হাদিস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
103.91.130.223-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে Salim Khandoker-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
ট্যাগ: পুনর্বহাল
Added links
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল অ্যাপ সম্পাদনা
৫ নং লাইন:
মুহাদ্দিস : ‘মুহাদ্দিস’ আরবি শব্দ, বাংলা অর্থ বর্ণনাকারী বা বক্তা। হাদিসের পঠন-পাঠনকে যারা পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন, তাদেরকে পরিভাষায় مُحَدِّث ‘মুহাদ্দিস’ বলা হয়। ‘মুহাদ্দিস’ কর্তাবাচক বিশেষ্য, এ শব্দের আদেশসূচক ক্রিয়া দ্বারা আল্লাহ নবি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সম্বোধন করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে: وَأَمَّا بِنِعۡمَةِ رَبِّكَ فَحَدِّثۡ ١١ ﴾ [الضحى: ١١] “আর আপনার রবের অনুগ্রহ আপনি বর্ণনা করুন”। অর্থাৎ রিসালাত ও নবুওয়ত সবচেয়ে বড় নিয়ামত, অতএব যে রিসালাত দিয়ে আপনাকে প্রেরণ করা হয়েছে তা পৌঁছে দিন, আর যে নবুওয়ত আপনাকে দেওয়া হয়েছে তা বর্ণনা করুন। নবি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘মুহাদ্দিস’, কারণ তিনি কুরআন ও হাদিস বর্ণনা করে রিসালাত ও নবুওয়তের দায়িত্ব আঞ্জাম দেন। পরবর্তীতে শুধু হাদিস বর্ণনাকারীদের মুহাদ্দিস বলা হয়। এ পরিভাষা সাহাবিদের যুগেও ছিল, আব্দুল্লাহ ইব্ন ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলেন: وَقَدْ بَلَغَنِي أَنَّكَ مُحَدِّثٌ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي ذَلِكَ. “আমার নিকট পৌঁছেছে যে, আপনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অমুক বিষয়ে বর্ণনা করেন”? অতএব সনদে বিদ্যমান সকল রাবি মুহাদ্দিস। তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা, কর্ম, সমর্থন ও গুণগানকে যথাযথ সংরক্ষণ ও বর্ণনা করেন।
 
== হাদীস সংকলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।
== বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে হাদিস সংকলন ==
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবদ্দশায় সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর হাদীসসমূহ অত্যান্ত আগ্রহ সহকারে মুখস্ত করে স্মৃতিপটে রাখতেন। আবার অনেকে মহানবী (সাঃ) এর অনুমতি সাপেক্ষে কিছু কিছু হাদীস লিখে রাখতেন। এভাবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জীবদ্দশায় স্মৃতিপটে মুখস্ত করে রাখার সাথে সাথে কিছু হাদীস লিখিত আকারে লিপিবদ্ধ ছিল। হযরত আলী, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস, হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) প্রমুখ সাহাবীগণ কিছু কিছু হাদীস লিপিবদ্ধ করে রাখতেন। হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন “আবদুল্লাহ ইবনে আমর ব্যতীত আর কোন সাহাবী আমার অপেক্ষা অধিক হাদীস জানতেননা। কারন,তিনি হাদীস লিখে রাখতেন আর আমি লিখতামনা।”
মহানবী (সাঃ) এর জীবদ্দশায় ইসলামী রাষ্ট্রের প্রশাসনিক বহু কাজকর্ম লিখিতভাবে সম্পাদনা করা হতো। বিভিন্ন এলাকার শাসনকর্তা, সরকারী কর্মচারী এবং জনসাধারনের জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে লিখিত নির্দেশ প্রদান করা হতো। তাছাড়া রোম, পারস্য প্রভৃতি প্রতিবেশী দেশসমূহের সম্রাটদের সাথে পত্র বিনিময়, ইসলামের দাওয়াত এবং বিভিন্ন গোত্র ও সম্প্রদায়ের সাথে চুক্তি ও সন্ধি লিখিতভাবে সম্পাদন করা হতো। আর মহানবীর আদেশক্রমে যা লেখা হতো তা হাদীস বলে পরিচিত।
মহানবী (সাঃ) এর ওফাতের পর বিভিন্ন কারনে হাদীস সংকলনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। কুরআন মাজীদের সাথে হাদীস সংমিশ্রণ হওয়ার আশংকায় কুরআন পুর্ণ গ্রন্থাকারে লিপিবদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত হাদীস লিপিবদ্ধ করতে কউ সাহস পায়নি। হযরত আবূ বকর (রাঃ) এর আমলে কুরআন মজীদ গ্রন্থাকারে লিপিবদ্ধ হলে সাহাবীগণ হাদীস লিপিবদ্ধ করার ব্যপারে আর কোন বাধা আছে বলে অনুভব করেননি।
হিজরী প্রথম শতাব্দীর শেষভাগে সাহাবি ও তাবেয়ীগণ প্রয়োজন অনুসারে কিছু হাদীস লিপিবদ্ধ করেন।
অতঃপর উমাইয়া খলিফা উমর ইবনে আব্দুল আযীয (র) হাদীস সংগ্রহের জন্য মদীনার শাসনকর্তা আবু বকর বিন হাজম সহ মুসলিমবিশ্বের বিভিন্ন এলাকার শাসনকর্তা ও আলিমগণের কাছে একটি ফরমান জারী করেন যে, আপনারা মহানবী (সাঃ) হাদীসসমূহ সংগ্রহ করুন। কিন্তু সাবধান! মহানবী (সাঃ) এর হাদীস ব্যতীত অন্য কিছু গ্রহন করবেননা। আর আপনার নিজ নিজ এলাকায় মজলিস প্রতিষ্ঠা করে আনুষ্ঠানিকভাবে হাদীস শিক্ষা দিতে থাকুন। কেননা, জ্ঞান গোপন থাকলে তা একদিন বিলুপ্ত হয়ে যায়।
এই আদেশ জারীর পর মক্কা,মদীনা,সিরিয়া.ইরাক এবং অন্যান্য অন্ঞ্চলে হাদীস সংকলনের কাজ শুরু হয়। কথিত আছে যে, প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম ইবনে শিহাব যুহরী (রঃ) সর্বপ্রথম হাদীস সংগ্রহ এবং সংকলনে হাত দেন। কিন্তু তাঁর সংকলিত হাদীসগ্রন্থের বর্তমানে কোন সন্ধান পাওয়া যায়না। এরপর ইমাম ইবনে জুরাইজ (র) মক্কায়, ইমাম মালিক (র) মদীনায়, আবদুল্লাহ ইবনে ওয়াহাব (র) মিসরে, আব্দুর রাজ্জাক ইয়েমেনে, আবদুল্লাহ ইবনে মুবারক খুরাসানে, এবং সূফিয়ান সাওরী ও হাম্মাদ ইবনে সালমা বসরায় হাদীস সংকলনে আত্ননিয়োগ করেন। এ যুগের ইমামগণ কেবল দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় হাদীসগুলো ও স্থানীয় হাদীস শিক্ষাকেন্দ্রে প্রাপ্ত হাদীসসমূহ লিপিবদ্ধ করেছিলেন। তাঁদের কউই বিষয়বস্তু হিসেবে বিন্যাশ করে হাদীসসমূহ লিপিবদ্ধ করেননি।
এ যুগে লিখিত হাদীস গ্রন্থসমূহের মধ্যে ইমাম মালিকের “মুয়াত্তা” সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান প্রমান্য হাদীসগ্রন্থ। ইমাম মালিকের “মুয়াত্তা” গ্রন্থটি হাদীস সংকলনের ব্যপারে বিপূল-উৎসাহ উদ্দিপনার সৃষ্টি করেছিল। এটি হাদীসশাস্ত্র অধ্যায়নে মুসলিম মণিষীদের প্রধান আর্কষণে পরিনত হয়েছিল। এরই ফলশ্রূতিতে তৎকালীন মুসলিম বিশ্বে সর্বত্র হাদীসচর্চার কেন্দ্র স্হাপিত হতে থাকে। ইমাম শাফঈ (র) এর কিতাবুল “উম্ম” এবং ইমাম আহমাদ বিন হাম্বলের “মাসনাদ” গ্রন্থদ্বয় হাদীসের উপর গুরুত্বপুর্ণ গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত।
অতঃপর হিজরী তৃতীয় শতাব্দীতে বিভিন্ন মণিষী মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন অন্ঞ্চল থেকে প্রচুর হাদীস সংগ্রহ করেন। তন্মধ্যে বিখ্যাত হলেন ইমাম বুখারী (র), ইমাম মুসলিম (র), ইমাম আবূ দাউদ (র), ইমাম তিরমিজী (র), ইমাম নাসাঈ (র), এবং ইমাম ইবনে মাজাহ (র)। এদের সংকলিত হাদীস গ্রন্থগুলো হলো সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, সুনানে আবূ দাউদ, জামি’তিরমিযী, সূনানে নাসাঈ এবং সূনানে ইবনে মাজাহ্। এই ছয়খানা হাদীসগ্রন্থকে সন্মিলিতভাবে সিহাহ সিত্তাহ বা ছয়টি বিশুদ্ধ হাদীসগ্রন্থ বলা হয়।
উল্লিখিত আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা এ কথা র্নিদ্বিধায় বলতে পারি যে, মহানবী (সাঃ) এর জীবদ্দশায় যে হাদীস সমূহ প্রধানত সাহাবীদের স্মৃতিপটে মুখস্ত ছিল তা ধীরে ধীরে লিখিত রুপ নেয় এবং আব্বাসিয় যুগে হাদীস লিপিবদ্ধের কাজ পরিসমাপ্ত হয়। এটিই হলো হাদীস সংকলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।
তথ্য সুত্র- মিশকাতুল মাসাবীহ (দাখিল টেক্সবুক হাদীস শরীফ, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড)
== বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে হাদিস সংকলন ==
{{Muhammad}}
আল্লামা হাফেজ সাখাবি (রহ.) বলেন-