কালবৈশাখী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Gangulybiswarup (আলোচনা | অবদান)
img+
Rinve (আলোচনা | অবদান)
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
৩ নং লাইন:
'''কালবৈশাখী''' এক ধরনের [[বজ্রঝড়]] যা সচরাচর এপ্রিল-মে ([[বৈশাখ]]) মাসে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]]] উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। স্থানীয়ভাবে এ বজ্রঝঞ্ঝা কালবৈশাখী নামেই অধিক সুপরিচিত। ‘কাল’ শব্দের অর্থ ঋতু, আবার কালো বর্ণকেও বোঝানো হয়ে থাকে। কালবৈশাখীকে কখনও কখনও ‘কালোবৈশাখী’ নামেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে যার অর্থ কালো বর্ণের বৈশাখী [[মেঘ]]। ঘন, কালো বর্ণের মেঘ ও ঝঞ্ঝা এবং এর ধ্বংসাত্মক প্রকৃতির জন্যই এ নামকরণ। ধ্বংসকারীকে ‘কাল’ বলেও ডাকা হয়। [[গ্রীষ্ম]] ঋতুর সঙ্গে হাত ধরাধরি করে এ ঝড়ের আগমন ঘটে। কালবৈশাখীর বায়ুর গড় গতিবেগ ঘন্টায় ৪০ থেকে ৬০ কিমি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ গতিবেগ ঘন্টায় ১০০ কিমি-এর বেশিও হতে পারে। কালবৈশাখীর স্থায়িত্বকাল স্বল্পতর, তবে কখনও কখনও এ ঝড় এক ঘন্টারও বেশিকাল স্থায়ী হয়।
==কারণ==
স্থানীয়ভাবে কোনো এলাকার ভূ-পৃষ্ঠ অত্যধিক [[[তাপমাত্রা]] অথবা অন্যান্য কারণে উত্তপ্ত হয়ে উঠলে [[বায়ুমন্ডল]] যথেষ্ট অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে এবং এ ঝড়ের জন্ম হয়। উত্তপ্ত, হাল্কা ও অস্থির বায়ু উর্দ্ধমুখী উঠতে থাকে এবং সমতাপীয় সম্প্রসারণ প্রক্রিয়ায় [[বায়ুস্তর]] সম্পৃক্ত বিন্দুতে না পৌঁছা পর্যন্ত শীতল হতে থাকে এবং কিউমুলাস মেঘ সৃষ্টি হয়। বায়ুমন্ডলের অস্থিরতা অব্যাহত থাকলে কিউমুলাস মেঘ উল্লম্বভাবে কিউমুলোনিম্বাস মেঘ গঠন করে এবং পরবর্তী সময়ে বজ্রঝঞ্ঝার সৃষ্টি হয় যা সবার কাছে কালবৈশাখী নামে পরিচিত। সাধারণ বর্ষণের সঙ্গে এ ঝড়ের মূল পার্থক্য হচ্ছে, এ ঝড়ের সঙ্গে সবসময়ই বিদ্যুৎ চমকায় ও বজ্রপাত হয়। এটি একটি তাপগতিক প্রক্রিয়া যেখানে ঘনীভবনের সুপ্ত তাপ দ্রুত ঊর্ধারোহী বায়ুস্রোতের [[গতিশক্তি]]তে রূপান্তরিত হয়।
 
 
১১ নং লাইন:
কালবৈশাখীকে বায়ুপুঞ্জ বজ্রঝড় অথবা পরিচলনগত বজ্রঝড় নামেও আখ্যায়িত করা যায়। বাংলাদেশে কালবৈশাখী সৃষ্টির প্রধান কারণ হচ্ছে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে আসা উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু যা উর্ধ্বে ২ কিলোমিটার পর্যন্ত আরোহন করে থাকে এবং এ উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু উত্তর-পশ্চিম এবং পশ্চিম দিক থেকে আসা অপেক্ষাকৃত শীতল ও শুষ্ক বায়ুর সঙ্গে মিলিত বা মুখোমুখি হয়। উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু ছোটনাগপুর মালভূমিতে সৃষ্টি হয়ে পূর্বদিকে ধাবিত হয়ে বাংলাদেশের সীমায় উপস্থিত হয়। বিপরীতধর্মী ও অসম এ দু বায়ুপ্রবাহের মুখোমুখি হওয়ার ফলে প্রাক-কালবৈশাখীর সৃষ্টি হয়।
 
কালবৈশাখীর জীবনচক্রকে তিনটি ধাপ বা পর্যায়ে বিভক্ত করা যায় যেগুলি ঊর্ধগামী অথবা নিম্নগামী বায়ুস্রোতের মাত্রা এবং গতিবিধি দ্বারা নির্ণীত হয়ে থাকে। কালবৈশাখীর পর্যায়গুলি হচ্ছে: ১) কিউমুলাস বা ঘনীপূঞ্জীভবন পর্যায়, ২) পূর্ণতা পর্যায় এবং ৩) বিচ্ছুরণ পর্যায়। একটি কালবৈশাখী পূর্ণতা লাভের ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট পর এর তীব্রতা হ্রাস পেতে থাকে এবং বিচ্ছুরণ পর্যায়ে প্রবেশ করে। অতি দ্রুত হারে তাপমাত্রা হ্রাস, মেঘে প্রচুর জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি এবং বায়ুর পুঞ্জীভূত ঊর্ধ্বচলনের দরুণ কালবৈশাখীর সঙ্গে শিলাপাত একটি সাধারণ ঘটনা। শিলার আকার নির্ভর করে মেঘের ভেতরে বায়ুর উর্ধ্ব চলাচল হার এবং এর উচ্চ জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতার ওপর। কালবৈশাখীর সময় অঝোড় ধারায় বৃষ্টিপাত হয়। বিদ্যুৎ চমকানো এবং বজ্রপাতও কালবৈশাখীর সাধারণ ঘটনা। মধ্যাহ্নের পরে অপরাহ্নে ভূ-পৃষ্ঠ সর্বাধিক উত্তপ্ত হয় এবং বায়ুমন্ডলে পরিচলন স্রোত সৃষ্টিতে ভূ-পৃষ্ঠের উষ্ণতা প্রধান ভূমিকা পালন করায় কালবৈশাখী সাধারণত শেষ বিকেলে শুরু হয়। বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে শেষ বিকেলে এবং সন্ধ্যার পূর্বে কালবৈশাখীর আগমন ঘটে, কিন্তু পূর্বাঞ্চলে সাধারণত সন্ধ্যার পরে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে পূর্বদিকে এবং দক্ষিণ-পুর্ব দিক থেকে আগমন করে থাকে। এ ঋতুতে সকাল বেলাটা মোটামুটি শান্ত থাকে।
 
==তথ্যসূত্র ==
{{সূত্রতালিকা}}