মহাস্থানগড়: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
দৈনিক প্রথম আলোর ইউআরএল সংশোধন
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
উদ্ধৃতি টেমপ্লেটের তারিখ সংশোধন
৩৪ নং লাইন:
}}
 
'''মহাস্থানগড়''' [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] একটি অন্যতম প্রাচীন পুরাকীর্তি। প্রসিদ্ধ এই নগরী&nbsp;ইতিহাসে '''[[পুণ্ড্রবর্ধন]]''' বা '''পুণ্ড্রনগর''' নামেও পরিচিত ছিল।<ref>Hossain, Md. Mosharraf, ''Mahasthan: Anecdote to History'', 2006, Preface, Dibyaprakash, 38/2 ka Bangla Bazar, Dhaka, ISBN 984 483</ref><ref name = "Brochure">Brochure: ''Mahasthan – the earliest city-site of Bangladesh'', published by the Department of Archaeology, Ministry of Cultural Affairs, Government of the People’s Republic of Bangladesh, 2003</ref><ref name="Majumdar 1971, p. 10">Majumdar, Dr. R.C., ''History of Ancient Bengal'', First published 1971, Reprint 2005, p. 10, Tulshi Prakashani, Kolkata, {{আইএসবিএন|81-89118-01-3}}.</ref> এক সময় মহাস্থানগড় বাংলার রাজধানী ছিল। [[যিশু]] খ্রিষ্টের জন্মেরও আগে অর্থাৎ প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্বে এখানে সভ্য জনপদ গড়ে উঠেছিল প্রত্নতাত্ত্বিক ভাবেই তার প্রমাণ মিলেছে। ২০১৬ সালে এটি [[দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা|সার্কের]] সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে ঘোষণা হয়।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://saarcculture.org/2016/06/28/saarc-cultural-capital-bogra-bangladesh-inauguration/|title=SAARC Cultural Capital – Bogra, Bangladesh – Inauguration|last=|first=|date=|website=[[সার্কে]]|publisher=|access-date=25 January, 2017}}</ref><ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|url=http://www.prothomalo.com/bangladesh/article/1027291/%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%95-%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%80-%E0%A6%B9%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%BE-%E0%A6%AE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%97%E0%A7%9C|title=সার্কের সাংস্কৃতিক রাজধানী হলো মহাস্থানগড়|last=|first=|date=২৪ নভেম্বর, ২০১৬|work=|newspaper=[[দৈনিক প্রথম আলো]]|access-date=17 December, 2016|via=}}</ref>
 
প্রাচীর বেষ্টিত এই নগরীর&nbsp;ভেতর রয়েছে বিভিন্ন আমলের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।&nbsp;কয়েক শতাব্দী পর্যন্ত এ স্থান পরাক্রমশালী [[মৌর্য্য সাম্রাজ্য|মৌর্য]], [[গুপ্ত সাম্রাজ্য|গুপ্ত]], [[পাল সাম্রাজ্য|পাল]] ও [[সেন রাজবংশ|সেন]] শাসকবর্গের প্রাদেশিক রাজধানী ও পরবর্তীকালে হিন্দু সামন্ত রাজাদের রাজধানী ছিল। তৃতীয় খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে পঞ্চদশ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত অসংখ্য হিন্দু রাজা ও অন্যান্য ধর্মের রাজারা রাজত্ব করেন।&nbsp;মহাস্থানগড়ের অবস্থান [[বগুড়া|বগুড়া জেলার]] [[শিবগঞ্জ উপজেলা|শিবগঞ্জ উপজেলার]] অন্তর্গত।<ref name="Majumdar 1971, p. 10"/> [[বগুড়া]] শহর থেকে প্রায় ১৩ কি.মি. উত্তরে [[করতোয়া নদী|করতোয়া নদীর]] পশ্চিম তীরে গেলে&nbsp;এই শহরের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়৷।
৪১ নং লাইন:
[[File:Mahasthanghor bogra.jpg|thumb|right|250px|মহাস্থানগড় [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] একটি প্রাচীনতম প্রত্নতাত্ত্বিক নগরী। খ্রিষ্টপূর্ব ৭০০ অব্দে এটি [[পুণ্ড্র রাজ্য|পুণ্ড্র রাজ্যের]] প্রাচীন রাজধানী ছিল।]]
 
বিখ্যাত চীনা পরিব্রাজক [[হিউয়েন সাঙ]] ৬৩৯ থেকে ৬৪৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে পুন্ড্রনগরে এসেছিলেন। ভ্রমণের ধারাবিবরণীতে তিনি তখনকার প্রকৃতি ও জীবনযাত্রার উল্লেখ করে বর্ণনা দেন। বৌদ্ধ শিক্ষার জন্য প্রসিদ্ধ হওয়ায় [[গণচীন|চীন]] ও [[তিব্বত]] থেকে ভিক্ষুরা তখন&nbsp; মহাস্থানগড়ে আসতেন লেখাপড়া করতে৷ এরপর তাঁরা বেরিয়ে পড়তেন [[দক্ষিণ এশিয়া|দক্ষিণ]] ও [[পূর্ব এশিয়া|পূর্ব এশিয়ার]] বিভিন্ন দেশে। সেখানে গিয়ে তাঁরা [[বৌদ্ধ ধর্ম|বৌদ্ধ ধর্মের]] শিক্ষার বিস্তার ঘটাতেন৷<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://www.dw.com/bn/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%AC%E0%A6%9A%E0%A7%87%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%A8-%E0%A6%A8%E0%A6%97%E0%A6%B0%E0%A7%80-%E0%A6%AE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%97%E0%A7%9C/a-16197724|title=বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরাতন নগরী মহাস্থানগড়|last=বর্মন|first=সঞ্জীব|date=২৮ আগস্ট, ২০১২|website=|publisher=[[ডয়চে ভেলে বাংলা]]|language=|access-date=২৬ জানুয়ারি, ২০১৭}}</ref>
 
[[সেন রাজবংশ|সেন]] বংশের শেষ রাজা [[লক্ষ্মণসেন]] ([[১০৮২]]-[[১১২৫]]) যখন [[গৌড়|গৌড়ের]] রাজা ছিলেন তখন এই [[গড়]] অরক্ষিত ছিল। মহাস্থানের রাজা ছিলেন নল যার বিরোধ লেগে থাকত তার ভাই নীল এর সাথে। এসময় [[ভারত|ভারতের]] [[দাক্ষিণাত্য|দাক্ষিণাত্যের]] [[শ্রীক্ষেত্র]] নামক স্থান থেকে এক অভিশপ্ত [[ব্রাহ্মণ (বর্ণ)|ব্রাহ্মণ]] এখানে অসেন পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে। তিনি পরশু বা কুঠার দ্বারা মাতৃহত্যার দায়ে অভিশপ্ত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনিই এই দুই ভাইয়ের বিরোধের অবসান ঘটান এবং রাজা হন। এই ব্রাহ্মণের নাম ছিল রাম। ইতিহাসে তিনি [[পরশুরাম]] নামে পরিচিত। কিংবদন্তি অনুযায়ী তিনি ছিলেন একজন অত্যাচারী।
১২৫ নং লাইন:
== খননকার্য ==
[[File:View of Mahasthangarh.jpg|thumb|250px]]
মহাস্থানগড়ের প্রথাগত প্রত্নতাত্ত্বিক খননকাজ [[আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার]] কে. এন. দীক্ষিত এর তত্ত্বাবধানে ১৯২৮-২৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম শুরু করা হয়। তখন জাহাজঘাটার আশেপাশে মুনির ঘোন আর [[বৈরাগীর ভিটা]] পরিদর্শন করা হয়। বৈরাগীর ভিটা আর [[গোবিন্দ ভিটা|গোবিন্দ ভিটায়]] ১৯৩৪-৩৬ খ্রিষ্টাব্দে খননের কাজ স্থগিত করা হয়। ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে প্রত্নতাত্ত্বিক খননে সন্ধান মেলে [[ব্রাহ্মী লিপি|ব্রাহ্মী লিপির]]। সেই লিপিতে পুণ্ড্রনগরের প্রাদেশিক শাসক সম্রাট অশোক দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষকে রাজভান্ডার থেকে খাদ্যশস্য ও অর্থ সহায়তা প্রদানের নির্দেশ দেন। ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে মাজার, [[পরশুরামের প্রাসাদ]], [[মানকালীর ধাপ]], [[জিয়ৎ কুণ্ড]] ও উত্তরপাশের প্রাচীরের নিকটে খননকাজ চালানো হয়। পূর্ব ও উত্তরপাশের রক্ষাপ্রাচীরে পরবর্তীধাপের খননকাজ বিক্ষিপ্তভাবে চালানো হয় যদিও তখনও চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|url=http://www.thedailystar.net/news-detail-91347|title=Digging deep into history|last=|first=|date=6 June, 2009|work=|newspaper=[[দ্য ডেইলি স্টার (বাংলাদেশ)|দ্য ডেইলি স্টার]]|language=en|access-date=25 January, 2017|via=}}</ref>
 
এসব উৎখননের প্রাথমিক প্রতিবেদন ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়। প্রায় দু’দশক পর ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে খননকাজ পুনরায় শুরু করা হয় এবং ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় প্রতি বছরই খননকাজ চলতে থাকে। এ সময় খননকাজ মাজারের নিকটবর্তী এলাকা এবং উত্তর ও পূর্ব দিকের রক্ষা-প্রাচীর সংলগ্ন অংশে সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু এ পর্যায়ে সম্পন্ন কাজের পরিমাণ এলাকাটির বিশালত্বের তুলনায় খুবই নগণ্য ছিল। এ স্থানটির ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক অনুক্রম এখনও অজ্ঞাত। এ প্রত্নস্থল ও অঞ্চলের প্রাচীন ইতিহাস পুনর্গঠন এবং প্রাচীন নগরটির সংগঠন সম্পর্কে অবগত হওয়ার জন্য একটা ব্যাপক অনুসন্ধান কাজ পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘকাল ধরে অনুভূত হচ্ছিল। ফলে বাংলাদেশ ও [[ফ্রান্স|ফ্রান্সের]] মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির (১৯৯২) অধীনে ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিকে [[বাংলাদেশী]] ও [[ফরাসি ভাষা|ফরাসি]] প্রত্নতাত্ত্বিকবিদগণ একটি যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করে। তখন থেকে পূর্ব দিকের প্রতিরক্ষা প্রাচীরের মধ্যভাগ সন্নিহিত স্থানে প্রতিবছর প্রত্নতাত্ত্বিক উৎখনন কাজ পরিচালিত হতে থাকে। ইতঃপূর্বে সুরক্ষিত নগরের বাইরে&nbsp;[[ভাসুবিহার]],&nbsp;বিহার ধাপ,&nbsp;[[মঙ্গলকোট]]&nbsp;ও গোদাইবাড়ির ন্যায় কয়েকটি স্থানেও বাংলাদেশের&nbsp;প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর&nbsp;কর্তৃক খননকার্য পরিচালিত হয়েছে। নগরটিতে উৎখননকালে কয়েকটি স্থানে প্রত্নস্থলের মূল মাটি পর্যন্ত খনন করা হয়েছে। এর মধ্যে ফ্রান্স-বাংলাদেশ মিশন কর্তৃক পরিচালিত সাম্প্রতিক উৎখনন ১৮টি নির্মাণ স্তর উন্মোচন করেছে। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে অদ্যাবধি (ফ্রান্স-বাংলাদেশ উদ্যোগসহ) বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত উৎখননের ফলে নিম্নবর্ণিত সাংস্কৃতিক অনুক্রম উদ্ঘাটিত হয়েছে।
১৬৯ নং লাইন:
[[বগুড়া]] থেকে ৭ কিলোমিটার উত্তরে এবং মহাস্থানগড় থেকে সামান্য উত্তরে [[গোবিন্দ ভিটা|গোবিন্দ ভিটার]] ঠিক বিপরীত দিকে অবস্থিত এই জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠিত হয় [[১৯৬৭]] সালে। প্রথম দিকে ৩ একর জায়গার উপর জাদুঘরের মূল অংশটি থাকলে নানা সময়ে সম্প্রসারিত হয়ে বর্তমানে এর পরিধি দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ একরে।
 
মহাস্থান গড় খননের ফলে [[মৌর্য রাজবংশ|মৌর্য]], [[গুপ্ত সাম্রাজ্য|গুপ্ত]], [[পাল রাজবংশ|পাল]], [[সেন রাজবংশ|সেন]] ও অন্যান্য রাজবংশের হাজার বছরের পুরানো অসংখ্য স্মৃতিচিহ্ন [[সোনা]], [[রুপা]], [[লোহা]], [[ব্রোঞ্জ]], [[পাথর]], [[কাঁসা|কাঁসাসহ]] বিভিন্ন মূল্যবান ধাতব পদার্থ, পোড়ামাটির তৈরি মূর্তি, কালো পাথরের মূর্তি, বেলে পাথরের মূর্তি, মাটি দিয়ে তৈরি খোদাই করা ইট, স্বর্ণবস্তু, বিভিন্ন শিলালিপি, আত্মরক্ষার জন্য ধারালো অস্ত্র, নিত্যপ্রয়োজনীয় তৈজসপত্র ও নানা ধরনের প্রাচীন অলংকারসহ ইত্যাদি সামগ্রী পাওয়া গেছে যা গড়ের উত্তরে অবস্থিত [[জাদুঘর|জাদুঘরে]] সংরক্ষিত আছে। মহাস্থান গড় ছাড়াও আরও বিভিন্ন স্থানের [[প্রত্নতাত্ত্বিক]] নিদর্শন এখানে সংরক্ষিত আছে।<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|url=http://archive.ittefaq.com.bd/index.php?ref=MjBfMDFfMDNfMTRfMV8zNF8xXzk4MjY1|title=প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর, মহাস্থান|last=|first=|date=|work=|newspaper=[[দৈনিক ইত্তেফাক]]|access-date=25 January, 2017|via=}}</ref>
 
=== খোদার পাথর ভিটা ===