পুরান ঢাকা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সংশোধন
EditBangla (আলোচনা | অবদান)
কিছু সম্পাদনা
৮ নং লাইন:
[[চিত্র:Remains of a Bridge near the Tantee Bazar, Dhaka (1814).jpg|thumb|220px|right|১৮১৪ সালে অঙ্কিত তাঁতি বাজারের একটি সেতু।]]
 
'''পুরনো ঢাকা''' বা '''পুরান ঢাকা''' [[ঢাকা]] মহানগরীর আদি ও অকৃত্রিম অঞ্চলটিকে বলা হয়। বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের সাধারণ বাঙালী সংস্কৃতি থেকে এখানকার সংস্কৃতি অনেকটাই ভিন্নতর। পুরান ঢাকা পূর্ব-পশ্চিমে সূত্রাপুর মিল ব্যারাক থেকে হাজারীবাগ ট্যানারি মোড় পর্যন্ত এবং দক্ষিণে ঢাকা সদর ঘাট থেকে নবাবপুর পর্যন্ত বিস্তৃত।
 
== ইতিহাস ==
৭০০ থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে পূর্ববঙ্গের ঢাকা নামক অঞ্চলটিতে [[বুড়িগঙ্গা]] নদীর তীর ঘেঁষে শহর গড়ে ওঠে। ঢাকার নামকরণের সঠিক ইতিহাস নিয়ে ব্যাপক মতভেদ রয়েছে। কথিত আছে যে, সেন বংশের [[রাজা বল্লাল সেন]] বুড়িগঙ্গা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভ্রমণকালে সন্নিহিত জঙ্গলে হিন্দু দেবী [[দুর্গা|দুর্গার]] একটি বিগ্রহ খুঁজে পান। দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধাস্বরূপ রাজা বল্লাল সেন ঐ এলাকায় একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। যেহেতু দেবীর বিগ্রহ ঢাকা বা গুপ্ত অবস্থায় খুঁজে পাওয়া গিয়েছিলো, তাই রাজা, মন্দিরের নাম রাখেন ঢাকেশ্বরী মন্দির। মন্দিরের নাম থেকেই কালক্রমে স্থানটির নাম ঢাকা হিসেবে গড়ে ওঠে।
আবার অনেক ঐতিহাসিকের মতে, [[মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর]] ১৬১০ খ্রিস্টাব্দে ঢাকাকে সুবাহ্ বাংলার (বর্তমান [[বাংলাদেশ]], ভারতের [[পশ্চিমবঙ্গ]], [[বিহার]], [[ঝাড়খণ্ড]] এবং [[উড়িষ্যা|উড়িষ্যার]] বেশকিছু অঞ্চল) রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেন; তখন [[সুবাদার ইসলাম খান]] আনন্দের বহিঃপ্রকাশস্বরূপ শহরে '[[ঢাক']] বাজানোর নির্দেশ দেন। এই ঢাক বাজানোর কাহিনী লোকমুখে কিংবদন্তির রূপ নেয় এবং তা থেকেই শহরের নাম ঢাকা‘ঢাকা’ হয়ে যায়। এখানে উল্লেখ্য যে, মুঘল সাম্রাজ্যের বেশ কিছু সময় ঢাকা সম্রাট জাহাঙ্গীরের প্রতি সম্মান জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর নামে পরিচিত ছিলো।
 
== প্রশাসন ==
পুরান ঢাকা ৮ টি৮টি মেট্রোপলিটন থানা এলাকা নিয়ে গঠিত। এগুলো হল -হলঃ [[হাজারিবাগ থানা|হাজারীবাগ]], [[লালবাগ]], [[চকবাজার]], [[বংশাল]], ঢাকা সদর বা [[কোতোয়ালী]], [[সূত্রাপুর থানা|সূত্রাপুর]], [[ওয়ারী]] ও [[গেন্ডারিয়া]]। এটি

পুরোনো 'ঢাকা [[ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন']] এর অন্তর্ভুক্ত একটি অঞ্চল। পুরান ঢাকা'র পশ্চিমে মোহাম্মদপুর, উত্তরে ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, শাহবাগ, রমনা, মতিঝিল ও সবুজবাগ, পূর্বে যাত্রাবাড়ী ও শ্যামপুর এবং দক্ষিণে কামরাঙ্গীরচর থানা ও কেরানীগঞ্জ উপজেলা অবস্থিত।
 
== যাতায়াত ==
পুরান ঢাকা'র সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় বাহন হলো রিকশা। এই প্রাচীন শহরটির রাস্তাগুলো খুব সরু হওয়াতে রিকশা এখানকার প্রধান বাহন হয়ে দাঁড়িয়েছে। পণ্য পরিবহনের জন্য মানুষ টানা চাকা গাড়ীও রয়েছে প্রচুর। সীমিতভাবে ঘোড়ার গাড়ী এখনো চালানো হয়ে থাকে। এছাড়া যান্ত্রিক বাহনগুলোর মধ্যে বাস, টেম্পো, সি.এন.জি. চালিত অটোরিকশা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অঞ্চল হওয়ায় মালপত্র আনা-নেয়ার জন্য গভীর রাতে পুরান ঢাকার সড়কগুলো ট্রাকের দখলে চলে যায়।
 
== অর্থনীতি ও বাণিজ্য ==
পুরান ঢাকা বাংলাদেশের প্রধানতম বাণিজ্যকেন্দ্র। এখানকার [[চকবাজার]] এলাকায় সব রকমের পণ্যসামগ্রীর পাইকারী বিপণন হয়।হয়ে থাকে। [[ঢাকা মহানগর|ঢাকা মহানগরীমহানগরীর]] এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলের শপিংবাজারগুলোর মলগুলোব্যবসায়ীরা এখান থেকেই তাদের বেশিরভাগ মালামাল ক্রয় করে।
মৌলভীবাজার হলো স্বল্প সময়ে পচনশীল নয়, এমন সব খাদ্যপণ্যের বৃহত্তম বিক্রয় অঞ্চল। কাওরানবাজার এর দোকানদারগণ এখান থেকে তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে নিয়ে যান।
চামড়া শিল্প হলো বাংলাদেশে তৃতীয় সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী শিল্প। বাংলাদেশের বৃহত্তম এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান চামড়া প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলটি পুরান ঢাকা'র হাজারীবাগ এলাকায় অবস্থিত। লালবাগের পোস্তা হলো দেশের অন্যতম কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ অঞ্চল।
ইসলামপুর হলো থান কাপড়ের বৃহত্তম বিপণন অঞ্চল। এছাড়া অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো হলো -: নয়াবাজার, মিটফোর্ড, সিদ্দিকবাজার, আলুবাজার, নবাবপুর, পাটুয়াটুলী, সদরঘাট, বংশাল ইত্যাদি।
এখানকার স্থানীয় অধিবাসীরা মূলত ব্যবসায়ী। বংশ পরম্পরায় তারা ব্যবসা করে আসছে। বহিরাগত অনেক লোক এখানে চাকুরী করে থাকে।