আলবের্তো কোর্দা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Salahuddin Ahmed Azad (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
Salahuddin Ahmed Azad (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১৩ নং লাইন:
 
== প্রারম্ভিক জীবন ==
কোর্দা (পুরো নামঃ আলবের্তো দিয়ায গুতিয়েরেয) ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯২৮ খৃষ্টাব্দে [[হাভানা]], [[কিউবা|কিউবায়]] জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছবি তোলার হাতে খড়ি নেন তাঁর পিতার কোডাক ৩৫ মিলিমেটার ক্যামেরায়, যা দিয়ে তিনি তাঁর মেয়ে বন্ধুর ছবি তোলা শুরু করেন। কোর্দার পিতা ছিলেন একজন রেলপথ কর্মচারী। একজন আলোকচিত্র শিল্পীর সহকারী হিসেবে কাজ নেয়ার আগে কোর্দা বিভিন্ন ধরনে কাজ করেন। কোর্দার আলকচিত্র শিল্পী জীবনের শুরু হয় ভোজ, খ্রিষ্ট ধর্মে দীক্ষিদানোৎসব ও বিবাহ অনুষ্ঠানের ছবি তোলার মধ্য দিয়ে। ছবি তুলে তিনি দৌড়ে তাঁর কর্মশালায় ফিরে ছবিগুলো পরিস্ফুট করে আবার অনুষ্ঠানে ফিরে আসতেন সেগুলো স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে বিক্রি করতে। শুরুতে কোর্দার ছবি ছিল খুবই নিম্নমানের, কয়েক মাস পর ছবিগুলো ঘোলা হয় যেত এবং কাগজ হয়ে যেত হলদেটে। ১৯৫৩ সালে তিনি লুইস পিয়ার্স নামের এক আলোকচিত্র শিল্পীর সাথে যৌথভাবে নিজস্ব কর্মশালা স্থাপন করেন। সেখানে তিনি সুযোগ পান তাঁর ছবির মান উন্নয়ন করার। তিনি শেখেন কিভাবে উপযুক্ত রাসায়নিক দ্রব্য এবং সঠিক সময়ের স্থিতিকাল ব্যবহারের মাধ্যমে ছবির হলদেটে ভাগ রোধ করা যায়।
 
প্রথম দিকে কোর্দা ও লুইস বিভিন্ন ধরনের কাজ করেন যেমন ফ্যাশন ও বিজ্ঞাপন ক্ষেত্রে। ব্যবসা সচল রাখতে বেশীরভাগ ছবিই তুলতেন তাঁর ব্যবসার অংশীদার। এই উপর্জনের ফলে কোর্দা তাঁর চিত্রগ্রহণে অনন্য কৌশল বিকাশের সুযোগ পান। প্রথমদিকে কোর্দা সবচেয়ে বেশী উৎসাহিত ছিলেন ফ্যাশনের ছবি তোলার, কারণ এতে ছিল তাঁর দু’টি প্রিয় জিনিষ আলকচিত্র এবং সুন্দরী নারী। কোর্দা পরিণত হন কিউবার প্রধান ফ্যাশন আলোকচিত্র শিল্পীতে। কোর্দা কৃত্রিম আলো ব্যবহার অপছন্দ করতেন, তিনি একে বলতেন “বাস্তবতার হাস্যকর অনুকরণ”এবং তাঁর কর্মশালায় সবসময় তিনি প্রাকৃতিক আলো ব্যবহার করতেন। তিনি ছিলেন সাদা-কালো ছবির একজন বিশেষজ্ঞ। কোর্দার ছিল এক অনন্য সৃজনশীল উচ্চাভিলাষ যা তিনি ব্যাবহার করতেন অসৃজনশীল সাংস্কৃতিক পটিভূমিকায় গড়ে ওঠা ঐতিহ্যগত কিউবান আলোকচিত্রকে ছাড়িয়ে উপরে উঠতে। এই সৃজনশীলতার কারণে কোর্দা কর্মশালা একটি সমৃদ্ধ ব্যবসার গন্ডি ছাড়িয়ে পরিণত হয় একটি চারুকলা কর্মশালায়।
৩৩ নং লাইন:
| owner =
}}
[[ফিদেল ক্যাস্ট্রো]] এবং কোর্দার মধ্যে সম্পর্ক শুধুমাত্র একটি উপাধি দিয়ে বর্ণনা করা যাবে না। ক্যাস্ট্রোর কাছে কোর্দা শুধু একজন আলোকচিত্রীই ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন বন্ধু এবং ব্যক্তিগত আলোকচিত্রী। তাঁরা কখনই বেতনের ব্যপারে আলোচনা করতেন না, তাঁদের সম্পর্ক কখনই মনিব ও কর্মচারীর ছিল না। তাই, কোর্দা ছিলেন খুব নিরুদ্বেগ এবং সবকিছুতেই তাঁ ছিল আগ্রহ। তাঁর তোলা প্রতিটি ছবিই ছিল বিপ্লবের প্রতীক। কুবীয় বিপ্লব কোর্দার পেশাজীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। বিপ্লবের সফলতার মধ্য দিয়ে তাঁর ভবিষ্যতের সব পরিকল্পনা সম্পূর্ণভাবে বদলে যায়। ১৯৫৯ সালে সদ্য প্রতিষ্ঠিত সংবাদপত্রটি আলোকচিত্রীদের তাদের আলোকচিত্র প্রদর্শনের জন্য সবচেয়ে বড় স্থান বরাদ্দ করে, এবং কোর্দা হয়ে যান বৈপ্লবিক আদর্শের একটি অংশ। কোর্দা বলেনঃ
 
“আমার বয়স তখন প্রায় ৩০, আমি ধাবিত হচ্ছিলাম একটি তুচ্ছ জীবনের দিকে, যখন একটি অস্বাভাবিক ঘটনা আমার জীবনকে বদলে দেয়ঃ কুবীয় বিপ্লব। এই সময়টিতে আমি ছোট একটি মেয়ের ছবি তুলি, যাতে দেখা যাচ্ছে শিশুটি একটি পুতুলের মত করে একটি কাঠের টুকরো আঁকড়ে ধরে আছে। তখন আমি উপলব্ধি করলাম আমার উচিৎ এই বিপ্লবে আমাকে উৎসর্গ করা, যে বিপ্লব শুরু হয়েছে সমাজের সকল অসমতা দূর করতে।“
৩৯ নং লাইন:
তিনি তখন বৈপ্লবিক আদর্শে ডুবে যান এবং এর নেতাদের ছবি তুলতে শুরু করেন। তিনি কাজ করতেন তাঁর নিজস্ব লয়ে এবং কোন সাংবাদিক বা আর কারো দ্বারা প্রভাবিত হতেন না। বিপ্লব ক্যাস্ট্রোকে যেখানে নিয়ে যেত কোর্দা সেখানেই যেত। কোর্দার সবচেয়ে বেশী পরিচিত ছবিগুলোর মধ্যে একটি হলো ১৯৫৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডি সি তে ক্যাস্ট্রোর লিঙ্কন মেমোরিয়াল পরিদর্শনের ছবিটি। ক্যাস্ট্রোর সাথে কোর্দা সারা কিউবা, বিদেশ এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন ঘুরেছেন। ১৯৬৩ সালে কোর্দার তোলা ক্যাস্ট্রো এবং নিকিতা ক্রুশ্চেভের ছবিতে প্রকাশ পায় দু’জনের রাজনৈতিক আদর্শের মতানৈক্য।
 
১৯৫৯ সালে [[ফিদেল ক্যাস্ট্রো|ক্যাস্ট্রো]] ফিরে যান দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল সিয়েরা মাইস্ত্রায়, যেখানে বিপ্লবী সেনারা ফুলগেন্সিও বাতিস্তা সরকারের উপর আক্রমণ চালাচ্ছিল। কোর্দার কৌশল ছিল ক্যাস্ট্রো যে দলেরই নেতৃত্ব দিচ্ছে সে দলের অগ্রভাগে যাওয়া এবং তিনি যে ছবিটি তুলতে চান সেটি তোলা। কোর্দা যখন বাসায় ফিরে আসেন তখন তাঁর কন্যা তাঁকে চিনতে পারেনি। তাঁর চুল এবং দাড়ি অনেক লম্বা হয় গিয়েছিল এবং তিনি কয়েক মাস স্নান করেননি। কোর্দা পত্রিকাটির জন্য অনেক ছবি তুলেন এবং ধারাবাহিকটির নাম দেন “ফিডেল সিয়েরায় ফিরে গেল” (Fidel Returns to the Sierra)। ফিডেল সবসময় কোর্দার ছবি পছন্দ করতেন এবং যখনই কোর্দা ছবি নিতে উদ্যত হতেন ক্যাস্ট্রো তাকে থামাতেন না।
 
কোর্দা সংবাদপত্র “রেভোলুসিয়ন”-এর আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করতেন যখন মার্ছ ৫, ১৯৬০ খৃষ্টাব্দে তিনি তাঁর বিখ্যাত চে গেভারার ছবিটি তুলেন। ছবিটি সারা বিশ্বে বিপ্লবের প্রতীক হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তিনি তাঁর ছবির জন্য কোন পারশ্রমিক (Royalty) পাননি কারণ ক্যাস্ট্রো শিল্পীদের কর্ম সুরক্ষার জন্য বার্ন কনভেনশনকে কখনো স্বীকৃতি দেননি। ২০০০ সালে কোর্দা স্মারনফ ভদকা কোম্পানীর বিরুদ্ধে মামলা করেন ছবিটি বিজ্ঞাপনে ব্যবহারের কারণে। তিনি বলনঃ