গাঁদা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
45.123.15.20-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে Salim Khandoker-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
ট্যাগ: পুনর্বহাল
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৩১ নং লাইন:
* ফরাসি গাঁদাঃ এই শ্রেণীর গাঁদা কমলা হলুদ হয়ে থাকে। এজন্য এদের রক্তগাঁদাও বলা হয়। এর গাছ ক্ষুদ্রাকৃতির। পাপড়ির গোড়ায় কালো ছোপ থাকে। উল্লেখযোগ্য জাতসমূহ হলঃ মেরিয়েটা, হারমনি, লিজন অব অনার, ইত্যাদি।
 
এছাড়াও সাদা গাঁদা, জাম্বো গাঁদা, হাইব্রিড এবং রক্ত বা চাইনিজ গাঁদার চাষ হয়ে থাকে।<ref>[http://www.ruralinfobd.com/rural/index.php?option=com_content&view=article&id=67%3A2010-08-21-05-05-27&catid=21%3A2010-08-29-12-39-25&limitstart=5 গাঁদা উৎপাদন কৌশল]</ref>
 
==চাষকৌশল==
গরম জাতের গাঁদা ফুলের চাষ-এই ফুল চাষ করতে হলে পর্যায়ক্রমে যে কাজগুলো করতে হয় তা এখানে আলোচনা করা হলো-
 
জমি নির্বাচনঃ ফুলের চাষ করতে হলে প্রথমেই জমি নির্বাচন করতে হবে। সাধারণত এঁটেল দো-আঁশ মাটি ফুল চাষের জন্য বেশি উপযোগী। যে জমিতে ফুল চাষ করা হবে, খেয়াল রাখতে হবে তা যেন নিচু না হয়। অর্থাৎ জমিতে যেন পানি জমে না থাকে। পাশাপাশি জমিতে সেচ দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
 
জমি চাষঃ জমি নির্বাচন করার পর জমিতে ৩/৪টা চাষ দিয়ে মাটি তৈরি করতে হবে। মাটি যেন ঝুরঝুরে ও ছোট টুকরো হয়। শেষ চাষের আগে জমিতে গোবর সার দিতে পারলে ভাল হয়। মাটির নিচে প্রচুর কেঁচো থাকে যা গাছ কেটে নষ্ট করে দেয়। তাই শেষ চাষের আগে মাটিতে কেঁচোনাশক যে কোন ওষুধ দিতে হবে। তারপর মই দিয়ে মাটি সমান করে দিতে হবে।
 
চারা সংগ্রহঃ অগ্রহায়ণ - পৌষ মাসে সাধারণত গরম জাতের ফুলের চারা লাগাতে হয়। এই জাতের ফুলের চারা সংগ্রহ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ এই ফুলের চারা সাধারণত বাংলাদেশে কম উৎপাদন হয়। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে এই ফুলের চারা বেশি আসে। চারা তৈরির জন্য বীজ সংগ্রহ একটি জটিল ব্যাপার। আমাদের দেশের কিছু চাষি এই চারা উৎপাদন করে ঠিকই কিন্তু গুণগত মান ভালো হয় না। ভারতে অনেক আগ থেকেই ফুলের চাষ হয় এবং দীর্ঘদিন ঐ দেশের চাষিরা চারা উৎপাদন করছে। সুতরাং ফুল চাষে তাদের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা আমাদের চেয়ে বেশি। এই জন্য তাদের উৎপাদিত চারার মানও ভালো। তাই গরম জাতের ফুল চাষ করতে হলে বিশ্বস্ত মাধ্যম দ্বারা ভারত থেকে চারা এনে চাষ করাই ভালো। চারা সংগ্রহের আগে থেকেই যোগাযোগ করতে হবে।
 
চারা রোপনঃ যে দিন চারা আসবে অর্থাৎ নিজের হাতে যে দিন চারা পৌঁছাবে সে দিনই জমিতে শেষ চাষ এবং কেঁচো মারার ওষুধ দিয়ে দুপুরের দিকে সেচ দিয়ে সমস্ত জমি ভেজাতে হবে। তারপর বিকালে যখন রোদের তাপ কমে যায় তখন চারা রোপণ করতে হবে। চারা রোপণ করার সময় রশি ধরে সারিবদ্ধভাবে রোপণ করতে হবে। চারা রোপণের জন্য সারি থেকে সারির দুরত্ব হবে দুই হাত এবং চারা থেকে চারার দুরত্ব হবে ৬ ইঞ্চি। গরম জাতের ফুলের চারা লাগানোর পরে অনেক চারা মারা যায় এবং অনেক গাছে পুরুষ ফুল হয় সেটা বাজারে চলে না। তাই ওই জাতীয় গাছগুলো তুলে ফেলতে হয়। এইজন্য অন্যজাতের চেয়ে গরম জাতের চারা একটু ঘন করে লাগাতে হয়। চারাগুলো লাগানোর আগে পাত্রে পানি নিয়ে দুই চা চামচ "ডায়াথেন এম-৪৫" ওষুধ মিশিয়ে চারাগুলো ঐ পানিতে ভিজিয়ে ৫/৬ মিনিট পর তুলে লাগালে চারার মৃত্যু হার অনেকাংশে কম হয়।
 
পরিচর্যাঃ আমি মনে করি যে কোন সাফল্যের মূলেই রয়েছে সততা, সঠিক পরিকল্পনা এবং পরিশ্রম। যে কোন ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে পরিচর্যাটাই হচ্ছে প্রধান। ফসলের সঠিক পরিচর্যা যদি আপনি না করেন, সঠিক ভাবে সার ও ওষুধ যদি আপনি না দেন তাহলে ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রেও আপনি সফলকাম হবেন না। এইজন্য ফুলের চারা লাগানোর পর তার সঠিক পরিচর্যাটাই হচ্ছে মূল কাজ। চারা লাগানোর পর ৮/১০ দিন কোন কিছু করতে হয় না। এর পর যদি জমি শুকিয়ে যায় অর্থাৎ যদি মনে হয় মাটিতে পর্যাপ্ত রস নেই তাহলে সেচ দিতে হবে। সেচটা সাধারণত খুব ভোরে অথবা সন্ধার আগে দেয়া ভালো। কারণ এসময় প্রচন্ড রোদে জমির মাটি গরম থাকে। ঐ অবস্থায় জমিতে সেচ দিলে চারার খুব ক্ষতি হয়। এইজন্য জমির মাটি ঠান্ডা থাকা অবস্থায় সেচ দেয়া ভালো। ১৫/২০ দিন পর চারা মাটিতে লেগে যায়, একটু বড়ও হয়। তখন গাছে ওষুধ এবং সার দেয়া শুরু করতে হয়। শুধু "ডায়াথেন এম-৪৫" এবং "রোভরাল" এই দুই প্রকার ওষুধ দিলেই চলে।
গাছকে তাড়াতাড়ি বৃদ্ধির জন্য "থিওভিট " ওষুধ দিতে হয়। ১০ লিটার পানিতে প্রতিটি ওষুধ ২ চা-চামচ করে মিশিয়ে সপ্রে করে দিতে হয়।
এ সময় মাটিতে জো হলে এবং আগাছা বেশি হলে নিড়ানী দিয়ে শুধু গাছের গোড়া এবং কোদাল দিয়ে সমস্ত জমি কুপিয়ে দিতে হয়। তারপর প্রতি বিঘা জমিতে ২০ কেজি হারে ডিএমপি সার শুধু গাছের সারির মধ্য দিয়ে ছিটিয়ে দিয়ে সেচ দিতে হবে।
সেচ দেয়ার দুই তিন দিন পর যে জায়গার চারাগুলো মারা গেছে সেই জায়গা পূরণ করতে হবে। যে চারাগুলো অতিরিক্ত থাকবে এবং প্রত্যেক সারিতে লক্ষ্য করতে হবে সেখানে চারার পরিমাণ বা ঘনত্ব বেশি সেই জায়গা থেকে চারপাশের মাটিসহ চারা তুলে খালি জায়গায় লাগিয়ে দিতে হবে। কাজটা করতে হবে বিকালে।
 
কয়দিন পর চারা যখন একটু বড় হবে তখন গাছের গোড়ায় মাটি টেনে দিতে হবে। এ সময় অনেক গাছে কুঁড়ি আসবে। কুঁড়িগুলো ভেঙ্গে দিতে হবে। বৃষ্টিপাত না হলে মাটি বেশি শুকানোর আগেই সেচ দিতে হবে। গাছ যত বড় হবে গাছে ওষুধ এবং সার দেয়ার পরিমাণও বাড়াতে হবে। এছাড়া গাছের গোড়ায় মাটি বেশি দিতে হবে।
এ সময় গাছে পোকার আক্রমণ শুরু হয় এবং আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। তাই এ সময় সপ্তাহে ২/৩ দিন ওষুধ দিহে হবে। বাজারে অনেক কীটনাশক ওষুধ পাওয়া যায়। ভালো মানের ওষুধ দিলে কাজ ভালো হয়।
 
==ব্যবহার==