জুবাইর ইবনুল আওয়াম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
EditBangla (আলোচনা | অবদান) Ashiq Shawon (আলাপ)-এর সম্পাদিত 3113100 নম্বর সংশোধনটি বাতিল করা হয়েছে ট্যাগ: পূর্বাবস্থায় ফেরত |
EditBangla (আলোচনা | অবদান) ভাষাভঙ্গি, সম্প্রসারণ, বিষয়বস্তু যোগ, রচনাশৈলী |
||
১ নং লাইন:
{{Unreferenced|date=সেপ্টেম্বর ২০১৮}}
[[File:تخطيط اسم الزبير بن العوام.png|thumb|right]]
'''জুবাইর ইবনুল আওয়াম''' (আরবী: الزبير بن العوام)) ইসলামের প্রথম যুগের একজন মুসলমান যিনি ইসলামের রাসুল [[মুহাম্মাদ|মুহাম্মাদ (সা:)]]-এর একজন [[সাহাবী]] ছিলেন। তিনি [[আশারায়ে মুবাশশারা|আশারায়ে মুবাশশারার]] অন্তর্ভুক্ত,
== জন্ম ও বংশপরিচয় ==
জুবাইর ইবনুল আওয়ামের মূল নাম '''জুবাইর''' এবং ডাক নাম '''আবু আবদিল্লাহ'''। তার উপাধি ছিল '''হাওয়ারিয়্যু রাসূলিল্লাহ'''। যুবাইর হিজরতের ২৮ বছর পুর্বে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ''আওয়াম'' এবং মাতার নাম ''সাফিয়্যা বিনতে আবদুল মুত্তালিব''। তার মা ছিলেন মুহাম্মদের (সা) আপন ফুফু। সেই সুত্রে যুবাইর হলেন নবী মুহাম্মদের (সা) ফুফাতো ভাই। অন্যদিকে আবু বকর সিদ্দিকের মেয়ে আসমাকে (রাঃ) বিয়ে করার জন্য মুহাম্মদ (সা:) ছিলেন তার ভায়রা। অর্থাৎ আসমা (রাঃ) হলেন আয়িশা (রাঃ)-এর বোন। শৈশব থেকেই তিনি কঠোর জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন। যুবাইরের মা চাইতেন তার সন্তান যেন ছোট থেকেই দুঃসাহসী ও আত্মপ্রত্যয়ী মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ছোটবেলায় যুবাইর কুস্তি খেলতেন।
==ইসলাম গ্রহণ==
মাত্র ১৬ বছর বয়সে যুবাইর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার ইসলাম গ্রহণের পর গুজব ছড়ালো যে অমুসলিমরা নবী মুহাম্মদকে (সা) বন্দী অথবা হত্যা করে ফেলেছে। এটা শুনে উন্মুক্ত তরবারি নিয়ে প্রতিশোধ গ্রহনের জন্য যুবাইর সাথে সাথেই মুহাম্মদের (সা) বাড়িতে যান।
==হাবশায় হিজরত==
মক্কার অন্যান্য নও মুসলিমদের মত যুবাইর অনেক অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হন। তার চাচা সকল রকম চেষ্টা করেও তাকে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করাতে না পেরে দৈহিক নির্যাতন শুরু করেন। তাকে উত্তপ্ত পাথরের উপর চিৎ করে শুইয়ে দিয়ে মারধর করা হতো। তাদের অত্যাচারে অতীষ্ঠ হয়ে তিনি একটা মুসলিম দলের সাথে [[হাবশা|হাবশায়]] চলে যান। কিছুদিন সেখানে অবস্থানের পর পুনরায় মক্কায় প্রত্যাবর্তন করেন। ঐ সময় নবী মুহাম্মদ (সা) মদীনায় [[হিজরত]] করলে তিনিও [[
==যুদ্ধে অংশগ্রহণ==
যুবাইর একজন সাহসী ও শক্তিমান যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কাফেরদের আক্রমণের মুখে যুদ্ধে অংশগ্রহণের ব্যাপারে তিনি ছিলেন অনন্য। প্রতিটি যুদ্ধে তিনি
===বদর যুদ্ধে অবদান===
বদর যুদ্ধ ২ হিজরির ১৭ রমজান (১৭ মার্চ ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দ) মদিনার মুসলিম ও মক্কার কুরাইশদের মধ্যে সংঘটিত হয়। ইসলামের ইতিহাসে এটি প্রথম প্রধান যুদ্ধ। এতে জয়ের ফলে মুসলিমদের
বদর যুদ্ধে যুবাইর এত সাংঘাতিকভাবে যুদ্ধ করেছিলেন যে তার তলোয়ার ভোঁতা হয়ে গিয়েছিলো। আঘাতে আঘাতে তার পুরো শরীর বিক্ষত হয়ে গিয়েছিলো। একটি ক্ষত এতই বড় হয়েছিলো যে তা সারাজীবন গর্তের মত হয়েছিলো। যুবাইরের পুত্র উরওয়া বলেন, “আমরা সেই গর্তে আংগুলি ঢুকিয়ে খেলা করতাম।” বদর যুদ্ধে যুবাইর হলুদ রঙের [[পাগড়ী পরেছিলেন। এটা দেখে মুহাম্মদ (সা:) বলেন যে আজ [[ফেরশতা|ফেরশতারা]] এই পোশাকে এসে যুদ্ধ করেছে।
১৯ ⟶ ২০ নং লাইন:
===উহুদের যুদ্ধে অবদান===
উহুদের যুদ্ধ ৩ হিজরির ৭ শাওয়াল (২৩ মার্চ ৬২৫ খ্রিষ্টাব্দ) [[উহুদ পর্বত|উহুদ পর্বতের]] সংলগ্ন স্থানে সংঘটিত হয়। মদিনার মুসলিম ও মক্কার কুরাইশদের মধ্যে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। এই দুই পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন যথাক্রমে মুহাম্মাদ (সা) ও [[আবু সুফিয়ান]]। উহুদের যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর পরাজয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলো। তখন ১৪ জন সাহাবী মানব প্রাচীর তৈরী করে মুহাম্মদ (সা:) কে রক্ষা করেন। যুবাইর এই ১৪ জনের একজন ছিলেন।
=== খাইবারের যুদ্ধে অবদান===
খাইবারের যুদ্ধ ৬২৯ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন আরবের মদিনা নগরী থেকে ১৫০ কিলোমিটার (৯৩ মাইল) দুরে অবস্থিত খায়বার নামক মরুভূমিতে বসবাসরত ইহুদিগণের সাথে মুসলিমগণের সঙ্ঘটিত একটি যুদ্ধ। যুদ্ধে ইহুদি নেতা মুরাহহিব নিহত হলে তার ভাই অসীম বলবান ইয়াসির যুদ্ধের ময়দানে আসে এবং দ্বন্দযুদ্ধের আহবান জানায়। ইয়াসি বিশালাকার দেহের অধিকারী ছিলেন। যুবাইর তার দ্বন্দযুদ্ধের আহবান স্বীকার করলেন এবং যুদ্ধ শুরু করলেন। এতে যুবাইরের মা ভয় পেয়ে গেলেন এবং মুহাম্মদকে (সা) বললেন আজই কি তার সন্তানের মৃত্যু হবে। মুহাম্মদ (সা) তাকে অভয় দিয়ে বললেন আজ যুবাইর বিজয়ী হবে। অবশেষে তুমুল যুদ্ধের পর যুবাইর ইয়াসিরকে হত্যা করলেন।
===মক্কা বিজয়ে অবদান===
নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) খ্রিস্টীয় ৬৩০ অব্দে
মক্কা বিজয়ের দিন মুহাম্মদ (সা) মুসলিম বাহিনীকে ছোট ছোট অনেক দলে ভাগ করেন। সর্বশেষ ও ক্ষুদ্র দলে ছিলেন মুহাম্মদ (সা) নিজে। সেই দলের পতাকাবাহী ছিলেন যুবাই। মক্কা বিজয়ের পর মুহাম্মদ (সা) নিজ হাতে যুবাইরের মুখের ধুলোবালি ঝেড়ে দিয়েছিলেন।
===ইয়ারমুকের যুদ্ধ===
ইয়ারমুকের যুদ্ধ ৬৩৬ খ্রিষ্টাব্দে [[রাশিদুন খিলাফত]] ও [[বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য|বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের]] মধ্যে সংঘটিত হয়। ৬৩৬ খ্রিষ্টাব্দের আগস্টে [[ইয়ারমুক নদী|ইয়ারমুক নদীর]] তীরে ছয় দিনব্যপী এই যুদ্ধ সংঘটিত হযয়েছিল। বর্তমানে এই নদী [[সিরিয়া]], [[জর্ডান]] ও [[ইসরায়েল|ইসরায়েলের]] মধ্য দিয়ে প্রবহমান এবং তা গ্যালিলি সাগরের পূর্বেদিকে অবস্থিত। এই যুদ্ধে মুসলিমদের বিজয়ের ফলে সিরিয়ায় [[বাইজেন্টাইন শাসন|বাইজেন্টাইন শাসনের]] অবসান ঘটে। এই যুদ্ধে যুবাইর রোমান বাহিনীর মধ্যভাগে আক্রমণ করেন এবং সৈন্যদের ব্যুহ ভেদ করে অপর প্রান্তে চলে যান। কিন্তু অন্যান্য সহযোদ্ধারা তাকে অনুসরণ করতে ব্যর্থ হয় ও তিনি মারাত্মক ভাবে আহত হন। তবে তার দুঃসাহসী আক্রমণের ফলে রোমানরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।
== চরিত্র ==
তিনি অকুতোভয় চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। ইসলামের প্রসারের জন্য তিনি ছিলেন দৃঢ়চেতা ও নিবেদিতপ্রাণ। বিভিন্ন জিহাদে তার সাহসী ভূমিকার জন্য তিনি প্রশংসা লাভ করেছেন। তার মনে আল্লাহ-ভীতি ছিল সুগভীর। তিনি কুরআন-এর বাণী ও রাসুল-এর আদর্শ আনুগত্যের সঙ্গে অনুসরণ করতেন। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন দয়ালু ও আদর্শবান। মানুষের সঙ্গে তার ব্যবহার ছিলো নম্র ও সুন্দর। সমসাময়িক সমাজে তার মর্যাদা ছিল উচ্চ।
তিনি ব্যবসায় করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ব্যবসায়ক্রমে তিনি প্রভূত ধন-সম্পদের মালিক হয়েছিলেন। কিন্তু ইসলামের আদর্শানুসারে তিনি সকল কিছু দরিদ্র মুসলমানদের মধ্যে বিতরণ করে দিয়েছিলেন। তার কাছে ঋণ চেয়ে কাউকে শূন্য হাতে ফিরতে হতো না। মুজাহিদদের তিনি অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে সহায়তা করতেন।
ধনাঢ্য হয়েও তিনি অতি সাধারণভাবে জীবনযাপন করতেন। খুবই সাধারণ কাপড়চোপড় পরিধান করতেন।
তিনি সকলের আস্থাভাজন ছিলেন। মুসলমানরা তাদের মূল্যবান জিনিসপত্র তার কাছে জিম্মা রাখতো।
== রাসুলের নৈকট্য ==
জুবাইর ইবনুল আওয়াম ইসলামের রাসুল রাসুল মুহাম্মাদ (সা:) প্রিয় পাত্র ছিলেন। মুহাম্মদ (সা:) তাঁকে মুরীদ (হাওয়ারি) হিসেবে গণ্য করতেন। তিনি অকুতোভয়ে হজহাদে অংশ গ্রহণ করেছেন। বিদায় হজ্জ্বের সময় তিনি মুহাম্মদ (সা)-এর সফরসঙ্গী ছিলেন।
==মৃত্যু==
যুবাইর ৬৪ বছরের বিশাল এক কর্মময় জীবন লাভ করেছিলেন। চতুর্থ খলিফা
== আরও দেখুন ==
* [[সাহাবীদের তালিকা]]
৪০ ⟶ ৫৪ নং লাইন:
[[বিষয়শ্রেণী:সাহাবা]]
[[বিষয়শ্রেণী:৭ম শতাব্দীর মুসলিম ব্যক্তিত্ব]]
[[বিষয়শ্রেণী:৭ম শতাব্দীর আরব ব্যক্তিত্ব]]
|