কালাপাহাড়: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Pratik89Roy (আলোচনা | অবদান)
Pratik89Roy (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন:
'''কালাপাহাড়'''(১৫৬৬-১৫৭৫) ছিলেন [[কররানী রাজবংশ]]র এক দুর্ধর্ষ সেনাপতি, তার আসল নাম রাজীবলোচন রায় মতান্তরে কালাচাঁদ রায় (বা রায় ভাদুড়ী), ডাকনাম রাজু।সেনাপতি। তার বাড়ি ছিল অধুনা [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] [[রাজশাহী]]<nowiki/>র বীরজাওন গ্রামে। তিনি বারেন্দ্র [[ব্রাহ্মণ]] পরিবারের সন্তান ছিলেন, পিতার নাম ছিল নঞানচাঁদ রায় (ইনি [[গৌড়]] বাদশাহের ফৌজদার ছিলেন)। তিনি বিদ্বান ও বুদ্ধিমান ছিলেন। নিয়মিত [[বিষ্ণু]] পূজা করতেন। [[সুলায়মান খান কররানী]] যখন গৌড়ের শাসক সেসময় তিনি গৌড়ের সেনানীতে যোগদান করেন এবং অতি অল্পকালের মধ্যে যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শিতার পরিচয় দিয়ে সুনজরে পতিত হন। ইতোমধ্যে [[সুলায়মান খান কররানী]]<nowiki/>র কন্যা দুলারি বিবি তাঁর প্রণয়ে পড়লে শর্ত সাপেক্ষে ইসলাম ধর্ম অনুসারে সুলায়মানের কন্যার পাণিগ্রহণ করেন এবং সুলায়মানের প্রধান সেনাপতির পদ অলংকৃত করেন, যদিও আপন ধর্ম পরিত্যাগ করেননি। কিন্তু মুসলমান কন্যা বিবাহের সুবাদে বর্ণবাদী হিন্দু সমাজ তাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে। আর সেই কারণে প্রতিশোধস্পৃহায় অন্ধ হয়ে তিনি [[ইসলাম ধর্ম]] গ্রহণ করে 'মহম্মদ ফর্ম্মুলি' নাম ধারণ করেন এবং প্রবল হিন্দু বিদ্বেষী হয়ে ওঠেন। আর তখন থেকেই '''কালাপাহাড়''' নামে পরিচিত হন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|title=আমার নাম কালাপাহাড়|last=বিশ্বনাথ ঘোষ|first=|publisher=সাহিত্যশ্রী|year=১৯৮৯|isbn=|location=কলকাতা|pages=২২}}</ref> ১৫৬৮ সালে তিনি পুরীর শ্রী শ্রী জগন্ননাথ ধাম আক্রমণ করেন এবং মন্দির ও বিগ্রহের প্রচুর ক্ষতিসাধন করেন।<ref name="ReferenceA">The Cult of Jagannātha By Kanhu Charan Mishra, Published 1971</ref><ref>Ahmed, ABM Shamsuddin. "Sulaiman Khan Karrani". Banglapedia. Bangladesh Asiatic Society. Retrieved 8 January 2014.</ref>
 
 
==ধর্মান্তর==
তার আসল নাম রাজীবলোচন রায় মতান্তরে কালাচাঁদ রায় (বা রায় ভাদুড়ী), ডাকনাম রাজু। তিনি বারেন্দ্র [[ব্রাহ্মণ]] পরিবারের সন্তান ছিলেন, পিতার নাম ছিল নঞানচাঁদ রায় (ইনি [[গৌড়]] বাদশাহের ফৌজদার ছিলেন)। নিয়মিত [[বিষ্ণু]] পূজা করতেন। নবাব [[সুলায়মান খান কররানী]]<nowiki/>র কন্যা দুলারি বিবি তাঁর প্রণয়ে পড়লে শর্ত সাপেক্ষে ইসলাম ধর্ম অনুসারে সুলায়মানের কন্যার পাণিগ্রহণ করেন এবং সুলায়মানের প্রধান সেনাপতির পদ অলংকৃত করেন, যদিও আপন ধর্ম পরিত্যাগ করেননি। কিন্তু মুসলমান কন্যা বিবাহের সুবাদে বর্ণবাদী হিন্দু সমাজ তাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে। আর সেই কারণে প্রতিশোধস্পৃহায় অন্ধ হয়ে তিনি [[ইসলাম ধর্ম]] গ্রহণ করে 'মহম্মদ ফর্ম্মুলি' নাম ধারণ করেন এবং প্রবল হিন্দু বিদ্বেষী হয়ে ওঠেন। আর তখন থেকেই '''কালাপাহাড়''' নামে পরিচিত হন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|title=আমার নাম কালাপাহাড়|last=বিশ্বনাথ ঘোষ|first=|publisher=সাহিত্যশ্রী|year=১৯৮৯|isbn=|location=কলকাতা|pages=২২}}</ref> ১৫৬৮ সালে তিনি পুরীর শ্রী শ্রী জগন্ননাথ ধাম আক্রমণ করেন এবং মন্দির ও বিগ্রহের প্রচুর ক্ষতিসাধন করেন।<ref name="ReferenceA">The Cult of Jagannātha By Kanhu Charan Mishra, Published 1971</ref><ref>Ahmed, ABM Shamsuddin. "Sulaiman Khan Karrani". Banglapedia. Bangladesh Asiatic Society. Retrieved 8 January 2014.</ref>
 
==কালাপাহাড়ের সমরাভিযান==
১৫৬৪-৬৫ খ্রিষ্টাব্দে [[আকবর]] বাদশাহের সঙ্গে সন্ধি স্থাপন করে [[উড়িষ্যা]]র রাজা হরিচন্দন মুকুন্দদেব গৌড় আক্রমণ করে গঙ্গার তীরে অবস্থিত সপ্তগ্রাম বন্দর অধিকার করে নেন। পরে আকবর যখন মেবারের শিশোদীয় রাজাদের সঙ্গে দীর্ঘকাল যুদ্ধে ব্যস্ত ছিলেন, সেই অবসরে সুলায়মান খান কররানী উড়িষ্যা আক্রমণ করেন। মুকুন্দদেব কোটসামা দুর্গে আশ্রয় গ্রহণ করলে সুলায়মান কালাপাহাড়ের অধীনে ময়ূরভঞ্জের অরণ্যসংকুল পথে উড়িষ্যা আক্রমণ করতে সৈন্য পাঠান। এইসময় মুকুন্দদেব তাঁরই এক বিদ্রোহী সামন্তের হাতে নিহত হন; এর ফলে ওই বিদ্রোহী সামন্ত এবং রঘুভঞ্জ ছোটরায় উড়িষ্যার সিংহাসন দখল করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু উভয়েই কালাপাহাড় কর্তৃক পরাজিত ও নিহত হয়েছিলেন।<ref>Journal Of Asiatic Society Bengal, Old series, Vol. LXIX. 1900, pt. I. p. 189</ref><br />কোচরাজ নরনারায়ণ, সুলায়মান খান কররানীর রাজত্বকালে [[গৌড়রাজ্য]] আক্রমণ করেছিলেন কিন্তু কালাপাহাড় একাধারে রাজা [[নরনারায়ণ|নরনারায়ণের]] ভাই এবং সেনাপতি শুক্লধ্বজকে পরাজিত করে আসামের তেজপুর পর্যন্ত অধিকার করে নিয়েছিলেন। এইসময়ে [[কামাখ্যা]] ও হাজোর প্রাচীন মন্দিরগুলিতে কালাপাহাড় নির্বিচারে ধ্বংসকাণ্ড চালিয়েছিলেন।<ref>Gait, History of Assam, pp. 52-53</ref> মোগল সম্রাট আকবরের বিরুদ্ধে কালাপাহাড় আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন। বঙ্গদেশ ও বিহারে আকবরের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ হয় কালাপাহাড় তাতে যোগদান করেন এবং অনুমান করা হয় তিনি এই যুদ্ধে নিহত হন (এপ্রিল ১৫৮৩ খ্রিষ্টাব্দ) ।