বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্প্রসারণ, পাতা তৈরি, বিষয়বস্তু যোগ
৯ নং লাইন:
সারাদিন অ্যাম্বাসাডর গাড়ি ঠেঙিয়ে সন্ধের পর আমরা পাঁচজন উঠলাম ইসলামপুরের সার্কিট হাউসে। মাঝে দু-তিন জায়গায় থামতে হয়েছিল গাড়ির ও আমাদের খাবার সংগ্রহের জন্যে। আর আমাদের অবাক করে দিয়ে মিস্টার হেস্টিংস নিজেও কিছুক্ষণ গাড়ি চালালেন ! রাতে একটা ঘরে সাহেব ও মেমসাহেব এবং পাশের ঘরে আমরা তিনজন। পরদিন সকালেই হিলি সীমানায় খানিক সমীক্ষা করতে যাওয়া হল। কিন্তু অবস্থা খুবই করুণ ছিল, কেননা তখনই শরণার্থীদের ভিড় বেড়েছে ওখানে ! যাঁদের তখনই সহায়তা দরকার।সব বুঝে সংস্থার প্রধান তাড়াতাড়িই কলকাতায় ফিরে এলেন পরবর্তী পদক্ষেপ করার জন্যে।
 
১৯৭১ খ্রিস্টা্ব্দের এপ্রিল মাসে তপন মণ্ডল, জিতেন সাহাসহ আমরা চারজন জাতীয় সেবা প্রকল্পের অধীনে খ্রিস্টান এজেন্সি ফর সোশ্যাল অ্যাকশন সংস্থায় শরণার্থীদের সেবা করার কাজে বনগাঁ সীমান্তে যাই। বনগাঁয় আমরা যশোহর রোডের ধারে 'সলভেশন আর্মি'র বাগানবাড়িতে ঘাঁটি করি। প্রথমে আমাদের কাজ ছিল তখন যেসব শরণার্থী শিবির চালু হয়েছে সেখানে ডাক্তারদের সাহায্য করা এবং শিশু ও রোগীদের নন-ফ্যাট ড্রাই মিল্ক সরবরাহ করা। পরে আরো অনেক জিনিস, যেমন, জামাকাপড়, চাদর, মাদুর, তাঁবু ইত্যাদি বিলি করা হয়।
 
বিভিন্ন সময়ে ডাক্তারদের বিভিন্ন দল আমাদের সঙ্গে শরণার্থীদের সেবায় যুক্ত ছিলেন। কেরালা, তামিলনাডু, অন্ধ্র প্রদেশ, অসম, ওডিশা এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে ডাক্তাররা আসেন। তাঁদের মধ্যে কেরালা থেকে এসেছিলেন ডা. জেকভ, কলকাতা থেকে ডা. গোপাল মুখার্জি, ডা. মাইতি এবং কালীঘাটের ডা. মুখার্জি।
পরবর্তীকালে সারা বনগাঁ মহকুমায় ১৫টা শরণার্থী শিবির সংগঠিত হয় সরকারিভাবে। সেখানে কার্ড বানিয়ে রেশনিং অথবা রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হত সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার তত্ত্বাবধানে। ১৫টা শরণার্থী শিবিরের মধ্যে গাঁড়াপোতা, বাগদা, হেলেঞ্চা, মামাভাগনা, বয়রা, আংরাইল ইত্যাদি ছিল। আমাদের কর্মীসংখ্যাও আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। কলকাতা থেকে প্রদীপ ড্যানিয়েল, ঢাকার জ্যোতি হাজরা, খুলনার অজিত বৈরাগী, পান্নলাল ও হীরালাল সাহা সিলেটের সলোমন মণ্ডল, পাবনার অবকাশ বারুই ও প্রদীপ বৈদ্য, উত্তর ২৪ পরগনার গৌরাঙ্গ সরকার ও রাজু ঘোষ এবং আরো অনেকে। আর বনগাঁয় আমাদের প্রধান ছিলেন শ্যামনগরের বিবেকানন্দ যশ।
 
পরবর্তীকালে সারা বনগাঁ মহকুমায় ১৫টা শরণার্থী শিবির সংগঠিত হয় সরকারিভাবে। সেখানে কার্ড বানিয়ে রেশনিং অথবা রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হত সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার তত্ত্বাবধানে। ১৫টা শরণার্থী শিবিরের মধ্যে গাঁড়াপোতা, বাগদা, হেলেঞ্চা, মামাভাগনা, বয়রা, আংরাইল ইত্যাদি ছিল। আমাদের কর্মীসংখ্যাও আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। কলকাতা থেকে প্রদীপ ড্যানিয়েল, ঢাকার জ্যোতি হাজরা, খুলনার অজিত বৈরাগী, পান্নলাল ও হীরালাল সাহা সিলেটের সলোমন মণ্ডল, পাবনার অবকাশ বারুই ও প্রদীপ বৈদ্য, উত্তর ২৪ পরগনার গৌরাঙ্গ সরকার ও রাজু ঘোষ এবং আরো অনেকে। অতিথি সমাজসেবী কামনাশশী দে আমাদের সঙ্গে ছিলেন, আর বনগাঁয় আমাদের প্রধান ছিলেন অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি, শ্যামনগরের বিবেকানন্দ যশ।
 
বনগাঁর সলভেশন আর্মির চত্বরে প্রথমে ৫০ এবং পরে ৭৫ শয্যার বুলেট ইনজুরির চিকিৎসার জরুরি হাসপাতাল আমাদের তত্বাবধানে তৈরি হয়েছিল।কারণ তখন যুদ্ধ ভয়ংকর আকার নিয়েছে। প্রথম দিকে এলএমজি আর মর্টারের আওয়াজে রাতে ঘুম হতনা ! পরে আস্তে আস্তে বেনাপোল, ঝিকরগাছা, যশোহর দখল হওয়ার পর আমরা একটু স্বস্তি পাই !