মোহাম্মদ দানেশ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Al Amin Riyad (আলোচনা | অবদান)
Al Amin Riyad (আলোচনা | অবদান)
১৬ নং লাইন:
 
== জন্ম, শিক্ষা, জীবন ==
দু’কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক হাজী মোহাম্মদ দানেশ ১৯০০ সালের ২৭ শে জুন দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ থানার সুলতানপুর গ্রামে এক বড় জোতদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
 
নিজ গ্রামে শৈশবে লেখাপড়ার হাতে খড়ি হলে সেতাবগঞ্জ থেকে প্রবেশিকা, রাজশাহী কলেজ থেকে আই.এ এবং বি.এ পাস করেন। পরবর্তীতে ভারতের উত্তর প্রদেশে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এম.এ এবং আইনে বি.এল ডিগ্রী লাভ করেন। ঠাকুরগাঁও আদালতে প্রথম উকিল হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
 
দিনাজপুর এস.এন কলেজে ইতিহাসের অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষকতা করেন। এক পর্যায়ে দিনাজপুর জেলা আদালতে আইন ব্যবসা আরাম্ভ করেন। কৃষক বর্গা চাষী, ভাগ চাষী, ক্রান্তি চাষীদের ওপর জমিদার ও জোতদারের সীমাহীন অত্যাচার দেখে শিশু বয়সে মোহাম্মদ দানেশের মানসিক চিন্তায় বিপ্লব ঘটে। তিনি ছাত্র জীবনেই কৃষকের ওপর অত্যাচারের প্রতিকার কল্পে কৃষক আন্দোলনে আকৃষ্ট হন। হাজী দানেশ ১৯৩৮ সালে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কমিউনিস্ট পার্টির অঙ্গসংগঠন কৃষক সমিতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন এবং কৃষক আন্দোলন সংগঠিত করেন। তাঁর নেতৃত্বে দিনাজপুর জেলায় টোল আদায় বন্ধ ও জমিদারি উচ্ছেদের দাবিতে কৃষক আন্দোলন জোরদার হয় এবং আন্দোলনকালে তিনি কারাভোগ করেন। নীলফামারি জেলার ডোমারে ১৯৪২ সালে অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় কৃষক সম্মেলনে অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন হাজী দানেশ
 
==রাজনীতি==
তিনি সংসদ সদস্য হয়েও ট্রেনে তৃতীয় শ্রেণিতে যাতায়াত করতেন এবং সেভাবেই ভ্রমণ ভাতা গ্রহণ করতেন এবং ডেডিকেটেড রাজনৈতিক ব্যক্তি ছিলেন। যা মুসলমান নেতাদের অনেকের মধ্যেই দেখা যেত না। ১৯৩৮ থেকে ১৯৪২ সাল পর্যন্ত তিনি তোলাবাটি আন্দোলন, সুসংদবদ্ধ আন্দোলন, গান্ডি আদায় বন্ধ আন্দোলন, ‘জাল যার জলা তার’ আন্দোলন করেন ও গ্রেফতার হন। ১৯৩৮ সালে তিনি কৃষক আন্দোলন সংগঠিত করেন। ১৯৪২ সালে তিনি বঙ্গীয় কৃষক সম্মেলনের অন্যতম উদ্যোক্তা এবং ১৯৪৫ সালে মুসলীম লীগে যোগদান করেন। তিনি ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৭ সালের মাঝামাঝি বাংলাদেশ ও ভারতে পশ্চিমবঙ্গের ১৯টি জেলায় ৬০ লাখ বর্গাচাষী নিয়ে তিন ভাগের দুই ভাগ আদায়ের জন্য জমিদার ও জোতদারদের বিরুদ্ধে মুখোমুখি সংগ্রাম করেন। ১৯৪৬ সালে মুসলিম লীগ থেকে বহিস্কৃত হয়ে তিনি কারাভোগ করেন এবং ১৯৪৭ সালে মুক্তিলাভ করেন। ১৯৫২ সালে গণতন্ত্রী দল নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন এবং ঐ দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালে গণতন্ত্রী দল যুক্তফ্রন্ট্রে যোগ দিলে তিনি ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে দিনাজপুর জেলা থেকে পূর্ব বঙ্গ আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। অতপর কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক ৯২-ক ধারা জারি করে পূর্ববঙ্গ যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রীসভা ভেঙ্গে দিলে তিনি গ্রেফতার হন এবং ১৯৫৬ সালে মুক্তি লাভ করেন। ১৯৫৭ সালে গণতন্ত্রী দলের অস্তিত্ব বিলোপ করে তিনি ভাসানীর নেতৃত্বে গঠিত ন্যাপে যোগ দেন এবং সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৫৮ সালে দেশে সামরিক আইন জারি হলে তিনি কারারুদ্ধ হন। ১৯৬৪ সালে ন্যাপের পূর্ব পাকিস্তান শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৬৫ সালে পুনরায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে তিনি ন্যাপ থেকে পদত্যাগ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেন। তিনি ১৯৭৩ সালে ডিসেম্বর মাসে জাতীয় গণমুক্তি ইউনিয়ন নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। ১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাকশালে যোগ দেন এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নিযুক্ত হন। ১৯৭৬ সালে তিনি জাতীয় গণমুক্তি ইউনিয়ন পুনরুজ্জীবিত করেন। আবার ১৯৮০ সালে এই দল বিলোপ করে তিনি গণতান্ত্রিক পার্টি নামে একটি নতুন দল গঠন করেন এবং দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টের সাথে ঐক্য গড়ে তোলেন এবং ১৯৮৬ সালে এরশাদের জাতীয় পার্টির সাথে নিজ দল সহ একীভূত হয়ে যান। তিনি জাতীয় পার্টির অঙ্গ-সংগঠন জাতীয় কৃষক পার্টির প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-২ আসনে পরাজিত হন ।