টমাস ম্যালথাস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
→‎জীবনী: বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে
টমাস রবার্ট ম্যালথাসের জন্ম ১৭৬৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি এক ধনাঢ্য পরিবারে। তাঁর পিতা ড্যানিয়েল ম্যালথাস ছিলেন দার্শনিক ডেভিড হিউম এবং জাঁ জাক রুসোর বন্ধু। তিনি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জেসাস কলেজে ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে ভর্তি হন। সেখানে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা করেন, এবং ইংরেজি বক্ত্‌তা, লাতিন ভাষা, এবং গ্রিক ভাষায় পুরস্কার পান। তবে তাঁর প্রিয় বিষয় ছিল গণিত। তিনি ১৭৯১ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন, এবং দুই বছর পর জেসাস কলেজের ফেলো নির্বাচিত হন।
৫ নং লাইন:
== জীবনী ==
[[File:Malthus - Essay on the principle of population, 1826 - 5884843.tif|thumb|''Essay on the principle of population'', 1826]]
টমাস রবার্ট ম্যালথাসের জন্ম ১৭৬৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি এক ধনাঢ্য পরিবারে। তাঁর পিতা ড্যানিয়েল ম্যালথাস ছিলেন দার্শনিক [[ডেভিড হিউম]] এবং [[জাঁ জাক রুসো]]ররুসোর বন্ধু। ম্যালথাস তাঁর শৈশবে বাড়িতেই লেখাপড়া করেছিলেন। তিনি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জেসাস কলেজে ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে ভর্তি হন। সেখানে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা করেন, এবং ইংরেজি বক্ত্‌তা, লাতিন ভাষা, এবং গ্রিক ভাষায় পুরস্কার পান। তবে তাঁর প্রিয় বিষয় ছিল গণিত। তিনি ১৭৯১ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন, এবং দুই বছর পর জেসাস কলেজের ফেলো নির্বাচিত হন। ১৭৯৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি [[অ্যাংলিকান]] পুরোহিত হিসাবে দীক্ষা নেন।
 
অর্থশাস্ত্রে তার অবদানঃ ১৭৯৮ সালে তিনি বহুল বিতর্কিত ‘An Essays On the Principle of population" অন দ্য প্রিন্সিপল অব পপুলেশ প্রকাশ করার পর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। এখানে বহুল বিতর্কিত বলার কারন তিনি এতে এমন ভয়ানক এক ভবিষ্যতের চিত্র তুলে ধরেছেন, যা আলোচনার পাশাপাশি তুমুলভাবে হয়েছে বিতর্কিত। রবার্ট ম্যালথাস তার এসেতে বলেন, মানুষ বাড়ে জ্যামিতিক হারে (২, ৪, ৮, ১৬, ৩২...) আর খাদ্য উৎপাদন বাড়ে গাণিতিক হারে (২, ৩, ৪, ৫, ৬...) আর প্রতি ২৫ বছরে জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়। যেহেতু খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি জনসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় অনেক পিছিয়ে পড়বে, নষ্ট হবে ভারসাম্য, এনে দেবে দুর্ভিক্ষ। খাবার না পেয়ে বাড়তি জনসংখ্যা বিলীন হয়ে যাবে। তিনি লক্ষ করেছেন, সব মনুষ্য সমাজে এমনকি কলুষিত সমাজেও প্রধান প্রবণতা জনসংখ্যার বৃদ্ধি ঘটানো। এ সার্বক্ষণিক প্রবণতা মানুষকে অত্যন্ত ভয়াবহ পরিণতির দিকে ঠেলে দেবে। এ অবস্থা মোকাবেলার জন্য তিনি দুই ধরনের প্রতিরোধকের কথা বলেছেন।
১৮০৪ সালে ম্যালথাস বিয়ে করেন। পরবর্তীতে তাঁদের তিনটি সন্তানের জন্ম হয়। ১৮০৫ সালে তিনি ব্রিটেনের প্রথম রাজনৈতিক অর্থনীতি বিষয়ক অধ্যাপক হিসাবে হার্টফোর্ড এলাকার ইস্ট ইন্ডিয়া কলেজে যোগ দেন। তাঁর ছাত্ররা তাঁকে শ্রদ্ধাবশত ''পপ'' (Pop) বা ''পপুলেশন'' (Population, জনসংখ্যা) ম্যালথাস বলে ডাকতো। ১৮১৮ সালে তিনি [[রয়াল সোসাইটি]]র ফেলো নির্বাচিত হন।
 
১.পজেটিভ(এর আওতায় পড়ে দুর্ভিক্ষ, অসুখ-বিসুখ ও মহামারী এবং যুদ্ধ)।
নিজের ঠোঁটের কাটা দাগ নিয়ে লজ্জা থাকায় ১৮৩৩ সাল পর্যন্ত ম্যালথাস নিজের কোনো প্রতিকৃতি আঁকতে দেন নাই। [[শল্যচিকিৎসা]]র মাধ্যমে এটি নিরাময় করার পরে তাঁর চেহারার উন্নতি হয়। ম্যালথাসের অন্যান্য শারিরীক বিকলাঙ্গতার মধ্যে ছিল [[দ্বিখন্ডিত তালু]] (cleft palate), যার ফলে তাঁর কথায় জড়তা ছিল। এসব শারীরিক ত্রুটি তাঁর পরিবারের অনেকের মধ্যেই ছিল।
 
২.প্রিভেন্টিভ বা নিরোধক; (এর মধ্যে রয়েছে— গর্ভপাত, জন্মনিয়ন্ত্রণ, পতিতাবৃত্তির সম্প্রসারণ, কৌমার্য ধরে রাখা, বিয়ে পিছিয়ে দেয়া)
[[১৮৩৪]] সালের [[২৩ ডিসেম্বর]] ম্যালথাসের মৃত্যু হয়। তাঁর কবর [[ইংল্যান্ড|ইংল্যান্ডের]] বাথ মঠে অবস্থিত।
 
ম্যালথাসের সময় পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিল ১.১ বিলিয়ন, ২৫ বছর পর তা ২ বিলিয়নে পৌঁছবে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সর্বনাশা পরিণতির সমাধানের জন্য যদি দুর্ভিক্ষ, অসুখ এবং যুদ্ধের ওপর নির্ভর করতে হয়, তাহলে অর্থনীতির চক্র ভেঙে যাবে। তিনি বলেছেন, খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধির তুলনায় যদি শ্রমিকের সরবরাহ বেড়ে যায়, তাহলে প্রকৃত মজুরি কমে যাবে, জীবনধারণ ব্যয় বেড়ে যাবে। ফলে সংসার প্রতিপালন দুরূহ হয়ে উঠবে আর তা জনসংখা বৃদ্ধি প্রতিহত করতে সাহায্য করবে।
{{অসম্পূর্ণ}}
 
খাদ্য উৎপাদন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির অসামঞ্জস্যপূর্ণ খতিয়ান শেষ পর্যন্ত ডেকে আনবে ‘Malthusian Catastrophe’ বা ম্যালথাসীয় ধ্বংসযজ্ঞ। এ রকম অনিবার্য ধ্বংসযজ্ঞের কথা রবার্ট ম্যালথাস না লিখলেও অর্থনীতিবিদ জুলিয়ান সাইমন এ ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ম্যালথাস বরং জনসংখ্যার গতিশীলতার একটি অভিব্যক্তিবাদী সামাজিক সমাধান দিতে চেষ্টা করেছেন। তাঁর ১৭৯৮ সালের রচনায় আটটি বিষয় উঠে এসেছে:
 
১. ‘নিতান্ত প্রাণ ধারণ স্তরের’ অর্থনীতি জনসংখ্যা বৃদ্ধি সীমিত করে আনে।
 
২. নিতান্ত প্রাণ ধারণ স্তরের উন্নতি ঘটলে জনসংখ্যাও বৃদ্ধি পায়।
 
৩. জনসংখ্যা বৃদ্ধির চাপ অন্যান্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রণোদনা প্রদান করে।
 
৪. উৎপাদন বৃদ্ধি আবার জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে উত্সাহিত করে।
 
৫. যেহেতু উৎপাদনশীলতার বৃদ্ধি জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, পৃথিবীর ধারণক্ষমতার সঙ্গে সঙ্গতি রাখার জন্য কঠোরভাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন হবে।
 
৬. যৌনতা, কাজকর্ম এবং সন্তানসন্ততির ব্যাপারে ব্যক্তিগত লাভক্ষতির হিসাবই সংসার বড় হবে না সংকুচিত হবে, তা নির্ধারণ করে।
 
৭. জনসংখ্যার চাপ নিতান্ত প্রাণ ধারণ স্তর পেরিয়ে গেলেই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের স্বয়ংক্রিয় বিষয়গুলো কাজ করতে শুরু করে।
 
৮. এই নিয়ন্ত্রণের বিশেষ প্রভাব পড়বে বৃহত্তর সামাজিক-সাংস্কৃতিক পদ্ধতির ওপর। (ম্যালথাস সামাজিক অনাচার, বিপন্নতা ও দারিদ্র্যের দিকে ইঙ্গিত করেছেন।) ছেড়েছে। ম্যালথাস যে দ্রুততায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, বাস্তবে তা ছিল আরো শ্লথ (আফ্রিকা ও এশিয়ার কিছু দেশ বাদে)। অন্যদিকে ম্যালথাসের গাণিতিক হারকে টেক্কা দিয়ে খাবারের উৎপাদন বেড়েছে অবিশ্বাস্য রকম অধিক হারে। কাজেই যে নারকীয় যজ্ঞ দেখার সম্ভাবনা ছিল, তা শেষ পর্যন্ত ঘটেনি। বরং ম্যালথাসের আমলের তুলনায় মানুষের জীবনযাত্রার মান অনেক বেড়ে যায়।
 
অন্যদিকে ম্যালথাস তার
 
Principles of Political Economy বইয়ে ডেভিড রিকারড এর যুক্তি খণ্ডন করেছেন এবং সেই সাথে Jean Baptiste Say এর law কে প্রত্যাখ্যান করেছেন। say’s law অনুসারে কোন পন্যের যোগানই তার চাহিদা কে বৃদ্ধি করে। say এর মতে পন্যের অতিরিক্ত যোগান মন্দা তৈরিতে প্রভাব ফেলেনা। তিনি আর বলেন স্বভাবতই মানুষের চাহিদা সবসময় একটু বেশিই থাকে আর কোন পণ্যের অতিরিক্ত যোগান অন্যান্য পণ্যের উৎপাদনকে তরান্বিত করে আর এইভাবে বাজারে একটা ভারসাম্য তৈরি হয়।
 
কিন্তু ম্যালথাস say এর এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেন দ্রবের যোগান কখনো চাহিদা বৃদ্ধি বাঁ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না আর পন্যের অতিরিক্ত যোগান বাজার কে অস্থিতিশীল করে তোলে। তিনি আর বলেন মানুষের চাহিদা এবং উৎপাদনের কারন গুল স্বাধীন। আর এইভাবে তিনি "effective demand," এর ধারনা নিয়ে আসেন। যার মানে হচ্ছে মানুষ কোন দ্রব্য বেশি বাঁ কোন দ্রব্য কম কিনবে তা নির্ভর করবে দ্রব্য বাঁ সেবার দামের উপর।
 
তিনি তার Principles of Political Economy বইয়ে আর বলেন চাহিদার তুলনায় দ্রবের যোগানের আধিক্য অর্থব্যাবস্থাকে সর্বদা মন্দার দিকে ধাবিত করে আর সেই জন্য তিনি সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি এবং বিলাস বহুল পণ্য আর সেবার জন্য ব্যাক্তিগত বিনিয়োগ এর কথা বলেছেন।
 
ম্যালথাস পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বস্তুনিষ্ঠ জ্ঞানী অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় নাড়া দিয়ে ২৯ ডিসেম্বর ১৮৩৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর জনসংখ্যাতত্ত্বে অনেক দুর্বলতা থাকার পরও প্রথম মহাযুদ্ধোত্তর অর্থনীতিবিদদের মেনে নিতে হয়েছে— ম্যালথাসই ছিলেন সবচেয়ে বস্তুনিষ্ঠ অর্থনীতিবিদ। একালের অর্থনীতিবিদরাও তা-ই মনে করেন। তাঁর তত্ত্বের যথার্থতা এখনো ফুরিয়ে যায়নি।{{অসম্পূর্ণ}}
 
[[বিষয়শ্রেণী:১৭৬৬-এ জন্ম]]