আলজিয়ার্স: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
সংশোধন
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্য থাকল এর পরিচালককে জানান।
১৮ নং লাইন:
| subdivision_type2 = [[আলজেরিয়ার জেলাসমূহ|জেলা]]
| subdivision_name2 = [[সিদি মহামেদ জেলা]]
| subdivision_name = {{flagপতাকা|Algeria}}
|leader_title = [[ওয়ালি]] ([[নগরপ্রশাসক]])
|leader_name = আবদেলকাদের জুখ (২০১৩ সাল থেকে)
২৭ নং লাইন:
|area_metro_km2 = ১১৯০
|population_as_of = ২০১১
|population_footnotes = <ref name=citypop>{{Citeওয়েব webউদ্ধৃতি|url=http://citypopulation.de/Algeria.html
|title=Population of the city proper according to the 2008 census|publisher=Citypopulation.de |date=
|accessdate=2010-06-27| archiveurl= https://web.archive.org/web/20100615060640/http://www.citypopulation.de/Algeria.html| archivedate= 15 June 2010 <!--DASHBot-->| deadurl= no}}</ref><ref name=wup>{{Citeওয়েব webউদ্ধৃতি|url=http://esa.un.org/unup/index.asp?panel=2 |title=UN World Urbanization Prospects
|publisher=Esa.un.org |date= |accessdate=2010-06-27 |deadurl=yes
|archiveurl=https://web.archive.org/web/20091223005931/http://esa.un.org/unup/index.asp?panel=2
৩৯ নং লাইন:
|timezone = [[মধ্য ইউরোপীয় সময়]]
|utc_offset = +1
|coordinates = {{coordস্থানাঙ্ক|36|45|14|N|3|3|32|E|region:DZ_type:city|display=inline,title}}
|elevation_min_m = ২
|elevation_max_m = ৪২৪
৫০ নং লাইন:
|footnotes =
}}
'''আলজিয়ার্স'''({{lang-ar|{{linktext|الجزائر}}}}, ''আল-জাযাইর''; {{lang-ber|Dzayer}}, {{lang-fr|Alger}} ''আল্জে‌'') [[ভূমধ্যসাগর|ভূমধ্যসাগরে]] উত্তর-পশ্চিম [[আফ্রিকা]]র একটি প্রধান বন্দর শহর। এটি [[আলজেরিয়া]]র উত্তরাংশে [[আলজিয়ার্স উপসাগর|আলজিয়ার্স উপসাগরের]] তীরে অবস্থিত। এটি আলজেরিয়ার বৃহত্তম শহর, সমুদ্রবন্দর ও রাজধানী এবং একাধারে দেশটির রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।
 
আলজিয়ার্স শহরটি [[সহিল]] পার্বত্য অঞ্চলের ঢালের উপর নির্মিত হয়েছে। এই পাহাড়গুলি ভূমধ্যসাগরের আলজিয়ার্স উপসাগরের উপকূলীয় সমভূমিগুলির সমান্তরালে প্রায় ১৬
৫৯ নং লাইন:
 
==ইতিহাস==
[[ফিনিসীয় জাতি]]র লোকেরা [[উত্তর আফ্রিকা]]তে অনেকগুলি বসতি স্থাপন করেছিল। আনুমানিক ১২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে তারা বর্তমানে আলজিয়ার্স যেখানে অবস্থিত, সেখানে একটি উপকূলীয় বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করে। [[কার্থেজ|কার্থেজের]] অধিবাসী এবং [[রোমান]]দের কাছে এটি ইকোসিয়ুম নামে পরিচিত ছিল। [[মোরিতানীয়]] গোত্রসর্দার ফির্মুস আনুমানিক ৩৭৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে শহরটি বিজয় করে লুটতরাজ চালান। [[পিউনীয় যুদ্ধ]]সমূহের পরে ১৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এটি [[রোমান সাম্রাজ্যের]] একটি অংশে পরিণত হয় এবং ৫ম শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত রোমান শাসনাধীন ছিল। এরপর ৫ম শতকে ভান্ডাল বা যাযাবর উত্তর-ইউরোপীয় জাতিরা এটি আক্রমণ করে এর ক্ষতিসাধন করে। এরপরে বাইজেন্টীয় শাসকেরা এটি শাসন করতে শুরু করেন, কিন্তু ৬৫০ খ্রিস্টাব্দে এসে আরবেরা এটির নিয়ন্ত্রণ হাতে নেয়।
 
বর্তমান আলজিয়ার্স শহরটিকে আনুমানিক ৯৫০ খ্রিস্টাব্দে বের্বের জাতির লোকেরা ভূমধ্যসাগরীয় একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে। অনেকগুলি বের্বের (আমাজিগ) রাজবংশ শহরটিকে ধারাবাহিকভাবে শাসন করে। এর পরে প্রায় পাঁচ শতাব্দী ধরে বিভিন্ন ইউরোপীয়, আরব ও বের্বের সেনাদল শহরটি দখল করে ও হারায়।
 
১৬শ শতকের শুরুর দিকে [[স্পেন]] থেকে বিতাড়িত অনেক [[মুসলমান]] ও [[ইহুদী]]রা আলজিয়ার্স শহরে আশ্রয় নেয়। এখানকার কিছু অধিবাসী স্পেনের বাণিজ্যজাহাজগুলির উপর জলদস্যুদের মত আক্রমণ শুরু করে। এর প্রত্যুত্তরে ১৫১০ সালে স্পেন এসে আলজিয়ার্স শহরের পোতাশ্রয়ের সম্মুখে তীর থেকে কিছু দূরে অবস্থিত ছোট দ্বীপটি দখলে নেয় এবং সেখানে ১৫১৪ সালে একটি দুর্গ স্থাপন করে, যার নাম ছিল [[পেনিয়ন]]। আলজিয়ার্সের শাসনকর্তা বা আমির দুইটি [[উসমানীয় তুর্কি]] জলদস্যু জাহাজকে আহ্বান জানান যাতে তারা পেনিয়ন থেকে স্পেনীয়দের বিতাড়িত করে। এদের মধ্যে একজন জলদস্যু নেতা, যার নাম ছিল [[খাইর আল-দিন]] (ইউরোপীয়দের কাছে যার ডাকনাম ছিল বারবারোসা), আলজিয়ার্স শহর দখল করে নেয় এবং ১৫২৯ সাল নাগাদ স্পেনীয়দের তাড়িয়ে দেয়। আলজিয়ার্স তখন নিজেকে উসমানীয় সাম্রাজ্যের অংশ হিসেবে ঘোষণা দেয়। উসমানীয় শাসনের সময় শহরটি নামে উসমানীয় সুলতানের কর্তৃত্বাধীন হলে কার্যত এটি স্বশাসিত ছিল। বারবারোসার উদ্যোগে এর পর প্রায় ৩০০ বছর ধরে আলজিয়ার্স শহরটি কুখ্যাত বারবারীয় জলদস্যুদের একটি প্রধান ঘাঁটি হিসেবে কাজ করে।
 
বারবারীয় জলদস্যুরা প্রথমে ইউরোপীয় জাহাজ ও পরে মার্কিন জাহাজগুলির উপর হামলা চালায়। ইউরোপীয়রা তাদের দমন করার জন্য বারংবার প্রচেষ্টা চালালেও সফল হয়নি। ১৫৪১ সালে পবিত্র রোমান সম্রাট ৫ম চার্লস এদের বিরুদ্ধে নৌঅভিযান চালিয়েছিলেন। ১৮১৫ সালে মার্কিন নৌবাহিনীর কাপ্তান স্টিভেন ডেকাটার আলজিয়ার্সের বিরুদ্ধে একটি সেনা অভিযান চালান। তিনি আলজিয়ার্সের প্রশাসককে শান্তি চুক্তিতে সই করতে বাধ্য করেন এবং মার্কিন জাহাজের বিরুদ্ধে হামলা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি আদায় করেন। কিন্তু জলদস্যুগিরি অব্যাহত থাকে এবং ১৮১৬ সালে ওলন্দাজ ও ব্রিটিশদের সম্মিলিত নৌবাহিনী আলজেরীয় জাহাজবহরের প্রায় পুরোটাই ধ্বংস করে ফেলে। এত ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও ১৮৩০ সাল পর্যন্ত আলজিয়ার্স জলদস্যুদের একটি দুর্বল বন্দরঘাঁটি ছিল।
 
১৮৩০ সালে ফ্রান্স কূটনৈতিক অপমানের প্রতিশোধ নিতে আলজিয়ার্স দখল করে এবং ক্রমে পুরো আলজেরিয়াতেই ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠা করে। ফ্রান্স উত্তর ও পশ্চিম আফ্রিকাতে তার যে ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিল, আলজিয়ার্স সেই সাম্রাজ্যের সামরিক ও প্রশাসনিক সদর দফতরে পরিণত হয়। ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনামলে আলজিয়ার্সের পোতাশ্রয় ও সড়কব্যবস্থা আরও বড়, প্রশস্ত ও আধুনিক করা হয়। এখানে ইউরোপীয় নগরজীবনের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা যেমন নাট্যশালা, জাদুঘর, জনগণের জন্য উন্মুক্ত উদ্যান ইত্যাদি তৈরি হতে থাকে। ১৮৭৯ সালে আলজিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০শ শতকের শুরুর দিকে আলজিয়ার্সের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ নাগরিক ছিলেন ইউরোপ থেকে আগত অভিবাসী বা তাদের বংশধর। কিন্তু স্থানীয় আলজেরীয়রা তাদের শহরে এই উন্নতি এবং ধনসম্পদের প্রবৃদ্ধির কোন স্বাদগ্রহণ করেনি। তাদেরকে নিয়ম করে ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত লোকালয়গুলি থেকে আলাদা করে রাখা হয়; তারা কিছু স্বল্পসংখ্যক দরিদ্র এলাকাতে বসবাস করত।
 
২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪২ থেকে ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত আলজিয়ার্স উত্তর আফ্রিকাতে মিত্র দেশগুলির এবং জেনারেল শার্ল দো গোলের নেতৃত্বাধীন স্বাধীন ফ্রান্স সরকারের সদর দপ্তর অর্থাৎ ফ্রান্সের ক্ষণস্থায়ী রাজধানী হিসেবে কাজ করেছিল।
 
১৯৫০-এর দশকে ঔপনিবেশিক ফ্রান্সের বিরুদ্ধে আলজেরীয়দের গণজাগরণ শুরু হয়। আলজিয়ার্স ছিল এই বিদ্রোহের প্রাণকেন্দ্র। ১৯৬২ সাল পর্যন্ত ফ্রান্স আলজেরিয়া শাসন করে। সে বছর আলজেরিয়া স্বাধীনতা লাভ করে।
 
স্বাধীনতার পরে নতুন সরকার আলজিয়ার্স শহরে অনেক সুদূরপ্রসারী পরিবর্তনের সূচনা করে। তারা অনুন্নত ঔপনিবেশিক শহর থেকে এটিকে একটি আধুনিক সমাজতান্ত্রিক সমাজে পরিণত করতে চেয়েছিল। এসময় কয়েক দশক ধরে শহরের ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত অধিবাসীদের একটি বিশাল অংশ আলজেরিয়া পরিত্যাগ করে।
৮২ নং লাইন:
পাহাড়ের উঁচু ঢালগুলিতে পুরাতন আলজিয়ার্স শহরটি অবস্থিত, যেখানকার রাস্তাগুলি সংকীর্ণ ও আঁকাবাঁকা। এখানকার দালানগুলির একটি বৈশিষ্ট্য হল এগুলির সুউচ্চ দেয়ালগুলিতে কোন জানালা নেই।এই অংশের মূল আকর্ষণ হল পাহাড়ের শীর্ষে সমুদ্রতল থেকে ১২২ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এবং ১৬শ শতকে উসমানীয় তুর্কিদের দ্বারা নির্মিত একটি দুর্গ, যার নাম কাসবাহ। ১৯৯২ সালে এটিকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা দেওয়া হয়। এই দুর্গের নামেই গোটা এলাকার নামকরণ করা হয়েছে কাসবাহ। কাসাবাহ দুর্গটি আলজিয়ার্সের সর্বশেষ দুইজন তুর্কি দে বা প্রশাসকের বাসভবন ছিল। শহরের এই মুসলমান-অধ্যুষিত অংশটির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হচ্ছে কেচাউয়া মসজিদ। ১৯৬২ সালে আলজেরিয়ার স্বাধীনতার আগে এটি সাধু ফিলিপের ক্যাথেড্রাল নামে পরিচিত ছিল। ১৮৪৫-৬০ সালে ফরাসিরা এটিকে একটি খ্রিস্টান উপাসনালয় হিসেবে নির্মাণ করেছিল।
 
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে শহরের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলে পুরাতন আলজিয়ার্স শহরের জনঘনত্ব বেড়ে যায় এবং ফলে দক্ষিণ দিকে নতুন নতুন শহরতলীর উদ্ভব ঘটে। আলজিয়ার্স-হুয়ারি-বুমেদিয়েন বিমানবন্দরটি মূল শহরের পূর্বে দার এল-বেইদা শহরতলীতে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এছাড়া আলজিয়ার্স দেশের রেল ও সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার একটি মূল গ্রন্থিস্থল। ভূমধ্যসাগরের তীরে কৌশলগত অবস্থানের কারণে এবং উন্নত একটি পোতাশ্রয়ের জন্য আলজিয়ার্স এই অঞ্চলের একটি প্রধান জাহাজের মাধ্যমে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কেন্দ্র এবং জাহাজের জ্বালানি পুনঃভরণ কেন্দ্র। এখান থেকে মূলত ওয়াইন, সব্জি, কমলা, লোহার আকরিক ও ফসফেট রপ্তানি করা হয়। ২০১১ সালে আলজিয়ার্স শহরে পাতালরেলের প্রথম পথটি উদ্বোধন করা হয়; এটি ৯.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং এতে ১০টি বিরতিস্থল বা স্টেশন আছে।
 
==জলবায়ু==