ইসলামি বর্ষপঞ্জি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Md.habib mh (আলোচনা | অবদান)
বিষয় বস্তু যোগ
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
Md.habib mh (আলোচনা | অবদান)
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
৭৭ নং লাইন:
তাই মুসলিম উম্মাহর জীবনে হিজরত একটি অতীব গুরুত্ববহ অধ্যায়। কেন না এই হিজরত থেকেই হিজরি সনের উদ্ভব হয়েছে।
 
হিজরি সনের গোড়ার কথা :
 
খলীফা হযরত উমর ফারুক রা. এর শাসনামলে ১৬ হিজরী সনে, প্রখ্যাত সাহাবী হজরত আবু মূসা আশআরী রা. ইরাক এবং কুফার গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। একদা হযরত আবু মুসা আশআরী রা. খলীফা উমর রা. এর কাছে এ মর্মে চিঠি লিখলেন যে, ‘আপনার পক্ষ থেকে পরামর্শ কিংবা নির্দেশ সম্বলিত যেসব চিঠি আমাদের নিকট পৌঁছে তাতে দিন, মাস, কাল, তারিখ ইত্যাদি না থাকায় কোন চিঠি কোন দিনে তা নিরুপণ করা আমাদের জন্য সম্ভব হয় না। এতে করে আমাদেরকে নির্দেশ কার্যকর করতে খুব কষ্ট করতে হয়। অনেক সময় আমরা বিব্রত বোধ করি চিঠির ধারাবাহিকতা না পেয়ে। হযরত আবু মুসা আশআরীর চিঠি পেয়ে হজরত উমর রা. এ মর্মে পরামর্শ সভার আহ্বান করেন যে, এখন থেকে একটি ইসলামী তারিখ প্রবর্তন করতে হবে। উক্ত পরামর্শ সভায় হযরত উসমান রা. হযরত আলী রা.সহ বিশিষ্ট অনেক সাহাবী উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত সকলের পরামর্শ ও মাতামতের ভিত্তিতে ঐ সভায় ওমর রা. সিদ্ধান্ত দেন ইসলামী সন প্রবর্তনের। তবে কোন মাস থেকে বর্ষের সূচনা করা হবে তা নিয়ে পরস্পরের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি হয়। কেউ মত পোষণ করে রাসূল সা. এর জন্মের মাস রবিউল আউয়াল থেকে বর্ষ শুরু। আবার কেউ কেউ মত পোষণ করেন রাসূল মা. এর ওফাতের মাস থেকে বর্ষ শুরু করা হোক। অন্যান্যের মতে হুজুর সা. এর হিজরতের মাস থেকে বর্ষ শুরু করা হোক।এভাবে বিভিন্ন মতামত আলোচিত হওয়ার পর হজরত উমর রা. বললেন, হুজুর সা. এর জন্মের মাস থেকে হিজরি সনের গণনা শুরু করা যাবে না। কারণ খ্রিস্টান সম্প্রদায় হযরত ঈসা আ. এর জন্মের মাস থেকেই খিস্ট্রাব্দের গণনা শুরু করেছিল। তাই রাসুলের জন্মের মাস থেকে সূচনা করা হলে খ্রিস্টানদের সাথে সাদৃশ্য হয়ে যাবে, যা মুসলমানদের জন্য পরিতাজ্য।
অাবার হুজুর সা. এর ওফাত দিবসের মাস থেকেও গণনা শুরু করা যাবে না, কারণ এতে হুজুর সা. এর মৃত্যু ব্যথা আমাদের মাঝে বারবার উত্থিত হবে। পাশাপাশি অজ্ঞ যুগের মৃত্যুর শোক পালনের ইসলাম বিরোধী একটি কুপ্রথারই পুনরুজ্জীবন করা হবে। হযরত ওমর রা. এর এই সুক্ষ্ম বক্তব্যকে হযরত উসমান রা. ও হযরত আলী রা. একবাক্যে সমর্থন করেন। অতঃপর বহু চিন্তাভাবনার পর হযরত উমর ফারুক রা. হিজরতের বছর থেকেই ইসলামী দিনপঞ্জি গণনার সিদ্ধান্ত নেন।
 
হিজরি সনের প্রবর্তক হযরত ওমর ফারুক রা., হযরত আবু মুসা অাশ’অারী রা., হযরত অালী রা এবং হযরত ওমমান রা.এর যৌথ প্রচেষ্টায় ১৬২২ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ ই জানুয়ারী শুক্রবার থেকে হিজরি সনের প্রচলন শুরু হয়। যা বর্তমান বিশ্বের প্রায় দেড়শ’ কোটি মুসলমানের নিকট অতীব মর্যাদাপূর্ণ এক আমানত।
 
হিজরী সন ও তারিখের গুরুত্ব মুসলিম জীবনে অনস্বীকার্য। কেন না হিজরী সন এমন একটি সন, যার সাথে সম্পৃক্ত বিশ্ব মুসলিমের তাহজীব-তামাদ্দুন। এছাড়াও রাসূল সা. এর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ঘটনাবলী যেনন- বদর, খন্দক, তাবুক,প্রভৃতি যুদ্ধ, রাজ্য জয় এবং অন্যান্য ঐতিহাসিক ঘটনাবলী হিজরি সনের সাথে সম্পৃক্ত। সম্পৃক্ত ইসলামের বিভিন্ন বিধি-বিধানও। যেমন- রোজা, হজ, ঈদ, শবে বরাত, শবে কদর, শবে মিরাজসহ ধর্মীয় নানান আচার-অনুষ্ঠান। হাদীসে এসেছে,
তোমরা চাঁদ দেখে রোযা রাখ এবং চাঁদ দেখে রোযা ভাঙ্গ। ( মুসলিম,১/৩৪৭)
তাই ইবাদত পালনের ক্ষেত্রে জ্যোর্তিবিজ্ঞানের হিসেব গ্রহণ যোগ্য নয়।সুতরাং একজন মুসলমানের জন্য অপরিহার্য হলো তার সকল কাজ কর্ম হিজরি সনের তারিখ অনুজায়ী সম্পন্য করা।
পবিত্র কোরঅানে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, “লোকেরা অাপনাকে নব চাঁদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে,আপনি বলুন, তা হলো মানুষের এবং হজের জন্য সময় নির্ধারণকারী।” ( সূরা : বাকারা,১৮৯)
 
এ আয়াত দ্বারা স্পষ্ট বুঝা যায় যে, আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের হিসাব নিকাশের সুবিধার্থে চাঁদকে পঞ্জিকাস্বরূপ সৃষ্টি করেছেন। আর এজন্যই হিজরি সন গণনাকে ফরযে কেফায়া হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
 
== বহিঃসংযোগ ==