বেশান্তর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Debjitpaul10 (আলোচনা | অবদান)
মাঝেমধ্যে প্রচলিত ইংরেজি শব্দগুলো ব্যবহার করলে পাঠকের কাছে সহজ হবে।
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
Debjitpaul10-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে Zaheen-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
ট্যাগ: পুনর্বহাল
১ নং লাইন:
[[চিত্র:This-Is-The-Army_gals_(Broadway).jpg|ডান|থাম্ব|325x325পিক্সেল|আর্ভিং বার্লিনের "দিস ইজ় দ্য আর্মি, মিস্টার জোন্‌স", বেশান্তরকারীদের দ্বারা অভিনীত (১৯৪২)]]
'''বেশান্তর''' ({{lang-en|Cross-dressing}}; ''ক্রসড্রেসিং'') হল কোনো ব্যক্তির বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে জড়িত নির্দিষ্ট [[সমাজ]]-নির্ধারিত [[পোশাক]] অথবা অন্যান্য সামগ্রী ওই ব্যক্তির দ্বারা পরিধান করার ক্রিয়া। আধুনিক যুগে এবং অতীতে [[ছদ্মবেশ]], স্বাচ্ছন্দ্য এবং আত্ম-সন্ধানের উদ্দেশ্যে বেশান্তর বা ক্রসড্রেসিং ব্যবহৃত হয়েছে।
 
সুদূর অতীত থেকেই প্রায় প্রতিটি মানব সমাজ প্রত্যেকটি [[লিঙ্গ|লিঙ্গের]] জন্য কাঙ্ক্ষিত ভঙ্গিমা, রঙ এবং তাদের পরিধেয় পোশাকের ধরন সম্পর্কিত নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি করেছে। অনুরূপে, কোনো লিঙ্গের জন্য যথাযথ পোশাক কী, তার সংজ্ঞা নির্ধারণহেতু অধিকাংশ সমাজেরই গুচ্ছের বিধিনির্দেশ, [[দৃষ্টিভঙ্গি]], এমনকি আইনও রয়েছে।
৯ নং লাইন:
[[File:Crossdressing circa 1890 Frances Benjamin Johnston (right).jpg|thumb|left|225px|
ফ্রান্সেস বেঞ্জামিন জনস্টন (ডানে) তাঁর দুই বেশান্তরকারী বন্ধুর সাথে; জনস্টনের অনুসারে, "মহিলাটি" হলেন চিত্রকর মিল্‌স থম্পসন।]]
ইতিহাসের পাতা জুড়ে অনেক সভ্যতাতেই বেশান্তর এর চর্চা হয়েছে। [[হিন্দু পুরাণ|হিন্দু]], [[গ্রিক পুরাণ|গ্রিক]], [[নর্স পুরাণ|নর্স পুরাণে]] এর অনেক উদাহরণ আছে। বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন স্তরের অনেক ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বকেও ক্রসড্রেসিংবেশান্তর করতে দেখা গেছে। লোককথা, সাহিত্য, থিয়েটার ও সংগীতে বেশান্তরের উজ্জ্বল ইতিহাস আছে। কাবুকি, কোরীয় শমন, চিনে অপেরা যার উদাহরণ।
 
হিন্দু পুরাণে বেশান্তর একটি পরিচিত ঘটনা। [[রামায়ণ|রামায়ণে]] উত্তরকাণ্ডে রাজা ইলার কাহিনিতে ভগবান [[শিব]]কে নারীবেশে পার্বতীর সাথে জলকেলি করতে দেখা যায়। [[সমুদ্র মন্থন|সমুদ্র মন্থনে]] [[বিষ্ণু]] অসুরদের লক্ষ্যচ্যুত করতে "মোহিনী" নামে নারীর রূপ ধারণ করেন। সেটাকেও বেশান্তরের রূপভেদ বলা যেতে পারে। [[মহাভারত|মহাভারতে]] অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বেশান্তর-সম্বন্ধীয়। বিরাটপর্বে অজ্ঞাতবাসে থাকাকালীন [[অর্জুন]] প্রায় এক বছর "[[বৃহন্নলা]]" নামে নর্তকী নারীর ছদ্মবেশ ধরে মৎস্যরাজ্যে যাপন করেছিলেন (বর্তমানে ''বৃহন্নলা'' শব্দটি রূপান্তরকামী অর্থে ব্যবহৃত হয়)। রাজা দ্রুপদের কন্যা [[শিখণ্ডী]] পুরুষ সেজে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতেন। আবার মৌষলপর্বে যাদবরা কৃষ্ণপুত্র [[শাম্ব]]কে জোরপূর্বক গর্ভবতী নারী সাজিয়ে বিদ্রূপ করেছিল।
১৬ নং লাইন:
 
==প্রকারভেদ==
বেশান্তর অনেক ধরনের হতে পারে এবং কোনো ব্যক্তির এই আচরণে জড়িত হয়ে ''বেশান্তরকারী'' (Cross-dresser) হয়ে ওঠারও অনেক কারণ থাকতে পারে। কিছু মানুষ তার বিপরীত লিঙ্গের পোশাক পরেন নিজের স্বাচ্ছন্দ্য অথবা শখের জন্য। এক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির পোশাক অন্য মানুষের কাছে ক্রসড্রেসিংবেশান্তর বলে বিবেচিত হয় না অথবা হওয়া উচিত নয়। আবার কিছু মানুষ অন্যদের চমকে দিতে বা সামাজিক বিধিনিষেধকে বুড়ো আঙুল দেখাতে বেশান্তর করেন।
 
লিঙ্গ-পরিচয় গোপন করতে, অর্থাৎ মেয়েরা সমাজে পুরুষ হিসেবে বাঁচতে এবং ছেলেরা নারী হিসেবে কাটাতে বেশান্তর করে। গল্পকাহিনীতে ''লিঙ্গ-ছদ্মবেশ'' বারবার ব্যবহৃত হয়েছে আর সাহিত্য, থিয়েটার ও চলচ্চিত্রে এটি একটি স্বাভাবিক ঘটনা। সেনাবাহিনীর মতো পুরুষপ্রধান পেশায় অংশ নিতে কিছু মহিলা ইতিহাসে বেশান্তর করেছেন। উল্টোদিকে, [[সেনাবাহিনী]] থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য, নয়তো রাজনৈতিক বা সামাজিক প্রতিবাদে ভূমিকা নিতে কিছু পুরুষ বেশান্তর করেছেন।
 
নোরা ভিনসেন্ট-এর প্রকল্প ''সেল্ফ-মেড ম্যান'' অনুসারে, গুপ্ত-সাংবাদিকতায় ক্রসড্রেসবেশান্তর করতে হতে পারে।
 
যে সব [[মঞ্চনাটক]] একটি লিঙ্গের মানুষ দ্বারা পরিচালিত হয়, সেখানে কিছু অভিনেতা বিপরীত লিঙ্গের কোনো চরিত্রে অভিনয় করতে বেশান্তর করেন। এক্ষেত্রে মূলত পুরুষরাই মহিলাদের পোশাক পরেন, এবং এটি অনেক সময় কৌতুকের পরিবেশ তৈরি করে ও হাসির উদ্রেক করে।
৪০ নং লাইন:
 
==পোশাক==
আসলে কোন্‌টা বেশান্তর, আর কোন্‌টা নয় — তার সংজ্ঞা তৈরি করেছে আমাদের সমাজই। যেমন, পাশ্চাত্য সমাজে মহিলারা বহুকাল থেকে পোশাক হিসেবে ট্রাউজার পরে আসছে, তাই এটিকে কখনোই বেশান্তর বলা হয় না। আবার কিছু সংস্কৃতিতে পুরুষেরা লুঙ্গি ও কিল্টের মতো ঘাঘরা বা স্কার্ট-জাতীয় বস্ত্র পরে, এগুলিকে মেয়েদের পোশাক হিসেবে গণ্য হয় না, এবং এগুলি পরিধান করলেও কাউকে ক্রসড্রেসারবেশান্তরকারী পুরুষ বলা চলে না। সামাজিক ব্যবস্থায় বিশ্বায়নের প্রভাব যত বাড়ছে, নারী-পুরুষ উভয়েই পোশাকের ক্ষেত্রে সংস্কৃতির আদান-প্রদান করছে। স্কার্টকে পুরুষদের দৈনন্দিন ব্যবহার্য পোশাক হিসেবে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য ফ্যাশন ডিজাইনাররা বিক্ষিপ্ত কিছু প্রচেষ্টা করেছেন।
 
কস্‌প্লে (Cosplay বা চরিত্রান্তর) হল বেশান্তর করে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করা, যেখানে মেয়েরা পুরুষ সাজেন, অথবা উল্টোটাও হতে পারে। পুরুষ চরিত্রে অভিনয় করার জন্য মহিলাদের ‘স্তন বাইন্ডিং’ করাও অস্বাভাবিক কিছু নয়। দেহগঠনে বেশি করে নারীত্ব আনতে পুরুষ ক্রসড্রেসাররাবেশান্তরকারীরা পোশাকের নীচে বিভিন্ন সিলিকন ''ব্রেস্ট ফর্ম'' বা কৃত্রিম স্তন ব্যবহার করেন, যা সাধারণত শারীরিক ত্রুটির কারণে নারীরাই ব্যবহার করেন।
 
পোশাক-নির্বাচনে নারী বেশান্তরকারীরা অনেকটাই উন্মুক্ত, যে-কোনো পুরুষের পোশাক পরতে পারেন। ছেলেদের জন্য বেশান্তর অনেক বৈচিত্র্যময়। বেশিরভাগ শখের পুরুষ বেশান্তরকারী যদিও আধুনিক হালকা নারীপোশাক পছন্দ করেন, কিন্তু বেশান্তরকামী বা ফেটিশিস্ট পুরুষেরা যতটা সম্ভব আকর্ষণীয় ও খোলামেলা পোশাক পরতে ভালোবাসেন। তাদের কথায়, তারা এই মেয়েলি পোশাক গায়ে দিয়ে প্রচণ্ড উত্তেজিত হন ও মজা পান। তাই তারা ব্রাইডাল গাউন, ব্রা, সুইমওয়্যার, হিল জুতো, স্টকিং পরে নিজেদের আবিষ্কার করতে থাকেন। ফিতে ও জড়ির কাজ-করা সাবেকি বস্ত্র আর ছোট মেয়েদের ফ্রক এদের অত্যন্ত প্রিয়। ভারতীয় উপমহাদেশে পুরুষ ক্রসড্রেসাররাবেশান্তরকারীরা বিলিতি পোশাকের চেয়ে শাড়ি, ব্লাউজ়, চুড়িদারের মতো দেশীয় পোশাকেই বেশি স্বচ্ছন্দ। এরা নিজেদের বধূবেশে দেখতে পছন্দ করেন, তাই, বেশান্তরের সময় সিঁদুর, চুড়ি, গয়নাতেও নিজেদের সাজান।
 
==সামাজিক প্রভাব ও সমস্যা==