ইসলাম শিক্ষা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
২০ নং লাইন:
=== ধর্মতত্ত্ব ===
{{মূল নিবন্ধ|ইসলামী ধর্মতত্ত্ব|কালাম}}
কালাম হল ইসলামের একমাত্র ধর্মীয় বিজ্ঞান। আরবিতে এর অর্থ হল আলোচনা এবং দ্বন্দ্ববাদ মাধ্যমে ধর্মতত্ত্ব নীতিমালার সচেষ্ট ইসলামী ঐতিহ্যকে বোঝায়। কালাম বিষয়ের পণ্ডিতদের মুতাকালিম বলা হয়। {{তথ্যসূত্র প্রয়োজন}}
 
ইসলাম ধর্মের মূল ধর্মবিশ্বাসমতে, একজন ব্যক্তিকে ইসলামে প্রবেশ করতে হলে কিছু মৌলিক বিষয়াদির প্রতি তাঁকে নিঃশর্ত বিশ্বাস স্থাপন করতে হয়। এ সকল বিষয় দ্বিধাহীন চিত্তে অন্তরে ধারণ ও মুখে স্বীকার করার মাধ্যমেই ব্যক্তি ইসলামে দীক্ষিত হতে পারেন এবং তাঁকে 'মুসলিম' নামে অভিহিত করা যায়। এ সকল বিশ্বাসকে ইসলামি পরিভাষায় 'আকাইদ' (বিশ্বাসমালা) বলা হয়। 'আকাইদ' একটি আরবি শব্দ, যা বহুবচনের রূপ। একবচনে শব্দটির রূপ দাঁড়ায় 'আকিদাহ' বা 'আকিদা'। ইসলাম ধর্ম শিক্ষা শাস্ত্রে একজন ব্যক্তিকে প্রাথমিক ও মুখ্যভাবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আকিদা বিষয়ক অধ্যায়সমূহের পাঠ দেয়া হয়ে থাকে।
 
নিতান্তই ইসলাম ধর্ম বিষয় পাঠ্যসূচীর মধ্যে ঈমান, তাওহীদ, ইসলামের পঞ্চস্তম্ভ, কুরআন শিক্ষা, হাদিস শিক্ষা, ফিকহ, উসূলে ফিকহ, আখলাক প্রভৃতি বিষয় মুখ্য।
২৮ নং লাইন:
'''ঈমান'''
 
ইসলাম শিক্ষা শাস্ত্রে প্রাথমিকভাবে একজন ব্যক্তির মুসলিম হয়ে ওঠার জন্য যেসকল বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করা জরুরি, সে সব বিষয়ের উপর একটি সম্যকপাঠ উপস্থাপন করা হয়ে থাকে। নির্দিষ্ট কতিপয় আধ্যাত্নিক বিষয়ের উপর প্র্ত্যয় স্থাপন করাকে ইসলামি পরিভাষায় 'ঈমান' (বানান ভেদে 'ইমান' ) বলা হয়ে থাকে। নির্দিষ্ট এসব বিষয়ের উপর ঈমান না থাকলে একজন ব্যক্তি কোন ক্রমেই 'মুসলিম' নামে অভিহিত হতে পারেন না। আধ্যাত্নিক এসব বিষয়ের তালিকা অত্যন্ত দীর্ঘ। তবে, মৌলিক ও প্রাথমিকভাবে ছয়টি বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা ইসলামে প্রবেশের জন্য জরুরিঃ [[আল্লাহ]], [[ফিরিশতা]], [[আসমানী কিতাব|আসমানি কিতাব]], [[নবী]]-[[রাসূল]], [[পরকালবিদ্যা|পরকাল]], [[তকদীর|ভাগ্য]]।
 
==== তাওহীদ ====
'তাওহীদ' আরবি শব্দ। এর অর্থ 'একত্ববাদ'। ইসলামধর্মে বিশ্বাস করা হয়, এই সুবিশাল বিশ্বজগতের একজন এবং কেবল মাত্র একজন স্রষ্টা বা প্রভু আছেন; তাই জগতের সমস্ত আরাধনা ও উপাসনার একমাত্র অধিকারী সেই একমাত্র মহান সত্তা; যিনি গুণে-মানে ও মর্যাদায় এক ও অনন্য; আর সেই মহীয়ান একমাত্র প্রভু হচ্ছেন আল্লাহ তাআলা। এই বিশ্বাসকেই ইসলাম ধর্মে '[[তাওহিদ|তাওহীদ]]' নামে অভিহিত করা হয়। ইসলাম ধর্মীয় বিশ্বাস মোতাবেক, ইসলাম ধর্মের সমস্ত বিশ্বাস ও কর্মকাণ্ডের মূল ভিত্তি এই তাওহীদ। তাওহীদ ঈমানের মূল ভিত্তি। ইসলামের সকল ধর্মীয় ও জনকল্যাণমূলক কার্যাবলি তাওহীদকে ঘিরে আবর্তিত হয়। স্বভাবতই, ইসলাম শিক্ষা শাস্ত্রে তাওহীদ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে অধীত হয়।
 
==== ঈমান পরিপন্থী বিশ্বাস ====
তাওহীদ ও ঈমানের মূল বিশ্বাসমালার সাথে সাংঘর্ষিক বিশ্বাস/প্রত্যয় সমূহকে ঈমান পরিপন্থী বা ক্ষেত্রবিশেষে ঈমান বিধ্বংসী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কোন মুসলিম ব্যক্তির মধ্যে এ ধরনের বিশ্বাস লালিত হতে দেখা গেলে বা এ ধরনের বিশ্বাস তাড়িত কোন কর্মকাণ্ড সংঘটিত হতে দেখলে তা ব্যক্তির বিশ্বাসের দুর্বলতা ও ঈমানের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে বর্ণনা করা হয়। এ ধরনের বিশ্বাস ব্যক্তিকে ইসলাম থেকে বহিষ্কৃত করে দিতে পারে। মুসলিম শিক্ষার হাতে খড়িতে তাই ইসলামি বিশ্বাসের পাশাপাশি এমন সব বিশ্বাসও পড়ানো হয়ে থাকে যা ব্যক্তিকে ইসলাম থেকে বিচ্যতু করতে পারে। এসব বিশ্বাসকে ইসলামে 'গুনাহে কবীরাহ' বা 'গুরুতর পাপ' বলে অভিহিত করা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ কুফর, শিরক, নিফাক, বিদআহ ইত্যাদি।
 
=== কুরআন শিক্ষা ===
ইসলামের যাবতীয় বিশ্বাস, কর্ম ও আইনের ভিত্তি কুরআন। ইসলাম ধর্মমতে, প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তিকে কুরআনের যৎসামান্য অংশ হলেও আত্নস্থ করতে হয় এবং প্রত্যহ অবশ্যপালনার্হ পঞ্চোপাসনায় তাঁকে কুরআন থেকে বাধ্যতামূলকভাবে কিছু অংশ আবৃত্তি করতে হয়। তাই, ইসলাম শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ কুরআন শিক্ষা করা।
 
আরবিতে এটি 'তালিমুল কুরআন' নামে পরিচিত। কুরআনকে ইসলামি পরিভাষায় 'কালাম'ও বলা হয়। তাই, কুরআন শিক্ষার অংশকে 'ইলমুল কালাম' (শাস্ত্রীয় বিদ্যা) বলেও অভিহিত করা হয়। তালিমুল কুরআন বা কুরআন শিক্ষা ধাপটি বিভিন্ন ভাবে অধ্যয়ন করা হয়ে থাকে। যেমনঃ
 
১। মশক বা বিশুদ্ধভাবে কুরআন পড়া
 
২। হিফজ বা কুরআন আয়ত্তকরণ
 
৩। নাযিরা তিলাওয়াত বা ধারাবাহিকভাবে বিশুদ্ধরূপে কুরআন পাঠ
 
৪। তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ
 
৫। বালাগাত-মানতিক বা কুরআনের অলংকারশাস্ত্র অধ্যয়ন ইত্যাদি।
 
==== তাজভীদ ====
পবিত্র কুরআন বিশুদ্ধরূপে সুন্দর ও সুললিত কণ্ঠে আবৃত্তির জন্য প্রস্তুতকৃত শাস্ত্রের নাম তাজভীদ শাস্ত্র। 'তাজভীদ' আরবি শব্দ। এটি একটি ক্রিয়া বিশেষ্য। এর অর্থঃ সুন্দর করা, অলংকৃত করা, সুশোভন করা, আভরণ ইত্যাদি।
 
মূলত কুরআনের শব্দ ও বাক্যগুলোকে সঠিকভাবে বিশুদ্ধরূপে সুন্দর করে উচ্চারণ ও আবৃত্তি করার শাস্ত্রকেই তাজভীদ শাস্ত্র বলে। আরবি ভাষার ধ্বনিমালার সঠিক উচ্চারণস্থল, সমোচ্চারিত বা প্রায় সমোচ্চারিত ধ্বনির স্বকীয়তা ব্যাখ্যা, স্বরধ্বনি ও ব্যাঞ্জনধ্বনির প্রকরণ, স্বরচিহ্ন, হ্রস্বস্বর-দীর্ঘস্বর, যতি প্রকরণ, আরবি লিপিমালা, অলংকার প্রকরণ প্রভৃতির পাঠই তাজভীদ শাস্ত্রের মূল আলোচ্যসূচী। তাজভীদ শাস্ত্রের মাধ্যমে কুরআনের পাঠ বিকৃতির হাত থেকে রক্ষা পায়। তাজভীদ শাস্ত্রে বিশারদ ব্যক্তিকে মুজাওউয়িদ বলা হয়।
 
==== তাফসীর ====
ইসলাম শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ তাফসীর। কুরআনের আয়াতের সরল তর্জমা, আয়াতের প্রেক্ষাপট, আয়াতের বৈয়াকরণিক বিশ্লেষণ, আয়াতের মর্মার্থ ব্যাখ্যা ইত্যাদিকে 'তাফসীরুল কুরআন' বা শুধু 'তাফসীর' বলা হয়। যিনি তাফসীর শাস্ত্রে বিশারদ, তাঁকে 'মুফাসসির' বলা হয়। উল্লেখ্য, এ যাবৎ আরবিসহ বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় কুরআনে শত শত তাফসীর বা ব্যাখ্যাগ্রন্থ রচিত হয়েছে।
 
=== হাদিস শিক্ষা ===
ইসলামের দ্বিতীয় উৎস হাদিস। কুরআনের পরেই এ শাস্ত্রের অবস্থান। হাদিস শাস্ত্রের রয়েছে সূদীর্ঘ পাঠক্রম। ইসলামের সর্বজনীন সংস্করণে এবং ধ্রুপদী ধারার ইসলাম বিশারদগণের মতে, হাদিস শিক্ষা ব্যতিত ইসলাম শিক্ষা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তবে, উদারপন্থী ইসলামের কিছু কিছু চিন্তাবিদ হাদিসের প্রামাণ্যতা বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এতদসত্ত্বেও, হাদিস শিক্ষা ইসলাম শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষদ হিসেবে গণ্য। হাদিস শাস্ত্রে পারদর্শী ব্যক্তিকে 'মুহাদ্দিস' বলা হয়।
 
ইসলাম শিক্ষা শাস্ত্রে হাদিসের উপর শিক্ষাদানকে 'দারসুল হাদিস' (হাদিসের পাঠ) বলা হয়। হাদিসের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণমূলক অংশটি 'তাশরীহুল হাদিস' বা 'শরাহ' নামে পরিচিত।
 
=== আধ্যাত্মিকতা ===
৮৩ নং লাইন:
 
=== বিজ্ঞান ===
ইসলাম শিক্ষার 'পার্থিব বিদ্যা' বিষয়ক অংশের একটি ঐচ্ছিক পাঠ বিজ্ঞান শিক্ষা। মূলত, আধুনিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন তত্ত্ব ও তথ্যের সাথে কুরআন বা হাদিসের যে অংশের সামঞ্জস্য থাকে, সেটিই ইসলাম শিক্ষা শাস্ত্রের বিজ্ঞান শিক্ষা অংশের পাঠ্যক্রম। এছাড়া, ভৌত ও জীববিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় মুসলিমদের অবদান নিয়ে বিশদ আলোচনাই এর মূল প্রতিপাদ্য।
 
ইবনে সীনা, ইবনে ফিরনাস, ইবনে নাফিস, মুসা আল-খাওয়ারিজমী, জাবির বিন হাইয়ান, আল-বিরুনী, আল-তুসী, আল-হ্যাজেন সহ প্রমুখ মুসলিম বিজ্ঞানীর আবিষ্কৃত বিভিন্ন তত্ত্ব, তথ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা পেশ করা হয় বিজ্ঞান শাস্ত্রে।
 
=== সাহিত্য ===