শিখধর্ম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
45.64.139.42 (আলাপ)-এর সম্পাদিত 3068184 নম্বর সংশোধনটি বাতিল করা হয়েছে ট্যাগ: পূর্বাবস্থায় ফেরত |
|||
১ নং লাইন:
{{Sikhism sidebar}}
'''শিখধর্ম''' ({{IPAc-en|ˈ|s|ɪ|k|ɨ|z|əm}}; {{lang-pa|ਸਿੱਖੀ}}, ''{{IAST|sikkhī}}'',I{{#tag:ref|''Sikhism''}} (স্থানীয় নাম ''শিখী''); [[সংস্কৃত]] ‘শিষ্য’ বা ‘শিক্ষা’ থেকে উৎপন্ন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|
শিখধর্মের অনুগামীদের ‘[[শিখ]]’ (অর্থাৎ, ‘শিষ্য’) বলা হয়। দেবিন্দর সিং চাহালের মতে, “‘শিখী’ শব্দটি (সাধরণভাবে [[গুরুমত]] নামে পরিচিত) থেকে আধুনিক ‘শিখধর্ম’ শব্দটি এসেছে।”<ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি|
সেওয়া সিং কলসি মতে, “শিখধর্মের কেন্দ্রীয় শিক্ষা হল ঈশ্বরের একত্বের তত্ত্বে বিশ্বাস।”<ref name="Singh Kalsi 2007 24">{{বই উদ্ধৃতি |
১০ম শিখ গুরু তেগ বাহাদুরের মতে, আদর্শ শিখের [[শক্তি]] (সমসাময়িক যুগে বসবাস করার ক্ষমতা) ও [[ভক্তি]] (আধ্যাত্মিক ধ্যানপূর্ণ গুণাবলি) দুইই থাকবে। শেষে ১০শ শিখ গুরু গোবিন্দ সিং ১৬৯৯ সালে [[আনন্দপুর সাহিব|আনন্দপুর সাহিবে]] [[খালসা|খালসার]] সন্ত সৈনিকদের দীক্ষিত করার ধারণাটি প্রচলন করেন।<ref name="Gandhi">{{বই উদ্ধৃতি |
==দর্শন ও শিক্ষা==
{{
[[File:GuruNanakFresco-Goindwal.jpg|thumb|left|গুরু নানক ছিলেন শিখধর্মের প্রতিষ্ঠাতা এবং এগারো জন শিখ গুরুর মধ্যে প্রথম গুরু। একাদশ শিখ গুরু হলেন গুরু গ্রন্থ সাহিব।]]
{{Quote box
| quote = "শিখ" শব্দের অর্থ যিনি শিখ ধর্ম ও বিশ্বাসকে গ্রহণ করেন এবং শ্রীগুরু গ্রন্থ সাহিবের শিক্ষা অনুসরণ করেন এবং ঘন চুল রাখেন... “আমি একান্তভাবে জানাচ্ছি এবং ঘোষণা করছি যে আমি একজন ‘কেশধারী’ শিখ এবং আমি শ্রীগুরু গ্রন্থ সাহিব ও দশ জন শিখ গুরুর শিক্ষায় বিশ্বাস ও সেই অনুসরণ করছি এবং আমার অন্য কোনো বিশ্বাস নেই।
| source = ''Definition of a Sikh and Sikh affirmation in the Delhi Gurdwara Act of 1971''.<ref>{{বই উদ্ধৃতি |
| width = 27%
| align = right
| style = padding:8px;
}}
শিখধর্মের উৎস হল গুরু নানক ও তাঁর উত্তরসূরিদের শিক্ষা। শিখ ধর্মবিশ্বাসের মূল কথাটি গুরু নানক এইভাবে জ্ঞাপন করেছেন: “সত্য অনুভবের চেয়ে বৃহত্তর কিছুই নেই। সত্যময় জীবন বৃহত্তর মাত্র।”<ref>{{বই উদ্ধৃতি|
শিখধর্ম একটি [[সর্বেশ্বরবাদ|সর্বেশ্বরবাদী]] (কোনো কোনো দিক থেকে)<ref>{{বই উদ্ধৃতি|
[[File:Amritsar-golden-temple-00.JPG|thumb|[[হরমন্দির সাহিব]] (লোকমুখে স্বর্ণমন্দির নামে পরিচিত) হল শিখদের একটি পবিত্র ধর্মস্থান।]]
=== সর্বব্যাপী সত্ত্বা - শিখধর্মে ‘ঈশ্বর’ ধারণা ===
{{
অন্যান্য ধর্মের তুলনায় শিখধর্মে ‘ঈশ্বর’ ধারণা একটু আলাদা রকমের। এটি ‘[[ইক ওঙ্কার]]’ বা ‘এক চিরন্তন’<ref name="Heartbeat">{{বই উদ্ধৃতি |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
নানক আরও লিখেছেন যে, ‘অকাল’কে বোঝা মানুষের অসাধ্য।<ref name="p252"/> তবে একই সময়ে এটি সম্পূর্ণ অজ্ঞাতও নয়। ‘অকাল’ সকল সৃষ্টিতে সর্বব্যাপী (‘[[সর্ব ব্যাপক]]’) এবং আধ্যাত্মিকভাবে যাঁরা জাগরিত হন তাঁরা তাঁকে সর্বত্র দেখতে পান। ঈশ্বরকে ‘অন্তর্দৃষ্টি’ বা ‘হৃদয়ে’র দ্বারা দেখার উপর নানক জোর দিয়েছেন। স্বর্গীয় জীবনে জাগরিত হওয়ার জন্য ভক্তেরা ধ্যান করবে – এমন বিধান ছিল তাঁর। গুরু নানক ধ্যানের মাধ্যমে সত্যের প্রকাশের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। বারংবার ধ্যানের মাধ্যমে ঈশ্বর ও মানুষের মধ্যে যোগাযোগের সেতুটি গড়ে ওঠে বলেই তিনি মনে করতেন।<ref name="p252"/>
৪৯ নং লাইন:
===মুক্তি===
গুরু নানকের শিক্ষা স্বর্গকে সর্বশেষ গন্তব্য বলে না। তাঁর মতে [[অকাল|অকালের]] সঙ্গে মিলনের ফলে মানুষ মুক্তি পায় বা ‘[[জীবন্মুক্ত]]’ হয়।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|
===জাগতিক মায়া===
[[মায়া (ভারতীয় দর্শন)|মায়া]] হল একটি সাময়িক কল্পনা বা ‘অসত্য’। এটি হল ঈশ্বর ও মোক্ষলাভের প্রচেষ্টার পথে অন্যতম প্রধান বিচ্যুতি। জাগতিক আকর্ষণ শুধুমাত্র কাল্পনিক সাময়িক দুঃখ ও তুষ্টিবিধান করতে পারে এবং তা ঈশ্বরের প্রতি ভক্তির পথ থেকে মানুষকে বিচ্যুত করে। নানক অবশ্য মায়াকে শুধুমাত্র জগতেরই অসত্যতা বলেননি, জগতের মূল্যেরও অসত্যতা বলেছেন। শিখধর্মে অহংকার, ক্রোধ, লোভ, মোহ ও কাম – এই পাঁচটি ‘[[পাঞ্জ চোর]]’ (পাঁচ চোর) হিসেবে পরিচিত। শিখরা মনে করেন, এগুলি মানুষকে বিচ্যুত করে এবং এগুলি ক্ষতিকারক। শিখদের মতে, জগতে একখন [[কলিযুগ]] অর্থাৎ অন্ধকারের যুগ চলছে। কারণ, জগত মায়াকে ভালবেসে মায়ার প্রতি আসক্ত হয়ে সত্যভ্রষ্ট হয়েছে।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|
===সময়াতীত সত্য===
[[File:Sikh.man.at.the.Golden.Temple.jpg|thumb|হরমন্দির সাহিবে একজন শিখ ধর্মাবলম্বী।]]
নানকের মতে, মানব জীবনের লক্ষ্য হল [[অকাল|অকালের]] (সময়াতীত ঈশ্বর) সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন। অহংকার এই যোগসূত্র স্থাপনের পথে বড়ো বাধা। গুরুর শিক্ষা গ্রহণ করে ''[[নাম জপো|নাম]]'' গ্রহণের (ঈশ্বরের পবিত্র নাম গ্রহণ)<ref name="Pruthi 2004 204">{{বই উদ্ধৃতি|
===সংগীত===
গুরুর স্তবগানকে শিখরা ‘[[গুরবাণী]]’ (গুরুর বাণী) বলেন। গুরুবাণী গাওয়াকে বলা হয় [[শবদ (স্তোত্র)|শবদ]] [[কীর্তন (শিখধর্ম)|কীর্তন]]। গুরু গ্রন্থ সাহিবের সমগ্র অংশই কাব্যের আকারে ছন্দে রচিত। শাস্ত্রীয় সংগীতের নির্দিষ্ট ৩১টি গুরু গ্রন্থ সাহিব গাওয়ার নিয়ম। তবে উক্ত গ্রন্থে উল্লিখিত সব কটি রাগের সঙ্গে পরিচিত এমন সংগীতজ্ঞ শিখদের মধ্যে কমই দেখা যায়। শবদ কীর্তন প্রথা চালু করেছিলেন গুরু নানক। ধ্যানের সময় কীর্তন শোনা এবং ভক্তিপূর্ণ চিত্তে সর্বোচ্চ সময়াতীত ঈশ্বরের মাহাত্ম্য কীর্তন করাকে তিনি ঈশ্বরের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সবচেয়ে কার্যকর উপায় মনে করতেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|
===স্মরণ===
শিখদের ধর্মানুশীলনের একটি উল্লেখযোগ্য পদ্ধতি হল ঈশ্বরের পবিত্র নাম<ref name="Pruthi 2004 204"/> স্মরণ।<ref name="NaamSimran">{{বই উদ্ধৃতি |
===সেবা ও কার্য===
সেবা ও কার্য ছাড়া ধ্যান নিষ্ফল।<ref name="ThinkRE">{{বই উদ্ধৃতি |
===বিচার ও ন্যায়===
শিখধর্ম ''ন্যায়'',<ref name="Justice" /> ''নিরামক ন্যায়'' ও ''দিব্য ন্যায়''কে<ref name="Justice">{{বই উদ্ধৃতি |
শিখধর্মে নারী ও পুরুষের অধিকার সমান। অন্যান্য ধর্মে যখন আধুনিককালে নারী পুরোহিতের জন্য দাবি উঠছে, শিখধর্মে প্রথম থেকেই ধর্মস্থানে মহিলারা প্রার্থনায় অগ্রণী ভূমিকা নিতেন।<ref name="Equality">{{বই উদ্ধৃতি |
===শিখ গুরু ও কর্তৃপক্ষ===
{{
[[File:Sikh Gurus with Bhai Bala and Bhai Mardana.jpg|thumb|upright|১৯শ শতাব্দীর একটি দুষ্প্রাপ্য [[তাঞ্জোর চিত্রকলা|তাঞ্জোর]] শৈলীর চিত্রে দশ শিখ গুরু এবং [[ভাই বালা]] ও [[ভাই মর্দানা]]।]]
[[সংস্কৃত ভাষা|সংস্কৃত ভাষায়]] ‘গুরু’ শব্দের অর্থ শিক্ষক, সহায়ক বা উপদেশদাতা। ১৪৬৯ থেকে ১৭০৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে দশ জন নির্দিষ্ট শিখ গুরু শিখধর্মের প্রথা ও দর্শন প্রতিষ্ঠা করেন। প্রত্যেক গুরু পূর্বতন শুরুর শিক্ষার সঙ্গে নতুন কথা যোগ করেন এবং সেগুলি কার্যে পরিণত করেন। এর ফলে শিখধর্মের জন্ম হয়। গুরু নানক ছিলেন শিখধর্মের প্রথম গুরু এবং তিনি তাঁর এক শিষ্যকে উত্তরাধিকারী নির্বাচিত করেছিলেন। [[গুরু গোবিন্দ সিং]] সর্বশেষ মানব গুরু। মৃত্যুর পূর্বে তিনি গুরু গ্রন্থ সাহিবকে শিখদের সর্বশেষ এবং চিরকালীন গুরু ঘোষণা করে যান।<ref name="granthfinalguru">{{বই উদ্ধৃতি|
গুরু নানকের উত্তরসূরি ছিলেন [[গুরু অঙ্গদ]]। তৃতীয় শিখ গুরু [[গুরু অমর দাস|গুরু অমর দাসের]] সময়কাল শিখধর্মের বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। গুরু নানকের শিক্ষা ছিল মোক্ষের অনুসন্ধান করা। গুরু অমর দাস জন্ম, বিবাহ ও মৃত্যু-সংক্রান্ত স্বতন্ত্র প্রথা অনুমোদন করে অনুগামীদের নিয়ে একটি পৃথম সম্প্রদায় গড়ে তোলেন। এছাড়া তিনি ''মানজি'' ([[ডায়োসিস|ডায়োসিসের]] সমতুল্য) নামে একটি যাজক ব্যবস্থাও স্থাপন করেন।<ref name="p254" />
গুরু অমর দাসের উত্তরসূরি ও জামাতা [[গুরু রাম দাস]] [[অমৃতসর]] শহরটি স্থাপন করেন। এই শহরেই [[হরমন্দির সাহিব]] অবস্থিত এবং এটি শিখদের কাছে পবিত্রতম শহর হিসেবে পরিচিত। [[গুরু অর্জন]] শিখদের সংগঠিত করতে শুরু করলে [[মুঘল সাম্রাজ্য|মুঘল]] কর্তৃপক্ষ তাঁকে বন্দী করে।<ref>{{বই উদ্ধৃতি |
[[File:Interior of Akal Takht.jpg|thumb|[[অকাল তখত|অকাল তখতের]] অভ্যন্তরভাগ।]]
শিখ গুরুরা শিখধর্মে এমন এক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন যাতে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিখ সম্প্রদায় প্রতিক্রিয়া জানাতে সক্ষম হয়। ষষ্ঠ শিখ গুরু [[গুরু হরগোবিন্দ]] [[অকাল তখত]] (''সময়াতীত ঈশ্বরের সিংহাসন'') ধারণার জন্ম দেন। হরমন্দির সাহিবের উল্টোদিকে অবস্থিত এই অকাল তখত হল শিখধর্মের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক সংস্থা। ''[[সরবত খালসা]]'' বা খালসা পন্থের একটি প্রতিনিধিসভা [[বৈশাখী]] বা [[হোলা মোহাল্লা]] উপলক্ষে অকাল তখতে ঐতিহাসিকভাবে সমবেত হন এবং সমগ্র শিখ জাতিকে প্রভাবিত করছে এমন কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন হয়, তখন সেই সম্পর্কে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ''[[গুরমতা]]'' (অর্থাৎ, ‘গুরুর ইচ্ছা’) হল সরবত খালসার আদেশনামা। এটি গুরু গ্রন্থ সাহিবের উপস্থিতিতে দেওয়া হয়। শিখধর্মের মৌলিক নীতিগুলিকে স্পর্শ করছে, এমন বিষয়েই গুরমতা আদেশনামা দেওয়া যায় এবং এটি সকল শিখ জাতির উপর প্রযোজ্য হয়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |
[[File:SikhGurus-LifeSpans-GurushipSpans.jpg|thumb|center|800px|alt=Graph showing Life Spans and Guruship Spans of Sikh Gurus|দশ জন শিখগুরুর আনুমানিক জীবৎকাল ও গুরুর পদে অধিষ্ঠানের সময়কাল]]
|