রুশ–জাপান যুদ্ধ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
৮২ নং লাইন:
জাপানি রাষ্ট্রনায়ক ইতো হিরোবুমি রুশদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। তিনি মনে করতেন, জাপান রাশিয়াকে সামরিকভাবে পরাজিত করতে পারবে না। এজন্য তিনি কোরিয়ার উত্তরাঞ্চলে জাপানি আধিপত্যের বিনিময়ে মাঞ্চুরিয়ায় রুশ আধিপত্য স্বীকার করে নেয়ার প্রস্তাব করেন। ইতোমধ্যে ১৯০২ সালে জাপান ও ব্রিটেনের মধ্যে [[অ্যাংলো-জাপানি মৈত্রীজোট]] স্থাপিত হয়। ব্রিটেন রাশিয়ার সঙ্গে নৌ প্রতিযোগিতা হ্রাস করতে চাইছিল এবং রাশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় সমুদ্রবন্দর ভ্লাদিভোস্টক ও পোর্ট আর্থার যেন রুশরা পূর্ণরূপে ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য ব্রিটেন জাপানের সঙ্গে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এই চুক্তি অনুসারে যদি রাশিয়া ও জাপানের মধ্যে যুদ্ধে কোনো দেশ রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতো, সেক্ষেত্রে ব্রিটেন জাপানের পক্ষে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতো। এর ফলে রাশিয়া আর জার্মানি কিংবা ফ্রান্সের সাহায্য লাভ করতে পারে নি, কারণ এদের কেউই ব্রিটেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে রাজি ছিল না। এরকম একটি চুক্তির ফলে জাপান প্রয়োজনে যে কোনো মুহূর্তে যুদ্ধ শুরু করার জন্য প্রস্তুত হয়।
 
এদিকে ১৮৯০ এবং ১৯০০-এর দশকে জার্মান সরকারের 'পীত আতঙ্ক' প্রচারণা চরমে ওঠে। জার্মান সম্রাট [[দ্বিতীয় উইলহেলম]] প্রায়ই তাঁর চাচাতো ভাই রাশিয়ার জার দ্বিতীয় নিকোলাসকে 'শ্বেতাঙ্গ জাতির রক্ষাকর্তা' হিসেবে প্রশংসা করে তাঁর কাছে চিঠি লিখতেন এবং রাশিয়াকে এশিয়ায় সাম্রাজ্য বিস্তারে উৎসাহ দিতেন।দিতেন<ref>McLean, Roderick "Dreams of a German Europe: Wilhelm II and the Treaty of Björkö of 1905" pages 119-141 from ''The Kaiser'' edited by Annika Mombauer and Wilhelm Deist", Cambridge: Cambridge University Press, 2003 page 121.</ref><ref>Fiebi-von Hase, Ragnhild "The uses of 'friendship': The 'personal regime' of Wilhelm II and Theodore Roosevelt, 1901-1909" pages 143-175 from ''The Kaiser'' edited by Annika Mombauer and Wilhelm Deist", Cambridge: Cambridge University Press, 2003 page 165.</ref> ১৮৯৪ সালের নভেম্বর থেকে উইলহেলম নিকোলাসকে 'পীত আতঙ্ক' থেকে ইউরোপের রক্ষাকর্তা হিসেবে প্রশংসা করে তাঁর কাছে চিঠি লিখতেন এবং জারকে আশ্বাস দিততেন যে, ঈশ্বর স্বয়ং তথাকথিত এশীয় হুমকি থেকে ইউরোপকে রক্ষা করার জন্য রাশিয়াকে 'বেছে নিয়েছেন'<ref>Röhl, John ''Wilhelm II: Into the Abyss of War and Exile, 1900-1941'', Cambridge: Cambridge University Press, 2014 page 182.</ref> ১৯০২ সালের ১ নভেম্বর উইলহেলম নিকোলাসের কাছে লেখেন যে, 'প্রাচ্যের বেশকিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষণ প্রদর্শন করে যে, জাপান ক্রমেই একটি অস্থির গ্রাহকে পরিণত হচ্ছে' এবং 'প্রতিটি নিরপেক্ষ ব্যক্তির কাছেই এটি সুস্পষ্ট যে কোরিয়া অবশ্যই রাশিয়ার'<ref>McLean, Roderick "Dreams of a German Europe: Wilhelm II and the Treaty of Björkö of 1905" pages 119-141 from ''The Kaiser'' edited by Annika Mombauer and Wilhelm Deist", Cambridge: Cambridge University Press, 2003 page 121.</ref> উইলহেলম তাঁর চিঠির শেষে চীন ও জাপান শীঘ্রই ইউরোপের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হবে বলে সতর্ক করেন; তিনি লেখেন: "''সুযোগ্য জাপানি অফিসারদের নেতৃত্বাধীন খ্রিস্টধর্মের প্রতি ঘৃণায় পরিপূর্ণ বিশ থেকে ত্রিশ লক্ষ চীনা সৈন্য এবং আধডজন জাপানি ডিভিশন - ভবিষ্যতের এরকম চিত্র উদ্বেগজনক এবং সেটা অসম্ভবও নয়। বরং এটি পীত আতঙ্কের বাস্তব রূপ, যেটি আমি কয়েক বছর আগে বর্ণনা করেছিলাম এবং যে কারণে অধিকাংশ লোক আমার সমালোচনা করেছিল...তোমার অনুগত বন্ধু এবং ভাই, উইলি, আটলান্টিকের অ্যাডমিরাল"।''<ref>Röhl, John ''Wilhelm II: Into the Abyss of War and Exile, 1900-1941'', Cambridge: Cambridge University Press, 2014 page 183.</ref> ১৮৯৪ সাল থেকে রাশিয়ার মিত্ররাষ্ট্র ফ্রান্স এশিয়ায় রাশিয়ার সম্প্রসারণবাদের পক্ষে ছিল না, এজন্য উইলহেলম এশিয়ায় রাশিয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে আক্রমণাত্মকভাবে উৎসাহিত করেন। বার্লিনের কর্তাব্যক্তিরা বিশ্বাস করতেন যে, রাশিয়ার প্রতি জার্মান সমর্থনের ফলে রাশিয়া রুশ-ফরাসি মৈত্রীজোট ভেঙে নতুন একটি রুশ-জার্মান মৈত্রীজোট গঠন করতে পারে।পারে<ref>McLean, Roderick "Dreams of a German Europe: Wilhelm II and the Treaty of Björkö of 1905" pages 119-141 from ''The Kaiser'' edited by Annika Mombauer and Wilhelm Deist", Cambridge: Cambridge University Press, 2003 page 121.</ref> ফ্রান্স (১৮৯৪ সাল থেকে রাশিয়ার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র) এটি পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছিল যে, তারা এশিয়ায় নিকোলাসের সম্প্রসারণ নীতি সমর্থন করে না, এবং ফরাসি প্রধানমন্ত্রী [[মরিস রভিয়ের]] জনসম্মুখে ঘোষণা করেন যে, রুশ-ফরাসি মৈত্রীজোট কেবল ইউরোপের জন্য, এশিয়ার জন্য নয়, এবং জাপান রাশিয়া আক্রমণ করলে ফ্রান্স নিরপেক্ষ থাকবে।থাকবে<ref>Röhl, John ''Wilhelm II: Into the Abyss of War and Exile, 1900–1941'' Cambridge: Cambridge University Press, 2014 pages 252-253</ref> আমেরিকানমার্কিন প্রেসিডেন্ট [[থিওডোর রুজভেল্ট]] রুশ-জাপান বিতর্কের সমাধানে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, উইলহেলমের 'পীত আতঙ্ক' প্রচারণা ইঙ্গিত দেয় যে জার্মানি রাশিয়ার সমর্থনে জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যেতে পারে এবং এটি রুশদের হঠকারী মনোভাবকে উৎসাহিত করছে।করছে<ref>Fiebi-von Hase, Ragnhild "The uses of 'friendship': The 'personal regime' of Wilhelm II and Theodore Roosevelt, 1901-1909" pages 143-175 from ''The Kaiser'' edited by Annika Mombauer and Wilhelm Deist", Cambridge: Cambridge University Press, 2003 page 163.</ref> ১৯০৫ সালের ২৪ জুলাই ব্রিটিশ কূটনীতিক [[সিসিল স্প্রিং-রাইস|সিসিল স্প্রিং-রাইসের]] কাছে লেখা এক চিঠিতে উল্লেখ করেন যে, উইলহেলম এই যুদ্ধের জন্য আংশিকভাবে দায়ী কারণ "তিনি এটি ঘটানোর জন্য যা কিছু করা সম্ভব সবই করেছিলেন"। তিনি অভিযোগ করেন যে, 'পীত আতঙ্ক' সম্বন্ধে উইলহেলমের নিয়মিত সতর্কবাণী রুশদেরকে সমঝোতায় নিরুৎসাহী করে তুলেছিল, কারণ নিকোলাস ধারণা করেছিলেন জাপান রাশিয়া আক্রমণ করলে জার্মানি হস্তক্ষেপ করবে।করবে<ref>Fiebi-von Hase, Ragnhild "The uses of 'friendship': The 'personal regime' of Wilhelm II and Theodore Roosevelt, 1901-1909" pages 143-175 from ''The Kaiser'' edited by Annika Mombauer and Wilhelm Deist", Cambridge: Cambridge University Press, 2003 pages 163-164.</ref> উইলহেলমের 'পীত আতঙ্ক' সম্পর্কিত বক্তৃতাগুলোতে এবং জার নিকোলাসের কাছে লেখা চিঠিগুলোতে জার্মান সমর্থনের প্রচ্ছন্ন আশ্বাস [[সেন্ট পিটার্সবার্গ|সেন্ট পিটার্সবার্গের]] অনেক কর্তাব্যক্তিকে বিশ্বাস করিয়েছিল যে দূর প্রাচ্যে রাশিয়ার সামরিক দুর্বলতা (যেমন- ট্রান্স-সাইবেরিয়ান রেলপথ অস্ম্পূর্ণ থাকা) কোনো বিষয় নয় কারণ যুদ্ধ শুরু হলে জার্মানি রাশিয়াকে সাহায্য করবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে উইলহেলম কিংবা তাঁর চ্যান্সেলর প্রিন্স বার্নহার্ড ভন বুলোভ কারোরই পূর্ব এশিয়া নিয়ে তেমন উৎসাহ ছিল না এবং নিকোলাসের কাছে লেখা উইলহেলমের চিঠিগুলোর মূল উদ্দেশ্য ছিল ইউরোপে ক্ষমতার ভারসাম্যের পরিবর্তন ঘটানো। উইলহেলম বিশ্বাস করতেন, রাশিয়া জাপানের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে পড়লে রুশ-ফরাসি মৈত্রীজোট ভেঙে পড়বে এবং রাশিয়া জার্মানির সঙ্গে নতুন জোট গঠন করবে।করবে<ref>Fiebi-von Hase, Ragnhild "The uses of 'friendship': The 'personal regime' of Wilhelm II and Theodore Roosevelt, 1901-1909" pages 143-175 from ''The Kaiser'' edited by Annika Mombauer and Wilhelm Deist", Cambridge: Cambridge University Press, 2003 page 165.</ref> জার্মানির ধারণা ছিল, যেহেতু জার্মানির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রিটেন জাপানের মিত্রশক্তি, তাই রাশিয়া আর জাপানকে একে অপরের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত করাতে পারলে রাশিয়া জার্মানির দিকে ঝুঁকে পড়বে।পড়বে<ref>Fiebi-von Hase, Ragnhild "The uses of 'friendship': The 'personal regime' of Wilhelm II and Theodore Roosevelt, 1901-1909" pages 143-175 from ''The Kaiser'' edited by Annika Mombauer and Wilhelm Deist", Cambridge: Cambridge University Press, 2003 page 165</ref> তদুপরি উইলহেলমের ধারণা ছিল, যদি একটি নতুন রুশ-জার্মান জোট গঠিত হয়, তাহলে ফ্রান্স সেই জোটে যোগ দিতে বাধ্য হবে এবং রাশিয়া এশিয়ায় সম্প্রসারণবাদী নীতি বাস্তবায়নে লিপ্ত থাকলে [[বলকান]] থেকে দূরে থাকবে, ফলে রাশিয়া এবং জার্মানির প্রধান মিত্রশক্তি অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির মধ্য দ্বন্দ্বের প্রধান কারণ দূর হবে।হবে<ref>McLean, Roderick "Dreams of a German Europe: Wilhelm II and the Treaty of Björkö of 1905" pages 119-141 from ''The Kaiser'' edited by Annika Mombauer and Wilhelm Deist", Cambridge: Cambridge University Press, 2003 page 121.</ref> যুদ্ধের সময় জার নিকোলাস জার্মান হস্তক্ষেপ নিয়ে আশাবাদী ছিলেন এবং রাশিয়া বারবার পরাজিত হওয়া সত্ত্বেও কাইজার তাঁকে সহযোগিতা করবেন এই বিশ্বাসে যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছিলেন।গিয়েছিলেন<ref>McLean, Roderick "Dreams of a German Europe: Wilhelm II and the Treaty of Björkö of 1905" pages 119-141 from ''The Kaiser'' edited by Annika Mombauer and Wilhelm Deist", Cambridge: Cambridge University Press, 2003 pages 127-128.</ref>
 
১৯০৩ সালের ২৮ জুলাই সেন্ট পিটার্সবার্গে জাপানি রাষ্ট্রদূত কুরিনো শিনিচিরোকে মাঞ্চুরিয়ায় রুশ আধিপত্য বিস্তারের প্রতি তাঁর দেশের নেতিবাচক মনোভাব জানানোর জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। ১২ আগস্ট জাপানি রাষ্ট্রদূত আরো আলোচনার জন্য জাপানি প্রস্তাবনা রুশদের কাছে হস্তান্তর করেন। প্রস্তাবনাটিতে কোরিয়ায় জাপানের এবং মাঞ্চুরিয়ায় রাশিয়ার 'বিশেষ অধিকার'কে পারস্পরিক স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাব করা হয়।হয়<ref>Text in Japanese Ministry of Foreign Affairs, ''Correspondence Regarding Negotiations&nbsp;... (1903–1904)'' pp. 7–9.</ref>
 
৩ অক্টোবর জাপানে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত [[রোমান রোজেন]] জাপানি সরকারের কাছে আলোচনার জন্য পাল্টা রুশ প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। এতে রাশিয়া মাঞ্চুরিয়ায় রুশ আধিপত্যকে স্বীকার করে নেয়া এবং কোরিয়ার উত্তরাঞ্চলকে জাপান ও রাশিয়ার মধ্যে 'বাফার জোন' হিসেবে রাখার প্রস্তাব করে এবং বিনিময়ে কোরিয়ায় জাপানের 'বিশেষ অর্থনৈতিক অধিকার' স্বীকার করে নিতে রাজি হয়।হয়<ref>Text in ''Correspondence Regarding Negotiations&nbsp;... (1903–1904)'' pp. 23–24.</ref>
 
রুশ-জাপান আলোচনা চলতে থাকে, বিন্তু ১৯০৪ সালের জানুয়ারিতে জাপানি সরকার বুঝতে পারে যে মাঞ্চুরীয় বা কোরীয় সমস্যা সমাধানে রাশিয়া আগ্রহী নয়, বরং রাশিয়ার উদ্দেশ্য সামরিক প্রস্তুতির প্রয়োজনীয় সময় অর্জনের জন্য কূটনীতির মাধ্যমে কালক্ষেপন করা।করা<ref name=HighBeam>{{Cite journal |last=Koda |first=Yoji |url=http://www.highbeam.com/doc/1P3-840737501.html |title=The Russo-Japanese War: Primary Causes of Japanese Success |date=1 April 2005 |journal=[[Naval War College Review]] |accessdate=6 April 2015 |subscription=yes |via=HighBeam}}</ref> ১৯০৩ সালের ডিসেম্বরে উইলহেলম রুশ-জাপান সম্পর্ক শীতলীকরণে তাঁর ভূমিকা সম্পর্কে একটি কূটনৈতিক নোটে লিখেছিলেন: "''১৮৯৭ সাল থেকে আমার কখনো রাশিয়াকে এ বিষয়ে সন্দেহে রাখিনি যে যদি রাশিয়া দূরপ্রাচ্যে বড় ধরনের নীতি অনুসরণের সিদ্ধান্ত নেয় এবং এর ফলে যদি সামরিক জটিলতার সৃষ্টি হয়, তাহলে আমরা ইউরোপে তাকে রক্ষা করব (আমাদের পূর্ব সীমান্ত থেকে বিশাল রুশ সেনাবাহিনীর চাপ ও ভীতি দূর করার জন্য!)। এরপর রাশিয়া যখন পোর্ট আর্থার দখল করে নিল এবং আমাদেরকে 'বিশ্বাস করে' বাল্টিক থেকে তার নৌবহর সরিয়ে নিল এবং এর মাধ্যমে নিজেকে সাগরপথে 'আমাদের কাছে অরক্ষিত' করে ফেলল। ডানজিগ ০১ এবং রেভাল ০২-তে একই আশ্বাস দেয়া হয়েছিল যার ফলে তারা পোল্যান্ড ও ইউরোপীয় রাশিয়া থেকে বহু ডিভিশন সৈন্য দূরপ্রাচ্যে পাঠাতে পেরেছিল এবং এখনো পাঠাচ্ছে। আমাদের সরকার সম্মত না থাকলে এটা কখনোই হতো না!"''<ref>Röhl, John ''Wilhelm II: Into the Abyss of War and Exile, 1900-1941'', Cambridge: Cambridge University Press, 2014 page 164.</ref> নিকোলাসের কাছে প্রেরিত উইলহেলমের চিঠিগুলোর মূল বক্তব্য ছিল যে, ঈশ্বর 'সমগ্র শ্বেতাঙ্গ জাতি'কে 'পীত আতঙ্ক' থেকে রক্ষা করার জন্য 'পবিত্র রাশিয়া'কে 'বাছাই' করেছেন এবং সম্পূর্ণ কোরিয়া, মাঞ্চুরিয়া ও বেইজিং পর্যন্ত উত্তর চীন দখল করে নেয়া রাশিয়ার 'অধিকার'<ref>Röhl, John ''Wilhelm II: Into the Abyss of War and Exile, 1900-1941'', Cambridge: Cambridge University Press, 2014 page 263.</ref> উইলহেলম নিকোলাসকে এ পর্যন্ত আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, রাশিয়া জাপানকে পরাজিত করতে পারলে সেটা ব্রিটিশ কূটনীতির প্রতি মারাত্মক আঘাত হবে, এবং দুই সম্রাট (স্বঘোষিত 'আটলান্টিকের অ্যাডমিরাল' এবং 'প্রশান্ত মহাসাগরের অ্যাডমিরাল') যৌথভাবে ইউরেশিয়া শাসন করবেন। এটি তাঁদেরকে ব্রিটিশ নৌশক্তির মুখোমুখি হতে সক্ষম করবে, কারণ ইউরেশিয়ার বিপুল সম্পদের কারণে ব্রিটিশ অবরোধ তাঁদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না এবং এরপর জার্মানি ও রাশিয়া এশিয়ায় ব্রিটেনের 'সর্বোত্তম উপনিবেশগুলো' ভাগাভাগি করে নেবে।নেবে<ref>Röhl, John ''Wilhelm II: Into the Abyss of War and Exile, 1900-1941'', Cambridge: Cambridge University Press, 2014 page 263.</ref> নিকোলাস জাপানের সঙ্গে সমঝোতা করতে প্রস্তুত হয়েছিলেন, কিন্তু উইলহেলমের কাছে থেকে একটি চিঠি পাওয়ার পর (চিঠিটিতে জাপানিদের সঙ্গে সমঝোতা করতে চাওয়ার জন্য উইলহেলম নিকোলাসকে 'ভীরু' বলে অভিহিত করেছিলেন) তিনি আরো হঠকারী হয়ে ওঠেন।ওঠেন<ref>Röhl, John ''Wilhelm II: Into the Abyss of War and Exile, 1900-1941'', Cambridge: Cambridge University Press, 2014 page 269.</ref>
 
১৯০৪ সালের ১৩ জানুয়ারি জাপান প্রস্তাব করে যে, মাঞ্চুরিয়া জাপানি প্রভাবের বাইরে থাকবে এবং কোরিয়া রুশ প্রভাবের বাইরে থাকবে। কিন্তু ১৯০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জাপান কোনো আনুষ্ঠানিক উত্তর পায় নি, ফলে ৬ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ায় জাপানি রাষ্ট্রদূত কুরিনো শিনিচিরোকে জাপানে ডেকে পাঠানো হয়<ref>Connaughton, p. 10.</ref> এবং জাপান রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।করে<ref name=HighBeam/>
 
কিছু পণ্ডিত মনে করেন যে, জার দ্বিতীয় নিকোলাস রুশ জাতীয়তাবাদের পুনর্জাগরণ ঘটানোর জন্য এই যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন, যদিও এই ধারণার কোনো ঐতিহাসিক প্রমাণ নেই।নেই<ref>{{cite journal |first=Raymond |last=Esthus |title=Nicholas II and the Russo-Japanese War |journal=Russian Review |volume=40 |issue=4 |year=1981 |jstor=129919 |pages=411 }}</ref> জারের উপদেষ্টারা যুদ্ধের পক্ষে ছিলেন না, কারণ ইউরোপীয় রাশিয়া থেকে প্রাচ্যে সৈন্য ও রসদপত্র পরিবহনের সমস্যা তাঁরা উপলব্ধি করেছিলেন।করেছিলেন<ref>{{Cite book |first=Robert W. |last=Tolf |title=The Russian Rockfellers |publisher=Hoover Press |page=156 |isbn=0-8179-6583-1 |year=1976 |url=https://books.google.com/?id=3DmsQLtWq1wC&pg=PA267 }}</ref> কিন্তু নিকোলাস বিশ্বাস করতেন যে, রাশিয়ার বিশাল শক্তির সামনে জাপান আত্মসমর্পণ করবে, এবং তাঁর এই ভ্রান্ত বিশ্বাস যুদ্ধকে ত্বরান্বিত করেছিল।
 
== যুদ্ধ ঘোষণা ==