ককেশাস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Shuaib Anik (আলোচনা | অবদান)
সম্প্রসারণ
Shuaib Anik (আলোচনা | অবদান)
বানান সংশোধন
৫৪ নং লাইন:
 
== নামকরন ==
[[প্লিনি দ্যা এল্ডার|প্লিনি দ্যা এল্ডারের]] ''ন্যাচারাল হিস্টোরি'' (৭৭-৭৯ খ্রিস্টাব্দ) বই অনুযায়ী ককেশাসককেসাস নামটি এসেছে [[স্কিথিয় ভাষা|স্কিথিয়]] ''ক্রোয়-খাসিস'' (''উজ্জ্বল বরফ, সাদা তুষার'') শব্দ থেকে।<ref>"Natural History," book six, chap. XVII</ref> জার্মান ভাষাবিদ পল ক্রেটস্চমের উল্লেখ করেছেন [[লাটভিয় ভাষা|লাটভিয়]] শব্দ ''ক্রুভেসিস'' অর্থও ''বরফ''।<ref>{{cite journal |last=Kretschmer |first=Paul |author-link=Paul Kretschmer |date=1928 |title=Weiteres zur Urgeschichte der Inder |trans-title=More about the Pre-History of the Indians |language=German |journal=Zeitschrift für vergleichende Sprachforschung auf dem Gebiete der indogermanischen Sprachen [Journal of Comparative Linguistic Research into Indo-European Philology] |volume=55 |issue= |pages=75–103 }}</ref><ref>{{cite journal |last=Kretschmer |first=Paul |author-link=Paul Kretschmer |date=1930 |title=Zeitschrift für vergleichende Sprachforschung auf dem Gebiete der indogermanischen Sprachen [Journal of Comparative Linguistic Research into Indo-European Philology] |volume=57 |issue= |pages=251–255 }}</ref>
 
প্রাচীন লোককথা (১১১৩ খ্রিস্টাব্দ) অনুযায়ী, পুরাতন পূর্ব স্লাভিক ভাষা Кавкасийскыѣ горы (''কাভকাসিজস্কি গোরি'') এসেছে প্রাচীন গ্রীক Καύκασος (''কাফকাসোস'') থেকে।<ref name="ReferenceA"/> এম. এ. ইয়ুয়ুকিনের মতে, এটি একটি যৌগিক বাক্য, যার অর্থ হতে পারে ''শঙ্খচিলের পর্বত'' (καύ-: καύαξ, καύηξ, ηκος ο, κήξ, κηϋξ "এক ধরণের গাঙ্গচিল" + *κάσος η এর পুনর্গঠন "পর্বত" বা "শিলা", যেটি ব্যক্তি বা স্থানের নাম হিসেবে বহুল ব্যবহৃত)।<ref>{{cite conference |url=http://philology.ru/linguistics1/yuyukin-12.htm |title=О происхождении названия Кавказ |first=M. A. |last=Yuyukin |author= |author-link= |date=18–20 June 2012 |year= |conference= |conference-url= |editor= |others= |volume= |edition= |book-title=Индоевропейское языкознание и классическая филология – XVI (материалы чтений, посвященных памяти профессора И.&nbsp;М.&nbsp;Тронского) |publisher= |location=[[Saint Petersburg]] |pages=893–899 and 919 |id= |isbn=978-5-02-038298-5 |bibcode= |oclc= |doi= |access-date=19 March 2017 |quote= |ref= |postscript= |language=Russian |page= |at= |trans-title=On the Origin of the Name of the Caucasus }}</ref>
৬০ নং লাইন:
জার্মান ভাষাবিদ অটো শ্রাডার এবং আলফোন্স এ. নেহরিং এর মতে, প্রাচীন গ্রীক শব্দ Καύκασος (''কাফকাসোস'') গোথিক শব্দ ''হাউহস'' (''উচ্চ'') এবং [[Lithuanian language|লিথুয়ানিয়]] শব্দ ''Kaũkas'' ("হিলোক") ও ''কাউকারার'' (''পাহাড়, চূড়া'') সাথে সংযুক্ত।<ref>{{cite book |last=Schrader |first=Otto |author-link=Otto Schrader (philologist) |date=1901 |title=Reallexikon der indogermanischen Altertumskunde: Grundzüge einer Kultur- und Völkergeschichte Alteuropas |trans-title=Real Lexicon of the Indo-Germanic Antiquity Studies: Basic Principles of a Cultural and People's History of Ancient Europe |url= |format= |language=German |location=[[Strasbourg]] |publisher=Karl J. Trübner |isbn= |via= |subscription= |quote= }}</ref><ref name="ReferenceA">{{cite encyclopedia |last=Vasmer |first=Max Julius Friedrich |author-link=Max Vasmer |editor-last= |editor-first= |editor-link= |encyclopedia=Indogermanische Bibliothek herausgegeben von Hans Krahe. Reihe 2: Wörterbüche [Indo-European Library Edited by Hans Krahe. Series 2: Dictionaries] |title=Russisches etymologisches Wörterbuch |trans-title=Russian Etymological Dictionary |language=German |edition= |date= |year=1953–1958 |publisher=Carl Winter |series= |volume=1 |location=[[Heidelberg]] |id= |isbn= |oclc= |doi= |pages= |quote= |ref= }}</ref> ব্রিটিশ ভাষাবিদ আদ্রিয়ান রুম বের করেন যে পেলাসজিয় ভাষায় ''কাউ-'' অর্থ ''পর্বত''।<ref>{{cite book |last=Room |first=Adrian |date=1997 |title=Placenames of the World: Origins and Meanings of the Names for over 5000 Natural Features, Countries, Capitals, Territories, Cities, and Historic Sites |url=https://books.google.com/?id=nYYYAAAAIAAJ&dq=Pelasgian+*kau-%20mountain&q=*kau-meaning#search_anchor |format= |location=[[Jefferson, North Carolina|Jefferson, NC]] |publisher=[[McFarland & Company]] |isbn=978-0-7864-0172-7 |via= |subscription= |quote= }}</ref>
 
ট্রান্সককেশাস অঞ্চল ও দক্ষিণ [[দাগেস্তান]] ছিল প্রথমে [[পার্থিয় সাম্রাজ্য|পার্থিয়]] এবং [[সাসানীয় সাম্রাজ্য]] বিস্তারের শেষ সীমা। অন্যদিকে বৃহত্তর ককেশাসের উত্তর প্রান্ত ছিল প্রায় দুর্গম। ধারনা করা হয়, ইরানীয় পণ্ডিতদের দ্বারা রহস্যাবৃত পৌরণিক [[কাফ পর্বত]] এই অঞ্চলেই অবস্থিত এবং এটি ককেশাসকেককেসাসকে পৃথিবীর সর্বোচ্চ সীমা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।
 
এখানে উল্লেখ্য যে, নাখ ভাষায় Ков гас (''কোভ গাস'') অর্থ ''[[স্তেপ|স্টেপ]] অঞ্চলের প্রবেশপথ''।<ref>Bolatojha J. "Древняя родина Кавкасов [The Ancient Homeland of the Caucasus]", p. 49, 2006.</ref>
৯৫ নং লাইন:
 
== রাজনৈতিক ভূগোল ==
[[উত্তর ককেশাস]] অঞ্চলটি মূলত ''সিসককেশাসসিসককেসাস'' নামে পরিচিত। অপরদিকে দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চল ''[[ট্রান্সককেশাসট্রান্সককেসাস]]'' নামে পরিচিত।
[[File:Caucasus-political en.svg|thumb|right|320px|ককেশাস অঞ্চলের রাজনৈতিক মানচিত্র (২০০৮)]]
 
সিসককেশাসেরসিসককেসাসের মধ্যে মূলত বৃহত্তর ককেশাসেরককেসাসের পার্বত্য অঞ্চলগুলো অন্তর্ভুক্ত। এর মধ্যে রয়েছে উত্তর ককেশীয়ককেসীয় স্বায়ত্তশাসিত প্রজাতন্ত্রসমূহ সহ [[রাশিয়া|রাশিয়ার]] দক্ষিণাংশ, [[জর্জিয়া (রাষ্ট্র)|জর্জিয়ার]] উত্তরাংশ এবং [[আজারবাইজান]]। সিসককেশাসেরসিসককেসাসের পশ্চিমে [[কৃষ্ণ সাগর]], পূর্বে [[কাস্পিয়ান সাগর]] এবং উত্তর সীমানায় রাশিয়ার দক্ষিণের ফেডারেল জেলা সমূহ অবস্থিত। উত্তর প্রান্তে রাশিয়ার এই ফেডারেল জেলা দুটি সম্মিলিতভাবে দক্ষিণ রাশিয়া নামে পরিচিত।
 
ট্রান্সককেশীয়াট্রান্সককেসীয়া বৃহত্তর ককেশীয়ার সীমানাকে চিনহিত করে। এর উত্তর সীমান্তে রয়েছে রাশিয়ার দক্ষিণাংশ, পশ্চিমে রয়েছে কৃষ্ণ সাগর ও [[তুরস্ক]], পূর্বে কাস্পিয়ান সাগর এবং দক্ষিণে [[ইরান]]। লেসার ককেশীয়ককেসীয় পর্বতশ্রেণী এবং তাঁকে ঘিরে থাকা নিম্নভূমিসমূহ এর অন্তর্ভুক্ত। সম্পূর্ণ [[আর্মেনিয়া]], আজারবাইজান (সর্ব উত্তরের অংশ বাদে) এবং জর্জিয়া (সর্ব উত্তরের অংশ বাদে) দক্ষিণ ককেশাসের অন্তর্ভুক্ত।
 
বৃহত্তর ককেশাসেরককেসাসের সংলগ্ন জলবিভাজিকা [[ইউরোপ]] ও পশ্চিম এশিয়ার মধ্যবর্তী দীমাবেখা হিসেবে কাজ করে। ককেশাসককেসাস অঞ্চলের সর্বোচ্চশৃঙ্গ [[এলব্রুস পর্বত]] পশ্চিম ককেশাসে অবস্থিত এবং একে ইউরোপের সর্বোচ্চচূড়া হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
 
ককেশাসককেসাস অঞ্চল তার ভাষা ও সাংস্কৃতিক দিক বিবেচনায় পৃথিবীর সর্বোচ্চ বৈচিত্র্যপূর্ণ অঞ্চলগুলোর একটি।{{citation needed|date=May 2017}} ককেশাসেরককেসাসের অন্তর্ভুক্ত [[জাতিরাষ্ট্র|জাতিরাষ্ট্রগুলোর]] মধ্যে রয়েছে [[সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র]] জর্জিয়া (আদজারা অন্তর্ভুক্ত), আজারবাইজান (নাখচিভান অন্তর্ভুক্ত), আর্মেনিয়া এবং [[রাশিয়ান ফেডারেশন]]। ককেশাসের অন্তর্ভুক্ত রাশিয়ার বিভাগগুলো হলো [[দাগেস্তান]], [[চেচনিয়া|চেচনিয়া]], [[ইঙ্গুশেতিয়া|ইঙ্গুশেটিয়া]], [[উত্তর ওশেতিয়া-আলানিয়া|উত্তর ওশেতিয়া-আলানিয়া]], কাবারদিনো-বাল্কারিয়া, কারাচে-চেরকেসিয়া, আদিজিয়া, ক্রাস্নোদার ক্রাই এবং স্তাভ্রোপোল ক্রাই।
 
এই অঞ্চলের তিনটি এলাকা নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে, কিন্তু তারা জাতিসংঘের দ্বারা স্বীকৃত নয়। এলাকা তিনটি হলো আর্টসাখ প্রজাতন্ত্র, [[আবখাজিয়া]] এবং [[দক্ষিণ ওসেটিয়ায় অবস্থিত কূটনৈতিক মিশনের তালিকা|দক্ষিণ ওশেতিয়া]]। অধিকাংশ দেশ আবখাজিয়া ও দক্ষিণ ওটেশিয়াকে জর্জিয়ার অংশ এবং আর্টসাখকে আজারবাইজানের অংশ বলে মনে করে।
১২২ নং লাইন:
 
== ইতিহাস ==
তুরস্ক, ইরান ও রাশিয়ার সীমানায় অবস্থিত ককেশাসককেসাস অঞ্চলটি শত শত বছর ধরে রাজনৈতিক, সামরিক, ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও সম্প্রসারনবাদের সাক্ষী হয়ে রয়েছে। দীর্ঘ ঐতিহাসিক কাল জুড়ে ককেশাসককেসাস অঞ্চলটি [[ইরানের ইতিহাস|ইরানের]] অন্তর্ভুক্ত ছিল।<ref name=CAUCAIRANICA>{{cite encyclopedia |last=Multiple Authors |first=| title= Caucasus and Iran | encyclopedia=Encyclopædia Iranica | accessdate=2012-09-03|url=http://www.iranicaonline.org/articles/caucasus-index}}</ref> উনবিংশ শতকের শুরু দিকে [[রাশিয়ান সাম্রাজ্য]] ইরানের [[কাজার সাম্রাজ্য|কাজার সাম্রাজ্যকে]] পরাজিত করে ককেশাস দখল করে নেয়।<ref name="CAUCAIRANICA"/>
 
=== প্রাগৈতিহাসিক সময় ===
[[File:Gobustan ancient Azerbaycan full.jpg|thumb|left|[[আজারবাইজান|আজারবাইজানের]] গোবুস্তানে ১০,০০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দের পেত্রোগ্লিফস। এটি [[ইউনেস্কো]] ঘোষিত একটি [[বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান]]।]]
[[প্রাচীন প্রস্তর যুগ|আদিম প্রস্তর যুগ]] হতেই ককেশাসককেসাস অঞ্চলটি হোমো ইরেক্টাসের বাসস্থান ছিল।{{citation needed|date=May 2017}} ১৯৯১ সালে জর্জিয়ার দমানিসি প্রত্নতাত্ত্বিক সাইটে একটি ১.৮ মিলিয়ন বছরের পুরাতন আদি মানব ফসিল (হোমিনি) পাওয়া যায়। বিজ্ঞানীরা জীবাশ্বের অস্থিগুলো একত্রিত করে সেটিকে [[হোমো ইরেক্টাস জর্জিকাস|হোমো ইরেক্টাস জর্জিকাসের]] উপজাতি হিসেবে শ্রেণীবিভাগ করেছেন।<ref>{{cite news |last=Derbyshire |first=David |date=9 September 2009 |title=Ancient Skeletons Discovered in Georgia Threaten to Overturn the Theory of Human Evolution |trans-title= |url=http://www.dailymail.co.uk/sciencetech/article-1212060/Ancient-skeletons-discovered-Georgia-threaten-overturn-theory-human-evolution.html |language= | work=[[Mail Online]] |location= |subscription= |quote=Georgia may have been the cradle of the first Europeans...Archaeologists now believe that our ancestors left for Europe at least 1.8 million years ago, before returning to Africa and developing into Homo Sapiens...The Dmanisi bones may have belonged to an early Homo erectus which lived in Georgia before moving on to the rest of Europe. }}</ref>
 
আফ্রিকা মহাদেশের বাইরে প্রারম্ভিক মানুষের অস্তিত্বের প্রথম স্পষ্ট প্রমাণ এই স্থানেই পাওয়া যায়;<ref>Vekua, A., Lordkipanidze, D., Rightmire, G. P., Agusti, J., Ferring, R., Maisuradze, G., et al. (2002). A new skull of early Homo from Dmanisi, Georgia. ''Science'', 297:85–9.</ref> এবং দমানিসি হলো [[আফ্রিকা|আফ্রিকার]] বাইরে প্রাপ্ত মানব খুলিগুলোর মধ্যে পাঁচটি প্রাচীনতম [[হোমিনি]], যার ফলে আফ্রিকা মহাদেশের বাইরে মানব অভিবাসনের সাম্ভাব্য সময়কাল পূর্বের তুলনায় দ্বিগুণ হয়ে যায়।<ref name=nature>{{cite journal|url=http://www.nature.com/news/skull-suggests-three-early-human-species-were-one-1.13972|title=Skull suggests three early human species were one|first=Sid|last=Perkins|date=|work=nature.com|doi=10.1038/nature.2013.13972|year=2013}}</ref>
 
=== প্রাচীন কাল ===
বর্তমান দক্ষিণ ককেশাসককেসাস (জর্জিয়ার পশ্চিমাংশ ব্যতিত), উত্তরপশ্চিম ইরান, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ককেশাসককেসাস, তুরস্কের পূর্বাঞ্চল হয়ে [[সিরিয়া]] পর্যন্ত প্রায় ৫০০ হতে ১০০০ কিমি এলাকা খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ হতে ২০০০ সাল পর্যন্ত কুরা-আরাক্সেস সংস্কৃতির অংশ ছিল।
 
আশুরবানিপলের রাজত্বকালে (৬৬৯-৬২৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) ককেশাসককেসাস পর্বতমালা পর্যন্ত [[আসিরীয়া|অসিরীয়া সাম্রাজ্য]] বিস্তৃতি লাভ কর। পরবর্তীতে, এই অঞ্চলের প্রাচীন রাজ্যগুলোর মধ্যে [[আর্মেনিয়া]], [[ককেশীয়ককেসীয় আলবেনিয়া|আলবেনিয়া]], কলচিস এবং [[ককেশীয় আইবেরিয়া|আইবেরিয়া]] আসিরীয় সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। এই রাজ্যগুলো পরবর্তীতে বিভিন্ন ইরানীয় সাম্রাজ্য যেমনঃ মেডেস, [[হাখমানেশী সাম্রাজ্য]], [[পার্থিয়া]] এবং [[সাসানীয় সাম্রাজ্য|সাসানীয় সাম্রাজ্যের]] অন্তর্ভুক্ত হয়, যারা একত্রে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ককেশাসককেসাস অঞ্চল শাসন করে। খ্রিস্টপূর্ব ৯৫-৫৫ সাল পর্যন্ত এই অঞ্চল আর্মেনীয় সম্রাট মহান টাইগ্রানেসের শাসনাধীন ছিল। এসময়ে আর্মেনিয়া রাজ্য বিভিন্ন অন্যান্য রাজ্য যেমনঃ সামন্ত আইবেরিয়া, আলবেনিয়া, পার্থিয়া, আট্রোপাটেনে, [[মেসোপটেমিয়া]], কাপ্পাডোসিয়া, [[সিলিসিয়া]], [[সিরিয়া]], নাবাতাইয় রাজ্য এবং [[জুডিয়া|জুডিয়ার]] রাজ্যের সাথে একত্রীত হয়ে আর্মেনীয় সাম্রাজ্যে পরিণত হয়। খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীর দিকে [[জরাথুস্ট্রবাদ]] এই অঞ্চলের সবচেয়ে প্রভাবশালী ধর্মে পরিণত হয়, যদিও পরবর্তীতে এই অঞ্চলে আরো দুইটি ধর্মীয় পটপরিবর্তন ঘটে। পারস্য ও [[রোমান সাম্রাজ্য|রোমানদের]] মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে এই অঞ্চল বেশ কয়েকবার হাতবদল হয়। পরবর্তীতে, এই অঞ্চল [[বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য|বাইজেন্টাইনদের]] হাতে আসে, যদিও শেষ পর্যন্ত তারাও এই অঞ্চল ধরে রাখতে সক্ষম হয়নি।
 
=== মধ্যযুগ ===
[[File:Georgian empire with tributaries.png|260px|thumbnail|right|১৩ শতকের শুরুর দিকে ক্ষমতার শিখরে থাকাকালীন জর্জিয়া রাজ্য।]]
৩০১ খ্রিস্টাব্দে আর্মেনিয়ার আর্সাসিদ সাম্রাজ্যই (পার্থিয় আর্সাসিদ সাম্রাজ্যের একটি শাখা) হলো প্রথম রাজ্য যারা খ্রিস্টান ধর্মকে রাষ্ট্র ধর্ম হিসেবে গ্রহণ করে। এসময়ে ককেশীয়ককেসীয় আলবেনিয়া এবং [[জর্জিয়া (রাষ্ট্র)|জর্জিয়া]] [[খ্রিস্টান ধর্ম|খ্রিস্টান ধর্মে]] ধর্মান্তরিত হয়। ফলে, এই অঞ্চলে [[জরাথুস্ট্রবাদ]] এবং পৌত্তলিকদের বিপরীতে খ্রিস্টান ধর্ম প্রভাব বিস্তার করতে থাকে। [[মুসলিমদের পারস্য বিজয়|মুসলিমদের পারস্য বিজয়ের]] মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলের বিরাট অংশ [[আরব জাতি|আরবদের]] শাসনাধীন হয়ে যায় এবং এই অঞ্চলে [[ইসলাম]] প্রবেশ করে।<ref>{{cite book |quote="(..) It is difficult to establish exactly when Islam first appeared in Russia because the lands that Islam penetrated early in its expansion were not part of Russia at the time, but were later incorporated into the expanding Russian Empire. Islam reached the Caucasus region in the middle of the seventh century as part of the Arab [[Muslim conquest of Persia|conquest]] of the Iranian Sassanian Empire. "|title=Islam in Russia: The Politics of Identity and Security|first=Shireen |last= Hunter | publisher= M.E. Sharpe | date = 2004 |page=3 |display-authors=etal}}</ref>
 
১০ম শতাব্দীতে আলানিগণ (প্রোটো-[[ওশেতিয়]])<ref name="Great Soviet Encyclopedia">{{cite web|url=http://slovari.yandex.ru/dict/bse/article/00001/79200.htm|title=Яндекс.Словари|work=yandex.ru}}</ref> [[উত্তর ককেশাস|ককেশাসেরককেসাসের উত্তরাঞ্চলে]] একটি রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। যেটি, বর্তমান সিরকাসিয়ার এবং অধুনিক [[উত্তর ওশেতিয়া-আলানিয়া|উত্তর ওশেতিয়া-আলানিয়ার]] অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১২৩৮-৩৯ খ্রিস্টাব্দে মঙ্গোলদের আক্রমণের ফলে রাজ্যটি ধ্বংস হয়ে যায়।
 
প্রাচীন আর্মেনীয় রাজ্যের পতনের পর মধ্যেযুগে বাগ্রাতিদ আর্মেনিয়া, তাশির-জোরাগেট রাজ্য, সিউনিক রাজ্য এবং খাচেনরা বিভিন্ন সময় স্থানীয় আর্মেনীয় জনগোষ্ঠীকে সংঘবদ্ধ করে বাইরের হুমকির হাত থেকে এই অঞ্চলকে রক্ষা করে। আরমেনিয়ার সাথে ককেশীয়ককেসীয় আলবেনিয়া সর্বদা একটি সুসম্পর্ক বজায় রাখে এবং আর্মেনীয় এপোস্টলিক চার্চের মতো ককেশীয়ককেসীয় আলবেনিয়ার চার্চও একই খ্রিস্টান ধর্মমত প্রচার করতো। ককেশীয়ককেসীয় আলবেনিয়ার ক্যথলিকরা নিযুক্ত হতেন আর্মেনিয় চার্চ দ্বারা।<ref>{{Cite news|url=https://georgianorthodoxchurch.wordpress.com/2013/08/09/caucasian-albanian-church-celebrates-its-1700th-anniversary/|title=Caucasian Albanian Church celebrates its 1700th Anniversary|date=2013-08-09|work=The Georgian Church for English Speakers|access-date=2018-03-02|language=en-US}}</ref>
 
১২ শতকে জর্জিয় রাজা ডেভিড জর্জিয়া থেকে মুসলিমদেরকে বের করে দেন এবং জর্জিয়া রাজ্যকে একটি আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে গড়ে তোলেন। ১১৯৪ হতে ১২০৪ সালের মধ্যে জর্জিয়ার রাণী তামারের সৈন্যবাহিনী রাজ্যের দক্ষিণ-পূর্ব এবং দক্ষিণ প্রান্ত হতে সেলজুক তুর্কিদের আক্রমণ প্রতিহত করে এবং দক্ষিণ আর্মেনিয়ার সেলজুক তুর্কিদের নিয়ন্ত্রিত রাজ্যে বেশ কিছু সফল অভিযান পরিচালনা করে। জর্জিয়া রাজ্য ককেশাস অঞ্চলে ক্রমাগত সৈন্য অভিযান পরিচালনা করতে থাকে। রাণী তামারের সৈন্য অভিযান এবং ১২০৪ সালে বাইজেনটাইন সাম্রাজ্যের সাময়িক পতনের ফলে জর্জিয়া সম্পূর্ণ [[নিকট প্রাচ্য|নিকট প্রাচ্যে]] সবচেয়ে শক্তিশালী খ্রিস্টান রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এসময়ে উত্তর ইরান এবং উত্তরপূর্ব তুরস্ক থেকে শুরু করে উত্তর ককেশাস অঞ্চল জর্জিয়া রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
 
পরবর্তীতে ককেশাসককেসাস অঞ্চল [[অটোমান সম্রাজ্য|অটোমান]], [[মঙ্গোল]], কিছু স্থানীয় রাজ্য এবং খানাত রাজ্যের দ্বারা বিজিত হয় এবং একসময় এই অঞ্চল পুনরায় [[ইরান|ইরানের]] অন্তর্ভুক্ত হয়।<gallery widths=250 heights=170>
File:Ejmiadzin Cathedral2.jpg|[[আর্মেনিয়া|আর্মেনিয়ায়]] অবস্থিত ৩০৩ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত এটচমিয়াদজিন ক্যাথিড্রাল, আর্মেনিয়ার একটি ধর্মীয় কেন্দ্র। এটি [[ইউনেস্কো]] ঘোষিত একটি [[বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান]]।
File:Svetitskhoveli Cathedral, Mtskheta, Georgia P. Liparteliani.jpg|জর্জিয়ায় অবস্থিত ৪র্থ শতকে নির্মিত স্ভেতিত্সখোভেলি ক্যাথিড্রাল, এটি ছিল রাজকীয় জর্জিয়ার একটি প্রার্থনা কেন্দ্র। এটি [[ইউনেস্কো]] ঘোষিত একটি [[বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান]]।
১৫২ নং লাইন:
 
=== আধুনিক কাল ===
উনবিংশ শতাব্দির প্রথমভাগ পর্যন্ত দক্ষিণ ককেশাসককেসাস এবং দক্ষিণ [[দাগেস্তান]] [[কাজার রাজবংশ|পারস্য সাম্রাজ্যের]] অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮১৩ হতে ১৮২৮ সালের মধ্যে যথাক্রমে গুলিস্তান চুক্তি এবং তুর্কমেনচাই চুক্তির মাধ্যমে ইরান দক্ষিণ ককেশাস এবং দাগেস্তান [[রুশ সাম্রাজ্য|রুশ সাম্রাজ্যের]] কাছে হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়।<ref>Timothy C. Dowling [https://books.google.nl/books?id=KTq2BQAAQBAJ&pg=PA728 ''Russia at War: From the Mongol Conquest to Afghanistan, Chechnya, and Beyond''] pp 728–730 ABC-CLIO, 2 dec. 2014. {{ISBN|978-1598849486}}</ref> এই অর্জনের পরবর্তী বছরগুলোতে রাশিয়ানরা [[অটোমান সাম্রাজ্য|অটোমান সাম্রাজ্যের]] সাথে বেশ কিছু যুদ্ধ করে এবং পশ্চিম জর্জিয়া সহ অবশিষ্ট দক্ষিণ ককেশাসককেসাস দখল করে নেয়।<ref>Suny, page 64</ref><ref>Allen F. Chew. "An Atlas of Russian History: Eleven Centuries of Changing Borders", [[Yale University Press]], 1970, p. 74</ref>
 
উনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ভাগে রুশ সাম্রাজ্য উত্তর ককেশাসককেসাস অঞ্চলও দখল করে। [[ককেশীয় যুদ্ধ|ককেশীয়ককেসীয় যুদ্ধের]] সময় রাশিয়ানরা স্থানীয় সির্কাসিয়ানদের উপরে জাতিগত নিধন অভিযান চালায় এবংন অধিকাংশ সির্কাসিয়ানকে তাদেরকে তাদের জন্মভূমি থেকে বিতাড়িত করে অটোমান সাম্রাজ্যে চলে যেতে বাধ্য করে।<ref>Yemelianova, Galina, Islam nationalism and state in the Muslim Caucasus. Caucasus Survey, April 2014. p. 3</ref><ref>Memoirs of Miliutin, "the plan of action decided upon for 1860 was to cleanse [ochistit'] the mountain zone of its indigenous population", per Richmond, W. <u>The Northwest Caucasus: Past, Present, and Future</u>. Routledge. 2008.</ref>
 
১৯৪০ এর দশকে প্রায় ৪৮০,০০০ [[চেচেন]] ও [[ইঙ্গুস]], ১২০,০০০ কারাচাই-বাল্কার ও মেস্খেতিয় তুর্কি, হাজার হাজার কাল্মিক এবং ২০০,০০০ নাকচিভান [[কুর্দি]] ও ককেশীয়ককেসীয় জার্মানদেরকে মধ্য এশিয়া ও সাইবেরিয়ায় নির্বাসিত করা হয়। এর ফলে তাদের প্রায় এক চতুর্থাংশ মানুষ মৃত্যুবরণ করে।<ref>{{Cite book|title=A century of genocide: utopias of race and nation |last=Weitz |first=Eric D. |authorlink= |coauthors= |year=2003 |publisher=[[Princeton University Press]] |location= |isbn=0-691-00913-9 |page=82 |url=https://books.google.com/books?id=W50Gg4o_2q4C&pg=PA82 |accessdate=}}</ref>
 
সমগ্র দক্ষিণ ককেশাসককেসাস অঞ্চল দুইবার রাজনৈতিকভাবে একত্রীত হয়েছে। প্রথমবার [[রুশ গৃহযুদ্ধ|রুশ গৃহযুদ্ধের]] সময় ৯ এপ্রিল ১৯১৮ হতে ২৬ মে ১৯১৮ পর্যন্ত ট্রান্সককেশীয় গণতান্ত্রিক যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র হিসেবে। দ্বিতীয়বার, ১২ মার্চ ১৯২২ হতে ৫ ডিসেম্বর ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত [[সোভিয়েত ইউনিয়ন|সোভিয়েত]] শাসনাধীন [[ট্রান্সককেশিয়ান এসএফএসআর]] হিসেবে। ১৯৯১ সালে [[সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন|সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের]] পরে [[জর্জিয়া (রাষ্ট্র)|জর্জিয়া]], [[আজারবাইজান]] এবং [[আর্মেনিয়া]] স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করে।
 
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর হতে এই অঞ্চলে বিভিন্ন আঞ্চলিক সমস্যার সৃষ্টি হয়। যার মধ্যে নাগোরনো-কারাবাখ যুদ্ধ (১৯৮৮-১৯৯৪), পূর্ব প্রিগোরোডনি সংঘর্ষ (১৯৮৯-১৯৯১), আবখাজিয়ার যুদ্ধ (১৯৯২-৯৩), [[প্রথম চেচেন যুদ্ধ]] (১৯৯৪-১৯৯৬), দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধ (১৯৯৯-২০০৯) এবং দক্ষিণ ওশেতিয়ার যুদ্ধ (২০০৮) ইত্যাদি অন্যতম।
 
=== পুরাণ ===
[[গ্রিক পুরাণ]] অনুযায়ী ককেশাসককেসাস বা কাউকাসোস ছিল বিশ্বকে ধরে রাখা স্তম্ভগুলোর একটি। [[প্রমিথিউস (দেবতা)|প্রমিথিউস]] (বা জর্জিয় সংস্করণ অনুযায়ী আমিরানি) আগুনের উপহারের সাথে মানুষকে পরিবেশন করার পর, [[জিউস]] প্রমিথিউসের স্পর্ধা দেখে তাঁকে শিকল দ্বারা আবদ্ধ করেন এবং তাঁকে শাস্তি দেন যে একটি ঈগল প্রতিদিন প্রমিথিউসের কলিজা ছিড়ে খাবে।
 
পারস্যের পুরাণ অনুযায়ী ককেশাসককেসাস সম্ভবত কাল্পনিক কাফ পর্বতের সাথে সম্পর্কিত, যেটি বিশ্বজগতের চারপাশ বেষ্টন করে আছে। পারস্যের পুরাণ অনুযায়ী এই অঞ্চলটি সাওশিয়ান্তের যুদ্ধক্ষেত্র এবং সিমুর্ঘের আবাস ছিল।
 
[[প্রাচীন রোম|রোমান]] কবি অভিডের মতে ককেশাসককেসাস স্কিথিয়ায় অবস্থিত এবং তিনি একে ঠান্ডা ও পাথুরে পর্বত হিসেবে বর্ণনা করেছেন যা ব্যক্তিত্বের ক্ষুধার ঘর। গ্রিক বীর [[জেসন]] সোনালি ফ্লিচের আশায় ককেশাসেরককেসাসের পশ্চিম উপকূলে যাত্রা করেন এবং সেখানে কলচিসের রাজা এইটেসের কন্যা মেডেয়ার সাক্ষাৎ পান।
 
== বাস্তুসংস্থান ==
১৭৮ নং লাইন:
 
== শক্তি ও খনিজ সম্পদ ==
ককেশাসেককেসাসে অর্থনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ধরণের শক্তি ও খনিজ সম্পদ রয়েছে। যেমন, এলানাইট, [[স্বর্ণ]], [[ক্রোমিয়াম]], [[তামা]], আকরিক লোহা, [[পারদ]], ম্যাঙ্গানিজ, [[মলিবডেনাম]], [[সীসা]], [[টাংস্টেন]], [[ইউরেনিয়াম]], [[দস্তা|জিংক]], [[তেল]], [[প্রাকৃতিক গ্যাস]], এবং [[কয়লা]] ([[এন্থ্রাসাইট]] ও [[লিগনাইট]] উভয়ই)।
 
== খেলাধুলা ==