জুবাইর ইবনুল আওয়াম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Ashiq Shawon (আলোচনা | অবদান)
Mmrsafy-এর করা 3112590 নং সংস্করণে প্রত্যাবর্তন করা হয়েছে। (টুইং)
ট্যাগ: পূর্বাবস্থায় ফেরত
EditBangla (আলোচনা | অবদান)
Ashiq Shawon (আলাপ)-এর সম্পাদিত 3113100 নম্বর সংশোধনটি বাতিল করা হয়েছে
ট্যাগ: পূর্বাবস্থায় ফেরত
১ নং লাইন:
[[File:تخطيط اسم الزبير بن العوام.png|thumb|right]]
'''জুবাইর ইবনুল আওয়াম''' ইসলামের প্রথম দিককারযুগের একজন [[সাহাবী]]।মুসলমান ইসলামীযিনি বর্ণনামতেইসলামের নবীরাসুল [[মুহাম্মদমুহাম্মাদ|মুহাম্মাদ (সা:)]]-এর যে ১০ জন সাহাবীকে জীবিত অবস্থায়ইএকজন [[বেহেশত|বেহেশতেরসাহাবী]] সুসংবাদ দিয়েছেন তাদের মধ্যে তিনি একজন। অর্থাৎছিলেন। তিনি [[আশারায়ে মুবাশশারা|আশারায়ে মুবাশশারার]] অন্তর্ভুক্ত।অন্তর্ভুক্ত, আধুনিকঅর্থাঃ ঐতিহাসিকরামুহাম্মদ অবশ্য(সা:) উম্মেযে আয়মান১০জন বারাকাহসাহাবীকে তাদের হযরতজীবদ্দশায় বেলাল[[বেহেশত|বেহেশত (রা.)লাভের]] কেওসুসংবাদ বেহেস্তেরদিয়েছেন সুসংবাদপ্রাপ্ততাদের বলেমধ্যে তিনি একজন। মনে করেন।
 
== জন্ম ও বংশপরিচয় ==
জুবাইর ইবনুল আওয়ামের মূল নাম '''জুবাইর''' এবং ডাক নাম '''আবু আবদিল্লাহ'''। তার উপাধি ছিল '''হাওয়ারিয়্যু রাসূলিল্লাহ'''। যুবাইর হিজরতের ২৮ বছর পুর্বে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ''আওয়াম'' এবং মাতার নাম ''সাফিয়্যা বিনতে আবদুল মুত্তালিব''। তার মা মুহাম্মদের (সা) আপন ফুফু। সেই সুত্রে যুবাইর হলেন নবী মুহাম্মদের (সা) ফুফাতো ভাই। অন্যদিকে আবু বকর সিদ্দিকের মেয়ে আসমাকে (রাঃ) বিয়ে করার জন্য মুহাম্মদ (সা:) ছিলেন তার ভায়রা। অর্থাৎ আসমা (রাঃ) হলেন আয়িশারআয়িশা (রাঃ)-এর বোন। শৈশব থেকেই তিনি কঠোর জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন। যুবাইরের মা চাইতেন তার সন্তান যেন ছোট থেকেই দুঃসাহসী ও আত্মপ্রত্যয়ী মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ছোটবেলায় যুবাইর কুস্তি খেলতেন।
 
==ইসলাম গ্রহণ==
মাত্র ১৬ বছর বয়সে যুবাইর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার ইসলাম গ্রহণের পর গুজব ছড়ালো যে অমুসলিমরা নবী মুহাম্মদকে (সা) বন্দী অথবা হত্যা করে ফেলেছে। এটা শুনে উন্মুক্ত তরবারি নিয়ে প্রতিশোধ গ্রহনের জন্য যুবাইর সাথে সাথেই মুহাম্মদের (সা) বাড়িতে যান। নবীর জীবনী লেখকদের মতে এটিই হলো প্রথম তলোয়ার, যা নিজেকে উৎসর্গ করার জন্য একজন বালক উন্মুক্ত করেছিলো।
==হাবশায় হিজরত==
মক্কার অন্যান্য নও মুসলিমদের মত যুবাইর অনেক অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হন। তার চাচা সকল রকম চেষ্টা করেও তাকে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করাতে না পেরে দৈহিক নির্যাতন শুরু করেন। তাকে উত্তপ্ত পাথরের উপর চিৎ করে শুইয়ে দিয়ে মারধর করা হতো। তাদের অত্যাচারে অতীষ্ঠ হয়ে তিনি একটা মুসলিম দলের সাথে [[হাবশা|হাবশায়]] চলে যান। কিছুদিন সেখানে থেকেঅবস্থানের আবারপর পুনরায় মক্কায় ফিরেপ্রত্যাবর্তন আসেন।করেন। ঐ সময় নবী মুহাম্মদ (সা) মদীনায় [[হিজরত]] করলে তিনিও [[মদীনায|মদীনায়]] চলেগমন যান।করেন।
 
==যুদ্ধে অংশগ্রহণ==
যুবাইর একজন সাহসী ও শক্তিমান যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কাফেরদের আক্রমণের মুখে যুদ্ধে অংশগ্রহনেরঅংশগ্রহণের ব্যাপারে তিনি ছিলেন অনন্য। প্রতিটি যুদ্ধে তিনি অত্যন্ত সাহস ও নিপুণতার পরিচয় দিয়েছেন।
===বদর যুদ্ধে অবদান===
বদর যুদ্ধ ২ হিজরির ১৭ রমজান (১৭ মার্চ ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দ) মদিনার মুসলিম ও মক্কার কুরাইশদের মধ্যে সংঘটিত হয়। ইসলামের ইতিহাসে এটি প্রথম প্রধান যুদ্ধ। এতে জয়ের ফলে মুসলিমদের ক্ষমতা পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পায়। বদর যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর তুলনায় অমুসলিম বাহিনীর সেনা সংখ্যা ছিলো বহুগুণ বেশি। বদর যুদ্ধে একজন অমুসলিম সৈন্য পাহাড়ের টিলায় দাঁড়িয়ে তাকে দ্বন্দ যুদ্ধের আহবান জানালে তিনি সাথে তাকে জাপ্টে ধরেন এবং গড়িয়ে নিচে পড়তে থাকেন। নবী মুহাম্মদ (সা) বলেন তাদের মধ্যে যে আগে ভূমিতে পড়বে সে নিহত হবে। সত্যিই তাই হলো। যুবাইর তাকে তলোয়ারের আঘাতে হত্যা করেন। এরপর তিনি উবাইদা ইবনে সাইদের মুখোমুখি হলেন। তার আপাদ-মস্তক শক্ত বর্ম দ্বারা ঢাকা ছিলো। যুবাইর তার চোখ বরাবর তীর নিক্ষেপ করলেন এবং অমুসলিম সৈন্যকে হত্যা করলেন। স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে তীরটি মুহাম্মদ (সা) নিজের কাছে রেখে দিলেন। মুহাম্মদের মৃত্যুর পর তীরটি বিভিন্ন খলিফার কাছে সংরক্ষিত ছিলো। তৃতীয় খলিফা উসমানের মৃত্যুর পর আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর তীরটি গ্রহণ করেন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তার কাছেই তীরটি ছিলো।
 
বদর যুদ্ধে যুবাইর এত সাংঘাতিকভাবে যুদ্ধ করেছিলেন যে তার তলোয়ার ভোঁতা হয়ে গিয়েছিলো। আঘাতে আঘাতে তার পুরো শরীর বিক্ষত হয়ে গিয়েছিলো। একটি ক্ষত এতই বড় হয়েছিলো যে তা সারাজীবন গর্তের মত হয়েছিলো। যুবাইরের পুত্র উরওয়া বলেন, “আমরা সেই গর্তে আংগুলি ঢুকিয়ে খেলা করতাম।” বদর যুদ্ধে যুবাইর হলুদ রঙের [[পাগড়ী পরেছিলেন। এটা দেখে মুহাম্মদ (সা:) বলেন যে আজ [[ফেরশতা|ফেরশতারা]] এই পোশাকে এসে যুদ্ধ করছে।করেছে।
 
===উহুদের যুদ্ধে অবদান===
উহুদের যুদ্ধ ৩ হিজরির ৭ শাওয়াল (২৩ মার্চ ৬২৫ খ্রিষ্টাব্দ) [[উহুদ পর্বত|উহুদ পর্বতের]] সংলগ্ন স্থানে সংঘটিত হয়। মদিনার মুসলিম ও মক্কার কুরাইশদের মধ্যে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। এই দুই পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন যথাক্রমে মুহাম্মাদ (সা) ও [[আবু সুফিয়ান।সুফিয়ান]]। উহুদের যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর পরাজয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলো। তখন ১৪ জন সাহাবী মানব প্রাচিরপ্রাচীর তৈরী করে মুহাম্মদকেমুহাম্মদ (সা:) কে রক্ষা করেন। যুবাইর তাদেরএই মধ্যে১৪ জনের একজন ছিলেন।
=== খাইবারের যুদ্ধে অবদান===
খাইবারের যুদ্ধ ৬২৯ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন আরবের মদিনা নগরী থেকে ১৫০ কিলোমিটার (৯৩ মামাইল) দুরে অবস্থিত খায়বার নামক মরুভূমিতে বসবাসরত ইহুদিগণের সাথে মুসলিমগণের সঙ্ঘটিত একটি যুদ্ধ। যুদ্ধে ইহুদি নেতা মুরাহহিব নিহত হলে তার ভাই অসীম বলবান ইয়াসির যুদ্ধের ময়দানে আসে এবং দ্বন্দযুদ্ধের আহবান জানায়। ইয়াসি বিশালাকার দেহের অধিকারী ছিলেন। যুবাইর তার দ্বন্দযুদ্ধের আহবান স্বীকার করলেন এবং যুদ্ধ শুরু করলেন। এতে যুবাইরের মা ভয় পেয়ে গেলেন এবং মুহাম্মদকে (সা) বললেন আজই কি তার সন্তানের মৃত্যু হবে। মুহাম্মদ (সা) তাকে অভয় দিয়ে বললেন আজ যুবাইর বিজয়ী হবে। অবশেষে তুমুল যুদ্ধের পর যুবাইর ইয়াসিরকে হত্যা করলেন।
===মক্কা বিজয়ে অবদান===
নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) খ্রিস্টীয় ৬৩০ অব্দে রক্তপাতহীনভাবে মক্কা নগরী দখল করেন। ইতিহাসে এই ঘটনা [[মক্কা বিজয়]] নামে খ্যাত। [[খাইবার বিজয়|খাইবার বিজয়ের]] পর মক্কা বিজয়ের প্রস্তুতি চলছিলো। এইসময় হাতিম বিন আবী বালতায়া মুসলিমদের সব খবর চিঠি লিখে শত্রুবাহিনীকে জানাতে মক্কায় একজন মহিলাকে প্রেরণ করলেন। এই ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে উক্ত মহিলাকে আটক করতে যে দলটি পাঠানো হয়েছিলো, যুবাইর ছিলেন সেই দলের একজন সদস্য।
 
মক্কা বিজয়ের দিন মুহাম্মদ (সা) মুসলিম বাহিনীকে ছোট ছোট অনেক দলে ভাগ করেন। সর্বশেষ ও ক্ষুদ্র দলে ছিলেন মুহাম্মদ (সা) নিজে। সেই দলের পতাকাবাহী ছিলেন যুবাই। মক্কা বিজয়ের পর মুহাম্মদ (সা) নিজ হাতে যুবাইরের মুখের ধুলোবালি ঝেড়ে দিয়েছিলেন।
 
বিদায় হজ্জ্বের সময় তিনি মুহাম্মদের (সা) সফরসঙ্গী ছিলেন।
 
===ইয়ারমুকের যুদ্ধ===
ইয়ারমুকের যুদ্ধ ৬৩৬ খ্রিষ্টাব্দে [[রাশিদুন খিলাফত]] ও [[বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য|বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের]] মধ্যে সংঘটিত হয়। ৬৩৬ খ্রিষ্টাব্দের আগস্টে [[ইয়ারমুক নদীরতীরেনদী|ইয়ারমুক নদীর]] তীরে ছয় ছয়দিনব্যপীদিনব্যপী এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়।হযয়েছিল। বর্তমানে এই নদী [[সিরিয়া]], [[জর্ডান]] ও [[ইসরায়েল|ইসরায়েলের]] মধ্য দিয়ে বয়ে গেছেপ্রবহমান এবং তা গ্যালিলি সাগরেরপূর্বেসাগরের পূর্বেদিকে অবস্থিত। এই যুদ্ধে মুসলিমদের বিজয়ের ফলে সিরিয়ায় [[বাইজেন্টাইন শাসন|বাইজেন্টাইন শাসনের]] অবসান ঘটে। এই যুদ্ধে যুবাইর রোমান বাহিনীর মধ্যভাগে আক্রমণ করেন এবং সৈন্যদের ব্যুহ ভেদ করে অপর প্রান্তে চলে যান। কিন্তু অন্যান্য যোদ্ধারাসহযোদ্ধারা তাকে অনুসরণ করতে ব্যর্থ হয় ও তিনি মারাত্মক ভাবে আহত হন। তবে তার দুঃসাহসী আক্রমনেরআক্রমণের ফলে রোমানরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।
 
==মৃত্যু==