শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৩২ নং লাইন:
}}
 
'''শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়''' ([[১৫ সেপ্টেম্বর]] [[১৮৭৬]] - [[১৬ জানুয়ারি]] [[১৯৩৮]]) হলেন একজন প্রখ্যাত বাঙালি সাহিত্যিক। তার সাহিত্যকর্মের জন্যে পাঠকের কাছে তিনি 'অপরাজেয় কথাশিল্পী' নামে কথিত হন।
 
== জন্ম ও পরিবার ==
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় [[১৮৭৬]] খ্রিস্টাব্দের [[১৫ সেপ্টেম্বর]] [[ব্রিটিশ ভারত|ব্রিটিশ ভারতের]] [[প্রেসিডেন্সি| প্রেসিডেন্সি বিভাগের]] [[হুগলি জেলা]]র দেবানন্দপুর গ্রামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মতিলাল চট্টোপাধ্যায় ও মাতার নাম ভুবনমোহিনী দেবী। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে শরৎচন্দ্র ছিলেন দ্বিতীয়। তাঁর দিদি অনিলা দেবী ছাড়াও প্রভাসচন্দ্র ও প্রকাশচন্দ্র নামে তাঁর দুই ভাই ও সুশীলা দেবী নামে তাঁর এক বোন ছিল। দারিদ্র্যের কারণে মতিলাল স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে [[ভাগলপুর|ভাগলপুরে]] শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন বলে শরৎচন্দ্রের শৈশবের অধিকাংশ সময় এই শহরেই কেটেছিল।<ref name='Nath'>শরৎ রচনাবলি, জন্মশতবার্ষিকী সংস্করণ, প্রথম ভাগ, প্রথম প্রকাশ : ১২ ভাদ্র, ১৩৮২ বঙ্গাব্দ, পুনর্মুদ্রণ কার্তিক ১৪০০, প্রকাশক : নাথ পাবলিশিং, কলকাতা, সম্পাদক : শৈলেন্দ্রনাথ গুহ রায়</ref>{{rp|৫৯১}}
[[File:শরৎচন্দ্র জন্ম ভিটে.jpg|thumb|শরৎচন্দ্র জন্ম ভিটে]]
 
৪৩ নং লাইন:
== ভাগ্যান্বেষণ ==
[[File:Study with Furniture - First Floor West - House of Sarat Chandra Chattopadhyay - Samtaber - Howrah 2014-10-19 9838.JPG|thumb|শরৎচন্দ্রের ব্যবহৃত আসবাবপত্র, সামতাবেড়, হাওড়া।]]
কলেজ ত্যাগ করার পর শরৎচন্দ্র [[ভাগলপুর]] শহরের আদমপুর ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে খেলাধুলো ও অভিনয় করে সময় কাটাতে শুরু করেন। এই সময় প্রতিবেশী বিভূতিভূষণ ভট্টের বাড়িতে একটি সাহিত্যসভার আয়োজন করেছিলেন, যার ফলশ্রুতিতে তিনি [[বড়দিদি|'বড়দিদি']], [[দেবদাস (উপন্যাস)|'দেবদাস']], [[চন্দ্রনাথ|'চন্দ্রনাথ']], [[শুভদা|'শুভদা']] ইত্যাদি উপন্যাস এবং [[অনুপমার প্রেম (ছোট গল্প)|'অনুপমার প্রেম']], [[আলো ও ছায়া|'আলো ও ছায়া']], [['বোঝা' (গল্প)|'বোঝা']], [['হরিচরণ']] ইত্যাদি গল্প রচনা করেন। এই সময় তিনি বনেলী রাজ-এস্টেটে কয়েকদিন চাকরি করেন। কিন্তু পিতার ওপর কোনো কারণে অভিমানবশত তিনি সন্ন্যাসী সেজে ঘর ছেড়ে চলে যান। এই সময় তাঁর পিতার মৃত্যু হলে তিনি [[ভাগলপুর]] ফিরে এসে পিতার শ্রাদ্ধ সম্পন্ন করে [[কলকাতা]] যাত্রা করেন, যেখানে তিনি [[কলকাতা উচ্চ আদালত|কলকাতা উচ্চ আদালতের]] উকিল লালমোহন গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতে [[হিন্দি ভাষা|হিন্দি]] বইয়ের [[ইংরেজি ভাষা|ইংরেজি]] তর্জমা করার জন্য মাসে ত্রিশ টাকা মাইনের চাকরি পান। এই সময়, তিনি 'মন্দির' নামে একটি গল্প লিখে 'কুন্তলীন' প্রতিযোগিতায় পাঠালে তা বিজয়ী ঘোষিত হয়।<ref name="Nath"/>{{rp|৫৯৩}}
 
ছয় মাস লালমোহনের বাড়িতে কাটানোর পর শরৎচন্দ্র ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে [[ইয়াংগন|রেঙ্গুনে]] লালমোহন গঙ্গোপাধ্যায়ের ভগ্নিপতি উকিল অঘোরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে চলে যান। অঘোরনাথ তাঁকে বর্মা রেলওয়ের অডিট অফিসে একটি অস্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। দুই বছর পর তাঁর চাকরি চলে গেলে তিনি তাঁর বন্ধু গিরীন্দ্রনাথ সরকারের সঙ্গে [[পেগু]] চলে যান ও সেখানে অবিনাশ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে বসবাস করেন। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে বর্মার পাবলিক ওয়ার্কস অ্যাকাউন্টস অফিসের ডেপুটি একজামিনার মণীন্দ্রনাথ মিত্রের সাহায্যে শরৎচন্দ্র [[ইয়াংগন|রেঙ্গুনে]] এই অফিসে চাকরি পান ও পরবর্তী দশ বছর এই চাকরি করেন।<ref name="Nath"/>{{rp|৫৯৩-৫৯৪}}
 
১৯১২ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে শরৎচন্দ্র এক মাসের ছুটি নিয়ে দেশে ফিরে এলে 'যমুনা' নামে পত্রিকার সম্পাদক ফনীন্দ্রনাথ পাল তাঁকে পত্রিকার জন্য লেখা পাঠাতে অনুরোধ করেন। সেই অনুযায়ী, শরৎচন্দ্র [[ইয়াংগন|রেঙ্গুনে]] ফিরে গিয়ে [['রামের সুমতি'|'রামের সুমতি']] গল্পটি পাঠিয়ে দেন, যা যমুনা পত্রিকায় ১৩১৯ বঙ্গাব্দের ফাল্গুন ও চৈত্র্য সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। এরপর তিনি 'ভারতবর্ষ' পত্রিকার জন্যেও লেখা পাঠাতে শুরু করেন। ফনীন্দ্রনাথ পাল তাঁর উপন্যাস [['বড়দিদি']] পুস্তকাকারে প্রকাশ করেন। এমসি সরকার অ্যান্ড সন্স ও গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় অ্যান্ড সন্স তাঁর উপন্যাসগুলি পুস্তকাকারে প্রকাশ করেন।<ref name="Nath"/>{{rp|৫৯৫}}
 
১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ছুটি নিয়ে মনোমালিন্যের কারণে শরৎচন্দ্র চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে [[ইয়াংগন|রেঙ্গুন]] বাংলায় ফিরে আসেন।<ref name="Nath"/>{{rp|৫৯৫}}
== বৈবাহিক জীবন ==
 
শরৎচন্দ্র বার্মা রেলের হিসাব পরীক্ষক হিসেবে পঁচাত্তর টাকা মাইনের কেরেনিগিরির চাকরি লাভ করেন।(করেন ১৯০৫)। সালে। <ref name="ReferenceA">[[সেলিনা হোসেন]] ও নুরুল ইসলাম সম্পাদিত; [[বাংলা অাকাদেমি]] চরিতাভিধান; ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭; পৃষ্ঠা- ৩৬২।</ref> [[ইয়াংগন|রেঙ্গুনের]] উপকণ্ঠে বোটাটং পোজনডং অঞ্চলে কলকারখানার মিস্ত্রিদের পল্লিতে বসবাস করতেন। তাঁর বাসার নিচে শান্তি দেবী নামে এক ব্রাহ্মণ মিস্ত্রির কন্যা বসবাস করতেন। তাঁর পিতা তাঁর সঙ্গে এক মদ্যপের বিয়ের ঠিক করলে শান্তি দেবী শরৎচন্দ্রকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করতে অনুরোধ করায় শরৎচন্দ্র তাঁকে বিয়ে করতে বাধ্য হন। তাঁদের এক পুত্র সন্তানেরও জন্ম হয়, কিন্তু [[ইয়াংগন|রেঙ্গুনের]] প্লেগে আক্রান্ত হয়ে শান্তি দেবী ও তাঁর এক বছরের সন্তান মৃত্যুবরণ করেন। এর অনেক কাল পরে শরৎচন্দ্র [[ইয়াংগন|রেঙ্গুনে]] কৃষ্ণদাস অধিকারী নামে এক ভাগ্যান্বেষী ব্যক্তির অনুরোধে তাঁর ১৪ বছরের কন্যা মোক্ষদাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তিনি মোক্ষদার নাম রাখেন হিরন্ময়ী দেবী। তাঁরা নিঃসন্তান ছিলেন।<ref name="Nath"/>{{rp|৫৯৪}}
 
== শেষ জীবন ==
১৩৫ নং লাইন:
 
== চলচ্চিত্রায়ণ ==
[[চিত্র:Kundan Lal Saigal and Jamuna in Devdas (1936).jpg|thumb|250px|right|১৯৩৬-এর 'দেবদাস' চলচ্চিত্রে [[কুন্দন লাল সায়গল]] এবং [[যমুনা দেবী]]]]
 
'দেবদাস' চলচ্চিত্রে [[কুন্দন লাল সায়গল]] এবং [[যমুনা দেবী]]
তাঁর সাহিত্য-কর্মকে ঘিরে ভারতীয় উপমহাদেশে এ পর্যন্ত প্রায় পঞ্চাশটি চলচ্চিত্র বিভিন্ন ভাষায় তৈরি হয়েছে।<ref>{{IMDb name|0154158}}</ref> তার মধ্যে 'দেবদাস' উপন্যাসটি বাংলা, হিন্দি এবং তেলুগু ভাষায় আটবার তৈরি হয়। বিভিন্ন সময়ে 'দেবদাস' বাংলা ও হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন প্রমথেশ বড়ুয়া, কানন দেবী, উত্তমকুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সুপ্রিয়া দেবী, সুমিত্রা মুখার্জি, শাহরুখ খান, ঐশ্বর্য রাই প্রমুখ। এছাড়া সন্ধ্যারানি ও উত্তমকুমার অভিনীত বিখ্যাত বাংলা ছবি 'বড়দিদি', সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও মৌসুমি চট্টোপাধ্যায় অভিনীত 'পরিণীতা' ছবি নির্মিত হয়। 'পরিণীতা' উপন্যাস দু-বার চলচ্চিত্রায়িত হয়, বাংলা ছবি উত্তমকুমার ও সুচিত্রা সেন অভিনীত 'চন্দ্রনাথ', রজলক্ষ্মী-শ্রীকান্ত, উত্তমকুমার ও মাধবী মুখার্জি অভিনীত 'বিরাজ বউ', ঋষিকেশ মুখার্জির হিন্দি ছবি 'মাঝলি দিদি' অন্যতম। 'স্বামী' (১৯৭৭) চলচ্চিত্রের জন্য [[ফিল্মফেয়ার পুরস্কার|ফিল্মফেয়ার সেরা লেখকের পুরস্কার]] পান। 'বিন্দুর ছেলে' অবলম্বনে 'ছোটি বহু' (১৯৭১) নামে বিখ্যাত চলচ্চিত্র তৈরি হয়। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে 'দত্তা' চলচ্চিত্রে সুচিত্রা সেন এবং সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।
এছাড়া তার নববিধান উপন্যাসের ছায়া অবলম্বনে ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে 'তুমহারি পাখি' নামে একটি ভারতীয় টিভি ধারাবাহিক নির্মিত হয়|
১৪৪ ⟶ ১৪৩ নং লাইন:
{{সূত্র তালিকা}}
==আরও পড়ুন==
* [https://www.marxists.org/archive/shibdas-ghosh/1970/x01/x01.htm শরৎ মূল্যায়ন]
 
{{শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যকর্ম}}
১৫১ ⟶ ১৫০ নং লাইন:
{{Authority control}}
 
[[বিষয়শ্রেণিবিষয়শ্রেণী:১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে-এ জন্ম]]
[[বিষয়শ্রেণিবিষয়শ্রেণী:১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে-এ মৃত্যু]]
[[বিষয়শ্রেণিবিষয়শ্রেণী:বাঙালি ঔপন্যাসিক]]
[[বিষয়শ্রেণিবিষয়শ্রেণী:বাঙালি সাহিত্যিক]]
[[বিষয়শ্রেণিবিষয়শ্রেণী:বাঙালি ছোটগল্পকার]]
[[বিষয়শ্রেণিবিষয়শ্রেণী:শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়]]