক্ষু হাসপাতাল , হার্ট ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সেবা মূলক প্রতিষ্ঠানের আজীবন সদস্য। বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকাকালীন মসিউর রহমানের  ঐকান্তিক চেষ্টার ফলে বাংলাদেশের যেকোন জেলার তুলনায় ঝিনাইদহে ব্যাপক উন্নয়ন করেন। বর্তমানে ঝিনাইদহবাসী সর্বক্ষেত্রে তার উন্নয়নের সুফল গর্বের সাথে ভোগ করছে।

ব্যক্তিগত জীবন

ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি ৩ সন্তানের জনক।