মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
তথ্যছক
সংশোধন, পরিষ্কারকরণ, রচনাশৈলী
১৩ নং লাইন:
| map_size =
| map_caption =
| coordinates = <!-- {{Coord|23.731862|N|90.406800|E|display=inline,title}} -->
| former_name =
| established = {{Start date|1996|04|22|df=y}}
৪৯ নং লাইন:
 
১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিরপুরে মুসলিম বাজার ও [[জল্লাদখানা বধ্যভূমি]] খননের কাজ সম্পন্ন করে এবং পরে (২০০৮ সালে) [[জল্লাদখানা বধ্যভূমি|জল্লাদখানা বধ্যভূমিতে]] একটি স্মৃতিপীঠ নির্মাণ করে। ‘মানুষের জন্য ফাউণ্ডেশন’এর অংশীদারিত্বে নতুন প্রজন্মের কাছে ইতিহাস ও মানবাধিকার বিষয়ক প্রদর্শনীর বিশেষ আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের রয়েছে গ্রন্থাগার ও তথ্য ভাণ্ডার এবং অডিও-ভিজ্যুয়াল সেন্টার।
 
বর্তমানে একটি ভাড়া বাড়িতে জাদুঘরের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।হওয়ায় স্থান-স্বল্পতার কারণে সংগৃহীত স্মারকসমূহ যথাযথভাবে প্রদর্শন করা সম্ভব হচ্ছেনা না।হওয়ায় বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় জাদুঘর ট্রাস্টের অনুকূলে ০.৮২ একর ভূমি বরাদ্দ দেয়। আন্তর্জাতিকমানের সকল সুবিধাসহ একটি আধুনিক জাদুঘর সেখানে নির্মিত হবে। বিগত নভেম্বর ২০০৯-এ উন্মুক্ত স্থাপত্য নকশা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক জুরিবোর্ড মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের স্থাপত্য-নকশা নির্বাচন চূড়ান্ত করেছে। বর্তমানে জাদুঘর ভবন নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে।করে।
 
২০১১ সালের ৪ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন। ২০১৭ সালের ১৬ এপ্রিল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নতুন ভবন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্ভোধন করেন। ১০২ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হয় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের এই নয়তলা ভবন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|first1=আশীষ-উর-রহমান|title=মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর: এক অনন্য উদ্যোগ|url=http://www.prothomalo.com/bangladesh/article/1358666/মুক্তিযুদ্ধ-জাদুঘর-এক-অনন্য-উদ্যোগ|website=[[দৈনিক প্রথম আলো]]|accessdate=8 এপ্রিল 2018|date=৫ নভেম্বর ২০১৭}}</ref>
 
==গ্যালারি==
প্রায় দুই বিঘা জায়গার ওপর নির্মিত এই ভবনের ব্যবহারযোগ্য আয়তনের পরিমাণ ১ লাখ ৮৫ হাজার বর্গফুট। নতুন ভবনে চারটি গ্যালারি রয়েছে। জাদুঘর বিষয়ে বিশেষজ্ঞ যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠান গ্যালারিতে নিদর্শন উপস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে। গ্যালারিগুলো ভবনের চতুর্থ ও পঞ্চম তলায়।
 
প্রথম গ্যালারিতে প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত কালপর্বে এই জনপদের প্রতিনিধিত্বমূলক প্রত্ননিদর্শন রয়েছে।
 
দ্বিতীয় গ্যালারিতে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ঘটনা থেকে ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় প্রবাসী সরকার গঠন পর্ব পর্যন্ত রয়েছে। এই গ্যালারিতে শব্দ ও আলোর প্রক্ষেপণের একটি বিশেষ প্রদর্শনী আছে। এতে ২৫ মার্চ বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যার বর্বরতা তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া স্বাধীনতার ঘোষণা, ৪ এপ্রিল কুষ্টিয়ার যুদ্ধ এবং সারা দেশের গণহত্যার নিদর্শন রয়েছে এই গ্যালারিতে। আরো রয়েছে উদ্বাস্তু হয়ে পড়া বাঙালিদের শরণার্থী হিসেবে ভারতে যাত্রা, সেখানে আশ্রয়, জীবনযাপনের ঘটনাবলি।
 
চতুর্থ গ্যালারিতে বিভিন্ন পর্যায়ে বাঙালির প্রতিরোধ গড়ে তোলার নিদর্শন রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, গণমানুষের দুরবস্থা, যৌথ বাহিনীর অভিযান, বিভিন্ন অঞ্চলে বিজয়, বুদ্ধিজীবী হত্যা, ঢাকায় পাকিস্তানি দখলদারদের আত্মসমর্পণ—এই ক্রমানুসারে সাজানো হয় শেষ গ্যালারিটি।
 
বাছাই করা নিদর্শন গ্যালারিতে প্রদর্শন করা হয়, মুক্তিযুদ্ধের পুরো ঘটনা। বাকিগুলো সংরক্ষিত রয়েছে জাদুঘরের আর্কাইভে। ভূগর্ভে রয়েছে তিনটি তলা। ওপরের ছয়টি তলায় অফিস মিলনায়তন, পাঠাগার, গবেষণাকেন্দ্র, ক্যানটিন, প্রদর্শনী কক্ষ রয়েছে। শিখা অনির্বাণ রয়েছে প্রথম তলায়।
 
== জাদুঘরের কর্মকাণ্ড ==
৯১ ⟶ ১০৪ নং লাইন:
== মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এবং কর্মসূচিসমূহের অর্থায়ন ==
শুরু থেকেই ট্রাস্টিগণ সাধারণ জনগণের নিকট স্মারক সামগ্রী, আর্থিক অনুদান এবং অন্যান্য সাহায্যের জন্য আবেদন করলে অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া যায়। যার ফলে সত্যিকার অর্থেই এটি ‘জনগণের জাদুঘর’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে সক্ষম হয়। ১৯৯৯ থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার বার্ষিক থোক অর্থ বরাদ্দ দিয়ে আসছে। এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরকে অর্থ সাহায্য করেছে।
 
== আগামী পরিকল্পনা : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মাণ ==
=== জমি ও জাদুঘর ভবন ===
বর্তমানে একটি ভাড়া বাড়িতে জাদুঘরের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। স্থান-স্বল্পতার কারণে সংগৃহীত স্মারকসমূহ যথাযথভাবে প্রদর্শন করা সম্ভব হচ্ছে না। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় জাদুঘর ট্রাস্টের অনুকূলে ০.৮২ একর ভূমি বরাদ্দ দেয়। আন্তর্জাতিকমানের সকল সুবিধাসহ একটি আধুনিক জাদুঘর সেখানে নির্মিত হবে। বিগত নভেম্বর ২০০৯-এ উন্মুক্ত স্থাপত্য নকশা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক জুরিবোর্ড মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের স্থাপত্য-নকশা নির্বাচন চূড়ান্ত করেছে। বর্তমানে জাদুঘর ভবন নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে।
 
=== নির্মিতব্য জাদুঘরের স্থাপত্য-ধারণা ===
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস উপস্থাপনের জন্য নতুন জাদুঘর ভবনে দুই ধরনের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকবে। একটি স্থায়ী ও অন্যটি পরিবর্তনশীল। স্থায়ী প্রদর্শনীর জন্য গ্যালারির আয়তন হবে সুপরিসর এবং নিয়মিতভাবে অস্থায়ী প্রদর্শনী আয়োজনের জন্য পৃথক গ্যালারি বা স্পেস থাকবে।
মূল স্থায়ী প্রদর্শনীর জায়গায় দুইটি ভাগ থাকবে। প্রথম ভাগের জন্য বরাদ্দ থাকবে ২৫ শতাংশ জায়গা [(ক)বাংলার জনপদ ও ঐতিহ্য এবং (খ) ইতিহাসের গতিধারা]।
 
==== বাংলার জনপদ ও ঐতিহ্য ====
প্রদর্শনীর সূচনায় চুম্বকাকারে বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারণা দেয়া হবে। বাংলার প্রাচীন জনপদ, সভ্যতার বিভিন্ন পর্ব, জাতিসত্তার বিকাশ ইত্যাদি।
 
==== ইতিহাসের গতিধারা ====
প্রথম পর্ব : ১৭৫৭ সাল থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত উপনিবেশিক পর্ব সংক্ষিপ্তাকারে উপস্থাপিত হবে। এরপর ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১-এর মার্চ পর্যন্ত পাকিস্তানি পর্ব।
এবং দ্বিতীয় ভাগের জন্য দুই-তৃতীয়াংশ জায়গা (মুক্তিযুদ্ধ পর্ব) বরাদ্দ থাকবে।
 
==== মুক্তিযুদ্ধ পর্বে উপস্থাপিত বিষয়সমূহ ====
অসহযোগ আন্দোলন ও ৭ মার্চের ভাষণ, গণহত্যা, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, প্রথম প্রতিরোধ, উদ্বাস্তু সমস্যা, মুজিবনগর সরকারের প্রতিষ্ঠা, সেক্টর বিভাজন ও সংগঠিত সামরিক প্রতিরোধ, জনযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের কর্মকাণ্ড, সেক্টর ও ব্রিগেড কম্যাণ্ডারদের অধীনে সশস্ত্র যুদ্ধ, নৌকমাণ্ডো, বিমান বাহিনীতে বিমানযোদ্ধা, স্বাধীন বাংলা বেতার, গণমাধ্যম, সামরিক প্রশিক্ষণ ও শিবির, মুক্ত এলাকা, আন্তর্জাতিক সংহতি, দেশীয় দালালদের ভূমিকা, রাজাকারবাহিনী, শান্তিকমিটি ও আলবদর বাহিনী, বঙ্গবন্ধুর প্রহসনের বিচার, দেশের অভ্যন্তরে প্রতিরোধ, নারীদের ভূমিকা, নারী নির্যাতন, যৌথ বাহিনী গঠন ও ডিসেম্বরের চূড়ান্ত লড়াই, মিত্রবাহিনীর ভারতীয় সদস্যদের আত্মদান, বুদ্ধিজীবী হত্যা এবং বিজয়।
 
জাদুঘরের প্রদর্শনীতে ইতিহাসের মূলধারার পাশাপাশি ব্যক্তিমানুষের জীবন ও আত্মদানের পরিচয় মেলে ধরা হবে বিশেষ গুরুত্বসহকারে।
 
জাদুঘরের প্রদর্শনী শেষে আত্মোপলব্ধি বা ভাবমগ্নতার পরিসর সংযোজিত হবে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, বিশেষভাবে নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন আধুনিক উপায় বা সুযোগ সমন্বিত রাখা হবে এবং সেই সাথে অডিও-ভিজ্যুয়াল তথা চলচ্চিত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থা বিভিন্নভাবে গ্যালারির ভিতরে সংযোজিত থাকবে।
 
== ট্রাস্ট্রিবৃন্দ ==