বাংলাদেশ সেনাবাহিনী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

[অপরীক্ষিত সংশোধন][অপরীক্ষিত সংশোধন]
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
ট্যাগ: ২০১৭ উৎস সম্পাদনা
SRS 00 (আলোচনা | অবদান)
৭১ নং লাইন:
১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পথিকৃৎ, ''১ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট'' এর পতাকা উত্তোলন করা হয়। ক্যাপ্টেন গনি ছিলেন এই ব্যাটালিয়নের সবকিছুর প্রধান তবে প্রথম কমান্ডিং অফিসার ছিলেন ''লেফটেন্যান্ট কর্নেল ভি জে ই প্যাটারসন''।<ref name=":0" /> প্রথম ব্যাটালিয়নের গঠনের পর দ্বিতীয় ব্যাটালিয়ন স্থাপনের অনুমতি দেয়া হয় এবং ক্যাপ্টেন গনি সৈন্য সংগ্রহ শুরু করেন। ৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯ ''২য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে''র পতাকা উত্তোলিত হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের আগে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মোট ৮টি ব্যাটালিয়ন গঠিত হয়।<ref name=":0" />
 
=== ১৯৭১: স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্ম===
=== গঠন/প্রতিষ্ঠা ===
[[File:Victory Day Parade, Dhaka, Bangladesh 2011.jpg|thumb|বাংলাদেশ সেনাবাহিনী]]
{{further information|বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ}}
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী [[১৯৭১]] খ্রিস্টাব্দে [[বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ]] চলাকালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রাথমিকভাবে [[ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট]]-এর বাঙালি সৈন্য ও অফিসার এবং [[পাকিস্তান সেনাবাহিনী| পাকিস্তান সেনাবাহিনীর]] অন্যান্য অংশ হতে যারা স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন তাদের সমন্বয়ে [[মুক্তিবাহিনী]] গঠিত হয়।
 
[[এপ্রিল ১১|১১ এপ্রিল]] (১৯৭১) বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী(অস্থায়ী) [[তাজউদ্দীন আহমদ]] স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে ভাষণ দেন৷ ঐ ভাষণে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবকাঠামো গঠনের কথা উল্লেখ করে [[এম. এ. জি. ওসমানী|এম. এ. জি. ওসমানীকে]] বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে ঘোষণা দেন৷[১] উল্লেখ্য যে ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জারী ও সরকার গঠন করা হয় এবং পরবর্তীকালে ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার শপথ গ্রহণ করে। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের [[এপ্রিল ১৭|১৭ এপ্রিল]] গঠিত হয় [[মুজিবনগর সরকার]], ওসমানীকে করা হয় মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে [[শেখ মুজিবুর রহমান]] এর নেতৃত্বাধীন [[বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ]] জয়লাভ করে। কিন্তু ক্ষমতায় থাকা সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায় যার ফলস্বরূপ অসন্তোষ ছড়িয়ে পরে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী [[অপারেশন সার্চলাইট]] শুরুর মধ্য দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের বেসামরিক জনগণের উপর ঝাঁপিয়ে পরে।<ref name=":1">{{Cite web|url=http://en.banglapedia.org/index.php?title=War_of_Liberation,_The|title=War of Liberation, The - Banglapedia|website=en.banglapedia.org|language=en|access-date=2017-12-08}}</ref> and Sheikh Mujibur Rahman declared the independence of Bangladesh.<ref>{{Cite web|url=http://en.banglapedia.org/index.php?title=Proclamation_of_Independence|title=Proclamation of Independence - Banglapedia|website=en.banglapedia.org|language=en|access-date=2017-12-08}}</ref> পাকিস্তানি বাহিনী এবং এর সহযোগী আধাসামরিক বাহিনী হাজার হাজার সামরিক-বেসামরিক মানুষ হত্যা করে। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে শেখ মুজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষনা প্রচারিত হয়। মার্চ মাসেই ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালি সৈন্যরা বিদ্রোহ করে এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। পরবর্তীতে ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর) সৈন্যরাও সশস্ত্র প্রতিরোধে অংশ নেয়। সামরিক বাহিনীর পাশাপাশি বেসামরিক জনগণ মিলে গড়ে তোলে [[মুক্তিবাহিনী]]। ১৭ এপ্রিল প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয় এবং কর্ণেল (অব:) [[মহম্মদ আতাউল গণি ওসমানী]]কে বাংলাদেশ বাহিনীর নেতৃত্বদানের দায়িত্ব দেয়া হয়।
ওসমানীর নির্দেশনা অনুযায়ী সমগ্র বাংলাদেশকে [[মুক্তিযুদ্ধের সেক্টরসমূহ|১১টি সেক্টরে]] ভাগ করা হয়। প্রতিটি সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার হিসেবে এক একজন সেনাবাহিনীর অফিসারকে নিয়োগ দেয়া হয়। বিভিন্ন সেক্টর ও বাহিনীর মাঝে সমন্বয়সাধন করা, রাজনৈতিক নেতৃত্বের সাথে যোগাযোগ রাখা, অস্ত্রের যোগান নিশ্চিত করা, গেরিলা বাহিনীর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা - প্রভৃতি কাজ সাফল্যের সাথে পালন করেন ওসমানী। [[এপ্রিল ১২|১২ এপ্রিল]] থেকে এম. এ. জি. ওসমানী মন্ত্রীর সমমর্যাদায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন৷ রণনীতির কৌশল হিসেবে প্রথমেই তিনি সমগ্র বাংলাদেশকে ভৌগোলিক অবস্থা বিবেচনা করে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে নেন এবং বিচক্ষণতার সাথে সেক্টরগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে থাকেন৷ এই বাহিনীর গেরিলা যুদ্ধের জন্য নিয়জিত অংশকে বলা হতো গণবাহিনী যা সাধারণ জনগণ হতে বাছাইকৃত লোকবল নিয়ে গঠিত হয়। এবং নিয়মিত যুদ্ধের জন্য ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইপিআর ইত্যাদি বাহিনীর লোকবল নিয়ে একটি নিয়মিত বাহিনী গোড়ে তোলা হয়। এই নিয়মিত বাহিনীর জন্য তিনটি ব্রিগেড গঠন করা হয়। সেগুলো হল:
 
* জেড ফোর্স - অধিনায়ক ছিলেন মেজর [[জিয়াউর রহমান]] এবং এটি গঠিত হয়েছিল ১ম, ৩য় এবং ৮ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট নিয়ে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ১৭ই জুলাই।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|title=মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর ও ফোর্স|url=https://blog.mukto-mona.com/2010/01/11/4443/|publisher=মুক্তমনা|accessdate=2 February 2017}}</ref>
১৯৭১ সালের ১১-১৭ জুলাই সেক্টর কমান্ডার্স কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। এই কনফারেন্সে লে: কর্ণেল আব্দুর রবকে চিফ অফ স্টাফ, গ্রুপ ক্যাপ্টেন একে খন্দকারকে ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ এবং মেজর এ আর চৌধুরীকে অ্যাসিস্ট্যান্ট চিফ অফ স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে বাংলাদেশ বাহিনী কমান্ড প্রতিষ্ঠিত হয়। কনফারেন্সে বিভিন্ন সেক্টরের গঠন এবং বিন্যাস, সেক্টরের সমস্যা, বিভিন্ন কৌশলগত দিক এবং বাংলাদেশ বাহিনীর জনবল বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়। এই কনফারেন্সে বাংলাদেশকে এগারটি সেক্টরে ভাগ করা হয় এবং প্রত্যেক সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার নিয়োগ দেয়া হয়।<ref name=":0" /><ref name=":1" /> সেক্টরের সকল কর্মকাণ্ড সেক্টর কমান্ডার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হত। নিয়ন্ত্রণের সুবিধার্থে কিছু সেক্টরকে একাধিক সাব-সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল। ১০ নম্বর সেক্টর ছিল সরাসরি বাংলাদেশ বাহিনীর প্রধানের অধীনস্ত এবং এই সেক্টরের জনবল ছিল প্রধানত নৌ কমান্ডোগণ।<ref name=":0" />
* কে ফোর্স - অধিনায়ক ছিলেন [[খালেদ মোশাররফ]] এবং এটি গঠিত হয়েছিল ৪র্থ, ৯ম এবং ১০ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট নিয়ে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ৩০শে আগস্ট।
 
* এস ফোর্স - অধিনায়ক ছিলেন মেজর [[কে এম সফিউল্লাহ|সফিউল্লাহ]] এবং এটি গঠিত হয়েছিল ২য় এবং ১১শ ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট নিয়ে ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ২৪শে সেপ্টেম্বর।
কনফারেন্সের পর বাংলাদেশ বাহিনী একটি দীর্ঘমেয়াদী গেরিলা যুদ্ধ শুরু করে। পরবর্তীতে বাহিনীকে আবার পুনর্গঠন করা হয় এবং তিনটি ব্রিগেড আকারের সৈন্যদলে ভাগ করা হয়:<ref name=":0" />
* ''কে ফোর্স'', মেজর খালেদ মোশাররফ এর নেতৃত্বাধীন, ৪, ৯ ও ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট নিয়ে গঠিত।
* ''এস ফোর্স'', মেজর কেএম শফিউল্লাহর নেতৃত্বাধীন, ২ ও ১১ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট নিয়ে গঠিত।
* ''জেড ফোর্স'', মেজর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন, ১, ৩ ও ৮ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট নিয়ে গঠিত।
 
২১ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ বাহিনীর সামরিক সদস্যদের নিয়ে। প্রতিষ্ঠার পর মুক্তিবাহিনীর গেরিলা যুদ্ধের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী প্রথাগত যুদ্ধ শুরু করে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ এবং ভারতের যৌথ বাহিনীর কাছে পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে ৯ মাসব্যাপী চলা স্বাধীনতা যুদ্ধের অবসান ঘটে এবং স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়।
 
=== ১৯৭১ পরবর্তী: বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উত্থান ===