কাজী আরেফ আহমেদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
চিত্র
চিত্র, তথ্যসূত্র
১৫ নং লাইন:
| spouse = রওশন জাহান সাথী
}}
[[চিত্র:কাজী আরেফ আহমেদের উনবিংশ মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণী।.jpg|থাম্ব|বীর মুক্তিযোদ্ধা বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ কাজী আরেফ আহমেদের উনবিংশ মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণী।]]
'''কাজী আরেফ আহমেদ''' (জন্ম: [[৮ এপ্রিল]], [[১৯৪২]] - মৃত্যু: ১৬ ফেব্রুয়ারি [[১৯৯৯]]) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। ষাটের দশকে তিনি ছাত্ররাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। [[১৯৬২]] সালে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরে প্রগতিশীল ছাত্রনেতা সিরাজুল আলম খান<ref name=":0">{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%81%E0%A6%B2_%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A6%AE_%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%A8|title=সিরাজুল আলম খান|last=উইকিপিডিয়া|first=সিরাজুল আলম খান|date=২৫-২-২০১৮|website=উইকিপিডিয়া|publisher=উইকিপিডিয়া|access-date=২৪-৩-২০১৮}}</ref> ও আব্দুর রাজ্জাকের<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%86%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B0_%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%95_(%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6)|title=আব্দুর রাজ্জাক|last=রাজ্জাক|first=আব্দুর|date=২২-১-২০১৮|website=উইকিপিডিয়া|publisher=উইকিপিডিয়া|access-date=২২-১-২০১৮}}</ref> সাথে গড়ে তোলেন গোপন সংগঠন 'স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ'<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%81%E0%A6%B2_%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A6%AE_%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%A8|title=সিরাজুল আলম খান|last=সিরাজুল|first=আলম খান|date=২৫-২-২০১৮|website=সিরাজুল আলম খান|publisher=উইকিপিডিয়া|access-date=২৪-৩-২০১৮}}</ref>। স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের এই তিন ছাত্রনেতা পরবর্তীতে স্বাধীনতার [[সিরাজুল আলম খান|নিউক্লিয়াস]]<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|url=http://www.bd-pratidin.com/editorial/2017/01/16/200354|title=জাতীয় বীর কাজী আরেফ আহমেদ|last=শফি|first=আহমেদ|date=১৬ জানুয়ারি, ২০১৭|access-date=২৩-২-২০১৮|via=newspaper}}</ref><ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%81%E0%A6%B2_%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A6%AE_%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%A8|title=সিরাজুল আলম খান|last=আলম খান|first=সিরাজুল|date=২৫-২=২০১৮|website=উইকিপিডিয়া|publisher=উইকিপিডিয়া|access-date=২৪-৩-২০১৮}}</ref> হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। কাজী আরেফ আহমেদ [[বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা]]র রূপকারদের মধ্যে অন্যতম। [[১৯৭১]] সালে [[বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ|মুক্তিযুদ্ধকালে]] [[সিরাজুল আলম খান|স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ]]<nowiki/>ই<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|url=http://mathbariarkantha.com/%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A7%E0%A7%80%E0%A6%A8-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A6%AC%E0%A7%80-%E0%A6%AA%E0%A6%B0/|title=স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বা নিউক্লিয়াস গঠন —-নূর হোসাইন মোল্লা|last=নুর|first=হোসাইন মোল্লা|date=২০-৩-২০১৭|work=উৎস হিসাবে ব্যবহার|access-date=২৪-৩-২০১৮|via=newspaper}}</ref> [[সিরাজুল আলম খান|বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স]]- বিএলএফ বা মুজিব বাহিনী<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%81%E0%A6%B2_%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A6%AE_%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%A8|title=সিরাজুল আলম খান|last=সিরাাজুল|first=আলম খন|date=২৫-২-১৮|website=উইকিপিডিয়া|publisher=উইকিপিডিয়া|access-date=২৪-৩-২০১৮}}</ref> হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। কাজী আরেফ ছিলেন ছাত্রলীগের সমন্বয়ক ওবিএলএফ’র গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান । স্বাধীনতার পর ১৯৭২-এ গঠিত [[জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল]] জাসদের অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা। তিনি জাসদের কৃষক ফ্রন্ট জাতীয় কৃষক লীগের সভাপতি ও [[জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল]] জাসদের কার্যকরী সভাপতি<ref>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|url=http://samakal.com/todays-print-edition/tp-editorial-comments/article/140240171/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%80-%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%AB-%E0%A6%86%E0%A6%B9%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%A6-%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%9B%E0%A7%81-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%9B%E0%A7%81-%E0%A6%95%E0%A6%A5%E0%A6%BE|title=কাজী আরেফ আহমেদ :কিছু স্মৃতি কিছু কথা|last=আম্বিয়া|first=শরীফ নুরুল|date=১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪|access-date=}}</ref> ছিলেন।
 
৮৭ ⟶ ৮৮ নং লাইন:
পূর্বপাকিস্তান ছাত্রলীগের মধ্যে দু’টি ধারা বিদ্যমান ছিল। এক অংশের নেতৃত্ব দিতেন নিউক্লিয়াসের সদস্যগণ। এরা সবসময় কেন্দ্রীয় কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদ নিজেদের পছন্দের ছাত্রনেতাদের নিয়ন্ত্রণের রাখার চেষ্টা করতেন। শুরু থেকে দেশ স্বাধীন হওয়া পর্যন্ত এ প্রচেষ্টয় তাঁরা সফল হয়েছিলেন। এ অংশের নেতারা অনেক আগে থেকেই স্বাধীন সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্লোগান বা বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর ছাত্রলীগের বর্ধিত সভায় তৎকালিন প্রচার সম্পাদক স্বাপন কুমার চৌধুরী প্রস্তাব উত্থাপন করেন যে, যেহেতু বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগেকে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রদান করেছে, তাই আওয়ামী লীগের উচিত এখন স্বাধীন সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশের ঘোষণা করা। এদিন এ প্রশ্নে বর্ধিত সভা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে।
 
স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে এলে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল দলের সম্বন্বয়ে জাতীয় সরকার গঠনের জন্য বঙ্গবন্ধু [[শেখ মুজিবুর রহমান|শেখ মুজিব রহমানে]]<nowiki/>র কাছে দাবি তোলে ছাত্রলীগের এ অংশের নেতারা। এ বিষয়ে [[সিরাজুল আলম খান|সিরাজুল আলম খানে]]<nowiki/>র সাথে বঙ্গবন্ধুর কয়েকবার কথাবার্তাও হয়। কিন্তু তেমন সারা পাওয়া যাচ্ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে স্বাধীন দেশে ছাত্রলীগ প্রথম সম্মেলন আহ্বান করা হয়। সে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের বিভক্তি ঘটে। ২১, ২২ ও ২৩ জুলাই ১৯৭২ এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্রলীগের তৎকালিন সাধারণ সম্পাদক শাহাজাহান সিরাজের নেতৃত্বের অংশ পল্টন ময়দানে এবং সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকীর নেতৃত্বাংশ সম্মেলন আহবান করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। উভয় অংশই প্রধান অতিথি করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। অবশেষে বঙ্গবন্ধু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সম্মেলনে যোগ দেন। এ থেকেই ছাত্রলীগ পৃথক হয়ে পড়ে। অবিভক্ত ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির আটজন সদস্য নূরে আলম সিদ্দিকীর পক্ষে এবং অবশিষ্টরা শাহজাহান সিরাজের পক্ষে অবস্থান নেয়। এ পরিস্থিতিতে শাহজাহান সিরাজের অংশের সাবেক ছাত্রনেতা অনুধাবণ করেন যে, বঙ্গবন্ধুকে দিয়ে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ করা সম্ভব হবে না। এদিকে সে সময়ের বিশ্বরাজনীতির প্রেক্ষাপটে মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে অনেকের মধ্যে সমাজতান্ত্রিক চেতনার উন্মেষ ঘটে। এই বিষয়গুলোকে মাথায় রেখে সমাজতান্ত্রিক চেতনায় বিশ্বাসী মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ৩১ অক্টোবর গঠন করা হয় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জাসদ। স্বাধীন বাংলাদেশে আত্মপ্রকাশ ঘটা প্রথম রাজনৈতিক দল জাসদ। বিজয়ীর বেশে মুক্তিযুদ্ধ ফেরত এক ঝাঁক উদীয়মান ও তরুণ স্বাধীন বাংলাদেশে ক্ষমতার মোহ ত্যাগ করে গঠন করেন জাসদ। আত্মপ্রকাশকালে ৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির সদস্যগণ ছিলেন, যুগ্মআহ্বায়ক: মেজর (অব.) এম এ জলিল ও আ স ম আব্দুর রব, সদস্য: শাহজাহান সিরাজ, বিধান কৃষ্ণ সেন, রহমত আলী, সুলতান উদ্দিন আহমেদ ও [[নুরে আলম জিকু]]। এই প্রক্রিয়ার পেছনে ছিলেন নিউক্লিয়াস সদস্য [[সিরাজুল আলম খান]] ও কাজী আরেফ আহমেদ। নিউক্লিয়াসের অপর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক জাসদ গঠনের সকল প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত থাকলেও তিনি বিশ্বাস করতে পারেননি যে, বঙ্গবন্ধুর বিপক্ষে দাঁড়িয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনীতি করা সম্ভব। আহ্বায়ক কমিটির একজন সদস্য জনাব রহমত আলী (পরবর্তীতে শ্রীপুরের আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে কয়েকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন) পরদিন বিবৃতি দেন যে, জাসদ প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ার সাথে তার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। এদিন দৈনিক বাংলার বাণী পত্রিকায় লেখা হয়, ‘রজনী না পোহাতেই সপ্তর্ষীমণ্ডল থেকে একটি নখত্র খসে পড়লো।’ পরে জানা যায় যে, আওয়ামী লীগের তৎকালিন নেতৃবৃন্দ তাকে হুমকী দিয়ে জাসদ থেকে সরিয়ে নিয়েছে।
 
জাসদের মুল লক্ষ্য ছিল, শ্রেণীবৈষম্যহীন স্বাধীন সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। যে স্বপ্ন বুকে ধারণ করে তাঁরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন; সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে গঠন করা হয় জাসদ। কাজী আরেফ আহমেদ ছিলেন সেই স্বপ্নদ্রষ্টাদের মধ্যে প্রথম সারির একজন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সাহসিকতার সাথে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের লক্ষ্যে বিপ্লবী গণআন্দোলন সংগঠিত ও পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন কাজী আরেফ আহমেদ। দলের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়, ‘আমরা লড়ছি শ্রেণিসংগ্রামকে ত্বরান্বিত করে সামাজিক বিপ্লবের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে’। দলটির রাজনৈতিক দর্শন হিসেবে মার্কসবাদ-লেনিনবাদ গ্রহণ করা হয়। ১৯৭২ সালে আত্মপ্রকাশের পর সারাদেশে জনগণের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করতে সক্ষম হয় জাসদ। বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধা এবং যুবসমাজের মধ্যে সংগঠনের বিস্তৃতি ঘটে ব্যাপকভাবে। একারণে শুরু থেকেই জাসদকে ক্ষমতাসীন দলের রোষানলে পড়তে হয়।