১৯৭১ বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
১৫ নং লাইন:
| date = ২৫শে মার্চ, ১৪-১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১
| type = জাতি মির্মুল করা, [[গণহত্যা]]
| fatalities = ১,১১১<ref name=bp>{{বই উদ্ধৃতি |
| injuries =
| victims = <!-- or | victim = -->
২৭ নং লাইন:
== বুদ্ধিজীবীর সংজ্ঞা ==
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী যারা দৈহিক শ্রমের বদলে মানসিক শ্রম বা বুদ্ধিবৃত্তিক শ্রম দেন তারাই বুদ্ধিজীবী। বাংলা একাডেমী প্রকাশিত ''শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ'' গ্রন্থে বুদ্ধিজীবীদের যে সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে তা হলো:<ref name=kishor>{{বই উদ্ধৃতি|
<blockquote>বুদ্ধিজীবী অর্থ লেখক, বিজ্ঞানী, চিত্রশিল্পী, কন্ঠশিল্পী, সকল পর্যায়ের শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, রাজনীতিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, স্থপতি, ভাস্কর, সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারী, চলচ্চিত্র ও নাটকের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, সমাজসেবী ও সংস্কৃতিসেবী।</blockquote>
৩৩ নং লাইন:
== কারণ ==
[[চিত্র:K 0261A.jpg|thumb|যুদ্ধের পরপরই রায়েরবাজার বধ্যভূমি থেকে তোলা ছবিতে বুদ্ধিজীবীদের লাশ দেখা যাচ্ছে (সৌজন্যমূলক ছবি: [[রশীদ তালুকদার]], ১৯৭১)]]
[[পাকিস্তান]] নামক অগণতান্ত্রিক এবং অবৈজ্ঞানিক রাষ্ট্র গঠনের পর থেকেই [[বাঙালি|বাঙালিদের]] বা পূর্ব-পাকিস্তানীদের সাথে পশ্চিম-পাকিস্তানের রাষ্ট্র-যন্ত্র বৈষম্যমূলক আচরণ করতে থাকে। তারা [[বাঙালি জাতি|বাঙালিদের]] ভাষা ও সংস্কৃতির উপর আঘাত হানে। এরই ফলশ্রুতিতে বাঙালির মনে ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হতে থাকে এবং বাঙালিরা এই অবিচারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন শুরু করে। এ সকল আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকতেন সমাজের সর্বস্তরের বুদ্ধিজীবীরা। তারা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক-ভাবে বাঙালিদের বাঙালি জাতীয়তা-বোধে উদ্বুদ্ধ করতেন। তাদের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের ফলেই জনগণ ধীরে ধীরে নিজেদের দাবি ও অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠতে থাকে যা পরবর্তীতে তাদের রাজনৈতিক আন্দোলনের দিকে ধাবিত করে।<ref name= murder>{{বই উদ্ধৃতি|
<blockquote>এটা অবধারিত হয়, বুদ্ধিজীবীরাই জাগিয়ে রাখেন জাতির বিবেক, জাগিয়ে রাখেন তাদের রচনাবলীর মাধ্যমে, সাংবাদিকদের কলমের মাধ্যমে, গানের সুরে, শিক্ষালয়ে পাঠদানে, চিকিৎসা, প্রকৌশল, রাজনীতি ইত্যাদির মাধ্যমে জনগণের সান্নিধ্যে এসে। একটি জাতিকে নির্বীজ করে দেবার প্রথম উপায় বুদ্ধিজীবী শূন্য করে দেয়া। ২৫ মার্চ রাতে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল অতর্কিতে, তারপর ধীরে ধীরে, শেষে পরাজয় অনিবার্য জেনে ডিসেম্বর ১০ তারিখ হতে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে দ্রুতগতিতে।<ref>শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ</ref></blockquote>
৩৯ নং লাইন:
== হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ==
[[চিত্র:Rao Farman ali.jpg|thumb|180px|মেজর জেনারেল [[রাও ফরমান আলি]], পাকিস্তানী বাহিনীর পক্ষে বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী।]]
[[২৫ মার্চ]] রাতে [[অপারেশন সার্চলাইট|অপারেশন সার্চলাইটের]] পরিকল্পনার সাথে একসাথেই বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পাকিস্তানী সেনারা অপারেশন চলাকালীন সময়ে খুঁজে-খুঁজে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করতে থাকে।<ref>[http://www.state.gov/documents/organization/48049.pdf Telegram 978 From the Consulate General in Dacca to the Department of State, March 29, 1971, 1130Z]</ref> [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের]] অনেক শিক্ষককে ২৫শে মার্চের রাতেই হত্যা করা হয়।<ref name="roy02homage">Ajoy Roy, [http://www.mukto-mona.com/Articles/ajoy/martyr_intellectual.htm "Homage to my martyr colleagues"], 2002</ref> তবে, পরিকল্পিত হত্যার ব্যাপক অংশটি ঘটে যুদ্ধ শেষ হবার মাত্র কয়েকদিন আগে। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী এবং তাদের প্রশিক্ষিত আধা-সামরিক বাহিনী আল-বদর এবং আল-শামস বাহিনী একটি তালিকা তৈরি করে, যেখানে এই সব স্বাধীনতাকামী বুদ্ধিজীবীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।<ref name="askari05star">Dr. Rashid Askari, [http://www.thedailystar.net/2005/12/14/d51214020321.htm "Our martyerd intellectuals"], editorial, the Daily Star, December 14, 2005</ref> ধারণা করা হয় পাকিস্তানী বাহিনীর পক্ষে এ কাজের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল মেজর জেনারেল [[রাও ফরমান আলি]]।<ref name=bangla>দৈনিক বাংলা, ২৩ ডিসেম্বর ১৯৭১</ref> কারণ স্বাধীনতার পর ধ্বংসপ্রাপ্ত বঙ্গভবন থেকে তার স্বহস্তে লিখিত ডায়েরী পাওয়া যায় যাতে অনেক নিহত ও জীবিত বুদ্ধিজীবীর নাম পাওয়া যায়।<ref name=pakistani>{{বই উদ্ধৃতি|
এছাড়া তার ডায়েরীতে ''হেইট'' ও ''ডুসপিক'' নামে দুজন [[মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র|মার্কিন]] নাগরিকের কথা পাওয়া যায়। এদের নামের পাশে ইউএসএ এবং ডিজিআইএস লেখা ছিল।<ref name=murder/> এর মধ্যে হেইট ১৯৫৩ সাল থেকে সামরিক [[গোয়েন্দা|গোয়েন্দা-বাহিনীতে]] যুক্ত ছিল এবং ডুসপিক ছিল [[সিআইএ]] এজেন্ট।<ref name=murder/> এ কারণে সন্দেহ করা হয়ে থাকে, পুরো ঘটনার পরিকল্পনায় সিআইএ'র ভূমিকা ছিল।<ref name="hasan01onneshon">{{বই উদ্ধৃতি|
== হত্যাকাণ্ডের বিবরণ ==
ডিসেম্বরের ৪ তারিখ হতে ঢাকায় নতুন করে কারফিউ জারি করা হয়। ডিসেম্বরের ১০ তারিখ হতে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের প্রস্তুতি নেয়া হতে থাকে। মূলত ১৪ ডিসেম্বর পরিকল্পনার মূল অংশ বাস্তবায়ন হয়। অধ্যাপক, সাংবাদিক, শিল্পী, প্রকৌশলী, লেখক-সহ চিহ্নিত বুদ্ধিজীবীদের পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং তাদের দোসরেরা জোরপূর্বক অপহরণ করে নিয়ে যায়। সেদিন প্রায় ২০০ জনের মত বুদ্ধিজীবীদের তাদের বাসা হতে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের চোখে কাপড় বেঁধে [[মিরপুর]], [[মোহাম্মদপুর]], [[নাখালপাড়া]], [[রাজারবাগ]]সহ অন্যান্য আরো অনেক স্থানে অবস্থিত নির্যাতন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের উপর বীভৎস নির্যাতন চালানো হয়। পরে তাদের নৃশংসভাবে [[রায়ের বাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ|রায়েরবাজার]] এবং মিরপুর বধ্যভূমিতে হত্যা করে ফেলে রাখা হয়।<ref name="nyt12-19-1971">{{সংবাদ উদ্ধৃতি
| প্রথমাংশ =
|
| লেখক-সংযোগ =
|
| coauthors =
|
|
| বিন্যাস =
|
| প্রকাশক =
|
|
| পাতাসমূহ =
|
|
|
|
| <blockquote> At least 125 persons, believed to be physicians, professors, writers and teachers were found murdered today in a field outside Dacca. All the victims' hands were tied behind their backs and they had been bayoneted, garroted or shot. They were among an estimated 300 Bengali intellectuals who had been seized by West Pakistani soldiers and locally recruited supporters.</blockquote>
| আর্কাইভের-ইউআরএল =
| আর্কাইভের-তারিখ =
}}
</ref><ref name="massacre-intel">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|
এমনকি, আত্মসমর্পণ ও যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির পরেও পাকিস্তানী সেনাবাহিনী এবং তার সহযোগীদের গোলাগুলির অভিযোগ পাওয়া যায়। এমনই একটি ঘটনায়, ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসের ৩০ তারিখ স্বনামধন্য চলচ্চিত্র-নির্মাতা [[জহির রায়হান]] প্রাণ হারান। এর পেছনে সশস্ত্র [[বিহারী|বিহারীদের]] হাত রয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়। নিহত বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে প্রতি বছর ডিসেম্বরের ১৪ তারিখ "[[শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস]]" হিসেবে পালন করা হয়।<ref name=bp>[http://www.bpedia.org/K_0261.php Killing of Intellectuals - Banglapedia]</ref><ref name="2005-12-14">Asadullah Khan ''[http://www.thedailystar.net/2005/12/14/d512141501115.htm The loss continues to haunt us]'' in The [[Daily Star (Bangladesh)]] 14 December 2005</ref>
== জড়িত ব্যক্তিবর্গ ==
পাকিস্তানী সামরিক জান্তার পক্ষে এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী। আর তাকে তালিকা প্রস্তুতিতে সহযোগীতা ও হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়নের পেছনে ছিল মূলত [[জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ|জামায়াতে ইসলামী]] কর্তৃক গঠিত কুখ্যাত [[আল বদর]] বাহিনী।<ref name=two>''সাপ্তাহিক ২০০০(বিজয় দিবস সংখ্যা)'', ১৮ ডিসেম্বর, ১৯৯৮, পৃ-৪৫</ref> বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রধান ঘাতক ছিল বদর বাহিনীর [[চৌধুরী মঈনুদ্দীন]] (অপারেশন ইন-চার্জ) ও [[আশরাফুজ্জামান খান]] (প্রধান জল্লাদ)। ১৬ ডিসেম্বরের পর আশরাফুজ্জামান খানের নাখালপাড়ার বাড়ি থেকে তার একটি ব্যক্তিগত ডায়েরী উদ্ধার করা হয়, যার দুটি পৃষ্ঠায় প্রায় ২০ জন বুদ্ধিজীবীর নাম ও বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের কোয়ার্টার নম্বরসহ লেখা ছিল। তার গাড়ির ড্রাইভার মফিজুদ্দিনের দেয়া সাক্ষ্য অনুযায়ী রায়ের বাজারের বিল ও মিরপুরের শিয়ালবাড়ি বদ্ধভূমি হতে বেশ কয়েকজন বুদ্ধিজীবীর গলিত লাশ পাওয়া যায় যাদের সে নিজ হাতে গুলি করে মেরেছিল।<ref name=times>[http://www.thebengalitimes.ca/details.php?news=&val=551&pub_no=11&menu_id=2 www.thebengalitimes.ca]</ref> আর চৌধুরী মঈনুদ্দীন ৭১ সালে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিল। সে অবজারভার ভবন হতে বুদ্ধিজীবীদের নাম ঠিকানা রাও ফরমান আলী ও ব্রিগেডিয়ার বশীর আহমেদকে পৌঁছে দিত।<ref name=two/> এছাড়া আরো ছিলেন [[এ বি এম খালেক মজুমদার]] (শহীদুল্লাহ কায়সারের হত্যাকারী), [[মাওলানা আবদুল মান্নান]] (ডাঃ আলীম চৌধুরীর হত্যাকারী)<ref name=panna>{{বই উদ্ধৃতি|
== হত্যার পরিসংখ্যান ==
৩৩৬ নং লাইন:
== আরো পড়ুন ==
* {{বই উদ্ধৃতি|
* {{বই উদ্ধৃতি|
* {{বই উদ্ধৃতি |
== বহিঃসংযোগ ==
|