নবদ্বীপের '''লাল দই''' বা '''ক্ষীর দই''' বা '''চাক্কু দই''' বাংলার অন্যতম প্রসিদ্ধ মিষ্টান্ন। দই বা দধি মিষ্টান্ন পরিবারের কুলীন সদস্য। [[দই]] সাধারনত সাদা হলেও লাল দই একটি স্বতন্ত্র উপাদেয় মিষ্টান্ন। [[নদিয়া জেলা|নদিয়ার]] [[নবদ্বীপ|নবদ্বীপের]] লাল দই খুবই জনপ্রিয়।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|titleশিরোনাম=বিজয়ার সন্দেশেই প্রতিবাদ জিএসটি-র|urlইউআরএল=http://www.anandabazar.com/district/nadia-murshidabad/sweet-makers-protested-against-gst-by-making-sweets-1.683154|accessdateসংগ্রহের-তারিখ=22 নভেম্বর 2017|workকর্ম=আনন্দবাজার পত্রিকা|agencyএজেন্সি=অবিপি গ্রুপ|dateতারিখ=3 অক্টোবর 2017}}</ref> ১৯৩০ সালের দিকে নবদ্বীপের জনৈক কালিপদ মোদক, মতান্তরে কালী ঘোষ, এই দই প্রথম প্রস্তুত করেন।<ref name=abp18112017>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|last1শেষাংশ১=বন্দ্যোপাধ্যায়|first1প্রথমাংশ১=দেবাশিস|titleশিরোনাম=কেউ লাল কেউ দুধ-সাদা, দই দিয়ে যায় চেনা|urlইউআরএল=http://www.anandabazar.com/district/nadia-murshidabad/famous-curd-of-nabadwip-is-in-high-demand-among-locals-1.709126|accessdateসংগ্রহের-তারিখ=22 নভেম্বর 2017|workকর্ম=আনন্দবাজার পত্রিকা|agencyএজেন্সি=এবিপি গ্রুপ|dateতারিখ=18 নভেম্বর 2017}}</ref> ১৫০ বছরেরও প্রাচীন পাঁচুর মিষ্টির দোকান “ ''লক্ষ্মী নারায়ণ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার''” অন্যতম বিখ্যাত লাল দইয়ের দোকান। দই তৈরি করার পর দশদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।<ref name=tt22112017>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|titleশিরোনাম=Chef Suman Chakraborty sets out on a trip across Bengal in search of its hidden gems — Mishti!|urlইউআরএল=https://www.telegraphindia.com/lifestyle/chef-suman-chakraborty-sets-out-on-a-trip-across-bengal-in-search-of-its-180384|accessdateসংগ্রহের-তারিখ=22 নভেম্বর 2017|workকর্ম=দ্য টেলিগ্রাফ|agencyএজেন্সি=এবিপি গ্রুপ|dateতারিখ=22 নভেম্বর 2017}}</ref>
== ইতিহাস ==
দই লাল হয়ে ওঠার পিছনে একটি কিংবদন্তি আছে। নবদ্বীপের পুরাত্বাত্বিক পরিষদের কাছ থেকে জানা যায় লাল দই এর আবিষ্কর্তা নবদ্বীপ ফাঁসিতলার বাসিন্দা এবং মিষ্টান্ন প্রস্তুতকারক কালী ঘোষ। কালী ঘোষ এবং হরি ঘোষ দুই ভাই, তাঁরা মূলত দই এবং ঘোল তৈরি করতেন। অল্প আঁচে মোষের দুধে অল্প অল্প জল দিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে ফুটিয়ে দুধকে ঘন করতেন। অনেকক্ষণ জ্বাল দেওয়ায় সেই দুধের রঙ লালচে হয়ে যেত। তাই দিয়ে ঘোল তৈরি করতেন দুই ভাই। তাঁদের ঘোল এলাকায় লাল ঘোল নামে পরিচিত ছিল। দুধ ঘন হলেই সেটি প্রায় [[ক্ষীর|ক্ষীরের]] পর্যায়ে পৌঁছে যায়, তাই অনেক সময় '''ক্ষীর দই'''ও বলে।
এই দইয়ের আরেকটি নাম হল চাক্কু দই। এই নামের পিছনেও একটি কারণ আছে। দই কতটা ভালো সেটার বিচার হয় দই কতটা আঁটো হয়েছে তার উপর। সেটি পরীক্ষা করার জন্য দইয়ের হাঁড়ি উল্টে দিয়েও দেখা হয়। এমনকি হাঁড়ির ভিতরে চাকু বা ছুরি ঢুকিয়েও দেখা হয়। সেই চাকু থেকেই চাক্কু দইয়ের নাম।<ref name=abp16042013>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|titleশিরোনাম=হাঁড়ি উপুড় করলেও কিন্তু পড়বে না একফোঁটা দই|urlইউআরএল=http://archives.anandabazar.com/archive/1130416/16binodan1.html|accessdateসংগ্রহের-তারিখ=22 নভেম্বর 2017|workকর্ম=আনন্দবাজার পত্রিকা|agencyএজেন্সি=এবিপি গ্রুপ|dateতারিখ=16 এপ্রিল 2013}}</ref>
== প্রস্তুত প্রণালী ==
দই প্রস্তুত করা হয় দুটি ধাপে, একটি হল দুধ জ্বাল দেওয়া বা '''ফুট''' ও পরের ধাপে '''দই পাতা'''। দই প্রস্তুত করার জন্য [[গরু]] বা [[মোষ|মহিষে]]<nowiki/>র খাঁটি [[দুধ]] আবশ্যিক। এছাড়া জ্বালানিরও একটি বড় ভুমিকা আছে লাল দই প্রস্তুত করতে। কাঠ ও কয়লা দুই ধরনের জ্বালানি লাগে।<ref name=abp28042012>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|last1শেষাংশ১=কুণ্ডু|first1প্রথমাংশ১=অশোককুমার|titleশিরোনাম=লাল দইয়ের খ্যাতির সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছেন মনোরঞ্জন|urlইউআরএল=http://archives.anandabazar.com/archive/1120428/28south-matir.html|accessdateসংগ্রহের-তারিখ=22 নভেম্বর 2017|workকর্ম=আনন্দবাজার পত্রিকা|agencyএজেন্সি=এবিপি গ্রুপ|dateতারিখ=28 এপ্রিল 2012}}</ref> জ্বালের প্রথম ‘'''ফুট'''’ হতে সময় লাগবে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা এবং এটা করা হয় কাঠের জ্বালে।দুধে যতক্ষন না লাল রঙ ধরবে ততক্ষণ ‘''ফুট''’ চলতেই থাকবে। প্রায় তিন সের দুধ জ্বাল দিয়ে এক সের পৌঁছয়। এই ধাপে পরের পর্ব কয়লার আঁচে। সাদা দইয়ের ক্ষেত্রে দুধ ফুটিয়ে গাঢ় করা হয় যে সময়ে, তার চেয়ে বেশি সময় ফোটাতে হয় লাল দই তৈরি করার জন্যে, অর্থাৎ, লাল দইয়ের জন্য দুধের ঘনত্ব বেশি। দুধ তৈরি হয়ে গেলে মাপ মতো মাটির পাত্রে ওই দুধ ঢেলে নিভন্ত কয়লার উনানের চারপাশে ঘিরে বসিয়ে দেওয়া হয় নানা মাপের মাটির হাঁড়ি। গায়ে জড়িয়ে দেওয়া হয় চট। এই ধাপটি হলো '''দই পাতা'''। তা থেকেই হয় দই। বাজারের চাহিদা অনুসারে পাত্রের মাপও নানা রকমের। ১০০ গ্রামের মাটির খুঁড়ি(গ্লাস) থেকে পাঁচ কেজির হাঁড়িতে এই দই পাতা হয়ে থাকে। কোন বাইরের রঙ ছাড়াই ওই লালরঙে পৌঁছানোই নবদ্বীপের কারিগরদের মুন্সিয়ানা।<ref name=abp18112017/>