ভাষা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
114.130.83.10-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে Zaheen-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
ট্যাগ: পুনর্বহাল
৫২ নং লাইন:
দ্বিভাষিকতা বলতে দুইটি ভাষা দক্ষভাবে প্রয়োগের ক্ষমতা এবং বহুভাষিকতা বলতে দুইয়ের বেশি ভাষার দক্ষ প্রয়োগের ক্ষমতাকে বোঝায়। বিশ্বের বেশির ভাগ অঞ্চলেই দ্বিভাষিকতা প্রচলিত। দ্বিভাষী বা বহুভাষী মানুষদের মধ্যে বিভিন্ন ভাষার দক্ষতার তারতম্য পরিলক্ষিত হয়: কেউ হয়ত একটি ভাষায় ভাল লিখতে এবং অপরটিতে ভাল বলতে পারেন, ইত্যাদি।
 
== ভাষার উদ্ভব সম্পর্ক মতবাদবৈচিত্র্য ==
 
কন্যার মুখে প্রথম আব্বু ডাক শোনা
অতঃপর
ভাষার জন্ম রহস্য জানি এসো সোনা।
-----------------------------------------------
আমার একমাত্র তনয়া প্রিন্সেস সামীহা নূর জারা'র জন্ম হলে আমি কল্পনা করতাম,মেয়ে আমাকে বাবা বলে ডাকবে আর ওর গর্ভধারিনীকে ডাকবে মা।তাই সারাক্ষণ বাবা.বা বা..... বলে ওর মনযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করতাম।ভাবতাম পুরো শব্দটি প্রথম দিকে উচ্চারণ না করতে পারলেও বা...... বা....তো উচ্চারণ করতে পারবে।আমি একজন সুদক্ষ প্রশিক্ষকের মত ওর প্রতি সময় ও শ্রম বিনিয়োগ করলাম।মহান আল্লাহ পাক গত বছর ২৫ শে অক্টোবর আমাদের দাম্পত্যজীবনে আর্শীবাদ স্বরূপ এ কন্যা সন্তান দান করেন। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে লক্ষ্য করলাম চলতি বছরের ১৭ মার্চ কোন এক পরিস্থিতিতে মেয়ে আমার কোন প্রকার জড়তা ছাড়া ডেকে উঠলেন আ ব্বু......আববু।
 
ঠিক একই দিনে ওর মাকে ডাকলো,আমমা..আম মা।
 
আমাদের শেখানো "বাবা" "মা"বুলিগুলো সে গ্রহন করেনি।বরং আমার চিন্তা জগতের সামনে উন্মোচন করেছে ভাষার উদ্ভব সংক্রান্ত এক মহাজাগতিক রহস্য।
 
বর্তমান পৃথিবীতে মোট সাত হাজার ৯৯টি ভাষা চলমান।[ভাষার জরিপ প্রকাশকারী সংস্থা অ্যাথনোলোগের (ethnologue) তথ্য মতে]
অনেক ভাষাবিজ্ঞানী এ বিষয়ে একমত হয়েছেন যে ইন্দো-ইউরোপীয় আদি ভাষা থেকে সব ভাষার উৎপত্তি। খ্রিস্টপূর্ব ৪৫০০ থেকে ৩৫০০ অব্দের মাঝামাঝি সময়ে এ আদি ভাষার জন্ম হয়।
আমি উনাদের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাতে পারছিনা বলে দুঃখ প্রকাশ করছি।
সত্যিকার অর্থে,ভাষার শুরুটা কিভাবে হয়েছে,এ নিয়ে ভাষাবিজ্ঞানীদের বিরোধের অন্ত নেই। চার্লস ডারউইন বলেছেন, ‘এতে কোনো সন্দেহ নেই যে ভাষার উৎপত্তি হয়েছে বিভিন্ন প্রাকৃতিক শব্দের ইঙ্গিত, প্রাণীদের আওয়াজ ও মানুষের স্বভাবগত উচ্চারিত ধ্বনির অনুসরণ ও সংশোধন করে। ’ (The Descent of Man, and Selection in Relation to Sex, 2 vols. London : Murray, p. 56.)
 
কিন্তু আমি তাঁর যুক্তির সাথে পুরোপুরিভাবে একমত নয়।
 
একদল ভাষাবিজ্ঞানী ভাষার উৎপত্তি নিয়ে দুটি তত্ত্ব দিয়েছেন,
এক. অবিচ্ছিন্নতাতত্ত্ব বা Continuity theories. সেটি হলো, ‘ভাষার বিষয়টি এত জটিল যে তার চূড়ান্ত প্রকৃতি বিষয়ে কল্পনা করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। এটি পূর্বপুরুষদের থেকে পরম্পরাগতভাবে চলে আসছে। ’
দুই. বিচ্ছিন্নতাতত্ত্ব বা Discontinuity theories. এ তত্ত্ব আগেরটির বিপরীত। অর্থাৎ ‘ভাষা এমন বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত যে মানুষ ছাড়া অন্য কারো মধ্যে ভাষার ব্যবহার পাওয়া যায় না। মানবীয় বিবর্তনপ্রক্রিয়ার কোনো একসময়ে একবারেই হঠাৎ ভাষার প্রকাশ ও বিকাশ ঘটেছে।
 
★ওউ-ভৌ’ (wow-Bow) তত্ত্বঃ
ঊনবিংশ শতাব্দীতে মনে করা হতো, প্রাকৃতিক ধ্বনি থেকে ভাষা সৃষ্টি হয়েছে।বলা হয়ে থাকে, সর্বপ্রথম প্রাণী ও পাখির আওয়াজ থেকে ধ্বনি তৈরি হয়েছে। এ তত্ত্বের প্রবক্তা ছিলেন জার্মান লেখক ও দার্শনিক জুহান গটপ্রেড হার্ডার (Johann Gottfried Herder.)
 
★‘পুঃ পুঃ’ (Phoo-phoo) তত্ত্বঃ
মানুষের আনন্দ, বেদনা ও আবেগ অনুসৃত ধ্বনি থেকে ভাষার জন্ম।
 
★‘ডিঙ-ডঙ’ (Ding-dong) তত্ত্বঃ
মুইলরের মতে, বস্তুর প্রাকৃতিক বুদ্বুদ বা আওয়াজ থেকে পাওয়া ধ্বনি থেকে ভাষার জন্ম।
 
★‘ইউ হে হু’ (Yo-he-ho) তত্ত্বঃ
মানুষের যৌথ কায়িক কসরতের পরিণতিতে ভাষার উদ্ভব হয়েছে। কায়িক প্রচেষ্টার সমন্বয় সাধন করার সময় যে আওয়াজ বের হয়, তা থেকে ভাষার জন্ম। (The Origin of Language. pp. 7-41.)
 
ভাষার উৎপত্তি বিষয়ে এত জটিলতা থাকার কারণে ১৮৬৬ সালে প্যারিসের ভাষাতাত্ত্বিক সমিতি (Linguistic Society of Paris) ভাষার উৎসসংক্রান্ত যেকোনো গবেষণাপত্র পাঠে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
 
আজ আমি উনাদের এমন সিদ্ধান্তেরও বিরোধিতা করছিন।এবং এতদ্ বিষয়ে জটিলতার অবসান সংক্রান্ত প্রেসক্রিপশন দিচ্ছি। কারণ,ভাষা কোন কালেই মানুষ সৃষ্টি করেনি।ভাষার সৃষ্টিকাল এবং এর নিগুঢ় রহস্য উন্মোচন করতে হলে মানব সৃষ্টির মহা রহস্য সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা জরুরী বলে আমি মনে করি।
 
ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের মায়ের গর্ভ থেকে এমনভাবে বের করেছেন যে তোমরা কিছুই জানতে না। তিনি তোমাদের দিয়েছেন শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও হৃদয়, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। (সুরা : নাহল, আয়াত : ৭৮)
মহান আল্লাহ তাআলা অন্যত্র ইরশাদ করেছেন, ‘তিনিই (আল্লাহ) মানুষকে শিখিয়েছেন ভাব প্রকাশ করতে। ’ (সুরা : আর-রাহমান, আয়াত : ৪)
ভাব প্রকাশের মৌখিক পদ্ধতি ছাড়াও রয়েছে লিখিত পদ্ধতি। সে পদ্ধতিও আল্লাহর শেখানো। আল্লাহ বলেন, ‘পড়ো, তোমার প্রভু মহিমান্বিত, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। ’ (সুরা : আলাক, আয়াত : ৩-৪)
 
বলা হয়ে থাকে, বৈজ্ঞানিক গবেষণা যেসব জায়গায় অক্ষমতা প্রকাশ করেছে, ভাষার উৎপত্তিবিষয়ক গবেষণা তেমনই একটি স্পর্শকাতর জায়গা। আসলে কি তাই? মোটেও না।এ বিষয়ে কোরআন তো বহু আগেই মীমাংসা করে দিয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আল্লাহ শেখালেন আদমকে (আদি মানব) সব বস্তুর নাম। তারপর সেসব বস্তু ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করেন। অতঃপর বলেন, আমাকে তোমরা এগুলোর নাম বলে দাও, যদি তোমরা (শ্রেষ্ঠত্বের দাবিতে) সত্য হয়ে থাকো। তারা বলল, আপনি পবিত্র! আমরা তো কোনো কিছুই জানি না, তবে আপনি যা আমাদের শিখিয়েছেন (সেগুলো ছাড়া)। নিশ্চয়ই আপনিই প্রকৃত জ্ঞানসম্পন্ন, প্রজ্ঞাময়। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৩১-৩২)
কাজেই ভাষার ইতিহাস মানব ইতিহাসের সমসাময়িক। ভাষাজ্ঞান নিয়েই মানুষের জন্ম হয়েছে, এটা আল কুরআনের অকাট্য, সুনির্দিষ্ট ও শাশ্বত বক্তব্য। সুতরাং আদি মানব আদম (আ.) ভাষাজ্ঞান লাভ করেছেন মহান আল্লাহর কাছ থেকে। অতঃপর বংশপরম্পরায় তাঁর সন্তানদের মধ্যে ভাষার বিকাশ হতে থাকে। বলা যায়, একসময় পৃথিবীর মানুষ অভিন্ন ভাষায় কথা বলত। তখন ভাষা ছিল মাত্র একটি। কালক্রমে মানুষের চিন্তা ও রঙের বৈচিত্র্যের মতো ভাষাবৈচিত্র্যের উদ্ভব হয়। সেই উদ্ভাবনী ক্ষমতাও মহান আল্লাহ দান করেছেন। ভাষাবৈচিত্র্য মহান আল্লাহর অসীম কুদরতের নিদর্শন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তাঁর নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। এতে জ্ঞানীদের জন্য অবশ্যই বহু নিদর্শন আছে। ’ (সুরা : রুম, আয়াত : ২২)
 
তথ্যসূত্রঃ
[1] (H. Christiansen, Language evolution. Oxford University Press. pp. 7-41)
 
♦Copyright @ এস এম শাহনূর
smshahnoor82@gmail.com
 
--------------------+-++---------------------
 
 
{{Expand section}}
 
১২৮ ⟶ ৭৪ নং লাইন:
==তথ্যসূত্র==
{{সূত্র তালিকা}}
5. এস এম শাহনূর/ভাষার জন্ম কথা
 
==বহিঃসংযোগ==
'https://bn.wikipedia.org/wiki/ভাষা' থেকে আনীত