অঞ্চলবিভাজন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
শুরু
 
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
সংশোধন
১ নং লাইন:
[[File:GUP Skopje 2002 mal.jpg|thumb|300px|ম্যাসিডোনিয়ার স্কপিয়ে শহরের অঞ্চলবিভাজন মানচিত্র]]
'''অঞ্চলবিভাজন''' হল ভূমি সম্পত্তি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি আইনি পদ্ধতি, যাতে জনঘনত্ব, নির্মাণযোগ্য ভবন ও স্থাপনার ধরন ও ব্যবহার এবং অন্যান্য বেশ কিছু ব্যাপার বিবেচনা করে বিধিবিধান প্রণয়ন করা হয়।<ref>{{Citeসাময়িকী journalউদ্ধৃতি|lastশেষাংশ=Lamar|firstপ্রথমাংশ=Anika|dateতারিখ=December 1, 2015|titleশিরোনাম=Zoning as Taxidermy: Neighborhood Conservation Districts and the Regulation of Aesthetics|urlইউআরএল=|journalসাময়িকী=Indiana Law Journal|volumeখণ্ড=|pagesপাতাসমূহ=|viaমাধ্যম=}}</ref> অঞ্চলবিভাজন পদ্ধতিটি মূলত পৌর এলাকাতেই প্রয়োগ করা হয়। এখানে প্রদত্ত কোন ভূখণ্ডকে একাধিক অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়, যেগুলির প্রতিটিতে বিশেষ আইনি শর্ত মেনে ভূমির ব্যবহার ও ভবনসমূহ নির্মাণ করতে হয়। পৌর বা নগর পরিকল্পনার অন্যান্য পদ্ধতির সাথে অঞ্চলবিভাজন পদ্ধতিটিও কোনও শহর বা নগরীর উন্নততর ভৌগলিক শৃঙ্খলা অর্জনে সহায়ক একটি কৌশল।<ref>{{Citeবই bookউদ্ধৃতি|titleশিরোনাম=Urban Stormwater Management in the United States|lastশেষাংশ=|firstপ্রথমাংশ=|publisherপ্রকাশক=National Academy of Sciences|yearবছর=2009|isbnআইএসবিএন=|locationঅবস্থান=|pagesপাতাসমূহ=|quoteউক্তি=|viaমাধ্যম=}}</ref><ref name=":0">{{Citeবই bookউদ্ধৃতি|titleশিরোনাম=Planning Canadian Communities|lastশেষাংশ=Hodge|firstপ্রথমাংশ=Gerald|publisherপ্রকাশক=Thomson|yearবছর=2014|isbnআইএসবিএন=978-0-17-650982-8|locationঅবস্থান=Toronto|pagesপাতাসমূহ=388–390|quoteউক্তি=|viaমাধ্যম=}}</ref> সাধারণত স্থানীয় পৌর কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন বা সরকার এই আইনগুলি প্রণয়ন ও প্রয়োগ করে থাকে। উন্নত দেশগুলিতে এই কৌশলের ব্যাপক প্রয়োগ আছে।<ref>''E.g.'', Lefcoe, George, "The Regulation of Superstores: The Legality of Zoning Ordinances Emerging from the Skirmishes between Wal-Mart and the United Food and Commercial Workers Union" (April 2005). USC Law, Legal Studies Research Paper No. 05-12; and USC Law and Economics Research Paper No. 05-12. Available at [http://ssrn.com/abstract=712801 SSRN] or [10.2139/ssrn.10.2139/ssrn.712801 DOI]</ref><ref>[[Town and Country Planning Act 1990]]</ref><ref>{{de icon}} [http://www.bmvbs.de/ BMVBS - Startseite]. Bmvbs.de. Retrieved on 2013-07-19.</ref>
 
১৯শ শতকের শেষভাগে এসে ইউরোপীয় শহরগুলিতে যে স্থাপত্য ও নগর-পরিকল্পনা সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণমূলক কর্মকাণ্ডগুলি উপস্থাপন করা হয়েছিল, সেগুলিই আদিতে অঞ্চলবিভাজনের প্রাথমিক রূপটির অনুপ্রেরণা ছিল। জার্মানি ও সুইডেনের নগরীগুলি বহু আগে থেকেই পৌর ক্ষমতার অধিকারী ছিল। তারা এই ক্ষমতাবলে ১৮৭৫ সালের দিকে অঞ্চলবিভাজন সংক্রান্ত বিধিবিধান প্রবর্তন করে, যেগুলি পুরাতন শহরকেন্দ্রকে ঘিরে গড়ে ওঠা নতুন পৌর এলাকাগুলি ভবনসমূহের উচ্চতা ও ঘনত্ব নিয়ন্ত্রণ করত এবং ঘিঞ্জি পরিবেশ গড়ে উঠতে বাধা দিত। জার্মান ও সুয়েডীয় শহরগুলির শৃঙ্খলা ও ভবনের সারি ও উচ্চতার সামঞ্জস্যর পিছনে এই বিস্তারিত অঞ্চলবিভাজন বিধিবিধানসমূহের দ্রুত প্রণয়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এগুলি এমন সময়ে প্রযুক্ত হয়, যখন শিল্প বিপ্লবের ফলশ্রুতিতে ব্যাপক এলাকা জুড়ে বড় বড় নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল।
 
এর বিপরীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থাপত্য বা স্থান-পরিকল্পনার মানদণ্ডগুলি নয়, বরং সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যাপারগুলি অঞ্চলবিভাজনের মূল কারণ ছিল। ২০শ শতকের শুরুর দিকে সবচেয়ে প্রথম কিছু মার্কিন অঞ্চলবিভাজন অধ্যাদেশগুলি বাণিজ্যিক ও শিল্পসংক্রান্ত কর্মকাণ্ডের অবস্থানের ব্যাপারে নিয়মের প্রয়োজনে উদ্ভূত হয়। ১৯১৬ সালে নিউ ইয়র্ক প্রথমবারের মত একটি সুসমন্বিত অঞ্চলবিভাজন আইন প্রণয়ন করা হয়। এই আইনটিতে (এবং সমজাতীয় প্রথম দিকের আইনগুলিতে) সম্পত্তির মূল্য রক্ষা করা এবং আলো ও বাতাস সংরক্ষণ করার মত ব্যাপারগুলি গুরুত্ব পায়। আধুনিক অঞ্চলবিভাজন বিধিবিধানগুলিতে ভূমির ব্যবহারকে তিন প্রকারে ভাগ করা হয়: আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্প। প্রতি প্রকারের অঞ্চলের জন্য ভবনসমূহের উচ্চতা, নৈকট্য এবং ধরনের ব্যাপারে বিশেষ নিয়ম করা থাকে। নিউ ইয়র্কের উদাহরণকে ভিত্তি করে পরবর্তীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শহরগুলিতে অঞ্চলবিভাজন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়।
 
অঞ্চলবিভাজন আইনের মূলত দুইটি অংশ থাকে। প্রথম অংশে অঞ্চলবিভাজনের শ্রেণীকরণ বর্ণনা করা হয় এবং প্রতিটি শ্রেণীতে কী রকম নির্মাণ অনুমোদিত, তার বর্ণনা দেওয়া থাকে। দ্বিতীয় অংশটি হল একটি অঞ্চলবিভাজন মানচিত্র যাতে প্রতিটি সম্পত্তির অঞ্চলবিভাজনমূলক শ্রেণী দেখানো থাকে।<ref name="dum">{{Citation |title=Urban Planning For Dummies |author=Jordan Yin |publisher=John Wiley & Sons |date=Feb 21, 2012}}</ref>
 
অঞ্চলবিভাজনের শ্রেণীকরণে সাধারণত তিনটি ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করা হয়। প্রথমত প্রতিটি ভূমিখণ্ড বা সম্পত্তি খণ্ড যেসব উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার অনুমতি আছে, সেগুলি শ্রেণীকরণ ও উপশ্রেণীকরণের মাধ্যমে নির্দিষ্ট করা থাকে। দ্বিতীয়ত, এই শ্রেণীকরণে ভূমি ও ভবন উন্নয়নের সীমা নির্ধারণ করা থাকে; যেমন ভবনের সর্বোচ্চ উচ্চতা বা কোন কার্যালয় ভবনের সর্বোচ্চ কর্মীধারণক্ষমতা। তৃতীয়ত, অঞ্চলবিভাজন শ্রেণীকরণে ভবনের নকশা, বিন্যাস ও স্থাপত্যের ব্যাপারেও সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়। যেমন দুই ভবনের মধ্যকার দূরত্ব, একটি ভবনের পদচিহ্নের অনুমোদিত সর্বোচ্চ আকার, এমনকি ভবনের জন্য অনুমোদিত রঙ, ইত্যাদি।<ref name="dum" />
 
আবাসিক অঞ্চলে মূলত আবাসিক ভবন নির্মাণের অনুমতি থাকে, তবে ক্ষেত্রবিশেষে আবাসিক এলাকার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ অন্যান্য ভবন যেমন বিদ্যালয়, ধর্মালয়, ইত্যাদি নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়। আবাসিক শ্রেণীর আবার অনেক উপশ্রেণী থাকতে পারে, যেমন একক-পরিবার আবাসিক এলাকা, বহু-পরিবার আবাসিক এলাকা, ইত্যাদি।<ref name="dum" />
১৬ নং লাইন:
শিল্প অঞ্চলে শিল্পোৎপাদিত দ্রব্যের প্রস্তুতকরণ ও বিতরণ প্রক্রিয়া সম্পাদন করার অনুমতি দেওয়া হয়। অনেক সময় পরিবহন ও জন-উপযোগমূলক সেবা যেমন বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, ইত্যাদি সংক্রান্ত স্থাপনা নির্মাণেরও অনুমতি দেওয়া হয়।<ref name="dum" />
 
সরকারি বা জনসুবিধামূলক স্থাপনা ও উন্মুক্ত এলাকাগুলিকে একটি আলাদা শ্রেণীতে রাখা হয়। সরকারি হাসপাতাল, ধর্মালয় (মসজিদ-মন্দির-গির্জা) এবং বিনোদন কেন্দ্রগুলি এই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। উন্মুক্ত এলাকাগুলিকে আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্প অঞ্চলের বাইরে স্থাপন করা হয়, তবে এগুলিতে সাধারণত হালকা ধরনের বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হতে পারে।<ref name="dum" />
 
সম্প্রতি স্থানীয় সরকারসমূহ অঞ্চলবিভাজন শ্রেণীকরণের ক্ষেত্রে মিশ্র পন্থা অবলম্বন করছে, যেখানে একই অঞ্চলের ভিন্ন ভিন্ন ভূসম্পত্তি ভিন্ন ভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে, এমনকি একই সম্পত্তি একাধিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে। যেমন একটি বহুতল ভবনের নিম্নাংশ বিপণনের কাজে এবং উপরের অংশ আবাসিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে।<ref name="dum" />
 
অঞ্চলবিভাজন পদ্ধতিটি প্রায়ই কোন শহর বা নগরীর বিশেষ চরিত্র সংরক্ষণ করার জন্য প্রয়োগ করা হয়। অঞ্চলবিভাজনের বিভিন্ন কৌশল আছে। এক ধরনের অঞ্চলবিভাজন উৎসাহব্যঞ্জক হিসেবে কাজ করতে পারে। যেমন ভবন নির্মাতাদেরকে ভবনের আশেপাশের এলাকা উন্মুক্ত রাখার পরিবর্তে স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু ভবন নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হতে পারে। এর ফলে স্থানীয় সম্প্রদায়ের উন্মুক্ত স্থানের চাহিদাও পূরণ হয়, আবার নির্মাতার জন্যও ভবন নির্মাণ লাভজনক হয়।<ref name="dum" />
অঞ্চলবিভাজনের একটি নেতিবাচক ফল হল অর্থনৈতিক পৃথকীকরণ বা বৈষম্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট বা সর্বোচ্চ আদালত ১৯৭৭ সালে শিকাগো মহানগরীর একটি শহরতলীতে অঞ্চলবিভাজনের প্রয়োগকে বৈষম্যমূলক ঘোষণা দেয় এবং সেটিকে বাতিল করে দেয়। কিন্তু আরেক ধরনের অঞ্চলবিভাজন সামাজিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধিতে ব্যবহৃত হতে পারে। যেমন ভবন নির্মাতাদের নতুন স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয় এই শর্তসাপেক্ষে যে তাদেরকে শহরের নিম্ন-আয়ের অধিবাসীদের জন্য আবাসস্থল নির্মাণ করতে হবে।<ref name="dum" />
 
যদি কোন সম্পত্তির মালিক অঞ্চলবিভাজন আইন দ্বারা নির্ধারিত ও অনুমোদিত ব্যবহারের পরিপন্থী কোন উদ্দেশ্যে ভবন নির্মাণ বা ভূমি সম্পত্তি ব্যবহার করতে চান, তাহলে তিনি স্থানীয় সরকারের নগর পরিকল্পনা কমিশন বা বিশেষ আপীল বোর্ডের কাছে অঞ্চলবিভাজনের অনৈক্যমূলক বা ব্যতিক্রমী প্রয়োগ অনুরোধ করতে পারেন।<ref name="dum" />
 
==তথ্যসূত্র==