নবদুর্গা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১০ নং লাইন:
 
এই দেবী হৈমবতী রূপে দেবতা দের গর্ব চূর্ণ করেছিলেন ।
 
মা দুর্গার নবশক্তির দ্বিতীয় রূপ ব্রহ্মচারিণী। এখানে ‘ব্রহ্ম’ শব্দের অর্থ হল তপস্যা। ব্রহ্মচারিণী অর্থাৎ তপশ্চারিণী--- তপ আচরণকারী। কথিত আছে যে---‘বেদস্তত্ত্বং তপো ব্রহ্ম’---বেদ, তত্ত্ব এবং তপ হল ‘ব্রহ্ম’ শব্দের অর্থ। দেবী ব্রহ্মচারিণীর রূপ- জ্যোতিতে পূর্ণ, অতি মহিমামণ্ডিত। তিনি ডান হাতে জপের মালা এবং বাঁ হাতে কমণ্ডলু ধারণ
করে আছেন।
 
পূর্বজন্মে যখন হিমালয়ের কন্যারূপে জন্মেছিলেন তখন তিনি নারদের পরামর্শে ভগবান শঙ্করকে পতিরূপে লাভ করার জন্য কঠিন তপস্যা করেন। সেই কঠিন তপস্যার জন্য তাঁকে তপশ্চারিনী বা ব্রহ্মচারিণী বলা হয়। তিনি সহস্র বর্ষ ধরে মাত্র ফল-মূলের আহার করে জীবন ধারণ করেছিলেন। শতবর্ষ তিনি শাক আহার করে জীবন নির্বাহ করেছিলেন। কিছুকাল কঠিন উপবাসে থেকে খোলা আকাশের নিচে বর্ষা ও গ্রীষ্মের দাবদাহে কাটিয়েছেন। এই কঠোর তপশ্চর্যার পরে তিন সহস্র বছর শুধুমাত্র গাছ থেকে মাটিতে ঝরে পড়া বেলপাতা আহার করে অহর্নিশ ভগবান শঙ্করের আরাধনা করেছেন। তারপর তিনি সেই শুষ্ক বেলপাতা আহার করাও পরিত্যাগ করেন। অতঃপর কয়েক সহস্র বছর নির্জলা, নিরাহারে থেকে তপস্যা করতে লাগলেন। পাতা (পর্ণ) খাওয়া পর্যন্ত পরিত্যাগ করায় তাঁর অন্য একটি নাম হয় ‘অপর্ণা’।
কয়েক সহস্র বছর এই তপস্যা করায় ব্রহ্মচারিণী দেবীর পূর্বজন্মের শরীর কৃশ-একদম ক্ষীণ হয়ে গেল। তিনি অতি কৃশকায় হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর এই দশা দেখে মা মেনকা অত্যন্ত দুঃখিত হলেন। তিনি তাঁকে এই কঠিন তপস্যা থেকে বিরত করার জন্য বললেন, ‘উ মা, না ওরে আর না!’ তখন থেকে দেবী ব্রহ্মচারিণীর পূর্বজন্মের আর এক নাম হয় ‘উমা’।
তাঁর তপস্যার কঠোরতায় ত্রিলোকে হাহাকার পড়ে গেল দেবতা, ঋষি, সিদ্ধগণ, মুণি সকলেই ব্রহ্মচারিণী দেবীর এই তপস্যাকে অভূতপূর্ব পুণ্যকাজ বলে তাঁকে প্রশংসা করতে লাগলেন। অবশেষে পিতামহ ব্রহ্মা তাঁকে সম্বোধন করে প্রসন্ন হয়ে আকাশবাণীর মাধ্যমে বললেন, হে দেবী! আজ পর্যন্ত কেউ এরূপ কঠোর তপস্যা করে নি। তোমার দ্বারাই এরূপ তপস্যা সম্ভব। তোমার এই অলৌকিক কাজে চতুর্দিকে ধন্য ধন্য রব উঠেছে। তোমার মনোষ্কামনা সর্বতোভাবে পূর্ণ হবে। ভগবান চন্দ্রমৌলি শিবকে তুমি পতিরূপে পাবে। এবার তুমি তপস্যায় বিরত হয়ে গৃহে ফিরে যাও। তোমার পিতা শীঘ্রই তোমাকে নিতে আসবেন।’
মা দুর্গার এই দ্বিতীয় রূপ ভক্ত এবং সিদ্ধদের অনন্ত ফল প্রদান করে। তাঁর উপাসনা দ্বারা মানুষের স্বভাবে তপ, ত্যাগ, বৈরাগ্য, সদাচার, সংযম বৃদ্ধি পায়। জীবনের কঠিন সংঘর্ষেও তাঁর মন কর্তব্যে বিচলিত হয় না। মা ব্রহ্মচারিণী দেবীর কৃপায় তাঁর সর্বদা সিদ্ধি ও বিজয় প্রাপ্তি হয়। দুর্গাপূজার দ্বিতীয় দিনে এঁর স্বরূপেরই আরাধনা করা হয়। এই দিন সাধকের মন ‘স্বাধিষ্ঠান চক্রে’ স্থিত হয়। এই চক্রে চিত্ত-প্রতিষ্ঠ যোগী তাঁর কৃপা ও ভক্তি লাভ করে।
{{অসম্পূর্ণ}}